২২ ফেব্রুয়ারি হাব নির্বাচন, প্রতিদ্বন্দ্বিতায় তিন প্যানেল!
বেসরকারি হজ এজেন্সি মালিকদের সংগঠন হজ এজেন্সিজ অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (হাব) দ্বি-বার্ষিক (২০২৫-২০২৭) নির্বাচনের তারিখ ঘোষণা করা হয়েছে।
আগামী ২২ ফেব্রুয়ারি রাজধানীর কাকরাইল ইনস্টিটিউট অব ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার্স (আইডিইবি) মিলনায়তনে ভোটগ্রহণ করা হবে।
বুধবার (৪ ডিসেম্বর) হাব নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করা হয়।
বাণিজ্য মন্ত্রণালয় কর্তৃক নিয়োগপ্রাপ্ত হাবের প্রশাসক মোহাম্মদ দাউদুল ইসলাম নির্বাচনের তারিখ ঘোষণা করেছেন।
নির্বাচনে কেন্দ্রীয় কমিটির ২৭টি পদ, ঢাকা আঞ্চলিক কমিটির ১৩টি, চট্টগ্রাম আঞ্চলিক কমিটির সাতটি এবং সিলেট আঞ্চলিক কমিটির সাতটি পদে নেতা নির্বাচনে ভোট দেবেন এজেন্সি মালিকরা।
তফসিল মতে, ২ জানুয়ারি প্রাথমিক ভোটার তালিকা প্রকাশ, ১২ জানুয়ারি চূড়ান্ত ভোটার তালিকা প্রকাশ, ১৫ থেকে ২০ জানুয়ারি মনোনয়নপত্র সংগ্রহ ও দাখিল, ২১ জানুয়ারি প্রাথমিক তালিকা প্রকাশ, ৩০ জানুয়ারি বৈধ প্রার্থীদের তালিকা প্রকাশ, ৫ ফেব্রুয়ারি প্রার্থিতা প্রত্যাহার, ৬ ফেব্রুয়ারি চূড়ান্ত প্রার্থীতালিকা প্রকাশ এবং ২২ ফেব্রুয়ারি শনিবার সকাল ৯টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত বিরতিহীনভাবে ভোটগ্রহণ চলবে। ভোট গণনা শেষে ফলাফল ঘোষণা করা হবে।
এর আগে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের উপসচিব ফিরোজ আল মামুনকে চেয়ারম্যান করে তিন সদস্যের নির্বাচন বোর্ড গঠন করা হয়। বোর্ডের অপর দুই সদস্য হলেন- বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের উপসচিব শাম্মী ইসলাম ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সহকারী সচিব মেহেদী হাসান।
আর বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের যুগ্মসচিব মুর্শেদা জামান চেয়ারম্যান করে তিন সদস্যের নির্বাচন আপিল বোর্ড গঠন করা হয়। বোর্ডের অপর দুই সদস্য হলেন- বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের উপসচিব তানিয়া ইসলাম ও তরফদার সোহেল রহমান।
জানা যায়, হাবের নির্বাচনের জন্য ইতোমধ্যে এজেন্সি মালিকরা প্রস্তুতি শুরু করেছেন। এবার পূর্ণাঙ্গ দু’টি প্যানেলে এবং প্যানেলের বাইরে বেশ কয়েকজন নির্বাচন করবেন বলে জানা গেছে। ভেতরে ভেতরে প্যানেল গোছানোর প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। নানা উপলক্ষ করে নেতৃত্বে আসতে আগ্রহীরা এজেন্সির মালিকদের একত্রিত করে শক্তির জানান দিচ্ছেন।
‘বৈষম্যবিরোধী হজ এজেন্সি ঐক্য পরিষদ’ নামে একটি প্যানেলের নেতৃত্ব দিতে পারেন সাবেক মহাসচিব লায়ন এম এ রশিদ শাহ সম্রাট। তার সঙ্গে রয়েছেন মো. আখতারুজ্জামান ও মোহাম্মদ আলীসহ অন্যরা।
এ ছাড়া হাবের সাবেক সভাপতি ফারুক আহমেদ সরদারের নেতৃত্বে আরেকটি প্যানেল হতে পারে। এ প্যানেলে সাবেক সহসভাপতি মাওলানা ফজলুর রহমান, সাবেক মহাসচিব ফরিদ আহমেদ মজুমদার, হাফেজ নুর মোহাম্মদ, জুনায়েদ গুলজার, জাহিদ আলম, শাহ আলম (চট্টগ্রাম), আবদুল মালেক (চট্টগ্রাম), জহিরুল ইসলাম শিরু (সিলেট) সহ বেশ কিছু পরিচিত এজেন্সির মালিক থাকতে পারেন।
গুঞ্জন রয়েছে তৃতীয় আরেকটি প্যানেলের। ওই প্যানেলের নেতৃত্বে থাকবেন সৈয়দ গোলাম সরওয়ার। তিনি হাবের প্রতিষ্ঠাকালীন সহসভাপতি। তার সঙ্গে ইবরাহিম (ওয়ার্ল্ড লিংক), মাওলানা ইয়াকুব শরাফতী, হাবিবুল্লাহ মোহাম্মদ কুতুবুদ্দিন, কাবার পথের মুহাম্মদ মিজান, জামাল হোসাইন ও মো. আবু তাহের (চট্টগ্রাম)। তাদের সবাই বিগত সময়ে হাবে বিভিন্ন দায়িত্ব পালন করেছেন।
সরকার পরিবর্তনের পর হাবের সভাপতি এম শাহাদাত হোসাইন তসলিম ২২ আগস্ট পদত্যাগ করেন। পরে হাবের কার্যনির্বাহী পরিষদ পুনর্গঠনে ফারুক আহমদ সরদার সভাপতি ও ফরিদ আহমেদ মজুমদারকে মহাসচিব করা হয়। কিন্তু হাবের কার্যনির্বাহী কমিটির বিরুদ্ধে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ে অনিয়ম ও স্বেচ্ছাচারিতার অভিযোগ করে ‘বৈষম্যবিরোধী হজ এজেন্সির মালিকবৃন্দ।’
এর পরিপ্রেক্ষিতে এফবিসিসিআই প্রতিনিধি, জয়েন্ট স্টক কোম্পানির প্রতিনিধি ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের বাণিজ্য সংগঠনের মহাপরিচালকের প্যানেলে হাব কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্য ও অভিযোগকারীদের উপস্থিতিতে শুনানি হয়। শুনানিতে হাব সন্তোষজনক জবাব ও কাগজপত্র উত্থাপনে ব্যর্থ হলে গত ১৫ অক্টোবর বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের এক অফিস আদেশে সংগঠনটির কার্যনির্বাহী কমিটি বাতিল করে মন্ত্রণালয়ের যুগ্মসচিব মোহাম্মদ দাউদ উল ইসলামকে প্রশাসক নিয়োগ করা হয়।
১২০ দিনের মধ্যে একটি সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন অনুষ্ঠান সম্পন্ন করে নির্বাচিত কমিটির কাছে দায়িত্ব হস্তান্তর করার জন্য তাকে নির্দেশনা দেওয়া হয়।
পরে হাবের ভেঙে দেওয়া কমিটির নেতারা মন্ত্রণালয়ের সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে হাইকোর্টে রিট করেন। শুনানি শেষে সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ রিটটি খারিজ করে দেয়। রিট খারিজ হওয়ার পর দাউদ উল ইসলাম হাব অফিসে গিয়ে প্রশাসক হিসেবে দায়িত্বভার গ্রহণ করেন।
উল্লেখ্য, হজযাত্রীদের সেবায় নিয়োজিত সরকারের স্বীকৃতিপ্রাপ্ত এবং রাজকীয় সৌদি সরকারের অনুমোদিত হজ এজেন্সিগুলোর মালিকদের সংস্থা হজ এজেন্সিজ অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (হাব)। বর্তমানে হাবের সদস্য সংখ্যা এক হাজার ১১৭২ জন।