মদিনার সেরা ৪ দর্শনীয় স্থান

  • ইসলাম ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
  • |
  • Font increase
  • Font Decrease

মদিনার সেরা ৪ দর্শনীয় স্থান

মদিনার সেরা ৪ দর্শনীয় স্থান

মদিনা মোনাওয়ারা মুসলমানদের প্রাণের ভূমি, নবীজির (সা.) শহর; শান্তির নগর। রাসুলে করিম (সা.) বলেন, ‘যে আমার রওজা জিয়ারত করল, তার জন্য আমার শাফায়াত ওয়াজিব। তিনি আরও বলেন, যে হজ করল- কিন্তু আমার রওজা জিয়ারত করল না, সে আমার প্রতি জুলুম করল।’

দুনিয়ার সব মুমিনের আবেগ-উচ্ছ্বাসের কেন্দ্রস্থল মদিনা। আল্লাহতায়ালা কোরআন মাজিদে মদিনাকে অনেক নামে সম্বোধন করেছেন। আরদুল্লাহ বা আল্লাহর ভূমি, আরদুল হিজর বা হিজরতের ভূমি। দুনিয়ার বুকে মদিনার মতো এত অধিক নাম বিশিষ্ট জনপদ আর দ্বিতীয়টি নেই।

বিজ্ঞাপন

মসজিদে নববির পরে মদিনার ৪টি সেরা দর্শনীয় স্থান হলো-

রওজা শরিফ
মসজিদে নববির সর্বাপেক্ষা গুরুত্বপূর্ণ স্থান নবী কারিম (সা.)-এর রওজা মোবারক। হজরত আয়েশা (রা.)-এর হুজরার (কামরা, বাসস্থান) মধ্যে তার রওজা শরিফ অবস্থিত। এটি বর্তমানে মসজিদে নববির অন্তর্গত। এরই পাশে হজরত আবু বকর (রা.) এবং তার পাশে হজরত ওমর (রা.)-এর কবর। এর পাশে আরেকটি কবরের জায়গা খালি আছে, এখানে হজরত ঈসা (আ.)-এর কবর হবে।

বিজ্ঞাপন
হজরত রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর রওজা

রওজা শরিফের ওপর সবুজ গম্বুজ অবস্থিত। তার পাশেই মসজিদে নববির মিহরাবের ওপরে রয়েছে সাদা গম্বুজ। যে মসজিদের সবুজ গম্বুজের ছায়ায় ঘুমিয়ে আছেন শেষ নবী মুহাম্মদুর রাসুলুল্লাহ (সা.)। মসজিদে নববির দক্ষিণ-পশ্চিম কোণের প্রবেশপথকে বাবুস সালাম বলা হয়। মসজিদে নববির পূর্ব পাশের বহির্গমন দরজাকে বাবে জিবরাইল বলা হয়। রওজা শরিফ ও এর থেকে পশ্চিম দিকে রাসুল (সা.)-এর মিম্বার পর্যন্ত স্থানকে রিয়াজুল জান্নাত বা বেহেশতের বাগিচা বলা হয়।

মসজিদে নববিতে রাসুল (সা.) যে স্থানে দাঁড়িয়ে নামাজের ইমামতি করতেন সেই মিহরাবকে মিহরাবুন নবী বলা হয়। হজরত জিবরাইল (আ.) যে স্থানে দাঁড়িয়ে নামাজ পড়েছেন সেটি মিহরাবে জিবরাইল নামে পরিচিত। জিয়ারতকারীরা প্রাণভরে, মন উজাড় করে রাসুলের রওজায় দরুদ ও সালাম পেশ করেন।

জান্নাতুল বাকি
মসজিদে নববির পূর্ব দিকে অবস্থিত এই কবরস্থানে নবী কন্যা হজরত ফাতেমা (রা.), রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর অধিকাংশ স্ত্রীসহ অসংখ্য সাহাবি, তাবেয়িন, আউলিয়া, পীর-বুজুর্গ ও ধার্মিক মুসলমানের কবর রয়েছে। এর একপাশে নতুন নতুন কবর হচ্ছে প্রতিনিয়ত। এখানে শুধু একটি পাথর দিয়ে চিহ্নিত করা আছে একেকটি কবর।

জান্নাতুল বাকি

এক কথায়, জান্নাতুল বাকি যেখানে ঘুমিয়ে নুরানি কাফেলা। কবর জিয়ারত অন্তরকে নরম করে এবং পরবর্তী জীবনের কথা মনে করিয়ে দেয়।

মসজিদে কুবা
মুসলমানদের প্রথম মসজিদ হচ্ছে- মসজিদে কুবা। মসজিদে নববি থেকে চার কিলোমিটার দক্ষিণ-পশ্চিমে এই মসজিদ। ধবধবে সাদা রঙের অনন্য নির্মাণশৈলীর এই মসজিদের নাম রাখা হয়েছে একটি কূপের নামানুসারে।

মসজিদে কুবা

হজরত মুহাম্মদ (সা.) মক্কা থেকে হিজরত করে মদিনায় আসার পর সাহাবিদের নিয়ে নিজের পবিত্র হাতে এই মসজিদ তৈরি করেন। হজরত রাসুলুল্লাহ (সা.) মদিনায় ঢুকে শহরের প্রবেশদ্বার কুবায় নামাজ পড়েন। এই মসজিদে দুই রাকাত নামাজ আদায়ে এক উমরার সওয়াব পাওয়া যায়।

উহুদ পাহাড়
ইসলামের ইতিহাসে দ্বিতীয় যুদ্ধ হয় এই পাহাড় ঘিরে। দুই মাথাওয়ালা একটি পাহাড়, মাঝে একটু নিচু। তৃতীয় হিজরির শাওয়াল মাসে উহুদ যুদ্ধ হয়। উহুদ পাহাড় মদিনার সাড়ে পাঁচ কিলোমিটার উত্তরে অবস্থিত। পাথরের এই পাহাড়ের উচ্চতা ৩৫০ মিটার। পূর্ব থেকে পশ্চিমে ৯ কিলোমিটার দীর্ঘ পাহাড়টির প্রস্থ ১০০ থেকে ৩০০ মিটার।

উহুদ পাহাড়

উহুদের রণ প্রান্তরে হজরত হামজা (রা.) সহ ৭০ জন সাহাবি শহীদ হয়েছিলেন। এই উহুদ প্রান্তরে বিধর্মীরা নির্মমভাবে হজরত রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর দন্ত মোবারক শহীদ করে। এখানে একটি মসজিদ আছে।

যদিও মদিনার জিয়ারত হজের রোকন নয়, তথাপি যারা মদিনাওয়ালার আশেক তারা মদিনার জিয়ারতে থাকে আত্মহারা পাগলপারা। মসজিদে নববি এবং রওজায়ে আতহার মদিনার অন্যতম আকর্ষণ। এ ছাড়া মদিনায় অসংখ্য খেজুরবাগান রয়েছে।

আরও পড়ুন : নবী কারিম (সা.)-এর রওজা জিয়ারতের গুরুত্ব

এর বাইরে মদিনার দর্শনীয় স্থানের অন্যতম হলো- মসজিদে নববির পাশে অবস্থিত কোরআন মিউজিয়াম, মসজিদে আবু বকর, মসজিদে উমর, মসজিদে আলী, গামামা মসজিদ, বিলাল মসজিদ, মসজিদে কিবলাতাইন, জুমা মসজিদ, উসমান ইবনে আফফান মসজিদ, ইমাম বোখারি মসজিদ, খন্দক এলাকা, ওসমানীয় আমলের আল হেজাজ রেল স্টেশন জাদুঘর, সালমান ফারসির কথিত বাগান, এটা মসজিদে নববির দক্ষিণে অবস্থিত খেজুরবাগান, ইজাবা মসজিদ, কেন্দ্রীয় খেজুর মার্কেট ও আল শাজারাহ মসজিদ।