‘মদিনা সনদ’ নাগরিক সমানাধিকারের এক অনন্য উদাহরণ



ড. মাহফুজ পারভেজ, কন্ট্রিবিউটিং এডিটর, বার্তা২৪.কম

  • Font increase
  • Font Decrease

ধর্মীয়, জাতিগত, ভাষাগত সংখ্যালঘুর মানবাধিকারের দাবিতে সোচ্চার বিশ্ব সম্প্রদায় আইনগত ও সামরিক-বেসামরিক পদক্ষেপ গ্রহণ করেও বিশ্বব্যাপী নিপীড়িত মানবতার আহাজারি থামাতে পারছে না। বরং ইসলামে সংখ্যালঘুর অধিকার সংরক্ষণের উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত থাকার পরেও মুসলিমরাই হচ্ছে সবচেয়ে বেশি নির্যাতিত। ‘ইসলামে সংখ্যালঘুর অধিকার’ সম্পর্কে ঐতিহাসিক পর্যালোচনা: পর্ব- ৫

সর্বসম্মত আইনের ঘোষণা মুসলিম রাষ্ট্রগুলোতে সব সময়ই রাষ্ট্রপ্রধানদের ওপর শাসনতান্ত্রিক নিয়ন্ত্রণের কাজ করেছে; সুশাসন বজায় রেখেছে; শাসকদেরকে স্বেচ্ছাচারী হওয়ার বদলে জবাবদিহিতা-স্বচ্ছতা-দায়িত্বশীলতার অধীনস্থ করেছে সর্বপরি ধর্ম-বর্ণ-ভাষা-সংস্কৃতি নির্বিশেষে তাবৎ জনসাধারণের অধিকার, শান্তি, নিরাপত্তা, সম্মান ও মর্যাদা নিশ্চিত করার ব্যবস্থা করেছে।

বস্তুত পক্ষে, হেরা গুহার নির্জন সাধক মানবতার মহান শিক্ষক, মহানবী হজরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মুক্তির বাণী উচ্চারণ না করা পর্যন্ত, মানুষের মাঝে সাম্য ঘোষণা না করা পর্যন্ত, প্রত্যেক শ্রেণী সুবিধার উচ্ছেদ আর শ্রমিকের মুক্তি সাধন না করা পর্যন্ত- যে শৃঙ্খল পৃথিবীর জাতিগুলোকে দাসত্বের বন্ধনে বেঁধে রেখেছিল; তা ভাঙেনি। যে বাণী তার পূর্বসূরীরা নিয়ে এসেছিলেন, তিনিও সেই বাণী নিয়ে আসেন আর তা বাস্তবে রূপায়িত করেন তিনিই। সংখ্যালঘু বা অমুসলিম সম্প্রদায়ের প্রতি ইসলামের রাজনৈতিক চরিত্রের চিত্র দেখা যাবে দু’টি জিনিসের মধ্যে-

১. হজরত রাসূলুল্লাহ (সা.) মদিনায় আগমনের পর ইহুদিদেরকে যে সনদ প্রদান করেছিলেন; এবং
২. ইসলাম আরব উপদ্বীপে পূর্ণভাবে প্রতিষ্ঠিত হওয়ার পর নজরান ও পার্শ্ববর্তী এলাকায় খিস্টানদের কাছে যে বাণী প্রেরণ করা হয়েছিল।

শেষোক্ত দলিলটির বেশিরভাগই মুসলিম শাসকদের জন্য অমুসলিম ও সংখ্যালঘু প্রজাদের প্রতি আচরণের পথনির্দেশক মূলনীতি হিসাবে কাজ করছে। যদি কেউ এই নীতি থেকে বিচ্যুৎ হয়ে থাকে তবে তার কারণ খুঁজতে হবে সেই শাসকের চরিত্রের মধ্যে। রাজনৈতিক প্রয়োজনীয়তা অনেক সময় ধর্মের নামে কথা বলেছে, আর কাজ করেছে বলে যদি আমরা সেটাকে পৃথক করে ফেলি, তবে দেখা যাবে যে ইসলামের চেয়ে কোনো ধর্ম অন্য ধর্মাবলম্বীদের প্রতি বেশি সহনশীল নয়। ‘রাষ্ট্রীয় কারণবশত’ এখানে-ওখানে দু’একজন শাসনকর্তা কিছু কিছু অসহিষ্ণুতার প্রকাশ করেছে কিংবা কিছুটা ধর্মীয় ঐক্যের প্রতি জোর দিয়েছে। কিন্তু ইসলামে অমুসলমান বা সংখ্যালঘুদের জন্য নির্দেশিত ব্যবস্থাপনা সর্বকালে পূর্ণ সহনশীলতা বজায় রেখে চলেছে।

ধর্মাচরণের ক্ষেত্রে খ্রিস্টান আর ইহুদিদেরকে কখনো কোনো বাঁধার সম্মুখীন হতে হয়নি বা ধর্ম পরিবর্তন করতে তাদেরকে কখননো চাপ দেওয়া হয়নি। তাদেরকে যদি কোনো বিশেষ কর (জিজিয়া) দিতে হয়ে থাকে, তবে সে সামরিক কার্যের পরিবর্তে, আর এটা খুবই ন্যায়সঙ্গত যে যারা রাষ্ট্রের নিরাপত্তা লাভ করে তারা কোনো না কোনো আকারে সাধারণ দায়িত্ব পালনে অংশগ্রহণ করবে। পৌত্তলিকদের প্রতি নীতিগতভাবে কঠোরতা একটু বেশি, কিন্তু কাজের বেলায় আইন তাদের বেলায়ও সমানই উদার।

অথচ অখ্রিস্টান, ইহুদি, ধর্মবিরোধী আর পৌত্তলিকরা খিস্টান শাসনাধীনে অনিশ্চয়তার মধ্যে জীবন কাটাত। সব সময়ই এক ধরনের ঝুঁকি লেগে থাকত যে তাদেরকে হত্যা করা হতে পারে বা দাসে পরিণত করা হতে পারে। অধিকার বলতে তাদের কিছু ছিল না, কেবল প্রাণে বেঁচে থাকতে দিলেই যেন যথেষ্ট। কোনো খিস্টান অখ্রিস্টানের সঙ্গে অবৈধ সম্পর্ক করলে, বৈধ সম্পর্কের তো কোনো প্রশ্নই ওঠে না, তাকে পুড়িয়ে মারা হত। ইহুদিগণ পানাহারে বা এমনিই খ্রিস্টানের সঙ্গে একটেবিলে বসতে পারবে না বা তার মতো পোষাকও পরতে পারবে না। তাদের শিশু-সন্তানকে কোল থেকে ছিনিয়ে নেওয়া যেত, মালামাল লুট করা যেত, কোনো ব্যারন বা বিশপ বা ক্ষিপ্ত জনতার উগ্রকামনা অনুসারে। আর এই অবস্থা চলেছে ইসলামের আবির্ভাবের একদম পূর্বপর্যন্ত।

https://img.imageboss.me/width/700/quality:100/https://img.barta24.com/uploads/news/2018/Aug/08/1533712712530.jpg

ইসলামের আগমনের সঙ্গে সঙ্গে মনুষ্যত্বের দুরবস্থা সম্পূর্ণ বদলে যায়। নবী করিম (সা.) মদিনায় ইসলামী রাষ্ট্রের গোড়াপত্তনের সময়ই নাগরিকগণের পারস্পরিক শান্তি, সৌহার্দ্য, সমানাধিকার ও সমমর্যাদা প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে কাজ করেন। নগরী ও এর অধিবাসীদেরকে অভ্যন্তরীণ গোলযোগ ও বহিঃশত্রুর আক্রমণ হতে রক্ষার জন্য এবং জাতি, ধর্ম, বর্ণ নির্বিশেষে সামঞ্জস্য বিধানের ও পারস্পরিক শান্তি স্থাপনের উদ্দেশ্যে মুসলমান, ইহুদি ও পৌত্তলিক, এই তিন জাতির সমন্বয়ে একটি শান্তি চুক্তি সম্পাদন করেন, ইতিহাসে যার নাম ‘মদিনা সনদ।’ এতে সমানাধিকারের উল্লেখযোগ্য উদাহরণ রয়েছে। উদাহরণস্বরূপ-

১. চুক্তিভূক্ত কোনো গোত্র বা সম্প্রদায় শত্রু কর্তৃক আক্রান্ত হলে সকলে সমবেতভাবে তা প্রতিহত করবে;
২. চুক্তিবদ্ধ এক সম্প্রদায় কোনো শত্রুপক্ষের সঙ্গে সন্ধি করলে অন্য সম্প্রদায় এই সন্ধিতে যোগ দেবে;
৩. সবাই নিজ নিজ ধর্ম-কর্ম স্বাধীনভাবে পালন করতে পারবে এবং কেউ কারও ধর্মীয় কাজে হস্তক্ষেপ করবে না;
৪. উৎপীড়িতকে সবাই রক্ষা করবে;
৫. অপরাধী যে-ই হোক না কেন, তাকে উপযুক্ত শাস্তি ভোগ করতে হবে;
৬. নরহত্যা নিষিদ্ধ হবে;
৭. ওয়ারিশ বা আত্মীয়কে অর্থ প্রদান প্রথা চালু থাকবে;
৮. কেউ অপরাধ করলে তা তার ব্যক্তিগত অপরাধ বলে বিবেচিত হবে এবং তজ্জন্য তার জাতীয় স্বত্বাধিকার খর্ব করা চলবে না।

মদিনার সনদ মুসলমান ও অমুসলমানের মধ্যে কার্যকরী ভ্রাতৃত্ব স্থাপন করেছিল এবং পারস্পরিক হিংসা-বিদ্বেষ-কলহের অবসান ঘটিয়েছিল। জাতি-ধর্ম নির্বিশেষে মদিনাবাসীর মধ্যে নাগরিক সংহতি ও ঐক্য প্রতিষ্ঠা করেছিল। এ সনদ ছিল গণতন্ত্র ও সমানাধিকারের উজ্জ্বল উদাহরণ, যাতে নাগরিকতা ও ধর্মের পূর্ণ স্বাধীনতা নিশ্চিত হয়। মদিনার সনদ বিশ্বের ইতিহাসে বিভিন্ন ধর্মানুসারীদের শান্তির সঙ্গে সহাবস্থানের এবং সমানাধিকার সমুন্নত রাখার প্রকৃত নিদর্শনবহ। একই রাষ্ট্রের বিভিন্ন ধর্মাবলম্বী এবং পারস্পরিক বিরোধিতাপূর্ণ রুচি ও সংস্কৃতির ধারক ও বাহক হয়েও নিজ নিজ ধর্মীয় ও সামাজিক স্বাতন্ত্র বজায় রাখার মাধ্যমে মর্যাদাপূর্ণ ও মানবাধিকারের বহিঃপ্রকাশ হিসাবে মদিনার সনদ আজও সকলের কাছে অনুসরণযোগ্য।

পরবর্তীকালে প্রণীত হুদায়বিয়ার সন্ধিতেও পরমতের প্রতি ইসলামের অনুপম সহিষ্ণুতার উজ্জ্বল প্রমাণ রয়েছে। অমুসলমান ও সংখ্যালঘুদের সঙ্গে আচরণের ক্ষেত্রে খোলাফায়ে রাশেদীন বা প্রাথমিক বিশুদ্ধ নেতৃত্বের অনুসরণে পরবর্তীরাও নৈতিক অবস্থানে অবিচল ছিলেন। আব্বাসীয় আমলে অমুসলমানদের স্বার্থ সংরক্ষণের ভার দেওয়া হত একটি বিশেষ দফতরের ওপর।

সাত শতাব্দী ধরে স্পেনে মুসলমানরা শাসন করেছে এবং সেখানে অভ্যন্তরীণ কোন্দল ও বংশীয় দ্বন্দ্ব সত্ত্বেও শাসনের হিতকারীরূপ সম্পর্কে ইতিহাস সাক্ষ্য দেয়। স্পেন ছিল ইউরোপের নির্যাতিত সংখ্যালঘুদের নিরাপদ ও সম্মানজনক আশ্রয়স্থল। অমুসলমান ও সংখ্যালঘুরা স্পেনের মতোই মুসলিম ভারতে গৌরবের সঙ্গে বসবাস করেছে।

অতএব, মুসলমান ও সংখ্যালঘু বা পরমতের প্রতি ইসলামের সমানাধিকারপূর্ণ, সম-মর্যাদাপূণ এবং সম্মানজনক আচরণ ইসলামের প্রাথমিক দিন থেকে বিরাজমান; ইসলামের ইতিহাসের প্রতিটি পর্যায়ে চর্চ্চিত; এখনও পর্যন্ত তাত্ত্বিক ও প্রায়োগিত আদর্শিক নীতি হিসাবে আইনগত বাধ্যবাধকতার মাধ্যমে ইসলামের অনুসারীদের কাছে স্বীকৃত।

আরও পড়ুন: পর্ব- ৪: নির্যাতিত মানবগোষ্ঠী শান্তি ও নিরাপত্তা খুঁজে পায় ইসলামের ছায়াতলে

   

সৌদিতে আরও এক বাংলাদেশি হজযাত্রীর মৃত্যু



ইসলাম ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

চলতি মৌসুমে হজ পালন করতে গিয়ে মো. মোস্তফা (৮৯) নামে আরও এক হজ যাত্রী মারা গেছেন। শনিবার (১৮ মে) মক্কায় মারা যান তিনি।

রোববার (১৯ মে) রাত ২টার হজ পোর্টালের আইটি হেল্প ডেস্কের প্রতিদিনের বুলেটিন থেকে এ তথ্য জানা গেছে।

এর আগে, গত বুধবার (১৫ মে) চলতি হজ মৌসুমে সৌদি আরবের প্রথম বাংলাদেশি এক হজযাত্রী মারা যান। মো. আসাদুজ্জামান নামের ওই ব্যক্তি মদিনায় মৃত্যুবরণ করেন।

এ দিকে পবিত্র হজ পালন করতে গিয়ে এখন পর্যন্ত (১৮ মে রাত ১টা ৫৯ মিনিট) সৌদি পৌঁছেছেন ২৮ হাজার ৭৬০ জন হজযাত্রী। মোট ৭২টি ফ্লাইটে তারা সৌদিতে পৌঁছান। এর মধ্যে সরকারি ব্যবস্থাপনায় ৩ হাজার ৭৪৭ জন ও বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় হজযাত্রী ২৫ হাজার ১৩ জন। এখন পর্যন্ত ৮১ হাজার ৮৬২টি ভিসা ইস্যু করা হয়েছে।

হজ সম্পর্কিত সবশেষ বুলেটিনে এ তথ্য জানানো হয়েছে। এয়ারলাইন্স, সিভিল এভিয়েশন অথরিটি অব বাংলাদেশ, বাংলাদেশ হজ অফিস ঢাকা এবং সৌদি আরব সূত্রে এ তথ্য জানিয়েছে হেল্পডেস্ক।

হেল্প ডেস্কের তথ্য মতে, এ পর্যন্ত মোট ৭২টি ফ্লাইটের মধ্যে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনসের ২৮টি, সৌদি এয়ারলাইনসের ২৬টি এবং ফ্লাইনাস এয়ারলাইনস ২০টি ফ্লাইট পরিচালনা করেছে।

হজ ফ্লাইট শুরু হওয়ার পর গত মধ্যরাত পর্যন্ত ৮১ হাজার ৮৬২ জন হজযাত্রীর ভিসা ইস্যু হয়েছে। সে হিসেবে এখনো ৩ হাজার ৩৯৫ জন হজযাত্রীর ভিসা হয়নি। সর্বশেষ শনিবার (১৮ মে) মো. মোস্তফা নামের ৮৯ বছর বয়সী হজযাত্রী মক্কায় মারা যান।

;

নিবন্ধিত কোনো হজযাত্রী হজপালনে বঞ্চিত হবেন না



মুফতি এনায়েতুল্লাহ, অ্যাসিস্ট্যান্ট এডিটর, বার্তা২৪.কম
হজ ক্যাম্পে হজযাত্রীদের একাংশ, ছবি: বার্তা২৪.কম

হজ ক্যাম্পে হজযাত্রীদের একাংশ, ছবি: বার্তা২৪.কম

  • Font increase
  • Font Decrease

নিবন্ধিত কোনো হজযাত্রী হজপালনে বঞ্চিত হবেন না বলে আশাবাদী বাংলাদেশ হজ অফিসের পরিচালক মুহাম্মদ কামরুজ্জামান।

ভিসা না হওয়া হজযাত্রীরা এক ধরনের অনিশ্চয়তার মধ্যে রয়েছেন। তবে বাংলাদেশ হজ অফিসের পরিচালক মুহাম্মদ কামরুজ্জামান বার্তা২৪.কমকে বলেন, চলতি হজ মৌসুমে নিবন্ধিত সবার ভিসা হবে বলে আমি আশাবাদী। কয়েকটি এজেন্সির হজযাত্রী নিয়ে জটিলতা হচ্ছে, তার অর্ধেকই ইতোমধ্যে সমাধান হয়েছে। বাকি কাজ সমাধানের পথে।

জিলহজ মাসে চাঁদ দেখা সাপেক্ষে ১৬ জুন পবিত্র হজ অনুষ্ঠিত হতে পারে। বাংলাদেশ থেকে ৯ মে শুরু হওয়া হজফ্লাইট শেষ হবে ১০ জুন। এই সময়ের মধ্যে সরকারি ও বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় গাইডসহ হজপালনে সৌদি আরব যাবেন ৮৫ হাজার ১১৭ জন। ইতোমধ্যে ২৮ হাজার ৪ জন হজযাত্রী সৌদি আরব পৌঁছেছেন। ৮২ হাজার ১০০ জনের ভিসা ভিসা হয়েছে। এখনও বেসরকারিভাবে নিবন্ধিত ৩ হাজার ৩৩৬ জনের ভিসা হয়নি।

মুহাম্মদ কামরুজ্জামান, পরিচালক, হজ অফিস, ছবি: বার্তা২৪.কম

জানা গেছে, যথাসময়ে ভিসার আবেদন না করায় ওয়ার্ল্ডলিঙ্ক ট্যুরস অ্যান্ড ট্রাভেলস (লাইসেন্স ৫৭০, যাত্রী সংখ্যা ২৮৬), আনসারি ওভারসিস (লাইসেন্স ৬০১, যাত্রী সংখ্যা ২৬০), আল রিসান ট্রাভেল এজেন্সি (লাইসেন্স ৬৭২, যাত্রী সংখ্যা ৪৪৪), মিকাত ট্যুর অ্যান্ড ট্রাভেলস (লাইসেন্স ১০২৫, যাত্রী সংখ্যা ৩৭৫), নর্থ বাংলা হজ ট্রাভেলস এন্ড ট্যুরস (লাইসেন্স ১০৮৬, যাত্রী সংখ্যা ২৬০), হলি দারুন নাজাত হজ ওভারসিস (লাইসেন্স ১৪৬২, যাত্রী সংখ্যা ২৫০) কে ধর্ম মন্ত্রণালয় শোকজ করে। এসব এজেন্সির মাধ্যমে ১ হাজার ৮৭৫ জনের চলতি বছর হজে যাওয়ার কথা রয়েছে।

আর আল রিসান ট্রাভেলস এজেন্সির নিবন্ধিত হজযাত্রীদের মধ্যে এখন পর্যন্ত কারও ভিসা না করায় বৃহস্পতিবার (১৬ মে) এজেন্সির ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. আব্দুস সালাম মিয়ার দেশত্যাগ স্থগিত ও তার বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে চিঠি দিয়েছে ধর্ম মন্ত্রণালয়।

হজ এজেন্সির মালিকদের সংগঠন হজ এজেন্সিস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (হাব)-এর সভাপতি এম শাহাদাত হোসাইন তসলিম বার্তা২৪.কমকে বলেন, আল রিসান ট্রাভেলস এজেন্সিসহ অভিযুক্ত এজেন্সির মালিকদের নিয়ে আমরা বসে, পয়েন্ট পয়েন্ট ধরে সমস্যা নিয়ে আলোচনা করে সমাধানের চেষ্টা করেছি। ইতোমধ্যে হলি দারুন নাজাত হজ ওভারসিস, ওয়ার্ল্ডলিঙ্ক ট্যুরস অ্যান্ড ট্রাভেলস এবং মিকাত ট্যুর অ্যান্ড ট্রাভেলসের হজযাত্রীদের ভিসা প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। অন্যদেরও হয়ে যাবে। নিবন্ধিত কোনো হজযাত্রী হজপালন থেকে বঞ্চিত হবেন না বলেও তিনি আশা প্রকাশ করেন।

এমন আশাবাদী হওয়ার কারণ জানতে চাইলে হাব সভাপতি বলেন, হজ ব্যবস্থাপনায় সৌদি আরব অংশে যে পরিমাণ অর্থ প্রেরণ করা দরকার এজেন্সিগুলো তা পাঠিয়েছে। আর যতটুকু সমস্যা রয়েছে, আশা করি তা সমাধান করা যাবে।

এম শাহাদাত হোসাইন তসলিম, ছবি: বার্তা২৪.কম

এ বিষয়ে জানতে চাইলে আল রিসান ট্রাভেলস এজেন্সি লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. আব্দুস সালাম মিয়া বার্তা২৪.কমকে বলেন, ‘আমি এবার হজে কোনো লোক পাঠাইনি। আকবর হজ গ্রুপের মুফতি লুৎফর রহমান ফারুকী তার লাইসেন্সে সমস্যা হওয়ায় আমার লাইসেন্স ব্যবহার করে ৪৪৮ জন হজযাত্রী পাঠাচ্ছে। চলতি সমস্যা নিয়ে হাব সভাপতির সঙ্গে বৈঠকে মুফতি লুৎফর রহমান সৌদি থেকে ফোনে কথা বলেছেন, তিনি আশ্বস্থ করেছেন; আজকালের মধ্যে ২০ থেকে ৩০ জনের ভিসা হয়ে যাবে। আর আগামীকাল বা পরশুর মধ্যে সবার ভিসা হয়ে যাবে। তিনি মদিনার বাড়ি ভাড়া করেছেন, মক্কার বাড়িও ভাড়া হওয়ার পথে।’

;

মৃত্যুদণ্ড কার্যকরের আগমুহূর্তে ছেলের খুনিকে ক্ষমা করলেন বাবা



ইসলাম ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
আল হুমাইদি আল হারবি, ছবি: সংগৃহীত

আল হুমাইদি আল হারবি, ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

মৃত্যদণ্ড কার্যকরের আগ মুহূর্তে ছেলের খুনিকে ক্ষমা করে দিলেন বাবা। শেষ সময়ে জন্মদাদা বাবার এমন উদারতা দেখে উপস্থিত কর্মকর্তারা হতবাক হয়ে যায়। ঘটনাটি ঘটেছে সৌদি আরবে। খবর গালফ নিউজের।

আল হুমাইদি আল হারবি নামের ওই বাবা হঠাৎ করে দণ্ড কার্যকরের স্থানে যান। সেখানে গিয়ে ঘোষণা দেন, ছেলের হত্যাকারীকে ক্ষমা করে দিয়েছেন তিনি। ওই হত্যাকারীর দণ্ড কার্যকরের প্রস্তুতি নেওয়ার আগে আল হুমাইদি আল হারবির কাছে একাধিকবার গিয়েছিলেন সরকারি কর্মকর্তারা।

কিন্তু ওই সময় তিনি ছেলের হত্যাকারীকে ক্ষমা করতে চাননি। কিন্তু পরে নিজের সিদ্ধান্ত পরিবর্তন করেন। নিজ ছেলের হত্যাকারীকে ক্ষমা করার একমাত্র অধিকারী ব্যক্তি ছিলেন ওই বাবা। সে অনুযায়ী, বিনা শর্তে তিনি হত্যাকারীকে ক্ষমা করে দেন। এতে করে সেখানে থাকা সবাই বেশ অবাক হন।

আল হারবি জানিয়েছেন, ধর্মীয় দিক বিবেচনা করে তিনি এমন সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। যদিও প্রথমে হত্যাকারীকে ক্ষমা করতে চাননি। কিন্তু পরে নিজের মন পরিবর্তন করেন। ছেলের হত্যারকারীকে ক্ষমা করা ওই বাবার এমন উদারতার প্রশংসা করেছেন সাধারণ মানুষ। তারা এটিকে ক্ষমার একটি অনন্য উদাহরণ হিসেবে অভিহিত করেছেন।

খবরে প্রকাশ, নিজ গোত্রের প্রতিবেশীর বন্ধুর ছেলের হাতে তার ছেলে খুন হন। দেশটির আইন অনুযায়ী বিচার শেষে হত্যাকারীর মৃত্যুদণ্ড ঘোষণা করা হয়। সৌদি আরবের আইনে রক্তপণ নিয়ে কিংবা অভিভাবক হিসেবে খুনিকে ক্ষমা করে দেওয়ার বিধান রয়েছে।

সে হিসেবে তিনি ছেলের খুনিকে ক্ষমা করে বলেন, ‘আমাদের সম্পর্ক আজও আগের মতো।’

তার স্পষ্ট কথা, আমি একমাত্র আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য ছেলের হত্যাকারীকে ক্ষমা করেছি। এ বিষয়ে সরকারি কর্মকর্তারা ক্ষমার কথা বললেও তার পরিবার ক্ষমা প্রসঙ্গে কোনো কথা বলেননি।

তিনি আরও বলেন, ঘটনার পর আমাদের সম্পর্ক গত ছয় দশকের মতোই আজও আছে। ছেলের খুনের পর যেমন ছিল, এখনও সম্পর্ক তেমনি আছে।

হত্যাকারীর বাবা আবদুল মাজিদ আল হারবি বলেন, আমি নিহতের বাবাকে অন্তরের অন্তস্থল থেকে শ্রদ্ধা করি এবং সম্মান করি, তিনি আমার ভাইয়ের চেয়েও বেশি।

;

সৌদিতে বাংলাদেশি হজযাত্রীর মৃত্যু



ইসলাম ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

চলতি বছরের হজ মৌসুমে সৌদি আরবে মো. আসাদুজ্জামান নামের এক বাংলাদেশি হজযাত্রীর মৃত্যু হয়েছে। এটিই এবারের হজে প্রথম কোনো বাংলাদেশির মৃত্যু।

শনিবার (১৮ মে) হজ পোর্টালের আইটি হেল্পডেস্কের প্রতিদিনের বুলেটিন থেকে এ তথ্য জানা গেছে।

এতে বলা হয়, ১৫ মে আসাদুজ্জামান মদিনায় মসজিদে নববীতে থাকা অবস্থায় হঠাৎ অজ্ঞান হয়ে পরেন। পরে তাকে কিং সালমান হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা যান। জানা গেছে, নেত্রকোনা জেলার কেন্দুয়া উপজেলার ৭ নম্বর মাসকা ইউনিয়নের সাতাশী গ্রামের বাসিন্দা মো. আসাদুজ্জামান।

এদিকে শুক্রবার (১৭ মে) রাত ৩টা পর্যন্ত ২৭ হাজার ১১১ জন হজযাত্রী সৌদি আরব পৌঁছেছেন। অন্যদিকে এখনো ৪ হাজার ২৫৬ জন হজযাত্রীর ভিসা হয়নি।

চাঁদ দেখা সাপেক্ষে আগামী ১৬ জুন এবারের হজ অনুষ্ঠিত হবে। হজযাত্রীদের সৌদি আরবে যাওয়ার ফ্লাইট শুরু হয় গত ৯ মে। আগামী ১০ জুন পর্যন্ত যাওয়ার ফ্লাইট চলবে। হজ শেষে ২০ জুন ফিরতি ফ্লাইট শুরু হবে। দেশে ফেরার ফ্লাইট শেষ হবে আগামী ২২ জুলাই।

;