ফ্যাশনেবল-স্টাইলিস্ট রাজনীতিবিদ অরুণ জেটলির ব্র্যান্ডপ্রীতি



ড. মাহফুজ পারভেজ, কন্ট্রিবিউটিং এডিটর, বার্তাটোয়েন্টিফোর.কম
স্টাইলিস্ট রাজনীতিবিদ অরুণ জেটলি/ছবি: সংগৃহীত

স্টাইলিস্ট রাজনীতিবিদ অরুণ জেটলি/ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

রাজনীতিতে মেধা ও দক্ষতার পাশাপাশি ব্যক্তিগত জীবনযাপনে ফ্যাশন ও স্টাইলের স্বাক্ষর রেখেছেন সদ্য প্রয়াত ভারতীয় রাজনীতিবিদ অরুণ জেটলি। দিল্লিতে জন্ম নেওয়া ও নামকরা শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে পাঠ গ্রহণকারী অরুণ জেটলির জীবনচর্চায় ছিল রুচি ও আভিজাত্যের ছাপ। পোশাক ও নিত্য ব্যবহার্য্য সামগ্রীর ক্ষেত্রে তিনি হাল ফ্যাশনের আধুনিক স্টাইলের অনুসারী ছিলেন। বিশ্বসেরা ব্র্যান্ডের বাছাই করা পণ্যসমূহ নিজের জন্য পছন্দ করতেন তিনি।

বলে রাখা সঙ্গত যে, ভারতের রাজনীতিতে ফ্যাশন ও স্টাইলের অনুসরণ নতুন নয়। আধুনিক ভারতীয় রাজনীতির দুই দিকপাল জিন্না ও নেহেরু বিশেষ পছন্দের পোশাক ও সেরা দোকানের জিনিস বেছে নিতেন। অবশ্য সেটা ব্র্যান্ড আইটেমের যুগ ছিল না। ফলে তারা দেশ-বিদেশের নামজাদা সরবরাহকারীর কাছ থেকে নিজেদের ব্যবহারের জন্য নানা পণ্য সামগ্রী সংগ্রহ করতেন।

ফ্যাশন ও স্টাইলের ক্ষেত্রে পরবর্তীকালে নাম করেছিলেন মধ্যপ্রদেশের গোয়ালিয়র রাজবংশের সদস্য রাজনীতিবিদ মাধব রাও সিন্ধিয়া ও তার বোন বসুন্ধরা রাজে। আরেকজনের নাম এক্ষেত্রে বহুলভাবে উচ্চারিত। তিনি হলেন ভারতীয় ক্রিকেট দলের এককালের অধিনায়ক, পাঞ্জাবের পাতিয়ালার পার্শ্ববর্তী পতৌদির নবাব মনসুর আলি খান। যিনি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের বংশধর, বোম্বের নামকরা বাঙালি নায়িকা শর্মিলা ঠাকুরের স্বামী এবং বলিউড নায়ক সাইফ আলি খানের পিতা।

অরুণ জেটলির মৃত্যুর পর তার অন্তরঙ্গ জীবনের যে বর্ণিল চিত্র প্রকাশ পাচ্ছে, তাতে তিনি অবধারিত ভাবে স্থান করে নিতে চলেছেন ফ্যাশন, স্টাইল ও ব্র্যান্ডের জগতেও। তুলনামূলকভাবে প্রাচীনপন্থী, ধর্মাশ্রয়ী ও রক্ষণশীল রাজনীতির মুখপাত্র হয়েও তিনি নিজেকে উপস্থাপন করেছিলেন আধুনিক ভাবমূর্তিতে। চলনে, বলনে, পোষাকে সেই রুচি, আভিজাত্য ও স্বাতন্ত্রিকতার ছাপ দেখা গেছে অরুণ জেটলির আইনজীবী পেশা ও রাজনীতির কেরিয়ারে।

অরুণ জেটলি ব্যবহার করতেন বিশ্বের সেরা ব্র্যান্ডের দামি ও অত্যাধুনিক সামগ্রী। ঘড়ি, কলম, জামা, জুতা, টাওয়েল ইত্যাদি তিনি বেছে নিতেন বিশ্বসেরা ব্র্যান্ড কোম্পানির কাছ থেকে। সর্ব-সাম্প্রতিক ও উচ্চমানের ব্র্যান্ডের প্রতি ছিল তার দুর্নিবার আকর্ষণ। তাকে বলা হতো ‘হাই-অ্যান্ড ব্র্যান্ড’ প্রেমিক।

রাজনীতিতে এসে যখন তিনি নিয়মিত কুর্তা আর পায়জামা পড়তেন একটি হাতাকাটা কোটের সমন্বয়ে, তখনও গ্রীষ্মে পিওর কটন আর শীতে সেগুলো পশমিনা কাপড়ে তৈরি করা হতো। তার আগে, আইনজীবী পেশাকালে তিনি লন্ডনের বেসপোক শার্ট এবং জন লবের তৈরি কারুশিল্পময় জুতার চেয়ে নিম্নমানের কিছুই পড়তেন না।

 https://img.imageboss.me/width/700/quality:100/https://img.barta24.com/uploads/news/2019/Aug/25/1566745804348.JPG

অরুণ জেটলির পাঁচ দশকের লম্বা রাজনৈতিক কেরিয়ারের ঘনিষ্ঠজনেরা তার ব্যবহার্য্য সামগ্রীর বিরাট তালিকার কথা জানিয়েছেন, যে তালিকা এতো লম্বা যে, শেষ হওয়ার নয়। তার কর্মক্ষেত্রের সবাই জানতো ব্র্যান্ডপ্রীতি আর ফ্যাশন ও স্টাইলের দিক থেকে তিনি সবার চেয়ে এগিয়ে। নিজের এই অভ্যাসের কথা অরুণ জেটলি লুকিয়ে রাখতেন না। তার প্রকাশ্য তৎপরতায় সেগুলো লক্ষ্য করা যেতো। ঘড়ি, কলম, জামা, জুতা, তোয়ালের ক্ষেত্রে নামকরা ব্র্যান্ডের প্রতি তার সহজাত আকর্ষণ ছিল অত্যন্ত তীব্র ও প্রখর। তার সংগ্রহেও ছিল নামকরা, দামি ব্র্যান্ডের বহু জিনিস। তিনি ব্যবহার করতেন পিটেক ফিলিপস নির্মিত ঘড়ি, মন্ট ব্ল্যাঙ্ক-এর কলম, বেসপোক ব্র্যান্ডের শার্ট এবং জন লবের তৈরি কারুশিল্পময় জুতা।

অরুণ জেটলি এতোটাই অগ্রসর ও অত্যাধুনিক ছিলেন যে, যখন অধিকাংশ ভারতীয়ই ওমেগা ব্র্যান্ডের ঘড়ি কেনার কথাও চিন্তা করতে পারতেন না, তখন তিনি নিজের কব্জিতে অবলীলায় পিটেক ফিলিপস-এর ঘড়ি নিয়ে ঘুরে বেড়িয়েছেন। তার ছিল উল্লেখ করার মতো মন্ট ব্ল্যাঙ্ক কোম্পানির কলম, জামাওয়ার ব্র্যান্ডের টাওয়েল, রুমাল, টাই। মন্ট ব্ল্যাঙ্ক কোম্পানি নতুন ধরনের কোনও কলম বাজারে ছাড়লেই সেটা নিজের জন্য সংগ্রহ করতেন অরুণ জেটলি। এমনকি, যেদিন কলমটি বাজারে রিলিজ করা হতো, সেদিনই তা নিয়ে নিতেন তিনি।

লেখক-সাংবাদিক কুমকুম চাড্ডা ‘দ্যা মেরিগোল্ড স্টোরি’ নামে যে বই রচনা করেছেন, তাতে অরুণ জেটলিকে নিয়ে রয়েছে একটি আস্ত অধ্যায়। ‘অরুণ জেটলি: দ্য পিড পিপার’ নামের সেই অধ্যায়ে অরুণ জেটলির কেতা-দুরস্ত জীবনযাপনের আদ্যোপান্ত রয়েছে। রয়েছে তার ব্র্যান্ডপ্রীতি, ফ্যাশন সচেতনতা ও স্টাইলের প্রতি আগ্রহের কথাও।

ব্র্যান্ড সচেতনতা অরুণ জেটলির জীবনের আগাগোড়াই উপস্থিত ছিল। রাজনীতিতে এসেও তিনি সেটা পরিত্যাগ করতে পারেন নি। তার আইনজীবী পুত্র রোহানের জন্য তিনি প্রথম যে জুতো জোড়া কিনেছিলেন, সেগুলোও ছিল স্যালভাটরে ফেরাগামো নামের নামকরা ইতালীয় লাক্সারি ব্র্যান্ডের। মন্ত্রী পরিষদেও তার চেয়ে লেটেস্ট ও সর্বাধুনিক ল্যাপটপ নিয়ে অন্য কেউ কাজ করতেন না।

অরুণ জেটলির এই ফ্যাশনেবল-স্টাইলিস্ট জীবনধারা ও ব্র্যান্ডপ্রীতি সবাই জানতেন। কিন্তু কেউ এই ব্যয়বহুল জীবনের কোনও সমালোচনা করার সুযোগ পেতেন না। কারণ তিনি নিজের উপার্জন ও ব্যয়ের মধ্যে পরিচ্ছন্নতা ও স্বচ্ছতা রক্ষা করতেন। আইনজীবী হিসাবে তার অফিসকে তিনি এতোটাই নিয়মতান্ত্রিক করেছিলেন যে, কোনও মক্কেলের পক্ষে টাকা নিয়ে দর কষাকষি বা হেনস্তা হওয়ার সুযোগ ছিল না। তার অফিসের কর্মচারীরাও নানা বাহানায় ক্লায়েন্টের কাছ থেকে টাকা হাতিয়ে নেওয়ার সুযোগ পেতেন না। তিনি সবার পারিশ্রমিক নির্ধারণ করে দিয়েছিলেন এবং সেমতে টাকা জমা দেওয়ার জন্য হিসাবরক্ষক রেখেছিলেন।

মন্ত্রী হিসাবেও অরুণ জেটলি ব্যক্তিগত জীবন ও আর্থিক ক্ষেত্রে স্বচ্ছতা দেখিয়েছেন। একবার নৈনিতালে একটি সরকারি অনুষ্ঠানে তিনি একদল বন্ধু-বান্ধব নিয়ে গিয়েছিলেন। তবে সেখানে তাদের থাকা-খাওয়ার যাবতীয় খরচ তিনি কড়ায় গণ্ডায় হিসাব করে নিজের পকেট থেকে চুকিয়ে দিয়েছিলেন।

 https://img.imageboss.me/width/700/quality:100/https://img.barta24.com/uploads/news/2019/Aug/25/1566745816503.jpeg

আরেক বার, তিনি তখন ভারতের অর্থমন্ত্রী, লন্ডনে একটি বিখ্যাত বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠান তার ব্যবহারের জন্য একটি গাড়ি পাঠায়। তিনি সেই গাড়ি হোটেলের দরজা থেকে ফিরিয়ে দিয়ে নিজে ভাড়া করা গাড়িতে চলাফেরা করেছিলেন।

অরুণের স্ত্রী, জম্মু ও কাশ্মীরের সাবেক অর্থমন্ত্রীর মেয়ে সঙ্গীতা নিজের স্বামী সম্পর্কে গর্ব করে বলেছিলেন, ‘অরুণ নিজের সততা, স্বচ্ছতা ও পরিশ্রমের মাধ্যমে সব অর্জন করেছে। কেউ তাকে হাতে তুলে কিছুই দেয় নি।’

অরুণ জেটলির ব্যক্তিগত ও রাজনৈতিক জীবনে বহু সাফল্যের সঙ্গে সঙ্গে কিছু সমালোচনা থাকলেও তিনি ছিলেন ব্যক্তি-মানুষ হিসাবে সকলের কাছে গ্রহণযোগ্য। অতুলনীয় জনসংযোগ ক্ষমতা ও মোহনীয় দক্ষতার অধিকারী অরুণ রাজনৈতিক কারণে অনেকের সঙ্গে লড়াই করতেও ব্যক্তিগত সম্পর্ককে কখনোই নষ্ট হতে দেন নি। রাজনীতিতে তার উচ্চরুচি ও উন্নত সাংস্কৃতিক বোধ বিদ্যমান সংঘাত ও হানাহানি প্রবণ পরিবেশে বিরল ও শিক্ষণীয় দৃষ্টান্ত।

যে কারণে তার মৃত্যুর পর দলমত নির্বিশেষে সবাই ভিড় করেছেন দিল্লির গ্রেটার কৈলাসে অবস্থিত অরুণ জেটলির বাড়িতে। চরম প্রতিদ্বন্দ্বী কংগ্রেসের নেত্রী সোনিয়া গান্ধীর সঙ্গে তার বৈরিতা এমন হয়েছিল যে, উভয়ের মধ্যে কথা বলা ও মুখ দেখাদেখি বন্ধ ছিল। কিন্তু অরুণ জেটলির মৃত্যু সংবাদ পেয়ে পুত্র রাহুলকে নিয়ে ছুটে আসেন সোনিয়া। এখানেই অরুণ জেটলির ব্যক্তিত্বের সাফল্য নিহিত।

রাজনৈতিক কেরিয়ারের চকচকে ইমেজের মতো ব্যক্তিজীবনেও অরুণ জেটলি সবাইকে মোহিত করেছিলেন তার ফ্যাশন, স্টাইল, ব্র্যান্ডপ্রীতির দ্বারা। রুচি ও আভিজাত্যের দীপ্তিতে ভারতীয় রাজনৈতিক ঘরানায় রেখেছিলেন মেধার স্বাক্ষর এবং দারুণ সফলভাবে সম্ভব করে তুলেছিলেন নিজের আলোকিত ও সুশোভন উপস্থিতি।

অরুণ জেটলির মৃত্যুতে মেধাবী নেতা এবং সুস্নিগ্ধ-সুসজ্জিত ব্যক্তিত্বের অধিকারী রাজনীতিবিদের অভাব ভারতের রাজনীতিতে অনুভূত হবে, যে অভাব খুব সহজে কাটিয়ে উঠা সম্ভব হবে না।

আরও পড়ুন: অরুণ জেটলি: ভারতীয় রাজনীতির মেধাবী পুরুষ

   

ইয়েমেন উপকূলে তেল ট্যাঙ্কারে হামলা



আন্তর্জাতিক ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
ছবি: বার্তা২৪.কম

ছবি: বার্তা২৪.কম

  • Font increase
  • Font Decrease

ইরান-সমর্থিত হুতি বিদ্রোহীরা বৃহস্পতিবার প্রথম প্রহরে ইয়েমেন উপকূলে গ্রীকের একটি তেল ট্যাঙ্কার লক্ষ্য করে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালিয়েছে। এতে জাহাজটির সামান্য ক্ষতি হলেও কেউ হতাহত হয়নি। মার্কিন কেন্দ্রীয় কমান্ড এ কথা জানিয়েছে।

বার্তাসংস্থা এএফপির প্রতিবেদনে এই তথ্য জানানো হয়েছে।

প্রতিবেদনে বলা হয়, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম এক্সে পোস্ট করা এক বার্তায় সেন্টকম বলেছে, ১৮ মে রাত ১টার (সানা সময়) দিকে ইরান-সমর্থিত হুতিরা লোহিত সাগরে গ্রীক মালিকানাধীন একটি তেল ট্যাঙ্কার লক্ষ্য করে জাহাজ বিধ্বংসী একটি ব্যালাস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালায়। জাহাজটি পানামা পতাকাবাহী ছিল।

সেন্টকমের বার্তায় বলা হয়, জাহাজটি সম্প্রতি রাশিয়ায় নোঙর করে চীনের উদ্দেশ্যে রওনা দিয়েছিল।পরে জাহাজটি ফের যাত্রা শুরু করে।

এরআগে মেরিটাইম সিকিউরিটি ফার্ম অ্যামব্রে এ হামলার কথা জানিয়ে বলেছিল, ইয়েমেনের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলীয় মোখা নগরী উপকূলে জাহাজটিতে এ হামলার ঘটনা ঘটে।

;

নেতানিয়াহুকে গ্যান্টজের হুমকি



আন্তর্জাতিক ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

ইসরােয়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুকে ধর্মান্ধের পথ ছেড়ে জাতির স্বার্থ রক্ষার কথা বলেন ইসরায়েলের যুদ্ধকালীন মন্ত্রিসভার সদস্য বেনি গ্যান্টজ। তিনি গাজায় যুদ্ধ-পরবর্তী পরিকল্পনা না থাকলে মন্ত্রিসভা থেকে পদত্যাগ করবেন বলেও হুমকি দিয়েছেন।

শনিবার (১৮ মে) এক সংবাদ সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুকে গাজার জন্য ৮ জুনের মধ্যে ছয়টি কৌশলগত লক্ষ্য অর্জনের পরিকল্পনার দাবি করেছেন গ্যান্টজ।

গ্যান্টজের এ ধরনের মন্তব্য ইসরায়েলের যুদ্ধকালীন মন্ত্রিসভা ও নেতানিয়ানহু সরকারের মধ্যে ক্রমবর্ধমান ফাটলের চিত্র তুলে ধরেছে। গ্যান্টজ গাজায় ৬ টি কৌশলগত লক্ষ্য অর্জনের জন্য ৮ জুনের মধ্যে একটি পরিকল্পনা করার ওপরও জোর দেন । যার মধ্যে আছে গাজায় হামাস শাসনের অবসান এবং অঞ্চলটিতে বেসামরিক শাসন প্রতিষ্ঠা করা।

তিনি বলেন, ‘‌নেতানিয়াহু যদি জাতীয় বিষয়কে ব্যক্তিগত বিষয়ের ওপর স্থান দেন, তাহলে এ সংগ্রামে আমাদের পাশে পাবেন। কিন্তু তিনি যদি ধর্মান্ধের পথ বেছে নেন এবং পুরো জাতিকে অতল গহ্বরে নিয়ে যান, তাহলে আমরা এ সরকার ছাড়তে বাধ্য হব। ’

অবশ্য নেতানিয়াহু তার এই মন্তব্যকে ফালতু কথা হিসেবে উল্লেখ করে বলেছেন, এর অর্ধ ইসরায়েলের পরাজয়।

এর আগে ইসরায়েলের প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইয়োভ গ্যালান্ট বলেন গাজায় বেসামরিক ও সামরকি শাসন প্রতিষ্ঠা করার জন্য ইসরায়েলের যে কোনো পরিকল্পনা নেই তা যেন নেতানিয়ানহু জনসম্মুখে বলেন।

;

‘একক ব্যবহারযোগ্য প্লাস্টিক’ রোধে কানাডায় প্রশাসনিক চাপ 



আন্তর্জাতিক ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

প্লাস্টিক দূষণ সম্পর্কে জনসাধারণের উদ্বেগ বাড়ছে। বিশ্বের প্রায় সব মহাসাগরে প্লাস্টিকের পরিমাণের ক্রমবর্ধমান বৃদ্ধি পরিস্থিতিকে আরও জটিল করে দিচ্ছে। গত কয়েক বছরে একক ব্যবহারযোগ্য প্লাস্টিকের ব্যবহার কমাতে বিভিন্ন দেশে নেওয়া হচ্ছে আইনি বা বিকল্প ব্যবহারযোগ্য পণ্যের উৎপাদনের পদক্ষেপ।

সম্প্রতি কানাডার পার্লামেন্টে প্লাস্টিক দূষণ রোধের পদক্ষেপ নেওয়ার জন্য কনজারভেটিভ দল থেকে আবারও দাবি তোলা হয়। এর আগে ২০২০ সালে প্রথম দাবিটি তোলা হয়েছিল। দেশটির সংবাদমাধ্যম সিবিসির প্রতিবেদনে সে তথ্য প্রকাশিত হয়েছে।

মূলত, একক-ব্যবহারের প্লাস্টিক হল ডিসপোজেবল প্লাস্টিক যা একবার ব্যবহার করে ফেলে দিতে হয়। পলিথিন ব্যাগ, প্লাস্টিকের পানীয়ের বোতল ও বোতলের ক্যাপ, খাবারের মোড়ক, প্লাস্টিকের প্যাকেট, প্লাস্টিকের মোড়ক, স্ট্র, স্টিরার্স, স্টাইরোফোমের কাপ বা প্লেট, এয়ারবাড, প্লাস্টিকের কাপ-প্লেট-চামচ-গ্লাস-ছুরি, ট্রে, মিষ্টির বাক্স বাঁধার রিবন, থার্মোকল, স্টিয়ারার, সিগারেটের প্যাকেট, আইসক্রিম ও ক্যান্ডি স্টিক ইত্যাদি হল একক-ব্যবহারযোগ্য প্লাস্টিক।

সিবিসির প্রতিবেদনে বলা হয়,  টরন্টো ইউনিভার্সিটি অব আর্থ সায়েন্সেস বিভাগের অধ্যাপক মরিয়ম ডায়মন্ড বলেন, ‘আমরা অনেক বেশি  প্লাস্টিক উৎপাদন করেছি যা শেষ পর্যন্ত মাইক্রোপ্লাস্টিক এবং ন্যানোপ্লাস্টিকে পরিণত হয়ে পরিবেশকে দূষিত করছে এবং এতে মানুষ অসুস্থ হচ্ছে।’

ডায়মন্ড বলেছেন, বৃহত্তর পরিবেশ ঝুঁকির আশঙ্কাকে প্রাধান্য না দিয়ে প্লাস্টিকের এমন অধিক ব্যবহার দেখে  তিনি উদ্বিগ্ন। 

ডায়মন্ড সায়েন্টিস্ট কোয়ালিশন ফর অ্যান ইফেক্টিভ প্লাস্টিক ট্রিটির সদস্য এবং রাসায়নিক দূষণের আন্তর্জাতিক প্যানেলেরও ভাইস-চেয়ার। তার পরামর্শ হল- তরল জাতীয় খাবার গ্রহণের ক্ষেত্রেও প্লাস্টিক স্ট্র পরিহার করতে হবে। যাদের  শারীরিক সীমাবদ্ধতা রয়েছে তারা ছাড়া বাকিদের স্ট্র ব্যবহারে নিরুৎসাহিত করেন তিনি।  প্লাস্টিকের বোতলে পানি পান করার কোনো দরকার নেই বলে তিনি মন্তব্য করেন।

কনজারভেটিভ দলের এমপি কোরি টোচর গত মাসে হাউস অফ কমন্সে সি-৩৮০ বিল নিয়ে কথা বলেন। তিনি বলেন, কানাডিয়ান এনভায়রনমেন্টাল প্রোটেকশন অ্যাক্টের অধীনে বিষাক্ত পদার্থ হিসেবে উৎপাদিত প্লাস্টিক আইটেমগুলোকে তালিকাভুক্ত করে সেসব নিধনের পদক্ষেপ নেওয়াটা জরুরি। 

অবশ্য এমন একটি তালিকা এরই মধ্যে করা হয়েছে যার অন্যতম উপাদান এই একক ব্যবহারযোগ্য প্লাস্টিক। এই তালিকাটি ছিল ফেডারেল সরকারের একক-ব্যবহারের প্লাস্টিক নিষিদ্ধ করার জন্য একটি বৃহত্তর প্রচেষ্টার অংশ, যা বিশ্বব্যাপী প্লাস্টিক দূষণ সম্পর্কে ক্রমবর্ধমান উদ্বেগের প্রতিক্রিয়া হিসেবে নেওয়া পদক্ষেপ।

হাউসে টোচরের বিল নিয়ে বিতর্ক হওয়ার পাঁচ দিন পরে, কনজারভেটিভ এমপি ব্র্যান্ডেন লেসলি একটি আট মিনিটের ভিডিও পোস্টে বলেন, পুনঃব্যবহারযোগ্য ব্যাগ ব্যবহার বাড়াতে হবে। কেনাকাটা, খাওয়া, সমুদ্রে ভ্রমণ ইত্যাদি ক্ষেত্রে প্লাস্টিক এড়িয়ে এর বিকল্প ব্যবহারে ঝুঁকতে হবে।

ডালহৌসি বিশ্ববিদ্যালয়ের রিসোর্স এবং পরিবেশগত গবেষণার স্কুলের অধ্যাপক টনি ওয়াকার বলেন, ‘আমাদের অবশ্যই একক ব্যবহারযোগ্য প্লাস্টিকের উৎপাদন বন্ধ করতে হবে।’ 

উল্লেখ্য, কানাডার পরিসংখ্যান অনুযায়ী,, ২০১৬ সালে কানাডার ব্যবহৃত প্লাস্টিক বর্জ্যের পরিমাণ ছিল ২৯ হাজার টন। ২০১৯ সালে সেই প্লাস্টিক দূষণের পরিমাণ দাঁড়ায় ৪৩ হাজার ১৪০ টনে। এ পরিস্থিতি মোকাবিলার অংশ হিসেবেই ২০২০ সালে দেশটিতে সি-৩৮০ বিল উত্থাপন করা হয়। সেই ফেডারেল মূল্যায়নে বলা হয়, যেহেতু প্লাস্টিক খুব ধীরে ধীরে হ্রাস পায় এবং পরিবেশে স্থায়ী অবস্থান নেয়, তাই প্লাস্টিক দূষণের পরিমাণ সময়ের সাথে সাথে বাড়তেই থাকবে। প্লাস্টিক দূষণের ফলে পরিবেশ এবং মানুষের স্বাস্থ্যের উপর যে বিরূপ প্রভাব পড়ছে তাতে উদ্বেগ বাড়ছে। এর সমাধানে উদ্যোগ নিতে হবে।’

ওয়ার্ল্ড ওয়াইল্ডলাইফ ফান্ড (ডব্লিউডব্লিউএফ) অনুসারে, একক-ব্যবহারের প্লাস্টিক ধীরে ধীরে এবং ধীরে ধীরে প্লাস্টিকের ছোট ছোট টুকরোতে ভেঙে যায় যা মাইক্রোপ্লাস্টিক নামে পরিচিত। এসব প্লাস্টিক পরিবেশের জন্য ক্ষতিকর কারণ এটি অ-বায়োডিগ্রেডেবল এবং পুরোপুরি বিচ্ছিন্ন হতে কয়েক বছর সময় নেয়। প্লাস্টিকের ব্যাগগু পঁচতে হাজার হাজার বছর সময় লাগতে পারে, এতে মাটি এবং জল দূষিত হয়। প্লাস্টিক তৈরি করতে ব্যবহৃত বিষাক্ত রাসায়নিকগুলো প্রাণীর টিস্যুতে স্থানান্তরিত হয় এবং অবশেষে, মানব খাদ্যশৃঙ্খলে প্রবেশ করে।

কোনো প্লাস্টিকই বায়োডিগ্রেডেবল নয়। তবে কোনো প্লাস্টিক ১০০ মাইক্রনের থেকে পাতলা হলে, তার চরিত্র বেশি ভঙ্গুর হয়। অর্থাৎ, অল্পসময়ের মধ্যেই ছোটো ছোটো টুকরোতে ভেঙে যায় এই ধরনের প্লাস্টিক। যা আমাদের কাছে পরিচিত মাইক্রোপ্লাস্টিক নামে। সাধারণ প্লাস্টিক পণ্যের থেকেও আণুবীক্ষণিক এই প্লাস্টিক কণা দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে বিস্তীর্ণ অঞ্চলে। এই সংক্রান্ত একাধিক তথ্যও সাম্প্রতিক গবেষণায় উঠে এসেছে। পৃথিবীর সর্বোচ্চ শৃঙ্গ মাউন্ট এভারেস্ট থেকে শুরু করে গভীরতম স্থান মারিয়ানা ট্রেঞ্চ-সর্বত্রই হদিশ মিলেছে মাইক্রোপ্লাস্টিকের। বাস্ততন্ত্রের ক্ষতিসাধন তো বটেই, খাদ্য এবং শ্বাস-প্রশ্বাসের সঙ্গে মানুষের দেহেও অবাধে প্রবেশ করছে মাইক্রোপ্লাস্টিক।

;

আরাকান আর্মির দখলে মিয়ানমারের বুথিডং শহর



আন্তর্জাতিক ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

মিয়ানমারে লড়াইরত একটি সশস্ত্র গোষ্ঠী আরাকান আর্মি (এএ) দাবি করেছে, জান্তা বাহিনীর কাছ থেকে তারা মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যের বুথিডং শহর  দখল করে নিয়েছে।

রোববার (১৯ মে) যুক্তরাজ্যের বার্তাসংস্থা রয়টার্সের কাছে আরাকান আর্মি (এএ) এ দাবি করে বলেছে, কয়েক সপ্তাহ লড়াইয়ের পর শনিবার রাতে তারা শহরটির দখল নিতে সক্ষম হয়।

এদিকে, রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠী থেকে অভিযোগ করা হয়েছে, আরাকান আর্মি শহর থেকে তাদের বিতাড়িত করছে। তবে এএ অভিযোগের সত্যতা অস্বীকার করেছে।

শহর দখল বিষয়ে আরাকান আর্মির এক মুখপাত্র খিন থু খা রয়টার্সকে জানান, বাংলাদেশ সীমান্তবর্তী শহর বুথিডং শহর কয়েক সপ্তাহের লড়াইয়ের পর জান্তা বাহিনীর কাছ থেকে দখল নিতে সক্ষম হয়েছে।

এক টেলিফোন বার্তায় তিনি রয়টার্সের প্রতিনিধিকে জানান, শনিবার রাতে সামরিক জান্তার কাছ থেকে বুথিডং শহরের সেনা ঘাটি আরাকান আর্মি পুরোপুরি দখল করে নিয়েছে এবং সেইসঙ্গে পুরো শহরটি তারা নিয়ন্ত্রণ করছে।

অপরদিকে, সংখ্যালঘু রোহিঙ্গা মুসলিম জনগোষ্ঠীর কয়েকজন অভিযোগ করেছেন, আরাকান আর্মি তাদেরকে জোর করে বুথিডং ও এর আশপাশের এলাকা থেকে বিতাড়িত করছে।

এ বিষয়ে ‘ফ্রি রোহিঙ্গা কোয়ালিশন অ্যাডভোকেসি' গ্রুপের সহপ্রতিষ্ঠাতা নে সান লুউন কয়েকজন প্রত্যক্ষদর্শীর বরাত দিয়ে জানিয়েছেন, শহরতলির কয়েকটি এলাকায় আরাকান আর্মির সদস্যরা রোহিঙ্গাদের পালিয়ে যেতে বাধ্য করে এবং এসময় কারো কারো বাড়িঘরে আগুন ধরিয়ে দেয়।

আরাকান আর্মির বুথিডং শহরের দখলের বিষয়ে জান্তা বাহিনীর কোনো প্রতিক্রিয়া জানাতে পারেনি রয়টার্স।

;