‘ধর্ম মানুষকে সহিষ্ণুতা আর মানবিকতা শিক্ষা দেয়’

  • ইসলাম ডেস্ক, বার্তা২৪.কম, ঢাকা
  • |
  • Font increase
  • Font Decrease

ছবি: বার্তা ২৪.কম

ছবি: বার্তা ২৪.কম

কোনো ধর্মই হানাহানি ও হিংসার কথা বলে না। সব ধর্ম সহিষ্ণুতা আর মানবিকতা শিক্ষা দেয়। কোনো ধার্মিক ব্যক্তি অন্য ধর্মের মানুষের অধিকার ক্ষুন্ন করতে পারে না।

বুধবার (১০ নভেম্বর) ঝালকাঠি জেলা প্রশাসনের সম্মেলন কক্ষে ‘ধর্মীয় সম্প্রীতি ও সচেতনতা বৃদ্ধিকরণ’ শীর্ষক ধর্মীয় সম্প্রীতি ও সচেতনতামূলক আন্তঃধর্মীয় সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে ধর্ম প্রতিমন্ত্রী মো. ফরিদুল হক খান এমপি এসব কথা বলেন।

বিজ্ঞাপন

প্রতিমন্ত্রী বলেন, সবাই মিলে ঐক্যবদ্ধ প্রচেষ্টার মাধ্যমে বাংলাদেশের ধর্মীয় সম্প্রীতি অক্ষুন্ন রাখতে হবে। সাংবিধানিক দায়বদ্ধতা থেকেই দেশের প্রতিটি নাগরিককে এ দায়িত্ব পালন করতে হবে। সংখ্যাগরিষ্ঠ মুসলিম নাগরিকদের দায়িত্ব বেশি। তাদের কতর্ব্য হলো, অন্যধর্মের মানুষের অধিকার সমুন্নত রাখা। তাদেরকে নিরাপদ রাখার পরিবেশ তৈরি করে দেওয়া। একজন মুসলিম হিসেবে আমি পবিত্র ধর্ম ইসলাম, পবিত্র ধর্ম গ্রন্থ কোরআনের বাণী এবং মহানবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের জীবনী থেকে এ শিক্ষা পাই।

প্রতিমন্ত্রী আরও বলেন, ঐতিহাসিক মদিনা সনদ, বিদায় হজের ভাষণ ও মক্কা বিজয়ের ইতিহাস সাক্ষ্য দেয়, নবী করিম (সা.) অন্য ধর্মের অনুসারীদের প্রতি সদাচরণ করতেন। তিনি সবাইকে নিয়ে সমাজ পরিচালনা করেছেন। মুসলমানদেরকে নবী করিম (সা.)-এর জীবন থেকে শিক্ষাগ্রহণ করতে হবে। সেভাবে চলতে হবে।

বিজ্ঞাপন

ঝালকাঠি জেলা প্রশাসক মো. জোহর আলীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সংলাপ অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য রাখেন ধর্ম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব মো. মুনীম হাসান, ঝালকাঠির পুলিশ সুপার ফাতিহা ইয়াছমিন, ঝালকাঠি আওয়ামী লীগের সভাপতি ও জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান সরদার মোহাম্মদ শাহআলম, ইসলামিক ফাউণ্ডেশনের উপ-পরিচালক মশিউর রহমান, নলছিটি উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান সিদ্দিকুর রহমান, বেদরাজ ইসলামিয়া ফাজিল মাদ্রাসার অধ্যক্ষ আলী হায়দার নিজামী, ঝালকাঠি পৌরসভার কাউন্সিলর তরুণ কর্মকার, সাধু এন্থনী গীর্জা ও ইসলামি আলোচক ড. আবদুল মোমেন সিরাজীসহ অন্যরা।

সংলাপে ঝালকাঠি জেলার জনপ্রতিনিধি, বিভিন্ন দপ্তরের সরকারি কর্মকর্তা, ধর্মীয় নেতৃবৃন্দ, সাংবাদিক ও এনজিও কর্মীসহ বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ অংশগ্রহণ করেন।

পরে ধর্ম প্রতিমন্ত্রী দুপুরে কাউখালী শ্রীগুরু সংঘ কেন্দ্রীয় আশ্রম (কাউখালী, পিরোজপুর) পরিদর্শন এবং বিকাল ৪টায় কাউখালী উপজেলার পিজিএস উচ্চ বিদ্যালয় ও কলেজ মাঠে ইমাম, পুরোহিত, ধর্মীয় ও রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দের উপস্থিতিতে আন্তঃধর্মীয় অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন।

বক্তব্যে ধর্ম প্রতিমন্ত্রী বলেন, স্বাধীনতা যুদ্ধের পরাজিত শক্তি, বঙ্গবন্ধুর হত্যার সঙ্গে যারা জড়িত ছিল, দেশজুড়ে বোমা হামলাকারী উগ্র সাম্প্রদায়িক শক্তি আগামী নির্বাচনকে সামনে রেখে দেশে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির পরিকল্পনা করছে। তাদের ইন্দনে দুষ্কৃতিকারীরা হিন্দু সম্প্রদায়ের বাড়ি-ঘর, মন্দির ও পূজা মণ্ডপে হামলা চালিয়েছে। এই অপশক্তিকে আগামী দিনে ঐক্যবদ্ধভাবে প্রতিহত করতে হবে।

প্রতিমন্ত্রী আরও বলেন, জাতির পিতার নেতৃত্বে মহান মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে অর্জিত বাংলাদেশ আমাদের সবার। অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশ আমাদের সাংবিধানিক ভিত্তি। অশুভ চক্র যেন কোনোভাবেই আর সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বিনষ্ট করতে না পারে এ বিষয়ে সমাজের সবাইকে সজাগ থাকতে হবে।