সোবহানবাগ মসজিদ ১০ তলা হচ্ছে
রাজধানী ঢাকার ঐতিহ্যবাহী সোবহানবাগ জামে মসজিদ ১৯৩৭ সালে প্রতিষ্ঠিত হয়। মসজিদের বর্তমান ভবনে নামাজ আদায় করতে আসা মুসল্লিদের স্থান সংকুলন হচ্ছিল না দীর্ঘদিন ধরেই। ফলে ৮৪ বছরের পুরনো মসজিদ পুনর্নির্মাণ করে ১০ তলায় সম্প্রসারণ করা হবে। আগামী নভেম্বর (২০২১) মাস থেকে মসজিদের নতুন ভবনের কাজ শুরু হবে। প্রায় অর্ধশত কোটি টাকা ব্যয়ে মসজিদটি পুনর্নির্মাণ করবে গণপূর্ত অধিদফতর।
বর্তমানে মসজিদটিতে ছয় থেকে সাতশ’ মুসল্লি নামাজ আদায় করতে পারেন। শুক্রবারসহ বিভিন্ন বিশেষ দিনে রাস্তায় মুসল্লিরা নামাজ আদায় করেন। ফলে ঢাকার এই ব্যস্ত সড়কে চলাচলকারীদের নানা ধরনের ভোগান্তি পোহাতে হয়। ১০ তলা মসজিদটির নির্মাণকাজ শেষ হলে অন্তত চার হাজার মুসল্লি একসঙ্গে নামাজ আদায় করতে পারবেন। মুসল্লিদের আর রোদ-বৃষ্টি উপেক্ষা করে রাস্তা আটকে নামাজ আদায় করতে হবে না।
মসজিদ পুনর্নির্মাণ করা হলেও যার নামে এই সোবহানবাগ, সেই মাওলানা মোহাম্মদ আবদুস সোবহানসহ তার পারিবারিক কবরস্থান অক্ষুণ্ণ রেখে কিছু অংশ মসজিদের নতুন ভবনে অন্তর্ভুক্ত করা হবে। কাজ শেষ হলে মসজিদের সামনে মিরপুর সড়কটিও প্রশস্ত হবে। ২০২২ সালের ডিসেম্বরের মধ্যে এটির কাজ শেষ করার কথা রয়েছে।
সোবহানবাগ মসজিদ পুনর্নির্মাণকালে পাশের ধানমন্ডি ১৪ নম্বর সড়কের ওপর স্টিল স্ট্রাকচার দিয়ে একটি অস্থায়ী মসজিদ নির্মাণ করা হচ্ছে, সেখানে নামাজ হবে। মূল মসজিদের কাজ শেষ হলে- সেটি আবার সরিয়ে ফেলা হবে।
১৯৩৭ সালে ৩৫ শতাংশ জমির ওপর সোবহানবাগ মসজিদ ও পাশে পারিবারিক কবরস্থান প্রতিষ্ঠা করেন মাওলানা মোহাম্মদ আবদুস সোবহান। কবরস্থানের নামফলকের তথ্য অনুযায়ী, মসজিদ ও কবরস্থান প্রতিষ্ঠার তিন বছর পর ১৯৪০ সালের ১ ফেব্রুয়ারি মারা যান তিনি। মাঝে একাধিকবার সংস্কার হলেও মসজিদটি সরানোর প্রয়োজন পড়েনি। মসজিদটি ১৯৯২ সালে পাঁচতলা ভিত্তির ওপর পুনর্নির্মাণ করা হয়। বর্তমানে মসজিদের দুদিকের রাস্তা সম্প্রসারিত থাকলেও সামনের রাস্তাটি খুবই সংকীর্ণ। নতুন করে মসজিদটি নির্মাণের পর সামনে রাস্তার পাশে থাকা দোকান ঘরগুলো আর থাকবে না। এদিক দিয়ে ২৬ ফুট সম্প্রসারিত হয়ে রাস্তাটি সোজা হয়ে যাবে।
৮৪ বছরের পুরনো সোবহানবাগ মসজিদের আধুনিকায়ন ও ঊর্ধ্বমুখী সম্প্রসারণের জন্য কয়েক বছর আগে সরকারের শীর্ষ পর্যায় থেকে উদ্যোগ নেওয়া হয়। এ জন্য গণপূর্ত অধিদফতরের একটি প্রকল্প হিসেবে মসজিদটির নির্মাণকাজ হাতে নেয় তারা। ২০১৯ সালের জুলাই থেকে ২০২২ সালের জুলাই পর্যন্ত তিন অর্থবছর মেয়াদে এর প্রাক্কলিত ব্যয় ধরা হয় ৪৯ কোটি ৭৭ লাখ টাকা।
স্থপতি ইকবাল হাবিব সোবহানবাগ মসজিদের ১০ তলা স্থাপনাটির নকশা প্রণয়ন করেছেন। বর্তমান মসজিদটিতে ছয় থেকে সাতশ’ মুসল্লি নামাজ আদায় করতে পারেন। ১০ তলা মসজিদটির নির্মাণকাজ শেষ হলে অন্তত চার হাজার মুসল্লি একসঙ্গে নামাজ আদায় করতে পারবেন।
নতুনভাবে নির্মিত সোবহানবাগ মসজিদটিতে অত্যাধুনিক সব সুবিধাই থাকবে। ভূগর্ভস্থ জলাধার, বিদ্যুৎ সাব-স্টেশন, ১৫০ কেভি জেনারেটর, দুই হাজার কেজি প্যাসেঞ্জার লিফট, পাম্প মোটর সেট, সাউন্ড সিস্টেম, অনগ্রিন সোলার সিস্টেম, অগ্নিনির্বাপণ ব্যবস্থা ও এয়ারকুলারের ব্যবস্থাসহ ক্লোজড সার্কিট ক্যামেরা বসানো হবে।