যতক্ষণ বান্দা দরূদ পড়তে থাকে ফেরেশতারা দোয়া করতে থাকেন

  • ইসলাম ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
  • |
  • Font increase
  • Font Decrease

হাদিসে দরূদের অনেক ফজিলতের কথা বর্ণিত হয়েছে, ছবি: সংগৃহীত

হাদিসে দরূদের অনেক ফজিলতের কথা বর্ণিত হয়েছে, ছবি: সংগৃহীত

ঈমানদারদের প্রতি আল্লাহতায়ালার নির্দেশ হলো, তোমরা নবীজীর প্রতি দরূদ ও সালাম পেশ করো। আল্লাহতায়ালা বলেন, ‘আল্লাহ ও তার ফেরেশতাগণ নবীর প্রতি রহমত প্রেরণ করেন। হে মুমিনগণ! তোমরা নবীর জন্যে রহমতের তরে দোয়া করো এবং তার প্রতি সালাম প্রেরণ করো।’ -সূরা আহজাব : ৫৬

অতএব দরূদ পাঠের মাধ্যমে মহান রবের মহান নির্দেশ পালিত হয়। এছাড়া যেখানে খোদ রাব্বুল আলামিন স্বীয় হাবিবের প্রতি দরূদ প্রেরণ করছেন, ফেরেশতারাও পেশ করছেন নবীজীর প্রতি দরূদ; ঊর্ধ্বজগতে গুঞ্জরিত হচ্ছে নবীর শানে দরূদ, সেখানে আমিও এই ধরাধাম থেকে দয়ার নবীর প্রতি দরূদ ও সালাম পেশ করার মাধ্যমে শামিল হচ্ছি সেই মোবারক কাফেলায়।

বিজ্ঞাপন

ঈমানদারদের ওপর যখন আল্লাহতায়ালার পক্ষ থেকে নবীজীর প্রতি দরূদ পেশ করার নির্দেশ আসে, তখন সাহাবায়ে কেরাম অস্থির হয়ে পড়েন- কীভাবে নবীজীর প্রতি দরূদ পেশ করা যায়। তারা এ বিষয়ে নবীজীকে জিজ্ঞাসা করলে নবীজী (সা.) তাদেরকে দরূদ শরিফ শিখিয়ে দেন।

হজরত কাব ইবনে উজরাহ (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন- ‘যখন (আল্লাহ ও তার ফেরেশতাগণ নবীর প্রতি রহমত প্রেরণ করেন। হে মুমিনগণ! তোমরা নবীর জন্যে রহমতের তরে দোয়া করো এবং তার প্রতি সালাম প্রেরণ করো।) আয়াতটি নাজিল হয় তখন সাহাবিরা বললেন, ইয়া নাবিয়্যাল্লাহ! আমরা আপনার প্রতি কীভাবে দরূদ পাঠ করব?

বিজ্ঞাপন

নবীজী (সা.) বললেন, তোমরা বলো, হে আল্লাহ! আপনি সালাত ও রহমত বর্ষণ করুন মুহাম্মদের প্রতি এবং মুহাম্মদের পরিবার-পরিজনের প্রতি। যেভাবে আপনি ইবরাহিমের প্রতি এবং ইবরাহিমের পরিবারের প্রতি রহমত বর্ষণ করেছেন। নিশ্চয় আপনি প্রশংসিত এবং মর্যাদাবান। আপনি বরকত নাজিল করুন মুহাম্মদের ওপর এবং মুহাম্মদের পরিবারের ওপর। যেভাবে আপনি বরকত নাজিল করেছেন ইবরাহিমের পরিবারের ওপর এবং ইবরাহিমের পরিবারের ওপর। নিশ্চয় আপনি প্রশংসিত এবং মর্যাদাবান। -মুসনাদে আহমাদ : ১৮১৩৩

এ ধরনের বর্ণনা আরো অনেক সাহাবি থেকে এসেছে। সকলে নবীজীর কাছ থেকে জিজ্ঞাসা করে করে দরূদ শিখে নিয়েছেন।

লক্ষণীয় বিষয় হলো, নবীজীর প্রতি দরূদ পেশ করার এ নির্দেশনাটিকে সাহাবায়ে কেরাম নিজেদের জন্য অনেক বড় তোহফা মনে করতেন। সহিহ বোখারির বর্ণনা মতে, সাহাবি হজরত কাব (রা.) তাবেয়ি হজরত আবদুর রহমান ইবনে আবি লাইলাকে বললেন, ‘আমি কি তোমাকে সেই হাদিয়া দেব না, যা আমি নবীজী থেকে লাভ করেছি? এরপর তিনি তাকে দরূদে ইবরাহিম শিখিয়ে দেন। সাহাবায়ে কেরাম দরূদের এ আমলকে অনেক বড় গনীমত ও উপঢৌকন মনে করতেন এবং এর কদর ও মূল্যায়ন করতেন।

বান্দা যতক্ষণ দরূদ পড়তে থাকে, ফেরেশতাগণ ততক্ষণ তার জন্য রহমত, বরকত এবং মাগফিরাতের দোয়া করতে থাকেন। হাদিস শরিফে এসেছে, আমার ওপর কেউ দরূদ পড়লে ফেরেশতাগণ তার জন্য দোয়া করতে থাকে যতক্ষণ সে আমার প্রতি দরূদে রত থাকে। এখন বান্দার ইচ্ছা, বেশি বেশি দরূদ পড়বে- না কম। -মুসনাদে আহমাদ : ১৫৬৮০

হাদিসের এ বক্তব্য শোনার পর আমাদের সিদ্ধান্ত নেওয়া দরকার, আমরা দরূদের প্রতি কতটুকু মনোযোগী হবো। আল্লাহতায়ালা সব মুসলমানকে বেশি বেশি দরূদের আমল করার তওফিক দান করুন। আমিন।