সংস্কার শেষে নামাজ শুরু ৬০০ বছরের পুরোনো মসজিদে
প্রয়োজনীয় সংস্কার শেষে নামাজের জন্য আবারও খুলে দেওয়া হয়েছে দক্ষিণ-পশ্চিম তুরস্কের আন্তালিয়া অঞ্চলের সারি হাজিলার মসজিদ। ৬০০ বছর পুরোনো এই মসজিদটি সংস্কারের জন্য ২০১৯ সালে কাজ ধরা হয়। করোনাসহ নানা কারণে নির্ধারিত সময়ে সংস্কারকাজ শেষ হয়নি।
সারি হাজিলার গ্রাম সংস্কৃতি ও পর্যটন অ্যাসোসিয়েশনের চেয়ারম্যান মেহমেত ওরহান কেন জানিয়েছেন, ‘মসজিদের সংস্কার কাজ শুরু হয় ২০১৯ সালে। এটি শেষ হতে ১৮ মাস সময় লাগার কথা ছিল। কিন্তু করোনা মহামারির কারণে সংস্কারের সময় তিন বছর বাড়ানো হয়। এখন সংস্কার সম্পন্ন হয়েছে এবং নামাজের জন্য মসজিদটি আবারও খুলে দেওয়া হয়েছে।’
৬০০ বছর আগে মসজিদটির যে মেরহাব, মিম্বর ও গম্বুজ তৈরি করা হয়েছিল সেগুলো এখনও আছে। বিশেষজ্ঞরা মসজিদটির কাঠের তৈরি ছাদ, দুর্বল হয়ে যাওয়া দেওয়াল, মসজিদটির ওঠানের মেঝে এবং বিশ্রামের জায়গাটি খুব সতর্কতার সঙ্গে সংস্কার করেছেন।
তাদের লক্ষ্য ছিল, কয়েকশ বছরের পুরোনো মসজিদটিকে অক্ষত অবস্থায় পরবর্তী প্রজন্মের কাছে পৌঁছে দেওয়া। যেন তারাও অসাধারণ এই স্থাপত্যটি দেখতে পারে।
মসজিদটির বিশেষ বৈশিষ্ট হলো, এর মেরহাব, মেঝে, ছাদ, দরজা, জানালা, নারীদের নামাজের স্থান ও মিম্বর সবকিছুই কাঠের তৈরি। এগুলো এখন পর্যন্ত সম্পূর্ণভাবে সংরক্ষিত রয়েছে। ধারণা করা হয়, আনাতোলিয়ান সেলজুক আমলে (খ্রিস্টাব্দ ১৩০৭-১৩০৮) মসজিদটি নির্মাণ করা হয়েছে।
মেহমেত ওরহান কেন আরও জানিয়েছেন, মসজিদটির সংস্কার এ কারণে উল্লেখযোগ্য যে, এটা এই অঞ্চলের পর্যটনকে সাহায্য করে এবং দেশি ও বিদেশি পর্যটকদের কাছে একটি জনপ্রিয় স্থান হয়ে উঠেছে। কারণ, তুর্কি মসজিদগুলোর মধ্যে এই জায়গাটির ৬০০ বছরের সমৃদ্ধ ইতিহাস রয়েছে।
আন্তালিয়ার আকস্কি জেলার এই মসজিদের মেহরাব, ছাদ, দরজা-জানালার অলঙ্করণের শৈল্পিক মূল্য বিবেচনায় সংস্কার করা হয়েছে গুরুত্ব দিয়ে। ফলে মসজিদের সাজসজ্জায় ব্যবহৃত রঙগুলোর প্রকৃত অবয়ব ফুটিয়ে তুলতে অনেক সময় ব্যয় হয়েছে।
মসজিদের দেয়াল ইসলামিক মোটিফে সজ্জিত কারুকাজগুলো কাঠের খোদাইয়ের মাঝে অংকিত। এই নকশার গুণগত মান বিবেচনায় মসজিদের সংস্কারে বিশেষ স্থাপত্য শৈলী রীতি অনুসরণ করতে হয়েছে। বিশেষ করে বিশেষজ্ঞদের তত্ত্বাকধানে কাঠের ছাদ, দুর্বল দেয়াল, মেঝে এবং টয়লেট এলাকা পুনর্গঠনের ক্ষেত্রে।
মেহমেত ওরহান বলেন, আমরা চেয়েছি, মসজিদের ঐতিহাসিক বৈশিষ্ট্যগুলোসহ প্রাচীন এই ঐতিহ্যকে ভবিষ্যৎ প্রজন্মের কাছে হস্তান্তর করতে। কেননা, এটি একটি অনন্য স্থাপত্য, যা অন্য শিল্পকর্মের মতো নয়।