ইফা ডিজির ঘনিষ্ঠ ৯ কর্মকর্তার সম্পদ অনুসন্ধানে দুদক



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, ঢাকা
ইফা ডিজির ঘনিষ্ঠ ৯ কর্মকর্তার সম্পদ অনুসন্ধানে দুদক, ছবি: সংগৃহীত

ইফা ডিজির ঘনিষ্ঠ ৯ কর্মকর্তার সম্পদ অনুসন্ধানে দুদক, ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

ইসলামিক ফাউন্ডেশনের সদ্য সাবেক মহাপরিচালক (ডিজি) সামীম মোহাম্মদ আফজালের ব্যাপক দুর্নীতি ও অনিয়মের তথ্য প্রকাশের পর এবার দুদকের নজর পড়েছে ডিজির ঘনিষ্ঠ ৯ কর্মকর্তার ওপর। তাদের সম্পদ অনুসদ্ধানে নেমেছে দুদক।

১৭ ডিসেম্বর দুদকের সহকারী পরিচালক ও অনুসন্ধকারী কর্মকর্তা মো. আমির হোসেন ইসলামিক ফাউন্ডেশনের মহাপরিচালক বরাবর একটি চিঠি ইস্যু করেছেন। ওই চিঠিতে সাবেক পরিচালক মো. তাহের হোসেন, সাবেক পরিচালক মো. হারুনুর রশীদ, ইমাম প্রশিক্ষণ একাডেমির পরিচালক জালাল আহমদ, সমন্বয় বিভাগের পরিচালক এবিএম শফিকুল ইসলাম, মো. আজাদ আলী সিএ, সহকারী পরিচালক মুহাম্মদ মুজিব উল্লাহ ফরহাদ, রিজাউল করিম, মো. জাকির হোসেন ও মো. মোস্তাফিজুর রহমান সম্পর্কে নির্দিষ্ট তথ্য চাওয়া হয়েছে।

ইসলামিক ফাউন্ডেশনের মহাপরিচালক বরাবর পাঠানো চিঠিতে সুষ্ঠু অনুসন্ধানের স্বার্থে ওই কর্মকর্তাদের চাকরিতে যোগদানের তারিখ থেকে ৩০ ডিসেম্বর পর্যন্ত বেতনভাতার তালিকা চাওয়া হয়েছে।

ইফা সূত্রে জানা গেছে, তাদের তথ্য ইতোমধ্যে দুদকের অনুসন্ধানকারী কর্মকর্তাকে সরবরাহ করা হয়েছে।

ইসলামিক ফাউন্ডেশনে কর্মরত নাম প্রকাশে অনচ্ছিুক একাধিক কর্মকর্তা বার্তা২৪.কমকে বলেন, এই কর্মকর্তারা বিগত দিনে ইসলামিক ফাউন্ডেশনের নিয়োগ, বদলি, পদোন্নতি ও টেন্ডার বাণিজ্য নিয়ন্ত্রণ করেছেন। তারা একটি সিন্ডিকেট গড়ে তোলেন, তাদের ইচ্ছা-অনিচ্ছাই ছিলো সবকিছু।

অবশ্য ইমাম প্রশিক্ষণ একাডেমির পরিচালক জালাল আহমদসহ বেশ কয়েকজন কর্মকর্তা বার্তা২৪.কমকে বলেছেন, তাদের বিরুদ্ধে ওঠা দুর্নীতির অভিযোগ মিথ্যা। তারা অপরাজনীতির শিকার। দুদক তাদের বিরুদ্ধে অনুসন্ধান করে কিছুই পাবে না।

নয় কর্মকর্তার বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগগুলো হলো—

মো. তাহের হোসেন
সাবেক পরিচালক মো. তাহের হোসেনের বিরুদ্ধে অবৈধভাবে দৈনিক ভিত্তিতে কর্মচারী নিয়োগ, বিভিন্ন অনুষ্ঠানের নামে ভুয়া ভাউচার বানিয়ে টাকা আত্মসাৎ, টাকার বিনিময়ে নিয়োগ, বদলি, পদোন্নতি ও টেন্ডার বাণিজ্যের অভিযোগ উঠেছে। নামে-বেনামে প্রচুর জমি, ফ্ল্যাট, বাড়ি ও গাড়ি রয়েছে তার। তার স্ত্রী একজন নার্স। কিন্তু তিনি ব্যবহার করতেন ইসলামিক ফাউন্ডেশনের পাজেরো গাড়ি। অফিস সহকারী পদে যোগ দিয়ে শেষ পর্যন্ত পরিচালক হিসেবে পদোন্নতি পান তাহের হোসেন।

মো. হারুনুর রশীদ
সাবেক পরিচালক মো. হারুনুর রশীদের বিরুদ্ধে অভিযোগ রয়েছে, তিনি চাকরিরত অবস্থায় মক্তব ফাউন্ডেশন নামে একটি প্রতিষ্ঠান খুলে ইসলামিক ফাউন্ডেশনের মসজিদভিত্তিক গণশিক্ষার শিক্ষক ও ইমামদের সেই প্রতিষ্ঠানের সদস্য হতে বাধ্য করেন। ইমামদের কাছ থেকে চাঁদা তুলে প্রায় ১২ কোটি টাকা আত্মসাৎ করেছেন। টাকার বিনিময়ে মুক্তিযোদ্ধার জাল সার্টিফিকেট সংগ্রহেরও অভিযোগ রয়েছে তার বিরুদ্ধে, বিষয়টি এখনও তদন্তাধীন। ভুয়া সার্টিফিকেট দেখিয়ে মুক্তিযোদ্ধা কোটায় তার ছেলেকে ইসলামিক ফাউন্ডেশনে চাকরি দিয়েছেন তিনি। রাজধানীর শ্যামপুর, যাত্রাবাড়ী জোনে প্রতি মাসে নামে-বেনামে ৫০টি গণশিক্ষা ও কোরআন শিক্ষার কেন্দ্রের শিক্ষকদের তথা ইমামদের টাকা আত্মসাতের অভিযোগ রয়েছে তার বিরুদ্ধে। নামে-বেনামে সম্পদ গড়ারও অভিযোগ তার বিরুদ্ধে।

জালাল আহমেদ
ইমাম প্রশিক্ষণ একাডেমির পরিচালক জালাল আহমদ বিধি বহির্ভূতভাবে ফাউন্ডেশনের ২টি গুরুত্বপূর্ণ পদে আসীন (উপসচিব ও পরিচালক)। তার স্ত্রী মাহমুদা বেগমের চাকরি ও সিনিয়রদের ডিঙিয়ে পদোন্নতি নিয়ে অসন্তোষ রয়েছে ইফায়। প্রশিক্ষণের টাকা নয়-ছয় থেকে শুরু করে নিয়োগ, বদলি, পদোন্নতি ও টেন্ডার থেকে কমিশন নিতেন তিনি। এসব করে তিনি এখন টাকার কুমির। তার বিরুদ্ধে অফিসের একাধিক গাড়ি ব্যবহারের অভিযোগ রয়েছে। এমনকি তার স্ত্রীর প্রাপ্যতা না থাকা সত্ত্বেও সার্বক্ষণিকভাবে তার স্ত্রী একটি গাড়ি ব্যবহার করছেন।

শফিকুল ইসলাম
শফিকুল ইসলাম, পরিচালক সমন্বয় বিভাগ। সারাদেশের দারুল আরকাম মাদরাসার শিক্ষক ও গণশিক্ষার সুপারভাইজার নিয়োগে তার বিরুদ্ধে ব্যাপক অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ রয়েছে। অবৈধভাবে নিয়োগের মাধ্যমে তিনি কোটি টাকার দুর্নীতি করেছেন। এ ছাড়া সেকশন অফিসার ও পরিবহনের দায়িত্বে থাকাকালে দুর্নীতির মাধ্যমে লোক নিয়োগ ও গাড়ির জ্বালানির তেল ও মেরামতে ভুয়া বিল দিয়ে লাখ লাখ টাকা আত্মসাৎ করেছেন। এখনও তিনি সমন্বয় বিভাগের পরিচালক হিসেবে কর্মরত।

মো. আজাদ আলী
মো. আজাদ আলী, উপ-পরিচালক। তার বিরুদ্ধে তৃতীয় শ্রেণির হিসাব রক্ষক পদে দৈনিকভিত্তিতে যোগদান করে নিয়ম ও বিধি বহির্ভূতভাবে প্রথমে হিসাব রক্ষণ কর্মকর্তা ও পরে হিসাব নিয়ন্ত্রক পদে পদোন্নতি বাগিয়ে নেওয়ার অভিযোগ রয়েছে। বিভিন্ন নিয়োগ পরীক্ষার খাতা জালিয়াতি, নম্বর টেম্পারিংয়ের অভিযোগ রয়েছে তার বিরুদ্ধে। এভাবে তিনি প্রচুর সম্পদ অর্জন করেছেন বলে গুঞ্জন রয়েছে।

মুহাম্মদ মুজিব উল্লাহ ফরহাদ
সহকারী পরিচালক মুহাম্মদ মুজিব উল্লাহ ফরহাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ রয়েছে নিয়োগ পরীক্ষায় জালিয়াতি করে সহকারী পরিচালক পদে নিয়োগ পেয়েছেন তিনি। পরে নিজের পিতাকে চাঁদপুর ফরিদগঞ্জের ইসলামিক ফাউন্ডেশনের মডেল কেয়ারটেকার, এক ভাইকে পিয়ন ও অন্য ভাইকে দারুল আরকাম মাদরাসার শিক্ষক হিসেবে নিয়োগ দিয়েছেন। গণশিক্ষা প্রকল্পের কেনাকাটা, ৫শ’ সুপারভাইজার নিয়োগ, গণশিক্ষার সাধারণ শিক্ষক নিয়োগ, গণশিক্ষার নতুন নতুন শিক্ষাকেন্দ্র স্থাপন, দারুল আরকাম মাদরাসার শিক্ষক নিয়োগে দুর্নীতি করে তিনি প্রচুর টাকা কামিয়েছেন। নানা উপলক্ষে সারাদেশের ইমামদের থেকে বিকাশের মাধ্যমে ঘুষ নেওয়ায় সবাই তাকে ‘বিকাশ ফরহাদ’ হিসেবে চেনে।

মো. মোস্তাফিজুর রহমান
সহকারী পরিচালক মো. মোস্তাফিজুর রহমান সাবেক ডিজি সামীম মোহাম্মদ আফজালের আত্মীয়। তাকে দুর্নীতি ও জালিয়াতির মাধ্যমে নিয়োগ দেওয়া হয়। নিয়োগের পর সিলেবাস, কারিকুলাম প্রণয়নের নামে প্রতি মাসে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন। ইসলামিক ফাউন্ডেশনের জেলা অফিস সফর করে নানা অজুহাতে ডিজির নাম ভাঙিয়ে কর্মকর্তা-কর্মচারীদের কাছ থেকে আদায় করেছেন প্রচুর টাকা।

মো. রিজাউল করিম
সহকারী পরিচালক হয়েও মো. রিজাউল করিম উপ-পরিচালকের সমমান সিএ-এর দায়িত্ব পালন এবং অর্থ বিভাগে ভুয়া বিল-ভাউচারের মাধ্যমে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগ রয়েছে তার বিরুদ্ধে। এক পর্যায়ে তাকে যানবাহন এবং টেন্ডারের দায়িত্ব দেওয়া হয়। যানবাহন মেরামতের নামে ভূয়া বিল-ভাউচার দিয়ে প্রতি মাসে লাখ লাখ টাকা আত্মসাতের অভিযোগ রয়েছে তার বিরুদ্ধে। এ ছাড়া টেন্ডারে বিভিন্ন ঠিকাদারের যোগসাজসের মাধ্যমে প্রচুর দুর্নীতি করেছেন।

মো. জাকির হোসেন
সাবেক ডিজি সামীম আফজালের ব্যক্তিগত কর্মকর্তা মো. জাকির হোসেন দৈনিকভিত্তিক তৃতীয় শ্রেণির পদ এলডিএ হিসেবে যোগদান করেন। তার বিরুদ্ধে অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগ রয়েছে। তিনি ইসলামিক ফাউন্ডেশনের বিভিন্ন জেলা ও বিভাগীয় অফিস থেকে ডিজির খরচের নামে প্রতিমাসে লাখ লাখ টাকা আদায় করতেন। এছাড়া নিয়োগ, বদলি, পদোন্নতি ও টেন্ডারে তিনি ভাগ বসাতেন। পিয়ন পদে যোগ দিয়ে তিনি এখন ইসলামি ফাউন্ডেশনের ডিজির পি.এ।

   

যে গ্রামে জাকাত-ফেতরা নেওয়ার কেউ নেই



ইসলাম ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
গ্রামের মানুষের মাঝে ছাগল বিতরণ করা হচ্ছে, ছবি : সংগৃহীত

গ্রামের মানুষের মাঝে ছাগল বিতরণ করা হচ্ছে, ছবি : সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

সম্মিলিত ও সুপরিকল্পিত উদ্যোগে বদলে গেছে প্রত্যন্ত একটি গ্রামের চিত্র। গ্রামটির সকল পরিবার হয়েছে সচ্ছল। ওই গ্রামে এখন আর ফেতরা কিংবা জাকাত নেওয়ার মানুষ নেই। সবাই স্বাবলম্বী।

কিশোরগঞ্জ জেলার সদর উপজেলার দানাপাটুলি ইউনিয়নের চাঁদের হাসি গ্রাম। এই চাঁদের হাসি গ্রামের দরিদ্র বিমোচন ফাউন্ডেশনের এমন উদ্যোগের ফলে বদলে গেছে গ্রামের দৃশ্যপট।

সংগঠনটি নিজ গ্রামের গন্ডি পেরিয়ে এখন পার্শ্ববর্তী গ্রামের মানুষদের স্বাবলম্বী করতে উদ্যোগ নিয়েছে। এমন প্রশংসনীয় কাজ করা সংগঠনটির নেই নিবন্ধন, নেই বাহারি অফিস। তারা প্রচারে নয়, কাজে বিশ্বাসী। যার প্রমাণ, ফাউন্ডেশনের জনকল্যাণমূলক নানা কাজ।

জানা গেছে, ২০০৩ সালে চাঁদের হাসি গ্রামের প্রয়াত মাওলানা হেলান উদ্দিনের প্রচেষ্টায় দরিদ্র বিমোচন ফাউন্ডেশন প্রতিষ্ঠিত হয়। এরপর থেকে গ্রামে সকল পরিবারের ফেতরা ও জাকাত একসঙ্গে করে অসহায়-গরীব মানুষের মাঝে বিতরণ করে আসছে। এভাবে দীর্ঘ ২১ বছরে এই কার্যক্রমের ফলে চাঁদের হাসি গ্রামে এখন আর ফেতরা ও জাকাত নেওয়া মতো মানুষ নেই। ইতোমধ্যে সংগঠনটি গ্রামের ৮০ জন অসহায় গরীব মানুষকে ঘর তৈরি করে দিয়েছে।

২ বছর আগে চাঁদের হাসি গ্রামের দরিদ্র বিমোচন ফাউন্ডেশনের সহায়তা ঘর পেয়েছেন ওহেদ আলী। তিনি জানান, ঘর পেয়ে মাথা গুজার ঠাঁই হয়েছে। স্ত্রী-সন্তান নিয়ে ভালোভাবেই চলছে তার সংসার।

মাহমুদ বেগম নামে এক কলেজ শিক্ষার্থী জানান, তার পরিবার দরিদ্র বিমোচন ফাউন্ডেশনের সহায়তা ঘর ও সেলাই মেশিন পেয়েছেন। তার বাবা নেই মা ও ছোট বোনকে নিয়ে ঘরে বসবাস করছেন। সেলাই মেশিনের মাধ্যমে মানুষের জামা কাপড় সেলাই করে নিজেও স্বাবলম্বী হয়েছেন।

চাঁদের হাসি দরিদ্র বিমোচন ফাউন্ডেশনের সাধারণ সম্পাদক মো. মাসুদ আলম জানান, ২০০৩ সালে আমাদের সংগঠনটি প্রতিষ্ঠিত হওয়ার পর থেকে এলাকার চলনশীল মানুষের ফেতরা ও জাকাত একসঙ্গে করে আমরা কাজ করে থাকি। এভাবে কার্যক্রম পরিচালনা করার পর থেকে ইসলামের বিধি মোতাবেক যে ৮টি খাত রয়েছে সে হিসাবে বর্তমানে আমাদের গ্রামে জাকাত-ফেতরা নেওয়ার মতো কোনো মানুষ নেই।

সংগঠনটি গ্রামের অসহায় ও গরীব মানুষকে স্বাস্থ্য ও শিক্ষা সহায়তাও দিয়ে আসছে। গ্রামের বেকারত্ব ঘোচাতে অসহায় ও গরীব মানুষের মাঝে গরু, ছাগল, সেলাই মেশিন, অটোরিকশা ও ভ্যান গাড়ি বিতরণ করেছে।

;

রাজধানীতে শীতল পানি বিতরণ করল ইসলামী ছাত্র আন্দোলন



ইসলাম ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
দেশব্যাপী শীতল পানি ও শরবত বিতরণ কর্মসূচী পালন ইসলামী ছাত্র আন্দোলন বাংলাদেশের, ছবি : সংগৃহীত

দেশব্যাপী শীতল পানি ও শরবত বিতরণ কর্মসূচী পালন ইসলামী ছাত্র আন্দোলন বাংলাদেশের, ছবি : সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

তীব্র তাপদাহে সৃষ্ট সংকটে দেশব্যাপী শীতল পানি ও শরবত বিতরণ কর্মসূচী পালন করছে ইসলামী ছাত্র আন্দোলন বাংলাদেশের নেতৃবৃন্দ।

বিভিন্ন জেলা, থানা, ওয়ার্ডের গুরুত্বপূর্ণ স্থানে ভ্রাম্যমাণ ভ্যান নিয়ে পথচারী, দিনমজুর, রিকশাচালকসহ তৃষ্ণার্ত মানুষের মাঝে ঠান্ডা পানি বিতরণ করেছে সংগঠনটির নেতৃবৃন্দ। এছাড়া খাবার স্যালাইন ও পকেট রুমাল বিতরণ করা হয়েছে।

মঙ্গলবার (২৩ এপ্রিল) দুপুরে কেন্দ্রীয় কর্মসূচির অংশ হিসেবে ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের ৬৬ ও ৬৭ নম্বর ওয়ার্ডে শ্রমজীবী ও পথচারীদের মাঝে ইসলামী ছাত্র আন্দোলন বাংলাদেশ ঢাকা মহানগর পূর্বের ডেমরা থানা শাখার উদ্যোগে বিশুদ্ধ শীতল পানি, স্যালাইন ও ওয়ালেট টিস্যু বিতরণ কর্মসূচি পালন করা হয়।

ইসলামী ছাত্র আন্দোলন বাংলাদেশের কেন্দ্রীয় মানবসম্পদ উন্নয়ন ও কর্মসংস্থান বিষয়ক সম্পাদক শেখ মুহাম্মাদ মাহবুবুর রহমানের নেতৃত্বে এতে উপস্থিত ছিলেন ঢাকা মহানগর পূর্ব শাখার সহ-সভাপতি মুহাম্মাদ মাইনুল ইসলাম, ডেমরা থানা শাখার সভাপতি শাহাদাত হোসেন মৃধা, সাধারণ সম্পাদক আশরাফুল ইসলাম, সাংগঠনিক সম্পাদক রাফিইন বিন আমজাদ, কফিল উদ্দিনসহ থানা ও ওয়ার্ড নেতৃবৃন্দ।

এ সময় প্রধান অতিথি শেখ মুহাম্মাদ মাহবুবুর রহমান বলেন, অপরিকল্পিত নগরায়ন, জলাধার ভরাট ও অবাধে বৃক্ষ নিধনের ফলেই অসহনীয় তাপদাহে নগরে জনজীবন অতিষ্ঠ হয়ে পড়েছে। সাময়িক স্বস্তির জন্য আমরা শীতল পানির বিতরণ কর্মসূচি পালন করছি। কিন্তু দীর্ঘমেয়াদি ও টেকসই সমাধানের জন্য নগরকে সবুজায়ন ও বসবাসের উপযোগী করতে রাষ্ট্রকেই যথাযথ ভূমিকা পালন করতে হবে।

নগর সহ-সভাপতি মাইনুল ইসলাম বলেন, যতদিন তীব্র তাপদাহ থাকবে ইসলামী ছাত্র আন্দোলন বাংলাদেশের কেন্দ্র ঘোষিত কর্মসূচির অংশ হিসেবে ঢাকা মহানগর পূর্বের উদ্যোগে নগরজুড়ে বিশুদ্ধ শীতল পানি বিতরণ কর্মসূচি অব্যাহত থাকবে।

;

দুনিয়ার জীবনের বাস্তবতা প্রকাশ পেয়েছে যে আয়াতে



ইসলাম ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
কোরআন মাজিদ, ছবি : সংগৃহীত

কোরআন মাজিদ, ছবি : সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

ইতিহাসজুড়ে দেখা গেছে, মানুষ সবসময়ই তার প্রয়োজন মেটানোর জন্য যথাসাধ্য চেষ্টা করেছে। কারণ মানুষ প্রকৃতিগতভাবে অভাব নিয়েই দুনিয়ায় এসেছে। দুইভাবে মানুষ বিপদগ্রস্ত হচ্ছে কিংবা বিপদে পড়ছে। এক. মানুষের প্রয়োজনীয় বিষয়গুলো ঠিকমতো চিহ্নিত না করা। দুই. ভুল পথে চাহিদা মেটানোর প্রবণতা।

এই দুই বিপদজনক পথ সঠিকভাবে অতিক্রমের জন্যই আল্লাহতায়ালা যুগে যুগে নবী-রাসুলদেরকে পাঠিয়েছেন। আল্লাহর নির্দেশনা অনুযায়ী নবীরা মানুষকে শিক্ষা দিতেন। যেমন কোরআনের বক্তব্য যদি মানুষ বুঝতে পারে এবং সেই অনুযায়ী আমল করে তাহলে তার শক্তিসামর্থ্য যেমন বাড়বে তেমনি পরিত্রাণ পাবে এবং যেকোনো বিপদ বা ভুল পথে পরিচালিত হওয়া থেকে নাজাত পাবে।

কোরআন মাজিদের সুরা হাদিদের ২০ নম্বর আয়াতে মহান আল্লাহ বলেছেন, ‘তোমরা জেনে রাখো যে, দুনিয়ার জীবন ক্রীড়া-কৌতুক, শোভা-সৌন্দর্য, তোমাদের পারস্পরিক গর্ব-অহঙ্কার এবং ধন-সম্পদ ও সন্তান-সন্ততিতে আধিক্যের প্রতিযোগিতা মাত্র।

এর উপমা হলো- বৃষ্টির মতো, যার উৎপন্ন ফসল কৃষকদের আনন্দ দেয়, তারপর তা শুকিয়ে যায়, তখন তুমি তা হলুদ বর্ণের দেখতে পাও, তারপর তা খড়-কুটায় পরিণত হয়। আর আখেরাতে আছে কঠিন আজাব এবং আল্লাহর পক্ষ থেকে ক্ষমা ও সন্তুষ্টি। আর দুনিয়ার জীবনটা তো ধোকার সামগ্রী ছাড়া আর কিছুই নয়।’

বর্ণিত আয়াতটি আমাদের কাছে জীবনের বাস্তবতা তুলে ধরেছে এভাবে-
ক্ষণস্থায়ী দুনিয়া মোটেই ভরসা করার যোগ্য নয়। পার্থিব জীবনের শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত যা কিছু হয় এবং যাতে দুনিয়াদার ব্যক্তি মগ্ন ও আনন্দিত থাকে, প্রথমে সেগুলো ধারাবাহিকভাবে বর্ণনা করা হয়েছে। সংক্ষেপে বলতে গেলে পার্থিব জীবনের মোটামুটি বিষয়গুলো যথাক্রমে এই- প্রথমে ক্রীড়া, এরপর কৌতুক, এরপর সাজ-সজ্জা, এরপর পারস্পরিক অহমিকা, এরপর ধন ও জনের প্রাচুর্য নিয়ে পারস্পরিক গর্ববোধ।

উল্লেখিত ধারাবাহিকতায় প্রতিটি অর্থেই মানুষ নিজ অবস্থা নিয়ে সন্তুষ্ট থাকে। কিন্তু কোরআন মাজিদ বলে যে, এ সবই হচ্ছে সাময়িক ও ক্ষণস্থায়ী।

প্রকৃতপক্ষে, কোরআন মাজিদের এই আয়াতে বলা হচ্ছে, ‘মানুষ যখন শিশু থাকে তখন সে খেলা করে, সে তার যৌবনকে উদ্দেশ্যহীনভাবে অতিবাহিত করে, তার যৌবনে সে পৃথিবীর সাজসজ্জা ও সৌন্দর্যে মগ্ন থাকে এবং তার মধ্য বয়সে ও বার্ধক্যে সে অহংকার এবং সম্পদ ও সন্তানদের নিয়ে প্রতিযোগিতায় লিপ্ত হয়!’

তাই পৃথিবীটা একটা খেলা। এমতাবস্থায় খেয়াল রাখা, কোনোভাবেই ধোঁকায় না পড়া। আমরা যদি কোনো উচ্চ অবস্থানে পৌঁছি তাহলে অহংকারী না হওয়া, যদি পতন ঘটে কিংবা অবস্থা নীচের দিকে চলে যায়- তাহলেও নিরাশ না হওয়া।

আয়াতে বর্ণিত পাঁচটি বিশেষ শব্দ দিয়ে মানবজাতির জন্য তাদের বাস্তবতাকে এভাবে তুলে ধরা হয়েছে। এতে বোঝানো হয়েছে এর প্রতিটিই হচ্ছে একেকটি ফাঁদ এবং মানুষ এসবে জড়িয়ে পড়ে।

;

৯ বছর পর উমরার সুযোগ পেলেন ইরানিরা



ইসলাম ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
গত ৯ বছরের মধ্যে ইরানি উমরাযাত্রীদের প্রথম দল উমরা পালনের জন্য সৌদি আরব যাচ্ছেন, ছবি : সংগৃহীত

গত ৯ বছরের মধ্যে ইরানি উমরাযাত্রীদের প্রথম দল উমরা পালনের জন্য সৌদি আরব যাচ্ছেন, ছবি : সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

দীর্ঘ ৯ বছরের বিরতির পর পশ্চিম এশিয়ার দেশ ইরানের নাগরিকরা পবিত্র উমরা পালনের জন্য তেহরান থেকে পবিত্র মক্কা নগরীর উদ্দেশে যাত্রা করেছেন। সোমবার (২২ এপ্রিল) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে বার্তাসংস্থা রয়টার্স।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গত ৯ বছরের মধ্যে ইরানি উমরাযাত্রীদের প্রথম দল সোমবার পবিত্র উমরা পালনের জন্য সৌদি আরবের উদ্দেশে যাত্রা করেছে বলে ইরানের সরকারি বার্তাসংস্থা জানিয়েছে। মূলত সাম্প্রতিক সময়ে মধ্যপ্রাচ্যের এই দুই শক্তিশালী দেশের মধ্যে সম্পর্কের উন্নয়ন হয়েছে।

এর আগে দীর্ঘদিন দূরে থাকার পর গত বছরের মার্চ মাসে কূটনৈতিক সম্পর্ক পুনরায় প্রতিষ্ঠার বিষয়ে সম্মত হয় মধ্যপ্রাচ্যের দুই দেশ ইরান ও সৌদি আরব। এর ফলে প্রতিদ্বন্দ্বী এই দুই দেশের মধ্যে আবারও সম্পর্ক নতুন মাত্রা পায়। আর উভয় দেশের সম্পর্কের অগ্রগতির পেছনে মধ্যস্থতাকারী হিসেবে ছিল চীন।

২০১৬ সাল থেকে থেকে মধ্যপ্রাচ্যের এই দুই বড় দেশের মধ্যে কোনো কূটনৈতিক সম্পর্ক ছিল না। ওই বছর সৌদি আরব সন্ত্রাসবাদী কর্মকাণ্ডের দায়ে শিয়া ধর্মীয় নেতা শেখ নিমর আল নিমরসহ ৪৭ জনের মৃত্যুদণ্ড কার্যকরের পর তেহরানের সৌদি দূতাবাসে হামলা হয়েছিল। আর তারপর দুই দেশের সম্পর্কে অবনতি ঘটে।

মূলত ইরানি বিক্ষোভকারীরা তেহরানে সৌদি দূতাবাসে হামলার পর ২০১৬ সালের জানুয়ারিতে সৌদি আরব ইরানের সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন করে। তারপর থেকে সুন্নি এবং শিয়া-নেতৃত্বাধীন এই প্রতিবেশীদের মধ্যে উত্তেজনা প্রায়ই জারি ছিল। এই দুই দেশ একে অপরকে নিজের আঞ্চলিক আধিপত্যের জন্য হুমকি হিসাবে বিবেচনা করে থাকে।

এ ছাড়া সিরিয়া এবং ইয়েমেনের গৃহযুদ্ধসহ বেশ কয়েকটি আঞ্চলিক সংঘাতে ইরান ও সৌদি একে অপরের বিরোধী পক্ষ হয়ে কার্যত পরোক্ষ লড়াইয়ে নিয়োজিত ছিল। আর তাই সুন্নি-সংখ্যাগরিষ্ঠ সৌদি আরব এবং শিয়া নেতৃত্বাধীন ইরানের মধ্যে উত্তেজনা ছিল প্রায়ই অনেক বেশি।

গত বছর সম্পর্ক পুনরায় শুরু হওয়ার আগে ইরানিরা শুধুমাত্র হজপালন করতে সৌদি আরব যেতে পারত।

রয়টার্স বলছে, তেহরানের প্রধান বিমানবন্দরে ৮৫ জন উমরাযাত্রীর বিদায় অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন ইরানে নিযুক্ত সৌদি আরবের রাষ্ট্রদূত আবদুল্লাহ বিন সৌদ আল আনজি।

;