আখেরি মোনাজাতে শেষ হলো ছারছীনা দরবারের বার্ষিক মাহফিল

  • ইসলাম ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
  • |
  • Font increase
  • Font Decrease

ছারছীনার দরবারের বার্ষিক মাহফিলে আখেরি মোনাজাত পরিচালনা করছেন পীর সাহেব কেবলা শাহ্ মোহাম্মদ মোহেব্বুল্লাহ

ছারছীনার দরবারের বার্ষিক মাহফিলে আখেরি মোনাজাত পরিচালনা করছেন পীর সাহেব কেবলা শাহ্ মোহাম্মদ মোহেব্বুল্লাহ

কয়েক লাখ মুসল্লির অংশগ্রহণে মিলাদ-কিয়াম ও আখেরি মোনাজাতের মাধ্যমে ছারছীনা দরবার শরিফের ১৩১তম ঈসালে সওয়াব মাহফিল শেষ হয়েছে।

বুধবার (১ ডিসেম্বর) বাদ জোহর আখেরি মোনাজাত পরিচালনা করেন ছারছীনা দরবার শরিফের পীর সাহেব কেবলা আলহাজ্ব হজরত মাওলানা শাহ্ মোহাম্মদ মোহেব্বুল্লাহ। মোনাজাতের সময় লাখো মুসল্লির আমিন আমিন ধ্বনিতে কয়েক কিলোমিটার এলাকাজুড়ে এক হৃদয় বিদারক দৃশ্যের অবতারণা হয়।

বিজ্ঞাপন

মোনাজাতের আগে হেদায়েতি বয়ানে হজরত পীর সাহেব কেবলার পক্ষ হতে সরকারের কাছে দু’টি দাবি পেশ করা হয়। পীর সাহেব কেবলা বলেন, ‘দেশে যেমন ডাক্তার, ইঞ্জিনিয়ার ও গবেষক দরকার তেমনি ৯৫% মুসলমানদের দেশে প্রতিটি মুসলমানের জীবনে ইসলামিয়াত অপরিহার্য দরকার। এ জন্য শিক্ষার প্রতিটি ক্ষেত্রে ইসলামিয়াত বাধ্যতামূলক করতে সরকারের প্রতি তিনি আহ্বান জানান।

এ সময় পীর সাহেব বলেন, একটি চক্র সরকারকে ব্যবহার করে বিভিন্ন অনৈসলামিক কার্যকলাপ বাস্তবায়নে উঠে পড়ে লেগেছে। এ বিষয়ে সরকারকে সতর্ক করে এ ধরনের লোকজনকে থেকে ফিরে থাকার আহ্বান জানান।

বিজ্ঞাপন

এর আগে মাহফিলের দ্বিতীয় দিন মঙ্গলবার বাদ এশা বরিশালের ডিআইজি এস. এম. আক্তারুজ্জামান আগত মুসল্লিদের উদ্দেশ্য করে বলেন, ইসলাম শান্তির ধর্ম। হানাহানি, অরাজকতা, গুজবে কান দেওয়া ও আত্মীয়ের হক নষ্ট করা ইসলাম সমর্থন করে না। দেশের শান্তি শৃঙ্খলা বজায় রাখা প্রতিটি নাগরিকের দায়িত্ব ও কর্তব্য। যা ইসলামের শিক্ষা। ইসলাম নারীদের সম্মান দিয়েছে। তাই আমাদের উচিত, প্রতিটি ক্ষেত্রে নারীদের সম্মান দেওয়া। এ ছাড়া সত্য যাচাই না করা পর্যন্ত কারও কোনো ধরণের উসকানিমূলক কথায় কান না দিয়ে সত্য জানতে সবার প্রতি আহ্বান জানান।

মাহফিলে আগত মুসল্লিদের একাংশ

মাহফিলের শেষ দিন বাদ ফজর জিকিরের তালিম দেন বাংলাদেশ জমইয়াতে হিযবুল্লাহর সিনিয়র নায়েবে আমির ও হজরত পীর সাহেব কেবলার বড় সাহেবজাদা আলহাজ্ব হজরত মাওলানা শাহ্ আবু নছর নেছারুদ্দীন আহমদ হুসাইন।

সম্মেলনে কোরআন-সুন্নাহর আলোকে বিজ্ঞ আলেমরা বক্তব্য রাখেন। বয়ানে অংশ নেন- মাওলানা রুহুল আমিন আফসারি, হাফেজ মাওলানা মো. বোরহান উদ্দীন ছালেহি, মাওলানা সিরাজুম মুনীর তাওহিদ, মাওলানা ওসমান গণি ছালেহি প্রমুখ।

মাহফিলে আরও উপস্থিত ছিলেন, বাংলাদেশ জমইয়াতে হিজবুল্লাহর নায়েবে আমির ও বরিশাল জামে এবাদুল্লাহ মসজিদের খতিব আলহাজ্ব মাওলানা মির্জা নূরুর রহমান বেগ, ঢাবির আরবি বিভাগের অধ্যাপক ড. হাফেজ মাওলানা মো. রুহুল আমিন, বরিশাল জেলা পরিষদের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা আহসান হাবিব, পিরোজপুর জেলা পুলিশ সুপার সাইদুর রহমান, নেছারাবাদ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোশারেফ হোসেন, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. ইব্রাহিম, সহকারী পুলিশ সুপার রিয়াজ হোসেন, স্বরূপকাঠী পৌর মেয়র গোলাম কবির, গৌরনদী পৌর মেয়র হারিছুর রহমান, নেছারাবাদ থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আবির মোহাম্মদ হোসেন, মরহুম পীর সাহেব কেবলার সফরসঙ্গী মাওলানা আবু জাফর মোহাম্মদ শামসুদ্দোহা প্রমূখ।

মাহফিলে আখেরি মোনাজাতের আগে আলোচনায় আমিরে হিযবুল্লাহ ছারছীনা শরিফের পীর সাহেব আগত মুসল্লিদের বায়াত করান। এর পর তওবা-ইস্তেগফার ও জিকির-আজকারের মাধ্যমে দ্বীনের ওপর মজবুত থাকার উপদেশ দেন।