নবীদের নেতা মুহাম্মদ সা.

  • মাওলানা আবদুল জাব্বার, অতিথি লেখক, ইসলাম
  • |
  • Font increase
  • Font Decrease

ক্যালিগ্রাফি রাসুলুল্লাহ (সা.), ছবি: সংগৃহীত

ক্যালিগ্রাফি রাসুলুল্লাহ (সা.), ছবি: সংগৃহীত

মহানবী মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের একটি উপাধি হলো- সাইয়্যিদুল আম্বিয়া বা নবীদের সর্দার। আল্লাহতায়ালা তাকে সব নবী-রাসুলের ওপর নেতৃত্বের মর্যাদা দান করেছেন।

হজরত আবদুল্লাহ ইবনে আব্বাস (রা.) থেকে বর্ণিত, একবার সাহাবায়ে কেরাম পরস্পর বসে নবীদের সম্পর্কে আলোচনা করছিলেন। এমন সময় হজরত রাসুলুল্লাহ (সা.) ঘর থেকে বাইরে এলেন এবং তাদের এই আলোচনা শুনতে পেলেন। একজন বললেন, আল্লাহতায়ালা হজরত ইবরাহিম (আ.)-কে তার বন্ধু হিসেবে গ্রহণ করছেন। অন্যজন বললেন, হজরত মুসা (আ.)-এর সঙ্গে আল্লাহতায়ালা কোনো মাধ্যম ছাড়াই সরাসরি কথা বলেন। আরেকজন বললেন, হজরত ঈসা (আ.) তো আল্লাহর ‘কালিমা’ অর্থাৎ তিনি বাহ্যিক কোনো উপকরণ ছাড়াই আল্লাহর নির্দেশ ‘হয়ে যাও’-এর মাধ্যমে সৃষ্টি হয়েছেন। শৈশবে দোলনা থেকেই তিনি মানুষের সঙ্গে কথা বলেছেন। তাকে মহান আল্লাহ নিজের ‘রুহ’ বলে অভিহিত করেছেন।

বিজ্ঞাপন

আরেকজন বললেন, হজরত আদম (আ.)-কে আল্লাহতায়ালা বিশেষভাবে সম্মানিত করেছেন। অতঃপর হজরত রাসুলুল্লাহ (সা.) তাদের সামনে উপস্থিত হলেন এবং বললেন, আমি তোমাদের কথা এবং নবীদের সম্মানের ব্যাপারে বিস্মিত হতে দেখেছি। তোমরা বলছিলে, হজরত ইবরাহিম (আ.) আল্লাহর বন্ধু। তিনি এ রকমই। হজরত মুসা (আ.) আল্লাহর সঙ্গে কথা বলেছেন। নিঃসন্দেহে তিনি এ রকমই। হজরত ঈসা (আ.) আল্লাহর বাণী ও তার রুহ। নিশ্চয়ই তিনি তা-ই। হজরত আদম (আ.)-কে আল্লাহ সম্মানিত করেছেন। তিনিও বাস্তবে তা-ই ছিলেন।

কিন্তু শুনে রাখো, আমি হলাম আল্লাহর হাবিব, অর্থাৎ প্রিয়তম। এটা আমার অহংকার নয়। কেয়ামতের দিন আমিই প্রশংসার ঝাণ্ডা উড্ডীন করব, যার নিচে থাকবেন হজরত আদম (আ.)-সহ অন্যরাও। কেয়ামতের দিন আমিই প্রথম সুপারিশকারী হবো এবং আমার সুপারিশই সর্বপ্রথম কবুল হবে। এতে কোনো অহংকার নেই। আমিই প্রথম ব্যক্তি হিসেবে বেহেশতের দরজায় কড়া নাড়ব। অতঃপর আল্লাহতায়ালা বেহেশতের দরজা খুলে আমাকে প্রবেশ করাবেন। সে সময় আমার সঙ্গে থাকবে দরিদ্র মুসলিমরা। এটাও আমি অহংকার করে বলছি না। পূর্বাপর সব মানুষের মধ্যে আল্লাহর কাছে আমিই সর্বাধিক সম্মানিত। এতেও অহংকার নেই। -মিশকাতুল মাসাবিহ : ৫২৩

বিজ্ঞাপন

অন্য হাদিসে আরও ইরশাদ হয়েছে, কেয়ামতের দিন নবী কারিম (সা.) নবী-রাসুলদের মুখপাত্র হিসেবে দায়িত্ব পালন করবেন।

হজরত উবাই ইবনে কাব (রা.) থেকে বর্ণিত, হজরত রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, কেয়ামতের দিন আমি নবীদের ইমাম ও খতিব (মুখপাত্র) হবো, আমি সবার সুপারিশকারী হবো। এ কথা আমি অহংকার ছাড়াই বলছি। -মিশকাত : ৫১৩

কোরআনে কারিমে আল্লাহতায়ালা নবী মুহাম্মদ (সা.)-এর প্রশংসায় বলেন, ‘হে নবী! আমরা আপনাকে পাঠিয়েছি সাক্ষ্যদাতা, সুসংবাদদাতা, ভীতি প্রদর্শক ও উজ্জ্বল প্রদীপরূপে।’ -সুরা আহজাব : ৪৫-৪৬

অন্য আয়াতে রাসুলের দায়িত্ব সম্পর্কে বলা হয়েছে, ‘যেমন আমি তোমাদের থেকেই তোমাদের মধ্যে একজন রাসুল পাঠিয়েছি। সে তোমাদের আমার আয়াত পড়ে শোনাবে, তোমাদের জীবনকে পরিশুদ্ধ ও বিকশিত করে তুলবে।’ -সুরা বাকারা : ১৫১