বাজেটে ২০ হাজার কোটি টাকা ভর্তুকি ও প্রণোদনা চায় ইসলামী শ্রমিক আন্দোলন

  • নিউজ ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
  • |
  • Font increase
  • Font Decrease

বাজেটে ২০ হাজার কোটি টাকার ভর্তুকি ও প্রণোদনা চেয়ে ইসলামী শ্রমিক আন্দোলনের সংবাদ সম্মেলন, ছবি: সংগৃহীত

বাজেটে ২০ হাজার কোটি টাকার ভর্তুকি ও প্রণোদনা চেয়ে ইসলামী শ্রমিক আন্দোলনের সংবাদ সম্মেলন, ছবি: সংগৃহীত

করোনা সঙ্কটে কৃষি উৎপাদন, প্রাতিষ্ঠানিক-অপ্রাতিষ্ঠানিক ও ভাসমান শ্রমিকদের জীবন জীবিকা নির্বাহ এবং সুরক্ষার জন্য ‘লেবার কার্ড’-এর ব্যবস্থা, গণমাধ্যম কর্মীদের ৩শ’ কোটি টাকার প্রণোদনাসহ বিভিন্ন সেক্টরভিত্তিক ২০ হাজার কোটি টাকা বিশেষ প্রণোদনার দাবি জানানো হয়েছে। এসব দাবি পূরণের নিমিত্তে প্রধানমন্ত্রী বরাবর স্মারকলিপি দিয়েছে ইসলামী শ্রমিক আন্দোলন।

মঙ্গলবার (৯ জুন) দুপুরে রাজধানীর পুরানা পল্টনস্থ ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে এসব দাবী জানিয়েছেন ইসলামী আন্দোলনের রাজনৈতিক উপদেষ্টা ও ইসলামী শ্রমিক আন্দোলনের কেন্দ্রীয় সভাপতি অধ্যাপক আশরাফ আলী আকন।

বিজ্ঞাপন

দলটি করোনাকালীন বাজেটে সকল শ্রেণি ও পেশার শ্রমিকের দুঃখ-দূর্দশা লাঘবে ২০ হাজার কোটি টাকা ভর্তুকি ও প্রণোদনা অর্ন্তভু‚ক্তির দাবিতে প্রধানমন্ত্রী বরাবর স্মারকলিপি দিয়েছে।

স্মারকলিপিতে কৃষকের ক্ষতিপূরণ প্রদানের লক্ষ্যে ১০ হাজার কোটি টাকা প্রণোদনা, প্রকৃত শ্রমিকদের সেনাবাহিনীর মাধ্যমে যাচাই-বাছাই শেষে ডাটাবেজ তৈরির করে ‘লেবার কার্ড’ প্রদান করে রেশনিং ব্যবস্থা চালু করা, কর্মহীন শ্রমিকদের অর্থনৈতিক সঙ্কট উত্তরণে জামানত ছাড়া আইডি কার্ড ও ব্যাক্তিগত গ্যারান্টি নিয়ে ২ বছরের মধ্যে পরিশোধযোগ্য সুদবিহীন সর্বোচ্চ ১ লাখ টাকা ঋণ প্রদানের দাবী জানানো হয়।

বিজ্ঞাপন

সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন, ইসলামী আন্দোলনের কেন্দ্রীয় প্রচার সম্পাদক আহমদ আবদুল কাইয়ূম, ইসলামী শ্রমিক আন্দোলনের কেন্দ্রীয় সহ-সভাপতি মাওলানা খলিলুর রহমান ও ইঞ্জিনিয়ার গোলাম মোস্তফা, জয়েন্ট সেক্রেটারী জেনারেল এডভোকেট এবিএম শেহাবউদ্দিন শেহাব, প্রচার সম্পাদক মুফতি ছিদ্দিকুর রহমান, সহ-প্রচার সম্পাদক সাইফ মু. সালমান, মাওলানা শাহ জামাল উদ্দিন, যুবনেতা মাহবুব আলম প্রমুখ।

প্রধানমন্ত্রী বরাবর প্রেরিত স্মারকিলপিতে প্রবাসে ইন্তেকাল করা রেমিটেন্স যোদ্ধাদের মধ্যে যারা অর্থনৈতিকভাবে দূর্বল ও ঋণে জর্জরিত তাদের পরিবারকে এককালীন ৫ লাখ টাকা অনুদান প্রদান, করোনার কারণে কর্মহীন হওয়া প্রবাসীদের সহজ শর্তে ঋণ দেওয়া, পাসপোর্ট প্রাপ্তি ও ভিসা জটিলতা দূর করতে কার্যকরী পদক্ষেপ গ্রহণ ও দেশে আটকে পরা প্রবাসীদের কর্মক্ষেত্রে যোগদানের ব্যবস্থার দাবি জানানো হয়।

করোনায় আক্রান্ত হয়ে ইন্তেকাল করা মানুষের কাফন, জানাজা ও দাফনসহ সৎকারে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে যেসব স্বেচ্ছাসেবী অংশ নিয়েছেন তাদেরকে ‘করোনা যোদ্ধা’ হিসেবে স্বীকৃতি প্রদান, এসব করোনা যোদ্ধাদের মধ্যে ইন্তেকালকারীর পরিবারকে ৫ লাখ টাকা ক্ষতিপূরণ ও স্বেচ্ছাসেবীদের জন্য ১০ লাখ টাকার জীবন বিমা সুবিধা দেওয়ার জন্য সংবাদ সম্মেলনে দাবি জানানো হয়।

বিভিন্ন সেক্টরভিত্তিক দাবিগুলোর মধ্যে রয়েছে- গণমাধ্যম কর্মীদের জন্য ৩শ’ কোটি টাকা, নির্মাণ শ্রমিকদের জন্য ২শ’ কোটি টাকা, হোটেল-রেস্তোরাঁ মালিক-শ্রমিকদের জন্য ২শ’ কোটি টাকা, ফুটপাতের হকারদের জন্য ১শ’ কোটি টাকা, ভ্রাম্যমাণ হকারদের জন্য ১শ’ কোটি টাকা, মাইক, লাইট ও ডেকোরেটর মালিক-শ্রমিকদের ৩শ’ কোটি টাকা, সড়ক পরিবহন শ্রমিকদের ৩শ’ কোটি টাকা, নৌ-পরিবহন শ্রমিকদের ২শ’ কোটি টাকা, তাঁত ও কুটিরশিল্প মালিক শ্রমিকদের ৪শ’ কোটি টাকা, প্রবাসী শ্রমিকদের ১ হাজার কোটি টাকা, সিএনজি ও ইজিবাইক শ্রমিকদের ২শ’ কোটি টাকা, লবণ চাষীদের ১শ’ কোটি টাকা, বেসরকারী শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের কর্মচারীদের ১শ’ কোটি টাকা, মৎস শ্রমিকদের ১ হাজার কোটি টাকা, দোকান মালিক-শ্রমিকদের ৫শ’ কোটি টাকা, রিক্সা-ভ্যান ও ঠেলাগাড়ি শ্রমিকদের ১শ’ কোটি টাকা, ভিক্ষুক মুক্তকরণ কর্মসূচিতে ৫শ’ কোটি টাকা, চিকিৎসা সেবাকর্মীদের ২শ’ কোটি টাকা, বেসরকারি গণ কর্মচারীদের ২শ’ কোটি টাকা, স্থল-সমূদ্র-নৌ ও বিমান বন্দর শ্রমিকদের ২শ’ কোটি টাকা, লন্ড্রি ও ওয়াশিংপ্ল্যান্ট শ্রমিকদের ১শ’ কোটি টাকা, সেলুন শ্রমিকদের ১শ’ কোটি টাকা, ঘাটমাঝি ও কুলি-শ্রমিকদের ১শ’ কোটি টাকা, বন্ধ ও রুগ্ন কল-কারখানা মালিক-শ্রমিকদের ১ হাজার কোটি টাকা, যৌনকর্মী ও হিজড়া পূনর্বাসনে ১শ’ কোটি টাকা, ভাসমান শ্রমিকদের ১শ’ কোটি টাকা, শ্রমিকদের স্বাস্থ্য সুরক্ষার জন্য জেলা ও শিল্পাঞ্চলভিত্তিক লেবার হাসপাতাল নির্মাণে প্রাথমিকভাবে ২ হাজার কোটি টাকার বরাদ্দের দাবি জানানো হয়।