দানের এক ডিম সোয়া দুই লাখ রুপিতে বিক্রি
সাধারণ একটা মুরগির ডিম নিলামে তুলে বিক্রি হয় ভারতীয় মুদ্রায় সোয়া দুই লাখ রুপি, বাংলাদেশি মুদ্রায় প্রায় তিন লাখ টাকা। একটি ডিমের এমন দাম মেলায় অবাক অনেকেই। মাত্র ছয় রুপির একটি ডিমের এত দাম কী করে হলো? কেনই বা নিলামে চড়ানো হলো ডিমটি?
ঘটনা ভারত অধিকৃত কাশ্মীর উপত্যকার সোপোর জেলার মাল মাপানপুরা গ্রামের একটি মসজিদের।
খবরে প্রকাশ, মসজিদ কমিটি সিদ্ধান্ত নেয় যে, ঈদ উপলক্ষে বাড়ি বাড়ি ঘুরে তারা নগদ অর্থ আর বিভিন্ন সামগ্রী দান হিসেবে সংগ্রহ করবে। এ সময় কেউ নগদ অর্থ দিয়েছেন, কেউ থালা-বাসন, মুরগি বা চাল দান করেছেন।
মসজিদ কমিটির এক সদস্য নাসির আহমেদ জানান, ‘আমরা দান সংগ্রহ করছিলাম। তার মধ্যেই একটা ছোট বাড়ি থেকে এক নারী মাথা নিচু করে বেরিয়ে আসেন। আমার কাছে এসে একটা ডিম দিয়ে বলেন, তার দানটা যেন আমি গ্রহণ করি।’ ওই নারী খুবই গরিব। একটা ভাঙাচোরা ছোট্ট ঘরে একমাত্র ছেলের সঙ্গে বাস করেন।
ছয় রুপি দামের সাধারণ ডিমটি গরিব ওই নারী যে আবেগ নিয়ে খোদার নামে দান করেছিলেন, সেটাই ডিমটাকে ‘অমূল্য’ করে তুলে। কমিটির সবার সঙ্গে আলোচনা করে ডিমটাকে নিলামে তোলার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
ওই নারীর পরিচয় প্রকাশ না করেই নাসির আহমেদ ডিমটাকে নিলামে তোলার কথা ঘোষণা করেন। তিনি নিজেই ১০ রুপি নিয়ে নিলামে প্রথম দর হাঁকেন।
প্রথমেই ডিমটার দাম উঠেছিল ১০ হাজার ভারতীয় টাকা। তারপরে দর বাড়ানো হয়। একটা সময় দাম বাড়তে থাকে, তিন দিন পর্যন্ত নিলাম করা হয় ডিমটি। প্রথম দুই দিনে ১০, ২০, ৩০ আর ৫০ হাজার ভারতীয় টাকা পর্যন্ত দর উঠে। প্রতিবারই ডিমটা ফেরত নিয়ে নেওয়া হতো। এরপর শেষ দিনে সন্ধ্যা ৭টা পর্যন্ত নিলাম চলবে, এরকম একটা ঘোষণা করা হয়। শেষ দিনের নিলামে উপস্থিত ছিলেন সোপোরের ব্যবসায়ী দানিশ হামিদ।
নিলামে দুবার হাঁক দেওয়া হয় ৫৪ হাজার ভারতীয় রুপির। একেবারে শেষ লাইনে দাঁড়িয়ে থাকা হামিদ দর হাঁকেন- ‘৭০ হাজার।’ পরে দাম বাড়তে থাকে এক পর্যায়ে দাম উঠে সোয়া দুই লাখে। সব মিলিয়ে বিক্রি হয় দুই লাখ ২৬ হাজার ৩৫০ ভারতীয় রুপি।
দানিশ হামিদ জানান, তিনি ডিমটাকে সুন্দর করে সাজিয়ে রাখার জন্য ভালো একটা ফ্রেম বানাবেন।