সীমান্ত ও জনপদ পাহারার সওয়াব
বিশ্বের প্রতিটি দেশ সীমান্ত রক্ষার জন্য অতন্দ্র প্রহরী নিযুক্ত করে থাকেন। তারা জীবনের ঝুঁকি নিয়ে সীমান্ত রক্ষা করছেন। মানুষের জান-মাল নিরাপত্তার বিধান নিশ্চিত করছেন। রাষ্ট্রীয় আইনে আইনে এটা নিঃসন্দেহে প্রশংসনীয় উদ্যোগ।
ইসলাম সীমান্ত রক্ষাকে ইবাদত হিসেবে ঘোষণা করেছে। কোরআন মাজিদে বর্ণিত হয়েছে, হে মুমিনগণ! সবর অবলম্বন করো, মোকাবিলার সময় অবিচলতা প্রদর্শন করো এবং সীমান্ত রক্ষায় স্থিত থাকো। আর আল্লাহতায়ালাকে ভয় করে চলো, যাতে তোমরা সফলকাম হতে পারো। -সুরা আলে ইমরান : ২০০
ইসলামি রাষ্ট্রের সীমান্ত রক্ষার প্রতিদান পৃথিবীর সবকিছু থেকে উত্তম। হজরত সাহল ইবনে সাদ সাঈদি (রা.) থেকে বর্ণিত, হজরত রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, আল্লাহর পথে একদিন সীমান্ত পাহারা দেওয়া দুনিয়া ও এর ওপর যা কিছু আছে তার চাইতে উত্তম। জান্নাতে তোমাদের কারও চিবুক পরিমাণ জায়গা দুনিয়া এবং ভূপৃষ্ঠের সমস্ত কিছুর চাইতে উত্তম। আল্লাহর পথে বান্দার একটি সকাল বা বিকাল ব্যয় করা দুনিয়া এবং ভূপৃষ্ঠের সব কিছুর চাইতে উত্তম। -সহিহ বোখারি : ২৬৯৩
সীমান্ত প্রহরা সদকায়ে জারিয়া হিসেবে গণ্য। মৃত্যুর পরও এর সওয়াব পাওয়া যায়। হজরত সালমান (রা.) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি হজরত রাসুলুল্লাহ (সা.) কে বলতে শুনেছি, আল্লাহর রাহে একটি দিবস ও একটি রাতের সীমান্ত প্রহরা একমাস রোজা পালন এবং ইবাদতে রাত জাগরণের চাইতেও উত্তম। আর যদি এ অবস্থায় তার মৃত্যু ঘটে, তাতে তার এ আমলের সওয়াব জারি থাকবে। এবং তার (শহীদসুলভ) রিজিক অব্যাহত রাখা হবে এবং সে ব্যক্তি ফেতনাবাজদের থেকে নিরাপদে থাকবে। -সহিহ মুসলিম : ৪৭৮৫
দেশের অভ্যন্তরে ভয়ঙ্কর স্থানে প্রহরায় নিয়োজিত ব্যক্তিবর্গের কাজকে লাইলাতুল কদরের চেয়ে উত্তম বলা হয়েছে। হজরত আবদুল্লাহ ইবনে ওমর (রা.) থেকে বর্ণিত, নবী কারিম (সা.) বলেন, আমি কি তোমাদের কদরের রাতের থেকেও শ্রেষ্ঠ রাতের কথা জানাবো না? সে ওই পাহারাদারের রাত, যে ভয়সঙ্কুল স্থানে পাহারা দেয়, তার আশঙ্কা হয় যে সে হয়তো তার পরিবারে জীবিত ফিরতে পারবে না। -মুসতাদরাক হাকেম : ২৪২৪
নিজের জীবন ও পরিবার পরিজনের হেফাজতের দায়িত্বে নিহত হওয়া ব্যক্তির জন্য সর্বোচ্চ পুরস্কার শহীদ ঘোষণা করা হয়েছে। হজরত সাঈদ ইবনে জায়েদ (রা.) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি হজরত রাসুলুল্লাহ (সা.) কে বলতে শুনেছি, যে ব্যক্তি তার সম্পদ রক্ষার্থে নিহত হয় সে শহীদ। যে ব্যক্তি তার দ্বীন রক্ষার্থে নিহত হয় সে শহীদ। যে ব্যক্তি তার জান রক্ষার্থে নিহত হয় সে শহীদ। যে ব্যক্তি তার স্বজন রক্ষার্থে নিহত হয় সে শহীদ। -জামে তিরমিজি : ১৪২১