সন্তানদের মাধ্যমে হজের স্বপ্ন পূরণ
কুয়ালালামপুর আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের বাইরে হজ থেকে ফেরা মুহাম্মদ ইউনুস সাফওয়ান শিশুদের মতো তার দুই ছেলেক বুকে জড়িয়ে ধরে হাউমাউ কেঁদে চলছেন। এ কান্না কিন্তু স্বজনদের থেকে কয়েকদিন দূরে থাকার বেদনা থেকে নয়, এটা স্বপ্ন পূরণের কান্না; আনন্দের কান্না।
কান্নাজড়িত কণ্ঠে মুহাম্মদ ইউনুস বলছিলেন, ‘যৌবনে আমি হজে যেতে চেয়েছিলাম, কিন্তু সে সময় আমার ভাগ্য সহায় ছিল না, তেমন রোজগার করতে পারতাম না। কিন্তু এই শিশুরা (বর্তমানে তরুণ) আমার স্বপ্নকে বাস্তবায়িত করতে সহায়তা করেছে।’
মালয়েশিয়ার দক্ষিণাঞ্চলীয় শহর জোহরের বাসিন্দা ৬৬ বছর বয়সী মুহাম্মদ ইউনুস সাফওয়ান তার হজযাত্রার কাহিনী এভাবেই বর্ণনা করছিলেন।
তিনি বলেন, ‘আমি অনেক কষ্টের ও সীমাবদ্ধ জীবন কাটিয়েছি। গত ৩০ বছর মালয়েশিয়ান এয়ারলাইন্সে নিরাপত্তাকর্মী হিসেবে কাজ করি, বেতন খুবই সীমিত।’
কিন্তু আমার একটাই স্বপ্ন ছিল, অবসরের আগে হজ করা। শুরুতে মনে হয়েছিল, এক থেকে দুই বছরের মধ্যে হজের টাকা জোগাড় করব। হজের জন্য আবেদন জমা দিয়েছিলাম কিন্তু সংসারের খরচ এবং জীবনের চাহিদা পূরণের জন্য আমাকে ২০ বছর ধরে অপেক্ষা করতে হয়েছে। আমার সমস্ত সঞ্চয় ব্যয় হয়ে যায়। পরে ভাবি, অবসরে প্রাপ্ত টাকা দিয়ে হজের ফরজ আদায় করব।
মুহাম্মদ ইউনুস আরও বলেন, এই বছরের শুরুতে একটি ভালো খবর পাই। মালয়েশিয়ার কর্তৃপক্ষ আমার হজের অনুরোধ অনুমোদন করেন।
‘আমি এই খবরে খুশি হই, কিন্তু আমার হৃদয় বিষণ্ণ ছিল। কারণ অর্থ সংগ্রহ করা হয়নি, এমতাবস্থায় আমার সন্তানরা এই স্বপ্ন বাস্তবায়নে আমাকে সমর্থন করেছে এবং এক লাখেরও বেশি সৌদি রিয়াল দিয়ে আমাকে অবাক করেছে।’
মালয়েশিয়ান এই হাজি বলেন, মক্কায় পৌঁছে কাবার সামনে সন্তানদের কল্যাণের জন্য আল্লাহর কাছে দোয়া করে। তারা আমার দীর্ঘদিনের ইচ্ছা পূরণে সহায়তা করেছে, তাদেরও স্বপ্ন পূরণে আল্লাহ সহায়তা করবেন।
তিনি বলেন, পরিবারের ঐক্য ও শক্তির সঙ্গে কোনো কিছুর তুলনা হয় না এবং এই সুখের কোনো তুলনা নেই।