মসজিদে জন্ম ও মৃত্যুর দিনে দোয়ার বিধান

  • ইসলাম ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
  • |
  • Font increase
  • Font Decrease

মসজিদে জন্ম ও মৃত্যুর দিনে দোয়ার বিধান, ছবি: সংগৃহীত

মসজিদে জন্ম ও মৃত্যুর দিনে দোয়ার বিধান, ছবি: সংগৃহীত

নানা সময় মসজিদের ইমাম-খতিবকে সরকারি ও বিরোধী দলের নেতা-নেত্রীদের জন্ম ও মৃত্যু তারিখে আয়োজনভিত্তিক দোয়ার জন্য বলা হয়। সরকার নিয়ন্ত্রিত মসজিদগুলোতে তো দোয়া করতেই হয়। কোনো কোনো ইমাম এড়িয়ে যেতে পারলেও দোয়া করতেই হয়, এটা অনেকটা রীতিতে পরিণত হয়েছে।

কিন্তু ক্ষমতার পট-পরিবর্তন হলে এটা নিয়ে সংশ্লিষ্ট ইমাম-খতিবকে ঝামেলা পোহাতে হয়, হারাতে হয় চাকরি। যদিও তিনি কমিটি কিংবা স্থানীয় প্রভাবশালীদের চাপে অনেকটা বাধ্য হয়ে দোয়া করেছেন।

বিজ্ঞাপন

উদ্ভুত বিষয়ে ইমামদের করণীয় প্রসঙ্গে ইসলামি স্কলারদের অভিমত হলো- জন্মবার্ষিকী-মৃত্যুবার্ষিকী পালন এবং একে কেন্দ্র করে অনুষ্ঠানের আয়োজন করা ইসলামের শিক্ষা নয়। এগুলো বিজাতীয় সংস্কৃতি। এ জাতীয় অহেতুক সব কাজ থেকে মুসলমানদের বিরত থাকা আবশ্যক।

শরিয়তে জন্ম দিবস বা মৃত্যু দিবসের আলাদা কোনো গুরুত্ব নেই। বিশেষভাবে এই দিনে কোনো ধরনের দোয়া বা আমল-ইবাদতের বিধান নেই।

আর মৃত ব্যক্তিদের জন্য মাগফিরাতের দোয়া করা, ঈসালে সওয়াব করা শরিয়ত স্বীকৃত। তবে এজন্য কোনো দিনক্ষণ নির্দিষ্ট নেই। বরং যেকোনো দিন যেকোনো সময় তাদের জন্য দোয়া করা, নফল নামাজ, দান-সদকা, ইত্যাদির মাধ্যমে ঈসালে সওয়াব করা যেতে পারে। কোনো নির্দিষ্ট দিনে বা সময়ে এমনটি করলে বিশেষ সওয়াব পাওয়া যাবে- এমন নয়।

পূর্ববর্তী আলেমদের যুগেও নির্দিষ্ট দিনে মৃত ব্যক্তিদের জন্য দোয়া-ঈসালে সওয়াবের আয়োজনের প্রমাণ নেই। ইসলামের শিক্ষা হচ্ছে, মৃতের সন্তান-আত্মীয়স্বজন সব সময়ই মরহুমদের (মৃতদের) মাগফিরাতের দোয়া করবে, সাধ্যমতো ঈসালে সওয়াব করবে। বছরে কেবল নির্দিষ্ট এক-দুদিন এসব প্রচলিত কর্মসূচিময় দোয়া, ঈসালে সওয়াবের আয়োজন করে সারাবছর উদাস থাকা- যেমন ইসলামের শিক্ষা নয়; তেমনি তা আদর্শ সন্তানেরও আচরণ হতে পারে না।

সুতরাং জন্মদিবস, মৃত্যুদিবস পালন বা বিশেষভাবে এ দিনগুলোতে ঈসালে সওয়াবের আয়োজন থেকে বিরত থাকা জরুরি।

কোনো মুসল্লি মসজিদে এ জাতীয় আয়োজন করতে চাইলে ইমাম সাহেব প্রজ্ঞা ও হেকমতের সঙ্গে বিষয়টির শরঈ দিকটা তাদের বুঝিয়ে বলবেন। এসব প্রচলিত লোকদেখানো আয়োজনের পরিবর্তে মৃত ব্যক্তির জন্য সুন্নাহসম্মত ঈসালে সওয়াবের প্রতি তাদের উদ্বুদ্ধ করবেন।

এর পরও কেউ এমন আয়োজন করলে বা এসব দিনে ইমাম সাহেবকে কারো জন্য দোয়া করতে বললে সেক্ষেত্রে ফেতনা-ফাসাদ ও বিশৃঙ্খলা থেকে বাঁচতে ইমাম সাহেব সাধারণভাবে (একজন মুমিনের মাগফিরাতের নিয়তে, বিশেষ দিবস হিসেবে নয়) ওই মৃত ব্যক্তিসহ সব মুসলমানের জন্য দোয়া করতে পারেন। এক্ষেত্রে সম্ভব হলে দোয়ার আগে বা পরে শরিয়তের আলোকে বিষয়টি স্পষ্ট করার চেষ্টা করা।