ওয়াজে আওয়াজ সংকোচনের সিদ্ধান্ত হাটহাজারী আল আমিন সংস্থার

  • ইসলাম ডেস্ক, বার্তাটোয়েন্টিফোর.কম
  • |
  • Font increase
  • Font Decrease

ওয়াজে আওয়াজ সংকোচনের সিদ্ধান্ত হাটহাজারী আল আমিন সংস্থার, ছবি: সংগৃহীত

ওয়াজে আওয়াজ সংকোচনের সিদ্ধান্ত হাটহাজারী আল আমিন সংস্থার, ছবি: সংগৃহীত

বৃহত্তর চট্টগ্রামে ঐতিহ্যবাহী দ্বীনি ও সেবামূলক সংগঠন ‘আল আমিন সংস্থা’র ব্যবস্থাপনায় তিন দিনব্যাপী তাফসিরুল কোরআন মাহফিল বুধবার (২৭ নভেম্বর) বুধবার থেকে শুরু হতে যাচ্ছে।

চট্টগ্রামের হাটহাজারী পার্বতী সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের মাঠে অনুষ্ঠিত হবে এ সম্মেলন। ২৭ নভেম্বর বুধবার থেকে শুরু হয়ে ২৮ এবং ২৯ নভেম্বর শুক্রবার পর্যন্ত চলবে এ মাহফিল।

বিজ্ঞাপন

সম্মেলনে প্রধান অতিথি হিসেবে থাকবেন আল্লামা শাহ আহমদ শফি, আল্লামা শাহ মুহিব্বুল্লাহ বাবুনগরী এবং আল্লামা হাফেজ জুনাইদ বাবুনগরী।

এ ছাড়া দেশের প্রখ্যাত অনেক মুফাসসির এবং বক্তা তিন দিনব্যাপী আয়োজিত এ মাহফিলে আলোচনা পেশ করবেন।

বিজ্ঞাপন

মাহফিল কর্তৃপক্ষ শিক্ষার্থীদের বার্ষিক পরীক্ষার বিষয় বিবেচনা করে মাইকের আওয়াজ সংকোচন করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।

এ বিষয়ে মাহফিল কর্তৃপক্ষ জানিয়েছেন, শিক্ষার্থীদের আসন্ন বার্ষিক পরীক্ষা ও অসুস্থ ব্যক্তিদের অসুবিধার কথা বিবেচনা করে গতবারের ন্যায় এবারও মাহফিলে শব্দ নিয়ন্ত্রণের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। মাহফিল চলাকালীন সময়ে শুধুমাত্র প্যান্ডেলে মাইকের ব্যবহার করা হবে। এই বাইরে কোনো মাইক স্থাপন করা হবে না। অতএব, আগ্রহী শ্রোতাদের মাঠে উপস্থিত হয়ে মাহফিল শ্রবণ করতে হবে।

আল আমিন সংস্থার নেতৃবৃন্দ বলেন, এ সংগঠন প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকে মানুষের কল্যাণে বিভিন্ন কর্মসূচী গ্রহণ ও বাস্তবায়ন করে আসছে। সমাজের অনিয়ম-অনাচারের বিরুদ্ধে ও নাগরিক অধিকার আদায়ে সচেতনতা সৃষ্টিতে নতুন নতুন ও সময়োপযোগী কর্মসূচী নিয়ে সবসময় প্রথম সাড়িতে থাকে। এরই ধারাবাহিকতায় মাহফিলে আওয়াজ সংকোচনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হলো।

ডিসেম্বর মাসে প্রত্যেক শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের বার্ষিক পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়। এ সময়টি ছোট-বড় সব শিক্ষার্থীর নিকট খুবই গুরুত্বপূর্ণ। তাই শিক্ষার্থীদের পড়ালেখায় যাতে ব্যাঘাত না ঘটে, তার জন্য আল আমিন সংস্থা এমন সিদ্ধান্ত নিয়েছে।

নেতৃবৃন্দের মতে, আমরা হাটহাজারীতে একটি নতুন ধারা চালু করতে যাচ্ছি জনস্বার্থে ও আগামীর ভবিষ্যৎ শিক্ষার্থীদের প্রয়োজনে। অন্যরাও আমাদের কর্মসূচির অনুসরণ করবে এবং প্রশাসনও সজাগ দৃষ্টি রাখবে।

ওয়াজ মাহফিলে মাইকের ব্যবহার নিয়ে আলোচনা-সমালোচনার মাঝে দেশের সর্বজন শ্রদ্ধেয় আলেম আল্লামা শাহ আহমদ শফির এলাকার মাহফিলে এমন সিদ্ধান্ত অবশ্যই যুগান্তকারী সিদ্ধান্ত। তিনি এই মাহফিলের প্রধান অতিথি।

আমরা আশা করবো, দেশের অন্য আলেমরা বিষয়টি অনুসরণ করবেন। হাটাহাজারীর এই মাহফিলে দেশের প্রায় উল্লেখযোগ্য আলেমরা অংশ নেবেন। তাদের কাছেও আমাদের প্রত্যাশা থাকবে, তাদের নিয়ন্ত্রণাধীন মাহফিলসমূহে মাত্রাতিরিক্ত আওয়াজ নিয়ন্ত্রণের বিষয়টি অনুসরণ করার। তাহলে, মাহফিলের আওয়াজ নিয়ে নির্বিচারে সমালোচনার রাস্তা বন্ধ হবে। মাহফিলগুলো আরও বেশি জনমানসে বেশি প্রভাব বিস্তার করতে সক্ষম হবে।

দেশের শীর্ষ আলেমদের প্রায় সবাই নানা সময়ে ‘সারারাত মাহফিল’ ও ‘অতিরিক্ত মাইক’ নিয়ে নিজেদের অসন্তোষের কথা প্রকাশ করেছেন। তাদের কথা হলো- মানুষের কষ্ট হয় এমন কোনো আয়োজন ইসলামি শরিয়ত কোনোদিন সমর্থন করেনি, ভবিষ্যতেও করবে না।

নবী করিম (সা.)-এর সুন্নত ও শরিয়তের জনকল্যাণমূলক নীতি এসব বিষয়ে পরিমিতি সংযম ও শান্তির পক্ষে। রোগীদের কষ্টের কথা বিবেচনা করে, পরীক্ষার্থীর অসুবিধা বিবেচনা করে মাইক বন্ধ রাখা ইসলামের মৌলিক শিক্ষার মধ্যে পড়ে।