দানের এক ডিম সোয়া দুই লাখ রুপিতে বিক্রি



ইসলাম ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
নিলামে তোলা সেই ডিম ও ক্রেতা দানিশ হামিদ, ছবি : সংগৃহীত

নিলামে তোলা সেই ডিম ও ক্রেতা দানিশ হামিদ, ছবি : সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

সাধারণ একটা মুরগির ডিম নিলামে তুলে বিক্রি হয় ভারতীয় মুদ্রায় সোয়া দুই লাখ রুপি, বাংলাদেশি মুদ্রায় প্রায় তিন লাখ টাকা। একটি ডিমের এমন দাম মেলায় অবাক অনেকেই। মাত্র ছয় রুপির একটি ডিমের এত দাম কী করে হলো? কেনই বা নিলামে চড়ানো হলো ডিমটি?

ঘটনা ভারত অধিকৃত কাশ্মীর উপত্যকার সোপোর জেলার মাল মাপানপুরা গ্রামের একটি মসজিদের।

খবরে প্রকাশ, মসজিদ কমিটি সিদ্ধান্ত নেয় যে, ঈদ উপলক্ষে বাড়ি বাড়ি ঘুরে তারা নগদ অর্থ আর বিভিন্ন সামগ্রী দান হিসেবে সংগ্রহ করবে। এ সময় কেউ নগদ অর্থ দিয়েছেন, কেউ থালা-বাসন, মুরগি বা চাল দান করেছেন।

মসজিদ কমিটির এক সদস্য নাসির আহমেদ জানান, ‘আমরা দান সংগ্রহ করছিলাম। তার মধ্যেই একটা ছোট বাড়ি থেকে এক নারী মাথা নিচু করে বেরিয়ে আসেন। আমার কাছে এসে একটা ডিম দিয়ে বলেন, তার দানটা যেন আমি গ্রহণ করি।’ ওই নারী খুবই গরিব। একটা ভাঙাচোরা ছোট্ট ঘরে একমাত্র ছেলের সঙ্গে বাস করেন।

ছয় রুপি দামের সাধারণ ডিমটি গরিব ওই নারী যে আবেগ নিয়ে খোদার নামে দান করেছিলেন, সেটাই ডিমটাকে ‘অমূল্য’ করে তুলে। কমিটির সবার সঙ্গে আলোচনা করে ডিমটাকে নিলামে তোলার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।

ওই নারীর পরিচয় প্রকাশ না করেই নাসির আহমেদ ডিমটাকে নিলামে তোলার কথা ঘোষণা করেন। তিনি নিজেই ১০ রুপি নিয়ে নিলামে প্রথম দর হাঁকেন।

প্রথমেই ডিমটার দাম উঠেছিল ১০ হাজার ভারতীয় টাকা। তারপরে দর বাড়ানো হয়। একটা সময় দাম বাড়তে থাকে, তিন দিন পর্যন্ত নিলাম করা হয় ডিমটি। প্রথম দুই দিনে ১০, ২০, ৩০ আর ৫০ হাজার ভারতীয় টাকা পর্যন্ত দর উঠে। প্রতিবারই ডিমটা ফেরত নিয়ে নেওয়া হতো। এরপর শেষ দিনে সন্ধ্যা ৭টা পর্যন্ত নিলাম চলবে, এরকম একটা ঘোষণা করা হয়। শেষ দিনের নিলামে উপস্থিত ছিলেন সোপোরের ব্যবসায়ী দানিশ হামিদ।

নিলামে দুবার হাঁক দেওয়া হয় ৫৪ হাজার ভারতীয় রুপির। একেবারে শেষ লাইনে দাঁড়িয়ে থাকা হামিদ দর হাঁকেন- ‘৭০ হাজার।’ পরে দাম বাড়তে থাকে এক পর্যায়ে দাম উঠে সোয়া দুই লাখে। সব মিলিয়ে বিক্রি হয় দুই লাখ ২৬ হাজার ৩৫০ ভারতীয় রুপি। 

দানিশ হামিদ জানান, তিনি ডিমটাকে সুন্দর করে সাজিয়ে রাখার জন্য ভালো একটা ফ্রেম বানাবেন।

   

শ্রমিকরা আল্লাহর বন্ধু



পারভীন আকতার, অতিথি লেখক, ইসলাম
শ্রমিককে তার শরীরের ঘাম শুকানোর পূর্বেই পারিশ্রমিক দিয়ে দিতে বলা হয়েছে, ছবি : সংগৃহীত

শ্রমিককে তার শরীরের ঘাম শুকানোর পূর্বেই পারিশ্রমিক দিয়ে দিতে বলা হয়েছে, ছবি : সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

শ্রমিকের ন্যায্য অধিকারের বিষয়ে যদি লক্ষ্য করি, তাহলে দেখতে পাবো যে; ইসলামই শ্রমিকদের যথাযথ পাওনা পরিশোধপূর্বক তাদের সামাজিক মর্যাদা নিশ্চিতের ঘোষণা দিয়েছে। শ্রমিকদের মর্যাদা প্রসঙ্গে নবী কারিম (সা.) ঘোষণা করেন, ‘শ্রমিক হলো আল্লাহর বন্ধু।’ আল্লাহর রাসুল (সা.) দ্ব্যর্থহীন ভাষায় ঘোষণা করেন, শ্রমিককে তার শরীরের ঘাম শুকানোর পূর্বেই তাকে ন্যায্য পারিশ্রমিক দিয়ে দাও।

এ কথা হাদিসে স্পষ্টভাবে এসেছে যে, মানুষ হিসেবে আল্লাহর রাসুল (সা.) পারিবারিক কাজ কর্মসমূহ সম্পাদনে রত থাকতেন। যখন আজান হতো তখন তিনি নামাজ আদায়ের উদ্দেশ্যে বের হয়ে যেতেন। এ দৃষ্টিকোণ থেকে যদি আমরা বিচার করি তাহলে দেখতে পাবো যে, আল্লাহর রাসুল (সা.) কাজ করেছেন।

নবী কারিম (সা.)-এর সাহাবিরাও আল্লাহর রাসুল (সা.)-এর পদাঙ্ক অনুসরণ করে চলতেন। নবী কারিম (সা.)-এর ইন্তেকালের পর সাহাবায়ে কেরাম প্রশাসনের সর্বোচ্চ দায়িত্বে অধিষ্ঠিত থেকেও সাধারণ শ্রমিকের ন্যায় কাজ করে জীবিকা নির্বাহ করতেন।

আল্লাহর রাসুল (সা.) বিদায় হজের দিন আরাফাতের মাঠে দাঁড়িয়ে সুস্পষ্টভাবে ঘোষণা করেছেন, ‘তোমরা যা খাবে ও পরবে তোমাদের অধীনস্থদেরকেও তা খেতে ও পরতে দেবে। তাদের সাধ্যের অতিরিক্ত কোনো কাজ তাদের ওপর চাপানো যাবে না।’

এ সম্পর্কিত একটি বিখ্যাত হাদিস হজরত আবু হুরায়রা (রা.)-এর সূত্রে বর্ণিত, নবী কারিম (সা.) বলেছেন, আল্লাহতায়ালা বলেন- কেয়ামতের দিন আমি তিন ব্যক্তির বিরুদ্ধে ফরিয়াদি হবো। ১. যে ব্যক্তি আমার নামে দান করার ওয়াদা করে তা ভঙ্গ করেছে, ২. যে ব্যক্তি কোনো স্বাধীন ব্যক্তিকে বিক্রি করে তার মূল্য ভোগ করেছে, ৩. আর যে ব্যক্তি কোনো শ্রমিককে কাজে নিযুক্ত করে তার কাছ থেকে পুরোপুরি কাজ আদায় করেছে, আর তার মজুরি পরিশোধ করেনি।’ -সহিহ বোখারি : ২২২৭

নবী কারিম (সা.) শ্রমিক, খাদেম ও চাকর-চাকরানীদের অধিকার আদায়ের ব্যাপারে সবাইকে কঠোরভাবে নির্দেশ দান করতেন। এ মর্মে হাদিসে ইরশাদ হয়েছে, হজরত আবু আলী সুয়াইদ ইবনে মুকরিন (রা.) থেকে বর্ণিত তিনি বলেন, আমি বনি মুকরিন গোত্রের সাত ব্যক্তির মধ্যে সপ্তম ব্যক্তি হিসেবে নিজেকে দেখেছি। আমাদের সবার একটিমাত্র খাদেম (সেবাকারী) ছিল। আমাদের মধ্যে ছোট ব্যক্তি যে ছিল সে খাদেমকে থাপ্পড় দিয়েছিল, তাই রাসুল (সা.) খাদেমটাকে মুক্ত করে দেওয়ার জন্য আমাদেরকে নির্দেশ দিলেন।’ -সহিহ মুসলিম

নবী কারিম (সা.)-এর আরেকটি হাদিসের বর্ণনায় এসেছে, হজরত আবু মাসউদ বদরি (রা.) থেকে বর্ণিত; তিনি বলেন- আমি আমার এক গোলামকে (দোষের কারণে) চাবুক দিয়ে মারছিলাম, হঠাৎ পেছন থেকে শব্দ শুনতে পেলাম- সাবধান; আবু মাসউদ! রাগে উত্তেজিত থাকার কারণে আমি শব্দটা বুঝতে পারলাম না। নিকটে আসতে আমি বুঝলাম তিনি আল্লাহর রাসুল (সা.)। তিনি বলছেন, তুমি তোমার ক্রীতদাসের ওপর যতটুকু ক্ষমতার অধিকারী, তোমার ওপর আল্লাহ তা অপেক্ষাও অধিক ক্ষমতার অধিকারী।

অন্য বর্ণনামতে হজরত রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর ভয়ে আমার হাত থেকে চাবুকটি পড়ে গেল। আমি বললাম, হে আল্লাহর রাসুল! আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য একে আমি দাসত্ব শৃঙ্খল থেকে মুক্ত করে দিলাম। হজরত রাসুলুল্লাহ (সা.) বললেন, যদি তুমি এটা না করতে, জাহান্নামের আগুন তোমাকে বেষ্টন করে নিতো।’ -সহিহ মুসলিম : ১৬৫৯

নবী কারিম (সা.)-এর সঙ্গে যারা আল্লাহর দ্বীন কায়েমের সুমহান দায়িত্ব পালন করেছেন তারাও শ্রমিকদের অধিকার নিশ্চিত করার ক্ষেত্রে বিরামহীন চেষ্টার ত্রুটি করেননি। রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর সব সাহাবি এ বিষয়ে খুবই সচেতন ছিলেন। প্রখ্যাত সাহাবি হজরত আবু যর গিফারি (রা.) নিজে যে ধরনের কাপড় পরিধান করতেন, তার চাকরকেও সে ধরনের কাপড় ব্যবহার করতে দিতেন। খাদ্য, পানীয়সহ যাবতীয় অন্ন-বস্ত্রের ক্ষেত্রে সাহাবিদের নিয়মনীতি ছিল অনন্য দৃষ্টান্ত।

হজরত মুয়াজ ইবনে জাবাল (রা.) এশার নামাজের ইমামতির সময় সুরা বাকারার মতো দীর্ঘ সুরা তেলাওয়াত করতেন। এক্ষেত্রে একজন শ্রমিক সাহাবি জামাত থেকে আলাদা হয়ে একাকী নামাজ আদায় করলে তার বিরুদ্ধে নবী কারিম (সা.)-এর নিকট অভিযোগ দায়ের হলো। আল্লাহর রাসুল (সা.) ওই শ্রমিক সাহাবিকে ডেকে জিজ্ঞেস করলে শ্রমিক সাহাবি শারীরিক পরিশ্রমের কারণে দীর্ঘ সময় দাঁড়িয়ে থাকার অপারগতার কথা আল্লাহর রাসুল (সা.)-কে অবহিত করেন। নবী কারিম (সা.) হজরত মুয়াজ ইবনে জাবাল (রা.)-কে ডেকে এ মর্মে সতর্ক করে দেন যে, জামাতে ইমামতির সময় দীর্ঘ সুরা তেলাওয়াত না করতে। কারণ জামাতে শ্রমিক, বৃদ্ধ, অসুস্থ ও অন্যান্য অসুবিধায় জর্জরিত মুসল্লি থাকতে পারে। তাদের কথা বিবেচনায় রেখে ইমামতি করতে হবে।

এ হাদিসের মর্মার্থটা উল্লেখ করার উদ্দেশ্যটা হলো- একজন শ্রমিক আল্লাহ ও তার রাসুল (সা.)-এর নিকট কত প্রিয় সে বিষয়টা হৃদয়ঙ্গম করার জন্য।

;

হাফপ্যান্ট পরা বিষয়ে ইসলাম কী বলে?



ইসলাম ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
ইসলামে পোশাক কেমন হবে এমন নীতিমালা রয়েছে, ছবি : সংগৃহীত

ইসলামে পোশাক কেমন হবে এমন নীতিমালা রয়েছে, ছবি : সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

রাস্তাঘাটে নানা বয়সী হাফপ্যান্ট পরা মানুষের সংখ্যা দিনদিন বাড়ছে, যা আগে কল্পনাও করা যেত না৷ অথচ হাঁটু ঢেকে কাপড় পরা ফরজ, হাঁটু খোলা রাখা হারাম৷ আর এটা এমন হারাম যা গোপনে নয়, প্রতিনিয়ত জনসম্মুখে পাপে লিপ্ত হতে হয়৷ সমাজের মুসলমানদের মাঝে সেই হারামে লিপ্ত হওয়ার প্রবণতা ও ঝোঁক বেড়েই চলেছে৷ যা কোনোভাবেই কাম্য নয়।

ইসলামি স্কলারদের অভিমত হলো, কোনো গোনাহ প্রকাশ্য করতে করতে একসময় ভেতর থেকে অনুশোচনাবোধের অনুভূতিটুকু নষ্ট হয়ে যায়৷ হাদিসে এসেছে, হজরত রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘আমার উম্মতের সবাইকে মাফ করে দেওয়া হবে, কেবল প্রকাশ্য গোনাহকারী ছাড়া৷’ -সহিহ বোখারি

হাফপ্যান্ট পরা কি জায়েজ?
ইসলাম একজন মুসলিমকে শালীন পোশাক পরিধান বাধ্যতামূলক করে দিয়েছে। ইসলাম ঘোষণা করেছে, পুরুষকে আবশ্যকীয়ভাবে ঢাকতে হবে নাভি থেকে হাঁটু পর্যন্ত। আর নারীর জন্য হাতের কব্জি মুখমণ্ডল পায়ের পাতা ছাড়া সব সতর (মানব শরীরের যেসব অংশ অপরের সামনে ঢেকে রাখা বাধ্যতামূলক, সেটাকে সতর বলে)।

ইসলামে পোশাক কেমন হবে এমন নীতিমালা রয়েছে। প্যান্ট, পায়জামা ইত্যাদি হাঁটুর নিচ অবধি থাকবে, তবে টাখনুর নিচে নয়। আবার পোশাক এতটা আঁটসাঁট হবে না যে, সতরের আকৃতি কাপড়ের ওপর প্রকাশ পায়। হ্যাঁ, পরিধানের প্যান্ট-শার্ট যদি উপর্যুক্ত খারাবি থেকে মুক্ত হয়, তাহলে পরিধান করা নাজায়েজ নয়। অবশ্য এরপরও তা পরিধান করা মাকরুহ। তা ব্যবহার না করাই বাঞ্ছনীয়। -দরসে তিরমিজি : ৫/৩৩২

জ্ঞানের অভাবে অনেকে সঠিক পোশাক নির্বাচন ও অবলম্বন করতে পারেন না। এ প্রসঙ্গে কিছু নীতি ও বৈশিষ্ট্য রয়েছে যা নারী-পুরুষ সবার জন্য প্রযোজ্য। আবার কিছু স্বতন্ত্র বিষয় রয়েছে। এর কয়েকটি হলো-

সতর আবৃত করা
পোশাক এমন হতে হবে যা পুরোপুরি সতর আবৃত করে। পুরুষের জন্য নাভি থেকে হাঁটুর নিচ পর্যন্ত আর নারীর পুরো শরীর সতর। পোশাকের প্রধান উদ্দেশ্যই হলো- সতর ঢাকা। আল্লাহতায়ালা বলেন, ‘হে বনী আদম! আমি তোমাদের জন্য অবতীর্ণ করেছি পোশাক, যা তোমাদের লজ্জাস্থান আবৃত করে এবং সৌন্দর্য দান করে।’ -সুরা আরাফ : ২৬

সুতরাং যে পোশাক এই উদ্দেশ্য পূরণে ব্যর্থ তা শরিয়তের দৃষ্টিতে পোশাক নয়। তা নাজায়েজ পোশাক। এটা পরিত্যাগ করে পূর্ণরূপে সতর আবৃত করে এমন পোশাক গ্রহণ করা জরুরি। যেমন পুরুষের জন্য হাফ প্যান্ট পরা। নারীদের পেট-পিঠ উন্মুক্ত থাকে এমন পোশাক পরিধান করা।

পোশাক অধিক পাতলা ও আঁটসাঁট না হওয়া
যে পোশাক পরিধানের পরও সতর দেখা যায় কিংবা সতরের আকৃতি পোশাকের ওপরে প্রকাশ পায়, তা সতর আবৃত না করার কারণে নাজায়েজ পোশাকের অন্তর্ভুক্ত। এ ধরনের পোশাক পরিধান হারাম।

অহংকার প্রকাশ পায় এমন পোশাক না হওয়া
এমন পোশাক পরিধান করা নিষিদ্ধ, যেগুলোকে শরিয়ত অহংকারীদের নিদর্শন সাব্যস্ত করে। যেমন পুরুষের জন্য রেশমি কাপড় ব্যবহার। হজরত আবু মুসা আশআরি (রা.) থেকে বর্ণিত, হজরত রাসুলুল্লাহ (সা.) ইরশাদ করেন, আমার উম্মতের পুরুষের জন্য রেশম এবং স্বর্ণ হারাম করা হয়েছে। আর নারীদের জন্য এগুলো হালাল করা হয়েছে। -জামে তিরমিজি : ১/৩০২

হজরত আবু জুরাই (রা.)থেকে বর্ণিত, নবী কারিম (সা.) বলেন, টাখনুর নিচে কাপড় পরিধান থেকে বিরত থাকো। কেননা এটা অহংকারবশত হয়ে থাকে। আর আল্লাহতায়ালা অহংকারীকে ভালোবাসেন না। -সুনানে আবু দাউদ : ২/৫৬৪

হাফপ্যান্ট পরে অজুর বিধান
নামাজের মতো মৌলিক ইবাদত ছাড়াও সবসময় অজু করার বিশেষ ফজিলত রয়েছে। হজরত আনাস (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, হজরত রাসুলুল্লাহ (সা.) আমাকে বলেছিলেন, ‘হে আমার বেটা! সম্ভব হলে সবসময় অজু অবস্থায় থাকবে। কেননা মৃত্যুর ফেরেশতা অজু অবস্থায় যার জান কবজ করেন তার শাহাদাতের মর্যাদা লাভ হয়।’ -শোয়াবুল ঈমান, বায়হাকি : ২৭৮৩

স্বাভাবিক শালিন পোশাকে অজু করা উচিত। কারণ, সতর ঢাকা প্রত্যেক মুসলিম নর-নারীর ওপর আবশ্যক। অপরদিকে হাফপ্যান্ট পরলে সতর অনাবৃত থাকে। তাই হাফপ্যান্ট পরা এবং পরিধান করে অজু করা উচিত নয়।

হাদিসে এসেছে, হজরত রাসুলুল্লাহ (সা.) ইরশাদ করেছেন, তোমরা নগ্নতা থেকে বেঁচে থাক। কেননা তোমাদের এমন সঙ্গী আছেন (কিরামান-কাতিবীন) যারা পেশাব-পায়খানা ও স্বামী-স্ত্রীর সহবাসের সময় ছাড়া অন্যকোনো সময় তোমাদের হতে আলাদা হন না। সুতরাং তাদের লজ্জা কর এবং সম্মান কর।’ -সুনানে তিরমিজি : ২৮০০

তারপরও কেউ যদি হাফপ্যান্ট পরে করে অজু করে তাহলে তার অজু হয়ে যাবে। তবে কাজটি অনুচিত এবং এ ব্যাপারে কাউকে উৎসাহিত না করা।

;

এক সপ্তাহে মসজিদে নববিতে ৬০ লাখ জিয়ারতকারী



ইসলাম ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
মসজিদে নববি, ছবি : সংগৃহীত

মসজিদে নববি, ছবি : সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

সংযুক্ত আরব আমিরাত, ওমান, কাতারের পর এবার সৌদি আরবের মক্কা ও মদিনায় ভারী বৃষ্টিপাতের পূর্বাভাস দেওয়া হয়েছে। আগামী সপ্তাহ থেকে এ দুই শহরে ভারী বৃষ্টিপাত শুরু হতে পারে বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছে দেশটির জাতীয় আবহাওয়া অধিদপ্তর। এমন আশঙ্কার মাঝে এক সপ্তাহে মদিনার মসজিদে নববিতে প্রায় ৬০ লাখ জিয়ারতকারী নবী কারিম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের রওজা মোবারক জিয়ারত করেছেন।

সৌদি বার্তা সংস্থা এসপিএ-এর বরাতে জানা যায়, রমজান পরবর্তী সময়ে গত এক সপ্তাহে মসজিদে নববিতে রেকর্ড সংখ্যক জিয়ারতকারী বিশ্বের বিভিন্ন দেশ থেকে নবী কারিম (সা.)-এর রওজা জিয়ারত করতে এসেছেন। তাদের সংখ্যা উল্লেখ করা হয়েছে ৫৯ লাখ ৬০ হাজার ৭২৪ জন।

এসপিএ আরও জানায়, গত এক সপ্তাহে ১ লাখ ৮০ হাজার পবিত্র জমজমের পানির বোতল মসজিদে নববিতে আসা মুসল্লিদের মাঝে বিতরণ করা হয়েছে।

রিয়াজুল জান্নাত তথা হজরত রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর মিম্বর ও কামরার (নবী কারিম সা.-এর বাসস্থান) মধ্যবর্তী স্থানে ২ লাখ ৫৪ হাজার ২০৯ জন নামাজ আদায় করেছেন। যার মধ্যে ১ লাখ ২৩ হাজার পুরুষ ও ১ লাখ ৩০ হাজার ২৭৭ জন নারী রয়েছে।

পবিত্র উমরা পালনকারীরা মক্কায় যাওয়ার আগে বা পরে মদিনা ভ্রমণ করেন। মদিনায় মসজিদে নববিতে নামাজ আদায়ের পাশাপাশি রাসুলে কারিম ( সা.)-এর রওজায় সালাম পেশ, রিয়াজুল জান্নাতে নামাজসহ অন্যান্য নফল ইবাদত পালন করেন। এ ছাড়া বিভিন্ন ঐতিহাসিক স্থান ঘুরে দেখেন।

উল্লেখ্য, এ বছর এপ্রিল মাসে মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোতে দেখা দিয়েছে নজিরবিহীন আবহাওয়া বিপর্যয়। বিরল বৃষ্টিতে প্লাবিত হচ্ছে একের পর এক মরুর দেশ।

সংবাদমাধ্যম গালফ নিউজের প্রতিবেদন অনুসারে, আগামী মে মাসের প্রথম সপ্তাহে উত্তর রিয়াদ ও পূর্ব প্রদেশের পূর্বাঞ্চলে বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা রয়েছে। কেন্দ্রীয় সরকার তালিকাভুক্ত অঞ্চলের বাসিন্দাদের এই সময়ে আবহাওয়ার পূর্বাভাস ও আগাম সতর্কতা মেনে চলার পরামর্শ দিয়েছে।

উর্দু নিউজ অবলম্বনে মুফতি উমর ফারুক আশিকী

;

বিপদাপদ কাটছেই না, কারণ জেনে নিন



ইসলাম ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
ফজরের নামাজ আদায়কারী আল্লাহর জিম্মায় থাকে, ছবি : সংগৃহীত

ফজরের নামাজ আদায়কারী আল্লাহর জিম্মায় থাকে, ছবি : সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

নানাবিধ আমল, চিকিৎসা ও চেষ্টা-তদবির সত্ত্বেও অসুস্থতা থেকে সুস্থ হতে বিলম্ব হয় কিংবা নিরাপত্তা বিঘ্নিত হয়- ফরজ নামাজ ঠিকমতো আদায় না করার কারণে। বিশেষ করে ফজরের নামাজ।

ফজরের নামাজ আদায়কারী দয়াময় আল্লাহর জিম্মায় থাকে। আল্লাহতায়ালা তাকে নিরাপত্তার চাদরে ঢেকে রাখেন। সুতরাং তাকে যে অযথা কষ্ট দেবে, অন্যায়-অবিচার করবে, আল্লাহ তাকে কঠোর শাস্তি দেবেন। এ সম্পর্কে হজরত রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি ফজরের নামাজ আদায় করল, সে আল্লাহর নিরাপত্তা লাভ করল। আর আল্লাহতায়ালা যদি তার নিরাপত্তা প্রদানের হক কারও থেকে দাবি করে বসেন, তাহলে সে আর রক্ষা পাবে না। তাই তাকে মুখ থুবড়ে জাহান্নামের আগুনে নিক্ষেপ করবেন।’ -সহিহ মুসলিম : ৬৫৭

এর মানে হলো, যে ফজরের নামাজ আদায় করল না; সে আল্লাহর নিরাপত্তায় থাকে না। তো যে ব্যক্তি আল্লাহর নিরাপত্তায় থাকে না, তাকে পৃথিবীর কে নিরাপত্তা দেবে? তাকে কে সুস্থ করবে?

সমাজের অনেকেই আছেন, বাকি চার ওয়াক্ত নামাজ ঠিকমতো আদায় করেন। ফজরের নামাজ মাঝে-মধ্যে ছাড়েন কিংবা মাঝে-মধ্যে পড়েন। তাদের নিরাপত্তায় তো সমস্যা হবেই।

সারা বছরে একদিনও ফজরের নামাজ ছাড়া যাবে না। কখনও ঘুম থেকে উঠতে দেরি হলে উঠেই সর্বপ্রথম ফজরের নামাজ পড়তে হবে- যদি সেটা নিষিদ্ধ সময় না হয়। এভাবে চলতে থাকলে আমল ও প্রচেষ্টার ফল দ্রুত পাওয়া যাবে- ইনশাআল্লাহ।

আরেকটি কথা, আমল নিয়মিত করতে হবে এবং কাঙ্ক্ষিত জিনিসটি চাইতে হবে। আমরা অনেকেই অনেক আমল করি, কিন্তু আমলের বিনিময়ে আমি কী চাচ্ছি; এটাই জানি না। প্রত্যেকটি আমলের বিনিময়ে আখেরাতের ফজিলত তো পাবেনই, দুনিয়ার কোনো নেক উদ্দেশ্যও হাসিল করতে পারেন।

মনে রাখতে হবে, আমল, নিয়ত, ফজরের নামাজ ও দীর্ঘদিনের বদ অভ্যাস থেকে বেরিয়ে আসা সহজ ও সুন্দর জীবনের অন্যতম নিয়ামক।

;