হজ: বিশ্ব ভ্রাতৃত্বের প্রতীক



ড. মাহফুজ পারভেজ, কন্ট্রিবিউটিং এডিটর, বার্তাটোয়েন্টিফোর.কম
আরাফাত ময়দান, ছবি, সংগৃহীত

আরাফাত ময়দান, ছবি, সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

‘আল্লাহ, আমি উপস্থিত হয়েছি’, এই বাণীতে উচ্চকিত হয়ে শ্বেতশুভ্র  ইহরাম পরিহিত লক্ষ লক্ষ হাজি সাহেব সম্মিলিত হয়েছেন 'বিশ্ব ভ্রাতৃত্বের প্রতীক' হজের আনুষ্ঠানিকতায়। মিনা, আরাফাত, মুজদালিফার প্রান্তরে অবস্থান শেষে পবিত্র মক্কায় কাবা গৃহে তাওয়াব করে তারা সম্পন্ন করবেন হজের কার্যক্রম।

হজের মিলনমেলায় সাদা, কালো, ধনী, দরিদ্র, নারী, পুরুষ নির্বিশেষে সকল মুসলিম শয়তানকে পাথর নিক্ষেপ করার মাধ্যমে পথভ্রষ্টতা ও শয়তানির প্রতি ঘৃণা ও প্রতিবাদ জানাবেন। পশু কোরবানি করে মহান আল্লাহর প্রতি প্রিয় বস্তু উৎসর্গ করবেন। যে মুসলমানগণ হজে গমন করেন নি, তারাও ঈদুল আজহা উপলক্ষ্যে নিজ নিজ সামর্থ্য অনুযায়ী পশু কোরবানি করবেন।

পবিত্র কোরআন, হাদিস ও ইসলামি ধর্মতত্ত্বের নিরিখে এ কথা স্পষ্ট যে, কোরবানিকৃত পশুর রক্ত, মাংস আল্লাহ কাছে বিবেচ্য বিষয় নয়, বিবেচ্য বিষয় হলো মানুষের মধ্যে খোদাভীতি বা তাকওয়া। এই তাকওয়ার অর্থ হলো, আল্লাহর আনুগত্য। তার আদেশ ও নিষেধের অনুসরণ। সৃষ্টিকর্তা-পালনকর্তা আল্লাহর প্রতি ভয় ও ভালোবাসার অনুভূতির নামই তাকওয়া।

ইসলাম ধর্ম বিভিন্ন ধর্মীয় নির্দেশ ও অবশ্য-পালনীয় আনুষ্ঠানিকতা, যেমন নামাজ, রোজা, হজ, যাকাত, কোরবানি ইত্যাদির মাধ্যমে মুসলমানদের মধ্যে খোদাভীতি তথা আল্লাহর আদেশ ও নিষেধের অনুসরণের প্রেরণা জাগায়। আদেশের মধ্যে যে ভালো ও কল্যাণকর কাজগুলো রয়েছে, সেগুলো করতে তাগিদ দেয়। নিষেধের মধ্যে যে বর্জনীয় কাজগুলো রয়েছে, সেগুলো থেকে বিরত থাকতে বলে।

কিন্তু বাস্তব জীবনে দেখা যায় বৈপরীত্য। অনেক ক্ষেত্রেই আল্লাহর আদেশ ও নিষেধগুলো যথাযথভাবে প্রতিপালন করা হয় না। সমাজে ভালো কাজ যেমন, দয়া, ত্যাগ, পিতামাতা ও সন্তানের প্রতি দায়িত্ব পালন, প্রতিবেশীর হক আদায়, দরিদ্র ও পীড়িতের সেবা ইত্যাদি করার ক্ষেত্রে অনেক শৈথিল্য দেখা যায়। আবার নিষিদ্ধ কাজ, যেমন, ধর্ষণ, ঘুষ, দুর্নীতি, ভেজাল, জাল-জালিয়াতি, ফেরেববাজি, প্রবঞ্চনা, ধোঁকা, হত্যা, গুম, নির্যাতন, নিপীড়ন অবাধে চলতে থাকে। 

ফলে ধর্মীয় জীবনের মূল আদর্শ বাস্তব জীবনে প্রতিফলিত করা অনেক সময়ই অনেকের পক্ষে সম্ভব হয় না। কিছু আনুষ্ঠানিকতা ছাড়া ধর্মের মতাদর্শিক অনুভূমি জাগ্রত করা সকলের ক্ষেত্রে দৃশ্যমানও হয় না। যদি হতো, তাহলে মুসলিম প্রধান দেশে এতো ভেজাল, নির্যাতন, নিপীড়িন, অন্যায়, অসাধুতা হওয়ার কথা নয়। বাস্তবে যে ভয়াবহ নেতিবাচক পরিস্থিতি বিরাজ করছে, তেমনটিও হতে পারতো না।

দুঃখজনক হলেও সত্য যে, পবিত্র হজ যে বিশ্ব ভ্রাতৃত্বের ডাক দেয়, সেই ভ্রাতৃত্বকে আমরা কাজে ও চিন্তায় ধারণ করতে পারছি না। সকল মানুষকে ভ্রাতৃসুলভ বিবেচনা করে তাদের কল্যাণ সাধনও করা যাচ্ছে না। একজন আরেকজনকে ঠকাচ্ছি, ভেজাল বা মেয়াদোর্ত্তীণ খাদ্য খাওয়াচ্ছি, বিপদে ফেলছি, শক্তি ও ক্ষমতার বলে শোষণ ও নিপীড়ন করছি। ব্যক্তিগতভাবে আত্মস্বার্থ ও আত্মকেন্দ্রিকতার লোভের বাইরে সামাজিক ও সার্বজনীন কল্যাণকর মানসিকতা নিয়ে আমরা এগিয়ে আসতে পারছি না।

অথচ হজ সকল মুসলমানকে এক কাতারে এসে আল্লাহর শ্রেষ্ঠত্ব ঘোষণা ও মুসলিম ঐক্য গঠনের প্রেরণা দেয়। জাতীয়, আঞ্চলিক ও আন্তর্জাতিক স্তরে তেমন ঐক্য মুসলিম উম্মাহ বা বিশ্ব মুসলিম সমাজে প্রতিষ্ঠিত হয় নি। নিপীড়িত, নির্যাতিত মুসলমানদের পক্ষে বিশ্ব মুসলিম সমাজ এক ও ঐক্যবদ্ধভাবে সাহায্যের জন্য এগিয়ে আসতে পারছে না। এখনো বিশ্বের সর্বত্র এবং আমাদের আশেপাশেই মুসলিম নিপীড়নের রক্তস্রোত বইছে। মুসলিম নর, নারী ও শিশুরা রক্তাক্ত হচ্ছে। বিশ্বের দেশে দেশে সবচেয়ে বেশি আহত ও নিহত হচ্ছে মুসলমানরাই। এর কোনও সুরাহা হচ্ছে না।

হজের আনুষ্ঠানিকতায় শয়তানের প্রতি পাথর নিক্ষেপের মাধ্যমে কুপ্রবৃত্তি ও অসততার বিরুদ্ধে যে দীপ্ত শপথ উচ্চারিত হচ্ছে, বাস্তব জীবনে সেটা সফলভাবে প্রয়োগ করা যাচ্ছে না। হত্যা, ধর্ষণ, জাতিয়ালির মাধ্যমে বরং শয়তানি কাজই চলছে প্রবল গতিতে। মানুষের নাম নিয়ে এমন সব পাশবিক অপরাধ ও নৃশংস অপকর্ম করা হচ্ছে, যা শয়তানকেও লজ্জিত করার জন্য যথেষ্ট।

পশু কোরবানির মাধ্যমে হজের আনুষ্ঠানিকতায় পশুত্বকে বিলীন করার চেতনাও অনেকে আত্মস্থ করতে পারছেন না। চরম পশুত্বের পরিচয় দিচ্ছেন নাবালক শিশু, কিশোর ও অবলা নারীকে ধর্ষণ, নির্যাতন করার মাধ্যমে; দরিদ্র ও অবহেলিতকে প্রচণ্ড আঘাত, অবহেলা ও বঞ্চিত করার মাধ্যমে। মানবিকতার জায়গা দখল করছে পাশবিকতা। সমাজের নিরাপত্তা ও মানুষের বসবাসের শান্তি বিপন্ন হচ্ছে। পরিস্থিতি ক্রমেই অমানবিকতার বিষবাষ্পের অন্ধকার গহ্বরে চলে যাচ্ছে।

এইসব ক্ষতিকর ও নেতিবাচকতার কবল থেকে মুক্ত হয়ে আমাদের সমাজে সুস্থতার স্বচ্ছ সুবাতাস প্রবাহিত করার কথাই বলে ইসলাম। মানবিক ধর্ম ইসলাম পবিত্র হজের মাধ্যমে মানুষকে এক ও ঐক্যবদ্ধ হয়ে মানবিক কল্যাণের কাজে ঝাঁপিয়ে পড়তে এবং অকল্যাণকর কাজ প্রতিহত করতে অনুপ্রেরণা জাগায়। হজের বিশ্ব ভ্রাতৃত্বের শিক্ষা ও কল্যাণমুখী চেতনায় উদ্বুদ্ধ হওয়ার যে ডাক ঐতিহাসিক আরাফাতের ময়দান থেকে উচ্চারিত হচ্ছে এবং যে আরাফাতের ময়দানে বিশ্ব মানবাধিকারে রোল মডেল, মানবতার নবী হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তাঁর ঐতিহাসিক বিদায় হজের ভাষণে যে কল্যাণ ও মানব অধিকারের নির্দেশনা দিয়েছিলেন, তাকে আন্তরিকভাবে আত্মস্থ ও চর্চা করা মাধ্যমেই মুসলমানদের ইহ ও পরকালের কল্যাণ নিশ্চিত হতে পারে। 

   

হজযাত্রীর কাছে নুসুক কার্ড না পেলেই আটক



ইসলাম ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
নুসুক কার্ড, ছবি: সংগৃহীত

নুসুক কার্ড, ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

চলতি বছর নুসুক কার্ড ছাড়া কেউ হজ করতে পারবেন না। সৌদি সরকারের হজ ও উমরা মন্ত্রণালয়ের অনুমতি ছাড়া হজযাত্রী প্রতিরোধ করতে এ উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।

শনিবার (২৫ মে) ধর্মবিষয়ক মন্ত্রণালয় থেকে এ সংক্রান্ত একটি চিঠি হজ এজেন্সির মালিকদের কাছে পাঠানো হয়েছে।

চিঠিতে বলা হয়েছে, জেদ্দা হজ অফিস থেকে এ সংক্রান্ত প্রাপ্ত পত্রের ছায়ালিপি পাওয়ার পর প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য নির্দেশ দিয়েছে ধর্ম মন্ত্রণালয়।

জেদ্দা হজ অফিস থেকে পাঠানো চিঠিতে বলা হয়েছে, মাশায়ের (মিনা, আরাফাত ও মুজদালিফ) এলাকাসহ মক্কা নগরীর গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্টগুলোতে মক্কায় প্রবেশের তাসরিহ বা নুসুক কার্ড ছাড়া কাউকে পাওয়া গেলে প্রথমবার ১০ হাজার সৌদি রিয়াল অর্থদণ্ড এবং পুনরায় অপরাধে দ্বিগুণ জরিমানা ও কারাদণ্ডের বিধান করা হয়েছে। হজের অনুমতি নেই, এমন কোনো ব্যক্তিকে পরিবহন করা হলে পরিবহনকারীকে ছয় মাসের কারাদণ্ড এবং ৫০ হাজার সৌদি রিয়াল জরিমানা করা হবে।

এ ছাড়া মিনা ও আরাফাতে হাজির তাঁবুতে নুসুক কার্ড ছাড়া কাউকে পাওয়া গেলে তাকে অর্থদণ্ড আরোপ এবং দেশে প্রত্যাবর্তনের মতো শাস্তি প্রদানের ঘোষণা দেওয়া হয়েছে। এরূপ কর্মের সহযোগিতাকারীকেও শাস্তির আওতায় নিয়ে আসা হবে।

হজের অনুমতি নেই কিংবা নুসুক কার্ডবিহীন কাউকে মাশায়েরে পরিবহন করলে গাড়িচালকসহ উভয়েই শাস্তির আওতায় আসবেন। ই-হজ সিস্টেমে ভাড়াকৃত বাড়ি বা হোটেলে হাজি আবাসন না করে অন্যত্র হাজি আবাসন করা হলে অথবা সিস্টেমে এক হোটেল এন্ট্রি দিয়ে অন্য হোটেলে হাজি ওঠানো হলে এজেন্সি বা সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিকে শাস্তির আওতায় নিয়ে আসা হবে।

ধর্ম মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা যায়, ডিজিটাল এই নুসুক কার্ডে সংশ্লিষ্ট হজযাত্রীর প্রয়োজনীয় সব তথ্য মজুদ থাকবে এবং হজের জন্য পবিত্র কাবার প্রাঙ্গণে প্রবেশ করতে চাইলে এই কার্ড অবশ্যই প্রদর্শন করতে হবে। হজের অন্যান্য আনুষ্ঠানিকতা পালনেও বিভিন্ন জায়গায় কার্ডটি দেখাতে হবে।

;

মক্কায় প্রতিবন্ধীদের জন্য বিশেষ রাস্তা ও ইবাদতের স্থান



ইসলাম ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
প্রতিবন্ধীদের জন্য নির্ধারিত মসজিদে হারামের ৯১ নম্বর গেট, ছবি: সংগৃহীত

প্রতিবন্ধীদের জন্য নির্ধারিত মসজিদে হারামের ৯১ নম্বর গেট, ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

আগে থেকে ব্যবস্থা থাকলেও চলতি হজ মৌসুমে মক্কার মসজিদে হারামে অসুস্থ, বয়স্ক ও বিশেষভাবে অক্ষম প্রতিবন্ধীদের জন্য বিশেষ উদ্যোগ গ্রহণ করেছে হারামাইন পরিচালনা পরিষদ। তাদের দেখাশোনা, রাস্তা দেখানো ও যেকোনো ধরনের সাহায্যের জন্য বিশেষভাবে প্রশিক্ষিত ২ শতাধিক গাইড নিয়োগ দেওয়া হয়েছে।

এবার মসজিদে হারামের কয়েকটি স্থান বিভিন্ন শ্রেণির প্রতিবন্ধীদের জন্য সংরক্ষিত করা হয়েছে, যাতে তাদের ইবাদত-বন্দেগি ও চলাচলে কোনো অসুবিধায় পড়তে না হয়।

সৌদি আরবের সরকারি বার্তা সংস্থা এসপিএ জানিয়েছে, মসজিদে হারামে চলাচলে অক্ষম প্রতিবন্ধীদের হুইলচেয়ারের জন্য বিশেষ পথ তৈরি করা হয়েছে। সেই সঙ্গে যেখানে তাদের বসার স্থান নির্ধারণ করা হয়েছে, সেখানে পানিসহ অন্যান্য সুবিধা দেওয়া হয়েছে।

পুরুষ ও নারী প্রতিবন্ধীদের জন্য মসজিদে হারামে পৃথক তিনটি স্থান সংরক্ষিত রয়েছে, যা প্রধান ফটকের কাছে। ফলে তাদের যাতায়াতের ক্ষেত্রে কোনো সমস্যা হবে না। জায়গাগুলো হলো- মসজিদে হারামের ৯১ নম্বর গেট এবং আল শাবাকা ব্রিজের কাছে ৬৮ নম্বর গেট (নিচতলায়)।

মসজিদে হারামে প্রতিবন্ধীদের চলাচলে রয়েছে আলাদা ব্যবস্থা, ছবি: সংগৃহীত

আর নারীদের হুইলচেয়ার ব্যবহার করার জন্য বাদশাহ ফাহাদ এক্সটেনশনের গেট নম্বর ৮৮ এবং নিচতলার গেট নম্বর ৬৫ ছাড়াও মাতাফের (কাবা চত্বর) সামনে নামাজের জন্য একটি স্থান (মুসাল্লা নম্বর ১৫) সংরক্ষিত ঘোষণা করা হয়েছে, যেখানে হুইলচেয়ারসহ নারীরা আরামে বসতে পারেন৷

এ ছাড়া বয়স্কদের জন্য ডিজিটাল কোরআন এবং অন্ধদের জন্য ব্রেইল সংস্করণ ছাড়াও শ্রবণ ও বাক প্রতিবন্ধীদের জন্য সাংকেতিক ভাষায় জুমার খুতবার শোনার বিশেষ ব্যবস্থা করা হয়েছে।

;

সোমবার ছায়াশূন্য কাবার দেখা মিলবে



ইসলাম ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
সোমবার ছায়াশূন্য কাবার দেখা মিলবে, ছবি: সংগৃহীত

সোমবার ছায়াশূন্য কাবার দেখা মিলবে, ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

সোমবার পবিত্র কাবা ঘরের ঠিক ওপরে উঠে আসবে সূর্য। ওই সময়ে ছায়াশূন্য পবিত্র কাবার দেখা মিলবে।

জ্যোতির্বিদরা জানিয়েছেন, সোমবার (২৭ মে) স্থানীয় সময় দুপুর ১২টা ১৮ মিনিটে পবিত্র কাবার ঘরের ঠিক ওপর সূর্য থাকবে। বছরের দুইবার এমন ঘটনা ঘটলেও চলতি বছরে প্রথমবারের মতো এ ঘটনা ঘটতে যাচ্ছে।

আল আরাবিয়া নিউজকে জেদ্দা অ্যাস্ট্রোনোমিক্যাল সোসাইটির প্রধান মাজেদ আবু জাহরা জানিয়েছেন, সোমবার দুপুর নাগাদ মক্কার পবিত্র কাবা ঘরের সঙ্গে সূর্য একই লাইনে অবস্থান করবে। এ সময় সূর্যের কেন্দ্রবিন্দুটি কাবার ঠিক ওপরে উঠে আসবে।

জ্যোতির্বিদরা জানিয়েছেন, সূর্যের এই অবস্থানকে ‘ছায়াশূন্য’ (জিরো শ্যাডো) অবস্থা বলেই চিহ্নিত করেন মহাকাশ বিজ্ঞানীরা। বছরে অন্তত দুইবার পবিত্র মক্কা নগরীর ক্ষেত্রে এই ঘটনা ঘটে। প্রতিবছর ২৭ বা ২৮ মে ছাড়াও ১৫ বা ১৬ জুলাই তারিখে একই ঘটনা ঘটে থাকে। পবিত্র কাবাঘরটি বিষুবরেখা ও কর্কটক্রান্তির মাঝে অবস্থিত হওয়ার কারণেই এমনটা ঘটে।

তারা আরও জানান, মক্কায় সোমবার ভোর ৫টা ৩৮ মিনিটে সূর্যোদয় হবে। উত্তরপূর্ব দিকটি থেকে সূর্য ধীরে ধীরে ওপরে উঠতে শুরু করবে। সে কারণে সংক্ষিপ্ত সময়ের জন্য হলেও পবিত্র এই মসজিদ ঘরের কোনো দিকে কোনো ছায়া থাকবে না।

পৃথিবীর অক্ষরেখায় সূর্য ২৩.৫ ডিগ্রি কৌণিক অবস্থান নিয়ে বিষুব রেখার উত্তর ও দক্ষিণ দিকে ঘুরতে থাকে।

এভাবে একবার উত্তর গোলার্ধে একবার দক্ষিণ গোলার্ধে যায়। আর এই আসা যাওয়ার পথে বছরে দুইবার সরাসরি ওপরে অবস্থান নিয়ে পবিত্র কাবাকে ছায়াশূন্য করে দেয়।

জ্যোতির্বিদ আবু জাহরা আরও জানান, কাঠের কোনো কাঠি মাটিতে লম্বালম্বী করে মানুষ কাবার সঠিক দিক নির্ধারণ করতে পারবে। এর মাধ্যমে কিবলার দিকটি কাঠির ছায়ার ঠিক বিপরীতে দেখতে পাবে।

;

হজযাত্রীদের জন্য ২ শতাধিক বিশেষ গাইড, সাড়ে ৩ হাজার বাস



ইসলাম ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
শায়খ সুদাইস এক হজযাত্রীকে উপহার দিচ্ছেন, ছবি: সংগৃহীত

শায়খ সুদাইস এক হজযাত্রীকে উপহার দিচ্ছেন, ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

আসন্ন হজে মসজিদ হারাম এবং মসজিদে নববিতে আগত বয়স্ক, প্রতিবন্ধী এবং অসুস্থদের বিশেষ যত্ন ও সেবার লক্ষে বিশেষ দল নিয়োগ করা হয়েছে।

হারামাইন প্রেসিডেন্সির উদ্যোগে চলতি হজ মৌসুমে ‘ইনসানিয়্যুন’ মানবিক উদ্যোগ শিরোনামে এই কর্মসূচি পারিচালিত হবে। এর মাধ্যমে হজযাত্রীদের অভিজ্ঞতা সমৃদ্ধ হবে। যারা অসুস্থ, বয়স্ক এবং প্রতিবন্ধী- তারা নির্বিঘ্নে ও আরামের সঙ্গে গ্র্যান্ড মসজিদ এবং মসজিদে নববি পরিদর্শন, জিয়ারত ও ইবাদত-বন্দেগি পালন করতে পারবেন।

মসজিদে হারাম এবং নববির ধর্ম বিষয়ক প্রধান শায়খ আবদুর রহমান আস-সুদাইস এই কর্মসূচি উদ্বোধন করে বলেন, ‘মানবতাবাদী উদ্যোগের লক্ষ্য হলো- আচরণ উন্নত করা এবং প্রেসিডেন্সি কর্তৃক প্রদত্ত পরিষেবাগুলোকে বিভিন্ন সেক্টর এবং বিভাগজুড়ে বিস্তৃতি করা। আমরা সব ধরনের হজযাত্রীদের জন্য একটি উপযুক্ত উপাসনার পরিবেশ উপহার দিতে চাই। আমাদের উদ্দেশ্য, মুসলমানদের উদার মনোভাব বাড়ানো এবং বিভিন্ন ক্ষেত্রে সেবার মান উন্নত করা।’

এই উদ্যোগের জন্য বিশেষভাবে প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত ২ শ গাইড নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। যারা এই শ্রেণির হজযাত্রীদের ধর্মীয় চাহিদা মেটাতে প্রযুক্তি, মেধা ব্যবহার করবে। তারা অসুস্থ, বয়স্ক ও প্রতিবন্ধী হজযাত্রীদের ধর্মীয়ভাবে সচেতনতা বৃদ্ধি ও দিকনির্দেশনার জন্য নিবিঢ়ভাবে কাজ করবে।

এ সময় তিনি বলেন, হজপালনকারীদের সেবা দিতে ধর্মীয় বিষয়ক সংস্থার পক্ষ থেকে কোনো অবহেলা সহ্য করা হবে না।

তিনি আরও বলেন, হারামাইনের ধর্মবিষয়ক অধিদপ্তর হজ মৌসুমে বিভিন্ন দেশ থেকে আগত হজযাত্রীদের জন্য বিভিন্ন ভাষায় বিষয়ভিত্তিক ধর্মীয় পুস্তিকা তৈরি করেছে, যা হজযাত্রীদের দেওয়া হবে।

মিনা-আরাফাতের জন্য সাড়ে ৩ হাজার বাস : সৌদি আরবে হজ ব্যবস্থাপনায় সেন্ট্রাল ট্রান্সপোর্ট অথরিটি চলতি হজের পরিকল্পনা ঘোষণা করেছে। ঘোষণায় বলা হয়, হাজিদের পরিবহনের জন্য ৩ হাজার ৫০০টি বাস প্রস্তুত। এসব বাস চলতি হজ মৌসুমে মসজিদে হারামের চারপাশে অবস্থিত ৯টি স্টেশন থেকে চলাচল করবে। বাসগুলো হজযাত্রীদের মিনা ও আরাফাতে আনা-নেওয়া করবে। এ জন্য ১২টি রুট নির্ধারণ করা হয়েছে।

;