ইসলামিক ফাউন্ডেশনের ডিজির পদত্যাগ!

  • স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, ঢাকা, বার্তা২৪.কম
  • |
  • Font increase
  • Font Decrease

ইসলামিক ফাউন্ডেশনের ডিজি সামীম মোহাম্মদ আফজাল, ছবি: সংগৃহীত

ইসলামিক ফাউন্ডেশনের ডিজি সামীম মোহাম্মদ আফজাল, ছবি: সংগৃহীত

নানা কারণে আলোচনায় থাকা ইসলামিক ফাউন্ডেশনের (ইফা) মহাপরিচালক (ডিজি) সামীম মোহাম্মদ আফজাল শারীরিক কারণ দেখিয়ে পদত্যাগ করেছেন। তবে তার পদত্যাগপত্র আনুষ্ঠানিকভাবে দুই একদিনের মধ্যে জমা দেওয়া হবে বলে জানা গেছে।

ক্ষমতার অপব্যবহার, বেআইনি কর্মকাণ্ড এবং দুর্নীতির কারণে সামীম মোহাম্মদ আফজালকে ১০ জুন শোকজ করেছিল ধর্ম বিষয়ক মন্ত্রণালয়। ডিজি পদে নিয়োগের জন্য তার চুক্তি কেন বাতিল করা হবে না এবং কেন তাকে সাময়িক বরখাস্ত করা হবে না তার ব্যাখ্যা চাওয়া হয় সাত কার্যদিবসের মধ্যে।

বিজ্ঞাপন

১০ জুন ধর্ম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সহকারী সচিব (সংস্থা) জিয়া উদ্দিন ভূঞা স্বাক্ষরিত এক চিঠিতে এই ব্যাখ্যা চাওয়া হয়।

সাত কার্যদিবস শেষ হওয়ার আগেই পদত্যাগ করলেন তিনি।

বিজ্ঞাপন

এর আগে শনিবার (১৫ জুন) সকালে সামীম মোহাম্মদ আফজাল আগারগাঁও অফিসে আসেন। অভিযোগ উঠে, গুরুত্বপূর্ণ কিছু ফাইল সরিয়ে নিতে তিনি অফিসে এসেছেন। এমনকি ডিজির আস্থাভাজন এক পরিচালক কিছু গুরুত্বপূর্ণ ফাইল গাড়িতে করে অফিসের বাইরে নিতে চাইলে বাধা দেন ইফার সচিব। এ খবর পেয়ে শত শত কমর্কতা-কমচারি সাপ্তাহিক বন্ধ সত্ত্বেও অফিসে এসে ডিজির রুমের বাইরে অবস্থান নেন।

উত্তেজনাকর পরিস্থিতি সৃষ্টি হলে অতিরিক্ত আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য নিয়োগ করা হয়। ছুটে যান ইসলামিক ফাউন্ডেশনের বোড অব গভনরস-এর সদস্য আলহাজ মিছবাহুর রহমান চৌধুরী। পরে তার মধ্যস্ততায় পদত্যাগ করে সামীম আজজাল অফিস ত্যাগ করেন। এ সময় উপস্থিত ছিলেন ইসলামিক ফাউন্ডেশনের সচিব কাজী নুরুল ইসলাম ও ইসলামিক ফাউন্ডেশনের আইন উপদেষ্টা এ আর মাসউদ।

মহাপরিচালক সামীম মোহাম্মদ আফজালের পদত্যাগ বিষয়ে জানতে চাইলে আলহাজ মিছবাহুর রহমান চৌধুরী বার্তা২৪.কমকে বলেন, ‘আসলে ডিজি সাহেব অসুস্থ। তিনি দীর্ঘ ১০ বছর এই দায়িত্ব পালন করেছেন। শারীরিক কারণেই এখন তার বিশ্রাম প্রয়োজন। তাকে সেই পরামর্শই দেওয়া হয়েছে।’

এ দিকে ইসলামিক ফাউন্ডেশনের একাধিক কর্মর্তা সামীম মোহাম্মদ আফজালের পদত্যাগের বিষয়টি বার্তা২৪.কমকে নিশ্চিত করেছেন। এ বিষয়ে জানতে সামীম মোহাম্মদ আফজালের মোবাইলে একাধিকবার কল করা হলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি।

ইসলামিক ফাউন্ডেশনের মসজিদ ও মার্কেট বিভাগের পরিচালক মহীউদ্দিন মজুমদারকে সাময়িক বরখাস্ত করার কারণে তাকে শোকজ করা হয়। শোকজের চিঠিতে বলা হয়, ‘ইসলামিক ফাউন্ডেশন কর্তৃক ক্ষমতা বহির্ভূত, বেআইনি, অসৎ উদ্দেশ্যপ্রণোদিত, স্বেচ্ছাচারিতা ও ক্ষমতার অপব্যবহারের কারণে কেন তার চুক্তি বাতিলের জন্য ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে অবহিত করা হবে না তা লিখিতভাবে পত্র প্রাপ্তির সাত কার্যদিবসের মধ্যে ধর্ম বিষয়ক মন্ত্রণালয় বরাবর প্রেরণের জন্য অনুরোধ করা হলো।’

সম্প্রতি দুর্নীতি দমন কমিশন থেকে তার বিরুদ্ধে প্রাপ্ত সুনির্দিষ্ট কিছু অভিযোগের বিষয়ে তদন্ত করতে ধর্ম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ে চিঠিও পাঠানো হয়েছে।

২০০৯ সালে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার পর টানা ১০ বছর ধরেই গুরুত্বপূর্ণ এই প্রতিষ্ঠানটির প্রধান দায়িত্ব পালন করে আসছেন সাবেক জেলা জজ।

২০০৯ সালের জানুয়ারিতে ইসলামিক ফাউন্ডেশনে মহাপরিচালক নিয়োগ দেওয়া হয় সামীম মোহাম্মদ আফজালকে। ২০১৬ সালের ২০ ডিসেম্বর তার মেয়াদ বাড়ানো হয়। ২০১৭ সালের ৩১ ডিসেম্বর আরও দুই বছরের জন্য চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ দেওয়া হয়।

গত মে মাসের শুরুতে সামীম মোহাম্মদ আফজালকে ইসলামী ব্যাংকের পরিচালকের পদ থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়। এ পদ থেকে কেন তাকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে তার কারণও স্পষ্ট নয়। বিষয়টি অনেকটা গোপনে হয়েছে। ২০১৭ সালের মে মাসে তিনি এই নিয়োগ পেয়েছিলেন।