বাবার দোয়ায় মসজিদে হারামের ইমাম!

  • ইসলাম ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
  • |
  • Font increase
  • Font Decrease

মসজিদে হারামের ইমাম শায়খ ওয়ালিদ আশ শামসান, ছবি: সংগৃহীত

মসজিদে হারামের ইমাম শায়খ ওয়ালিদ আশ শামসান, ছবি: সংগৃহীত

সন্তানের জন্য পিতা দোয়া করেছিলেন, তার ছেলে যেন মসজিদে নববির ইমাম হন, আল্লাহতায়ালা তাকে কবুল করেন মসজিদে হারামের ইমাম হিসেবে! এই সন্তান হলেন- সদ্য মসজিদে হারামে ইমাম হিসেবে নিয়োগ পাওয়া শায়খ ওয়ালিদ আশ শামসান।

৩ অক্টোবর (২০২৪) মসজিদে হারাম এবং মসজিদে নববির পরিচালনা পরিষদের প্রধান শায়খ আবদুর রহমান আস সুদাইস রাজকীয় আদেশ অনুসরণ করে মসজিদে হারামের ইমাম হিসেবে নিয়োগ দিয়েছেন।

বিজ্ঞাপন

১৯৭৪ সালে সৌদি আরবের রিয়াদ অঞ্চলের উনাইযার আল কাসিমে জন্মগ্রহণ করেন তিনি। পুরো নাম আল ওয়ালিদ বিন খালেদ বিন ইবরাহিম আল শামসান।

এই অঞ্চল শত শত বছর ধরে বিখ্যাত বিখ্যাত ধর্মীয় ব্যক্তিত্ব উপহার দিয়ে যাচ্ছে। এরই ধারাবাহিকতায় ছেলে ওয়ালিদের ৪০ বছর বয়সে (২০১৩ সালে) বাবা খালেদ বিন ইবরাহিম আল শামসান সামাজিক মাধ্যম এক্সে পোস্ট করেন, ‘সন্তান যেন মসজিদে নববির ইমাম হতে পারে, এ জন্য তিনি আল্লাহতায়ালার কাছে দোয়াও করেন।’

সন্তানের জন্য পিতার আকাঙ্ক্ষামূলক দোয়া আল্লাহতায়ালা কবুল করেন আরও উত্তমভাবে। সন্তান নিয়োগ পেয়েছেন পবিত্র কাবার ইমাম হিসেবে।

রোববার (৬ অক্টোবর) ফজরের নামাজের ইমামতির মধ্য দিয়ে কাবার এই নতুন ইমাম তার যাত্রা শুরু করেন। অবশ্য আগে থেকেই কাবা প্রাঙ্গণে ইমামতি করার অভিজ্ঞতা রয়েছে শায়খ আল ওয়ালিদ আশ শামসানের।

গত বছর তিনি মসজিদে হারামের তারাবির নামাজের অতিথি ইমাম হিসেবে নিয়োগ পান। শায়খ আশ শামসান নরম সুরে কোরআন তেলাওয়াত এবং মিষ্টি কণ্ঠের জন্য প্রসিদ্ধ। গতবছর তারাবি, তাহাজ্জুদ ও বিতরের নামাজে তার কোরআন তেলাওয়াত, উচ্চারণ ও অর্থের সঙ্গে মিল রেখে তেলাওয়াতের জন্য খুবই প্রশংসিত হয়। সুরা আর রাহমান, সুরা আল ওয়াকিয়া, সুরা কাফ তিনি যে ভিন্ন ধাঁচে রমজানের শেষ দিনগুলোতে তেলাওয়াত করেছেন, তা মক্কার পঁচিশ লক্ষাধিক মুসল্লিকে বিমোহিত করে।

শায়খ আল ওয়ালিদ আশ শামসান শুধুমাত্র একজন ইমামই নন। তিনি সৌদি আরবের একজন বিশিষ্ট ধর্মীয় ব্যক্তিত্ব। শরিয়া ও আইনশাস্ত্রে তার ব্যাপক পড়াশোনা রয়েছে। শায়খ ইমাম মুহাম্মাদ বিন সৌদ ইসলামি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে শরিয়ায় স্নাতক ডিগ্রি অর্জন করে উম্মুল কুরা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে তুলনামূলক আইনশাস্ত্রে ডক্টরেট ডিগ্রি অর্জন করেন।

১৯৯৫ সালে ইমাম এবং ধর্ম প্রচারক হিসেবে কর্মজীবন শুরু করেন। সৌদি আরবের বিখ্যাত অনেক মসজিদে তিনি ইমাম ও খতিব হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন।

মসজিদে নববির প্রবীণতম ইমাম শায়খ আলী আল হুজাইফির কাছ থেকে হাফসের সনদ লাভ করেন। অধ্যাপক ড. মুহাম্মাদ সালাম রাবির কাছ থেকে শাতেবিয়া ও দুররা পদ্ধতিতে দশ কেরাতের সনদ গ্রহণ করেন।

সহকারী অধ্যাপক হিসেবে মদিনা ইসলামি বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষকতার পাশাপাশি ১৪৩১ হিজরিতে মাত্র ইসলামের প্রথম মসজিদ মসজিদে কুবার ইমাম হিসেবে নিয়োগ পান। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম এবং ইউটিউবে তার অনেক ধর্মীয় বক্তৃতা এবং কোরআন তেলাওয়াত রয়েছে।

শায়খ আল ওয়ালিদের নিয়োগকে সৌদি জনগণ এবং মুসলিম বিশ্বের সাধারণ মানুষ ব্যাপকভাবে স্বাগত জানিয়েছে। কারণ মসজিদে হারামের ইমামতিতে যে কেউ অধিষ্ঠিত হতে পারে না, এটি একটি সর্বশ্রেষ্ঠ ধর্মীয় পদ হিসেবে বিবেচিত।