সিঙ্গাপুরের সব মসজিদ বন্ধ, ইন্দোনেশিয়ায় ছিটানো হচ্ছে জীবাণুনাশক
করোনাভাইরাস প্রতিরোধে ইন্দোনেশিয়ার মসজিদগুলোতে সরকারি ব্যবস্থাপনায় জীবাণুনাশক ছিটানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
শুক্রবার (১৩ মার্চ) ইন্দোনেশিয়ার সবচেয়ে বড় মসজিদ ‘মসজিদে ইস্তিকবাল’ পরিদর্শন করেন দেশটির প্রেসিডেন্ট জোকো উইদোদো। এ সময় বেশ কয়েকজন মন্ত্রী তার সঙ্গে উপস্থিত ছিলেন। মসজিদে জীবানুনাশক ছিটানোর কাজ তিনি তদারকি করেন। এ সময় তিনি বলেন, যেসব এলাকায় করোনা বিস্তারের আশঙ্কা রয়েছে, সেসব জায়গার মসজিদে জীবাণুনাশক ছিটানো হবে। নির্দিষ্ট সময় পর পর এই কার্যক্রম চলবে।
জাকার্তার এই মসজিদে দশ হাজারের বেশি মানুষ নামাজ আদায় করতে পারেন। মসজিদটির নির্মাণশৈলীও খুবই উন্নত এবং চমকপ্রদ। এর নির্মাণে আধুনিক ও উন্নত সরঞ্জামাদি ব্যবহার করা হয়েছে।
এদিকে দেশটির ধর্মমন্ত্রী পরস্পরে হাত মেলানো, চুমু দেওয়া ও শারীরিক স্পর্শ থেকে সবাইকে বিরত থাকার পরামর্শ দিয়েছেন।
অন্যদিকে সিঙ্গাপুরের সব মসজিদ কমপক্ষে পাঁচদিন বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। দেশটির মাদরাসাগুলো দুই সপ্তাহের জন্য বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে।
দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দ্বীপরাষ্ট্র ইন্দোনেশিয়া। আয়তন ১৯ লাখ ১৯ হাজার ৪৪০ বর্গকিলোমিটার। বিশ্বের মুসলিম জনসংখ্যার প্রায় ১৩ শতাংশের বসবাস দেশটিতে। মোট জনসংখ্যার ৮৮ শতাংশ মুসলমান। বিশ্বের বুকে এটিই প্রথম সংখ্যাধিক্য মুসলমানের দেশ। সৌদি হজ মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, প্রতিবছর ইন্দোনেশিয়া থেকে দুই লাখ ২১ হাজার নর-নারী হজপালনে যান।
ইন্দোনেশিয়ার বিখ্যাত আরও কয়েকটি মসজিদ হলো- সুলতান সুরিয়ান শাহ মসজিদ, গ্রেট মস্ক অফ সুরাকর্তা, রাহমাতাল্লালিল আলামিন মস্ক ও বাইতুর রহমান জামে মসজিদ।
দেশটির অধিকাংশ কর্মক্ষম মুসলিম নিয়মিত বৈধ উপার্জন ও ইসলামি ভাবধারায় জীবনযাপন করেন। ইন্দোনেশিয়ার রাজনীতিতে ধর্মীয় অনুশাসনের প্রভাব লক্ষ্যণীয়।
ইন্দোনেশিয়া মসজিদ খোলা রাখলেও সিঙ্গাপুর পাঁচদিন সব মসজিদ বন্ধ রাখার ঘোষণা দিয়েছে। ১৩ মার্চ থেকে আগামী পাঁচদিনের জন্য দেশটির ৭০টি মসজিদের সবগুলোই বন্ধ থাকবে। মসজিদ বন্ধ থাকার ফলে শুক্রবার কোনো মসজিদে জুমার নামাজ হয়নি।
সিঙ্গাপুরের ইসলামিক রিলিজিয়াস কাউন্সিল বলছে, ক্রমবর্ধমান করোনা সংক্রমণ ঠেকাতে কয়েকদিনের জন্য সাময়িকভাবে দেশের সব মসজিদ বন্ধ থাকবে। পাঁচদিন ধরে বন্ধ থাকা সব মসজিদে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা অভিযান পরিচালনা করা হবে।
দেশটির মুসলিম কল্যাণবিষয়ক মন্ত্রী ম্যাসাগোস জুলকিফলি এক সংবাদ সম্মেলনে বলেন, মসজিদের সব ধরনের কার্যক্রম যেমন- বয়ান, ধর্মীয় শিক্ষার ক্লাস আগামী ২৭ মার্চ পর্যন্ত বন্ধ থাকবে। তবে আগামী ১৬ মার্চ পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা পরিস্থিতি পর্যালোচনার পর খুলে দেওয়ার ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।
এদিকে ব্রাসেলসের গ্র্যান্ড মসজিদে জুমার নামাজ হয়নি। পরবর্তী নির্দেশনা আসার আগ পর্যন্ত মসজিদে জুমার নামাজ বন্ধ রাখার ঘোষণা দেওয়া হয়েছে। তবে পাঁচ ওয়াক্ত নামাজের সময় মসজিদটি উন্মুক্ত থাকবে বলে কর্তৃপক্ষ ঘোষণা দিয়েছেন। কিন্তু সতর্কতা হিসেবে মুসলমানদের ঘরে নামাজ পড়ার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে সরকার ও ধর্মীয় নেতাদের পক্ষ থেকে।