দার্জিলিংয়ে কাঞ্চনজঙ্ঘা এক্সপ্রেস দুর্ঘটনায় নিহত ৮, আহত ২৫
পশ্চিমবঙ্গের দার্জিলিংয়ে কাঞ্চনজঙ্ঘা এক্সপ্রেস ট্রেনের সঙ্গে মালবাহী ট্রেনের সংঘর্ষে ৮ জন নিহত হয়েছেন। এ ঘটনায় এখন পর্যন্ত কমপক্ষে ২৫ জন আহত হয়েছেন। সোমবার (১৭ জুন) সকালে আসামের শিলচর থেকে ট্রেনটি কলকাতার শিয়ালদহে যাওয়ার পথে এ দুর্ঘটনা ঘটে।
ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভি জানিয়েছে, ট্রেনটি নিউ জলপাইগুড়ির রাঙ্গাপানি স্টেশন এলাকায় দাঁড়িয়ে ছিল। পেছন থেকে একটি মালবাহী ট্রেন সেটিকে ধাক্কা দেয়। এতে কাঞ্চনজঙ্ঘা এক্সপ্রেসের দুটি বগি লাইনচ্যুত হয়। মালবাহী ট্রেনটির একটি বগি যাত্রীবাহী ট্রেনের ওপরে উঠে যায়।
দুর্ঘটনার কারণ সম্পর্কে এখনো বিস্তারিত জানা যায়নি। পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জানিয়েছেন, চিকিৎসক ও বিপর্যয় মোকাবিলা দল ঘটনাস্থলে পৌঁছেছে।
সামাজিক মাধ্যম এক্সের এক পোস্টে তিনি লিখেছেন, ‘দার্জিলিং জেলার ফাঁসিদেওয়া এলাকায় এইমাত্র একটি মর্মান্তিক ট্রেন দুর্ঘটনার বিষয়ে জানতে পেরে মর্মাহত হয়েছি। কাঞ্চনজঙ্ঘা এক্সপ্রেসকে একটি মালবাহী ট্রেন ধাক্কা দিয়েছে বলে প্রাথমিকভাবে জানা গেছে। ডিএম, এসপি, ডাক্তার, অ্যাম্বুলেন্স ও বিপর্যয় দলগুলো দ্রুত ঘটনাস্থলে পাঠানো হয়েছে। উদ্ধার, পুনরুদ্ধার ও চিকিৎসাসহায়তার জন্য কাজ শুরু হয়েছে।’
দার্জিলিং ভ্রমণের জন্য অনেক পর্যটক কাঞ্চনজঙ্ঘা এক্সপ্রেস ব্যবহার করেন। গত কয়েক দিন ধরে কলকাতা ও দক্ষিণবঙ্গে তাপপ্রবাহের কারণে অনেকে স্বস্তির জন্য দার্জেলিংয়ের পাহাড়ি এলাকা ভ্রমণ করছেন। এরই মধ্যে এ দুর্ঘটনা ঘটল।
এখন পর্যন্ত পাওয়া তথ্য অনুযায়ী, মালবাহী ট্রেনটি সিগন্যাল অতিক্রম করে কাঞ্চনজঙ্ঘা এক্সপ্রেসকে ধাক্কা দেয়। ন্যাশনাল ডিজাস্টার রেসপন্স ফোর্সের দল ও অ্যাম্বুলেন্স ঘটনাস্থলে পৌঁছেছে। রেলমন্ত্রী অশ্বিনী বৈষ্ণব দিল্লির রেলওয়ে ওয়াররুম থেকে পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করছেন বলে জানা গেছে।
তবে কাঞ্চনজঙ্ঘা এক্সপ্রেসের পেছনের অংশে কার্গো ভ্যান থাকায় হতাহতের সংখ্যা কমেছে। গার্ডের কোচ ও যাত্রী বগিগুলো সামনের দিকে ছিল।
হজ করতে গিয়ে তীব্র গরমে ১৯ জনের মৃত্যু
সৌদি আরবে মক্কায় পবিত্র হজ পালনের সময় জর্ডান ও ইরানের কমপক্ষে ১৯ হাজির মৃত্যু হয়েছে। রোববার (১৬ জুন) দেশটিতে তীব্র তাপদাহের মাঝে ওই হজযাত্রীরা মারা গেছেন বলে উভয় দেশের কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে।
এক বিবৃতিতে জর্ডানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বলেছে, হজের রীতি পালনের সময় জর্ডানের কমপক্ষে ১৪ জন হজযাত্রী মারা গেছেন এবং আরও ১৭ জন নিখোঁজ হয়েছেন। তীব্র তাপদাহের কারণে সান স্ট্রোকে আক্রান্ত হয়ে ওই ১৪ জন নিহত হয়েছেন বলে মন্ত্রণালয় নিশ্চিত করেছে।
আর ইরানের রেড ক্রিসেন্টের প্রধান পীরহোসেন কুলিবান্দ পৃথকভাবে বলেছেন, এ বছর হজের সময় মক্কা ও মদিনায় এখন পর্যন্ত ইরানি পাঁচ হজযাত্রী প্রাণ হারিয়েছেন।
তবে তারা কিভাবে মারা গেছেন সেই বিষয়ে কোনও তথ্য জানাননি তিনি।
বিশ্বের বৃহত্তম ধর্মীয় সমাগমগুলোর একটি পবিত্র হজ। ইসলামের পঞ্চম স্তম্ভের একটি এই হজ। ধর্মীয় বিধান অনুযায়ী, প্রত্যেক প্রাপ্তবয়স্ক ও সামর্থ্যবান মুসলিম নারী-পুরুষের জন্য জীবনে অন্তত একবার হজ করা ফরজ।
মরু আবহাওয়ার দেশ সৌদি আরবে তাপমাত্রার পারদ ৪০ ডিগ্রি (১০৪ ডিগ্রি ফারেনহাইট) ছাড়িয়ে গেছে। হজ পালনের সংকল্প করে বিশ্বের বিভিন্ন দেশ থেকে সৌদিতে আসা প্রায় ১৮ লাখ মুসলিম তীব্র গরম উপেক্ষা করেই হজ পালন করছেন।
সৌদি আরবের সরকার হজ পালনের সময় হজযাত্রীদের হতাহতের বিষয়ে কোনো তথ্য প্রকাশ করেনি। তবে জলবায়ু-নিয়ন্ত্রিত এলাকাসহ তাপ প্রশমনের বিভিন্ন পদক্ষেপ বাস্তবায়ন করেছে দেশটি। এছাড়া হজযাত্রীদের মাঝে বিনামূল্যে পানি বিতরণ ও সূর্যের তাপ থেকে নিজেদের সুরক্ষার পরামর্শ দিয়েছে সৌদি কর্তৃপক্ষ।
সৌদি আরবের সরকারি এক কর্মকর্তা ফরাসি বার্তা সংস্থা এএফপিকে বলেছেন, গত বছর হজের সময় ১০ হাজারের বেশি তাপজনিত অসুস্থতার ঘটনা রেকর্ড করা হয়েছিল। এর মধ্যে ১০ শতাংশই হিট স্ট্রোকে আক্রান্ত হয়েছিলেন।
৪০ হাজারের বেশি মুসল্লি নিয়ে আল-আকসায় ঈদের জামাত
ইসরাইলি বাহিনীর ব্যাপক কড়াকড়ির মধ্যেই জেরুজালেমের আল আকসা মাসজিদে ঈদের নামাজে ঢল নামে মুসল্লিদের। পবিত্র ঈদুল আজহার নামাজ আদায়ের জন্য রোববার (১৬ জুন) ভোর থেকেই আল আকসা প্রাঙ্গণে জড়ো হতে থাকেন হাজার হাজার ফিলিস্তিনি।
আনাদোলু এজেন্সির খবরে বলা হয়েছে, তারা সেখানে গাজা উপত্যকায় আট মাস ধরে চলা ইসরায়েলের হামলা নিহতদের জন্য শোক প্রকাশ করেছেন।
জেরুজালেমের ইসলামিক এনডাউমেন্টস বিভাগ থেকে এক বিবৃতিতে জানানো হয়, প্রায় ৪০ হাজার মুসল্লি সেখানে ঈদুল আজহার নামাজ আদায় করেন। যদিও কয়েক হাজার মুসল্লিকে সেখানে প্রবেশ করতে দেওয়া হয়নি।
ফিলিস্তিনি বার্তা সংস্থা ওয়াফা জানিয়েছে, ইসরায়েলি দখলদার বাহিনী আজ সকালে আল-আকসা মসজিদে যাওয়ার পথে এবং সেখান থেকে বের হওয়ার সময় নামাজ পড়তে আসা মুসল্লিদের ওপর হামলা চালায় এবং অনেক মুসল্লিকে ঈদের নামাজ পড়তে প্রবেশ করতে বাধা দেয়।
বুরকিনা ফাসোতে হামলার দায় স্বীকার করেছে আল-কায়েদা
বুরকিনা ফাসোতে হামলার হামলার ঘটনায় দায় স্বীকার করেছে আল-কায়েদার সাথে সম্পৃক্ত একটি সশস্ত্র গোষ্ঠী, জামাত নুসরাত আল-ইসলাম ওয়াল-মুসলিম (জেএনআইএম)। ম্যানসিলা এলাকায় ঐ হামলায় ১০০ জনেরও বেশি সৈন্যকে হত্যা করেছিল। নাইজারের সাথে সীমান্ত এসআইটিই ইন্টেলিজেন্স গ্রুপ এ তথ্য নিশ্চিত করেছে।
রোববার (১৬ জুন) এসআইটিই এক বিবৃতিতে বলেছে, পাঁচ দিন আগে যোদ্ধারা শহরে একটি সামরিক পোস্টে হামলা চালায়, যেখানে ১০৭ জন সৈন্যকে হত্যা করে এবং সাইটটির নিয়ন্ত্রণ নেয়।
জেএনআইএম অনলাইনে শেয়ার করা বেশ কয়েকটি ভিডিওতে সেনা ঘাঁটির চারপাশে তুমুল গোলাগুলি দেখা গেছে। অন্য একটি ভিডিওতে গোলাবারুদ এবং কয়েক ডজন অস্ত্র প্রদর্শন করা হয়েছে এবং সেখােনে দেখা যায় অন্তত সাতজন বুরকিনা ফাসো সৈন্যকে বন্দী করেছে।
কনরাড অ্যাডেনাউয়ার ফাউন্ডেশনের সাহেল প্রোগ্রামের প্রধান উলফ লেসিং আল জাজিরাকে বলেছেন, সরকার সশস্ত্র গোষ্ঠীগুলির বিরুদ্ধে লড়াই করার চেষ্টা করছে তবে এটি করার জন্য পেশাদার সৈন্য নিয়োগ করেনি।
তিনি বলেন, ৫০ হাজার স্বেচ্ছাসেবক নিয়োগ করা হয়েছে, যাদের মধ্যে অনেকেই অল্প সময়ের প্রশিক্ষণ পেয়েছে। তাই তারা ক্ষতির জন্য ঝুঁকিপূর্ণ এবং দুর্ভাগ্যক্রমে এটি খুব কার্যকর নয়। এখন প্রায় প্রতিদিনই এরকম ঘটনা ঘটছে
তিনি আরও বলেন, মুহুর্তে বুর্কিনা ফাসোর ভূখণ্ডের ৫০-৬০ শতাংশ সরকারের নিয়ন্ত্রণের বাইরে রয়েছে। সরকার কঠোর চেষ্টা করছে, তারা অস্ত্র কিনছে, তাদের রাশিয়ার সাথে সামরিক অংশীদারিত্ব রয়েছে কিন্তু তারা খুব বেশি সফল নয়।
নাইজার এবং মালিও আল-কায়েদা এবং আইএসআইএল (আইএসআইএস) এর সাথে যুক্ত লড়াই নিয়ন্ত্রণে লড়াই করছে। অস্থিরতা সাহেল অঞ্চলের স্থিতিশীলতাকেও হুমকির মুখে ঠেলে দিচ্ছে কারণ সশস্ত্র গোষ্ঠীগুলি বুরকিনা ফাসো এবং মালির বিভিন্ন অঞ্চল নিয়ন্ত্রণ করে, তারা দক্ষিণ উপকূলীয় দেশগুলিকে লক্ষ্যবস্তুতে ঘাঁটি হিসাবে ব্যবহার করে৷
2023 সালের শেষ নাগাদ বুরকিনা ফাসো জুড়ে 36টি অবরুদ্ধ শহরে প্রায় দুই মিলিয়ন বেসামরিক লোক আটকা পড়েছিল।