আমলনামা সমৃদ্ধ করার উপায়

  • ইসলাম ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
  • |
  • Font increase
  • Font Decrease

আমলনামা সমৃদ্ধ করার উপায়, ছবি: বার্তা২৪.কম

আমলনামা সমৃদ্ধ করার উপায়, ছবি: বার্তা২৪.কম

মানুষের জীবন অতি মূল্যবান। তাই জীবনে সবধরণের অনর্থক কথা ও কাজ থেকে বেঁচে থাকা জরুরি। নবী করিম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম উম্মতকে এ শিক্ষাই দিয়েছেন। অনেক হাদিসে জীবনের গুরুত্ব ও তাৎপর্য বর্ণনা করেছেন।

জীবনে আমরা যদি চিন্তা-ভাবনা করি, তাহলে আমাদের বুঝে আসবে, জীবনের মূহূর্তগুলো কত মূল্যবান। ইসলামি স্কলাররা বলেছেন, জীবনের সঠিক মূল্য বুঝে আসবে আখেরাতে। কারণ, তখন চাইলেও একটি নেকি অর্জন করা সম্ভব হবে না।

বিজ্ঞাপন

পরকালের ওই সময় প্রসঙ্গে হাদিসে আছে, সাহাবি হজরত আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, নবী করিম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম একদিন সদ্য দাফনকৃত একটি কবরের পাশ দিয়ে যাচ্ছিলেন। তখন সাহাবিদের লক্ষ্য করে বললেন, দুই রাকাত নামাজ, তোমরা যেটাকে সামান্য মনে কর, এই ব্যক্তির কাছে এই দুই রাকাত নামাজ- যা তার আমলনামাকে সমৃদ্ধ করবে; সারা দুনিয়া থেকে উত্তম। -মাজমাউয যাওয়ায়েদ: ৩৫০৬

অর্থাৎ তোমরা কখনও তাড়াতাড়ি দুই রাকাত নামাজ পড়ে নাও আর এটাকে সামান্য মনে কর। অথচ তা সামান্য নয়, এই মৃতব্যক্তি, যে এই কবরের মধ্যে রয়েছে, সে আফসোস করছে এবং আশা করছে, হায় আমার জীবনের আরও কিছু সময় যদি মিলতো, তাহলে আমিও দুই রাকাত পড়ে নিতাম আর তা আমার আমলনামাকে সমৃদ্ধ করত। তার কাছে দুই রাকাত নামাজ দুনিয়া ও দুনিয়ার মধ্যে যা কিছু আছে তার চেয়েও উত্তম।

বিজ্ঞাপন

দুনিয়ায় যত নিয়ামত আছে, যত সম্পদ আছে- সোনা-রূপা, টাকা-পয়সা, পদ-পদবী, রাজত্ব-সাম্রাজ্য, ইজ্জত-সম্মান অর্থাৎ দুনিয়ার যত নিয়ামত; তার কাছে দুই রাকাত নামাজ এসব নিয়ামত হতে উত্তম। এজন্য সে তামান্না করছে, হায়! যদি আমার জীবনের আরও দুই মিনিট মিলে যেত তাহলে দুই রাকাত নামাজ পড়ে নিতাম! তোমরা দুই রাকাত নামাজকে সামান্য মনে কর; তার কাছে জিজ্ঞেস করো- দুই রাকাত নামাজ কত মূল্যবান!

মানুষ দুনিয়ার জীবন কীভাবে আখেরাতের কাজে ব্যবহার করবে? এ প্রশ্নের উত্তরে আলেমরা বলেছেন, এজন্য চারটি কাজ করতে হবে।

১. গুনাহ থেকে বাঁচা: যাবতীয় গুনাহ থেকে খাঁটি তওবা করা এবং ভবিষ্যতে তা থেকে বেঁচে থাকার একনিষ্ঠ ইচ্ছা করা।

২. সবকাজ আল্লাহর জন্য করা: যেসব কাজ যাতে দুনিয়া-আখেরাতের ফায়দা রয়েছে, তা আল্লাহর সন্তুষ্টির নিয়তে করা। সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত আমরা যত কাজ করি, এর মধ্যে কিছু রয়েছে ইবাদত এবং কিছু রয়েছে দুনিয়ার বৈধ কাজ। এসব কাজে আল্লাহতায়ালার সন্তুষ্টির নিয়ত করব। তাহলে সবকিছুই কাজে আসবে- ইনশাআল্লাহ।

৩. জিকিরের অভ্যাস: বেশি বেশি জিকিরের অভ্যাস করা। এটা অনেক বড় সম্পদ। যখন কারও জিকিরের অভ্যাস হয়ে যায় তখন শুয়ে-বসে, চলতে-ফিরতেও তার জবান আল্লাহর জিকিরে মশগুল থাকে। সে আল্লাহর প্রিয় বান্দায় কবুল হয়।

৪. অনর্থক কাজ ছেড়ে দেওয়া: যাবতীয় অনর্থক কাজ, কথা-বার্তা, আলাপ-আলোচনা, মজলিস ও প্রোগ্রাম থেকে নিজেকে বাঁচানো।

এভাবে প্রতিদিন সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত এই চার কাজের হিসাব করলে দুনিয়া ও আখেরাতে সফলতা অর্জন সহজ হবে।