দুর্দশা ও সংকট থেকে মুক্তির ৬ আমল

  • ইসলাম ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
  • |
  • Font increase
  • Font Decrease

দুর্দশা ও সংকট থেকে মুক্তির ৬ আমল, ছবি: সংগৃহীত

দুর্দশা ও সংকট থেকে মুক্তির ৬ আমল, ছবি: সংগৃহীত

এক জ্ঞানী লোক একবার ভীষণ দুর্দশায় পড়লেন। তখন তার ভাইয়েরা তাকে সান্ত্বনা দেওয়ার চেষ্টা করল। জবাবে তিনি বলেন, আমি ছয়টি উপাদানকে আমার ওষুধ বানিয়েছি। সেগুলো হলো-

১. সর্বশক্তিমান আল্লাহতায়ালার ওপর দৃঢ় বিশ্বাস রাখা।
২. তাকদিরে যা আছে তা অলঙ্ঘনীয়ভাবে ঘটবে- এ সত্য কথা মেনে নেওয়া।
৩. দুর্দশাগ্রস্ত ব্যক্তি ধৈর্যের সুফল পাবে, এর কোনো বিকল্প নেই।
৪. ধৈর্য না ধরে আমি কী করতে পারি? এ কথার নিহিতার্থে অবিচল আস্থা রাখা।
৫. নিজেকে নিজে এই প্রশ্ন করা, ‘আমার নিজের ধ্বংস করার জন্য আমি কেন একজন ইচ্ছুক ব্যক্তি হবো?’
৬. এ কথা জানা যে, মুহূর্তেই অবস্থার পরিবর্তন ঘটে, বিপদ দূর হয়ে যায় বা যেতে পারে।

বিজ্ঞাপন

আলেমরা বলেন, কোনো মানুষ যদি আপনার ক্ষতি করে, আপনাকে যাতনা দেয় বা আপনি অত্যাচারিত হন অথবা অন্যের হিংসার শিকার হন- তবে দুঃখ করবেন না। শায়খুল ইসলাম আল্লামা ইবনে তাইমিয়া (রহ.) বলেছেন, ‘মুমিন ঝগড়া করে না, প্রতিশোধও নেয় না এবং অন্যের ছিদ্রান্বেষণও করে না অর্থাৎ অন্যের দোষও তালাশ করে না।’

একজন বিজ্ঞ লোক বলেছেন, ‘হে সময়! তোমার নিকট যদি অবশিষ্ট কিছু (সময়) থাকে, যা দিয়ে তুমি যোগ্য ও মর্যাদাবানদের অপদস্থ করো। তবে তা তুমি আমাকে দাও।’

বিজ্ঞাপন

অর্থাৎ হে সময়! তুমি যতই দীর্ঘ হও না কেন, তোমার দীর্ঘতার চেয়ে আমার ধৈর্য অনেক বেশি। তাই তুমি আমার যোগ্যতা ও মর্যাদার হানি করতে পারবে না।

ধৈর্য হলো- উদ্বেগের বিপরীত, ধৈর্য শান্তির ফল বহন করে। যে ব্যক্তি স্বেচ্ছায় ধৈর্য ধরে না, পরিস্থিতির কারণে সে ধৈর্য ধরতে বাধ্য হয়।

আল মুতানাব্বি বলেছেন, ‘সময় আমার ওপর এতটাই সমস্যার (তীর) নিক্ষেপ করেছে যে তীরে তীরে আমার হৃদয়ে আবরণ পড়ে গেছে, এখন যখন আমি কোনো তীর দ্বারা আক্রান্ত হই, তখন আমি সমস্যার প্রতি ভ্রুক্ষেপ ছাড়াই বেঁচে আছি; কেননা উদ্বিগ্ন হয়ে আমি লাভবান হইনি।’

কেউ যদি আপনার কোনো উপকার করতে অস্বীকৃতি জানায় অথবা আপনাকে যদি ভ্রুকুটি করা হয় অথবা কোনো কৃপণ ব্যক্তি যদি আপনাকে ফিরিয়ে দেয়, তবে ব্যথাতুর হবেন না। আপনি অন্যের কাছে কিছু চাওয়া থেকে বিরত থাকুন। এর মাধ্যমে লাঞ্ছনা থেকে বাঁচতে পারেন তবে বিশাল বাড়ি ও সুন্দর বাগানের চেয়ে কুঁড়েঘর বা তাঁবুই আপনার জন্য শ্রেয়।

তীব্র মানসিক যাতনা রোগের মতোই, এটা শেষ হওয়ার আগ পর্যন্ত এর পূর্ণ মেয়াদকাল ধরে চলবে। আর যে এটাকে তাড়াতাড়ি দূর করে দিতে চায় সে প্রায়ই এটাকে বৃদ্ধি করে। দুর্দশাগ্রস্ত লোকের ধৈর্য ধরা বাধ্যতামূলক। তাকে অবশ্যই শান্তির আশায় থাকতে হবে। তাকে নামাজ, প্রার্থনা ও ইবাদতে অবিচল থাকতে হবে।