বস্তুনিষ্ঠ সংবাদ পরিবেশনকারীর জন্য রয়েছে মহাপুরস্কার



মুফতি জাওয়াদ তাহের, অতিথি লেখক, ইসলাম
বস্তুনিষ্ঠ সংবাদ পরিবেশনকারীর জন্য রয়েছে মহাপুরস্কার, ছবি: সংগৃহীত

বস্তুনিষ্ঠ সংবাদ পরিবেশনকারীর জন্য রয়েছে মহাপুরস্কার, ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

গণমাধ্যমের গুরুত্ব ও প্রয়োজনীয়তা কারো অজানা নয়। যুগ যুগ ধরে সংবাদ প্রচারের বিভিন্ন পদ্ধতি চলে আসছে। পাঠকমাত্রই এ বিষয়ে অবগত। সাংবাদিকের যেমন মর্যাদা রয়েছে, তেমনি রয়েছে তার জন্য সতর্কবাণী। হজরত রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাদেরকে বিভিন্ন বিষয়ের সংবাদ দিয়েছেন। অসংখ্য হাদিসে এসেছে তিনি সাহাবিদের উপদেশ দিতে গিয়ে এভাবে উল্লেখ করেছেন, ‘আমি কী তোমাদেরকে এমন সংবাদ দেবো না, যার ওপর আমল করলে তোমরা জান্নাতে যেতে পারবে?’ প্রত্যেক নবী-রাসূলই আল্লাহতায়ালার দেওয়া সংবাদ পৃথিবীর মানুষদের কাছে পৌঁছে দিয়েছেন। বর্তমান সমাজের নানাবিধ খবরা-খবর আমরা জানতে পারি সাংবাদিকদের মাধ্যমে।

কোরআনে কারিমে সাংবাদিকতা প্রসঙ্গ
আল্লাহতায়ালা সূরা সাবায় হুদহুদ পাখির সংবাদের কথা আলোচনা করেছেন। সংবাদ কেমন হওয়া চাই, সাংবাদিকের গুণাবলী কী কী- এ নিয়েও চমৎকার বিশ্লেষণ করা হয়েছে। কোরআনে কারিমে আল্লাহতায়ালা বলেন, ‘তারপর হুদহুদ এসে বলল, আমি যা অবগত হয়েছি আপনি তা অবগত নন, আমি সাবা থেকে আপনার জন্য নিশ্চিত খবর নিয়ে এসেছি। আমি এক নারীকে দেখতে পেলাম, সে তাদের ওপর রাজত্ব করছে। তাকে দেওয়া হয়েছে সব কিছু। আর তার আছে এক বিশাল সিংহাসন। আমি তাকে ও তার সম্প্রদায়কে দেখতে পেলাম তারা আল্লাহর পরিবর্তে সূর্যকে সিজদা করছে। আর শয়তান তাদের কার্যাবলিকে তাদের জন্য সৌন্দর্যমণ্ডিত করে দিয়েছে এবং তাদের সৎপথ থেকে নিবৃত্ত করেছে, ফলে তারা হেদায়াত পায় না। যাতে তারা আল্লাহকে সিজদা না করে, যিনি আসমান ও জমিনের লুকায়িত বস্তুকে বের করেন। আর তোমরা যা গোপন করো এবং তোমরা যা প্রকাশ করো তিনি সবই জানেন। আল্লাহ ছাড়া সত্যিকারের কোনো ইলাহ নেই। তিনি মহা আরশের রব।’ -সূরা আন নামল: ২২-২৬

বর্ণিত আয়াতের কয়েকটি বিষয় লক্ষণীয়। ১. খবরটি নির্ভরযোগ্য ও সুনিশ্চিত কি না সে বিষয়ে যাচাই করা। ২. সংবাদ প্রমাণ নির্ভর হওয়া। ৩. সমালোচনা সবার জন্য সমান। এমন নয় যে শুধু প্রজাদের জন্য সমালোচনা হলো আর নেতৃস্থানীয়দের ক্ষেত্রে কোনো সমালোচনা নেই। ৪. সমস্যা ও তার সমাধানের প্রতি ইঙ্গিত থাকা। দূর থেকে নয় বরং মাঠে-ময়দানে যেয়ে সংবাদ সংগ্রহ করা।

হাদিসে সংবাদের বর্ণনা
হজরত রাসূলুল্লাহ (সা.) হুদাইবিয়ার সন্ধির পর বিভিন্ন দেশের রাজা-বাদশাদের কাছে পত্র প্রেরণ করেছেন ইসলাম প্রচারের উদ্দেশে। ইতিহাসের পাতায় সেসব বিরল ঘটনাবলী আজো সংরক্ষিত। হজরত আবদুল্লাহ ইবনে আব্বাস (রা.) থেকে বর্ণিত, আল্লাহর রাসূল (সা.) বাদশা কায়সারের নিকট চিঠি লিখেছিলেন এবং এতে বলেছিলেন, যদি তুমি মুখ ফিরিয়ে রাখো তাহলে প্রজাদের পাপের বোঝা তোমার ওপর চাপানো হবে। -সহিহ বোখারি: ২৯৩৬

ভুল সংবাদ প্রচার থেকে বিরত থাকা
আল্লাহতায়ালা কোরআনে কারিমে বলেন, হে মুমিনগণ! যদি কোনো পাপাচারী ব্যক্তি তোমাদের কাছে কোনো সংবাদ আনয়ন করে, তবে তোমরা পরীক্ষা করে দেখবে, যাতে অজ্ঞতাবশতঃ তোমরা কোনো সম্প্রদায়ের ক্ষতিসাধনে প্রবৃত্ত না হও এবং পরে নিজেদের কৃতকর্মের জন্যে অনুতপ্ত না হও। -সূরা আল হুজরাত: ৬

আজ থেকে সাড়ে চৌদ্দশ বছর পূর্বে আল্লাহতায়ালা এই আদেশ দিয়েছেন। বর্তমান সময়ে যদি এই আয়াতের প্রতি লক্ষ্য করি, তাহলে মনে হবে এখনকার প্রেক্ষাপটকে সামনে রেখে আয়াতটি নাজিল হয়েছে।

শোনা কথা যাচাই-বাছাই ছাড়া প্রচার করে বেড়ানো ভয়াবহ অপরাধ। এ বিষয়ে হাদিসে ইরশাদ হয়েছে, হজরত আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, হজরত রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, কোনো লোকের মিথ্যাবাদী হওয়ার জন্য এতটুকুই যথেষ্ট যে, সে যা শুনে (সত্যতা যাচাই না করে) তা-ই বলে বেড়ায়। -সহিহ মুসলিম: ৫

যেকোনো সংবাদ যাচাই না করে তা প্রকাশ ও প্রচার করতে নিষেধ করা হয়েছে। বর্তমান সময়ে সবার আগে সংবাদ দেওয়ার প্রবণতা থেকে দেখা যাচ্ছে, প্রায়ই ভুল ও অসত্য সংবাদ করো হচ্ছে। এর ফলে সাংবাদিক তার নির্ভরযোগ্যতা হারিয়ে ফেলেন। এমনকি ওই প্রতিষ্ঠানের গ্রহণযোগ্যতা নিয়ে নানা প্রশ্ন ওঠে। যা কোনোভাবেই কাম্য নয়। মিথ্যা, বানোয়াট, অসত্য, গুজব প্রচার ও প্রকাশ ইসলাম নিষিদ্ধ কাজ।

সংবাদ প্রচার করা একটি আমানত
সংবাদ এক ধরনে আমানত। এই আমানতকে কোনো ধরণের কাট-ছাঁট না করে হুবহু প্রকাশ করাই একজন পেশাদার সাংবাদিকের নৈতিক দায়িত্ব আমানতের খেয়ানত ইসলামে কঠোরভাবে নিষিদ্ধ। এ প্রসঙ্গে কোরআনে কারিমে ইরশাদ হয়েছে, হে ঈমানদারগণ! খেয়ানত করো না আল্লাহর সঙ্গে ও রাসূলের সঙ্গে এবং খেয়ানত করো না নিজেদের পারস্পরিক আমানতে জেনে-শুনে। -সূরা আল আনফাল: ২৭

আল্লাহতায়ালা আমাদেরকে সদা সত্য ও নির্ভেজাল কথার প্রতি উদ্বুদ্ধ করেছেন। ইরশাদ হয়েছে, হে ইমানদারগণ! আল্লাহকে ভয় করো এবং সঠিক কথা বলো। -সূরা আল আহজাব: ৭০

তাই নিজস্ব চিন্তা কিংবা দল-মতের প্রলেপ মাখিয়ে সংবাদকে আংশিক বা পুরোপুরি পরিবর্তন করে উপস্থাপন করা ইসলামের দৃষ্টিতে সম্পূর্ণ হারাম। বস্তুনিষ্ঠ কোনো সংবাদের একটু পরিবর্তনে ঘটতে পারে অশান্তির দাবানল। তাই এ বিষয়ে সর্বোচ্চ সতর্কতা অবলম্বন অপরিহার্য। আল্লাহতায়ালা বলেন, এবং পৃথিবীতে অনর্থ সৃষ্টি করতে প্রয়াসী হয়ো না। নিশ্চয়ই আল্লাহতায়ালা অনর্থ সৃষ্টিকারীদের পছন্দ করেন না।’ -সূরা কাসাস: ৭৭

সাংবাদিকের পুরস্কার
যারা অনেক পরিশ্রম করে দেশের স্বার্থে অমানতের সঙ্গে দূর-দূরান্ত থেকে সংবাদ আহরণ করে তাদের জন্য রয়েছে বিশাল পুরস্কার। হজরত হুযায়ফা (রা.)-এর ঘটনা থেকে এমনটিই ফুটে উঠে। হজরত ইবরাহিম তাইমি তার বাবা থেকে বর্ণনা করেন, তিনি বলেন আমরা হুযায়ফাহ (রা.)-এর কাছে ছিলাম। তখন এক ব্যক্তি বলে উঠল। হায়, আমি যদি রাসূলুল্লাহ (সা.) কে পেতাম, তবে তার সঙ্গে মিলে একত্রে যুদ্ধ করতাম এবং তাতে কোনোরূপ পিছপা হতাম না। হজরত হুযায়ফাহ (রা.) বললেন, হয়তো তুমি তা করতে, কিন্তু আমি তো আহজাবের রাতে রাসূলুল্লাহ (সা.)-এর সঙ্গে ছিলাম (সে রাতে) প্রচণ্ড বায়ু ও তীব্র শীত আমাদের কাবু করে ফেলেছিল। এমনি সময় রাসূলুল্লাহ (সা.) ঘোষণা করলেন, ওহে! এমন কেউ আছে কি যে আমাকে শত্রুর খবর এনে দেবে, আল্লাহতায়ালা তাকে কিয়ামতের দিন আমার সঙ্গে (মর্যাদার আসনে) রাখবেন। আমরা তখন চুপ করে রইলাম এবং আমাদের মধ্যে কেউ তার সে আহ্বানে সাড়া দেয়নি। এভাবে তিনি তিনবার বললেন এবং সবাই চুপ রইল। তারপর তিনি বললেন, হে হুযাইফা! ওঠো এবং তুমি শত্রুদের খবরাদি আমাকে এনে দাও। হজরত রাসূলুল্লাহ (সা.) যখন এবার আমার নাম ধরেই ডাক দিলেন, তাই উঠা ছাড়া আমার আর কোনো উপায় ছিল না। এবার তিনি বললেন, শত্রুপক্ষের খবর আমাকে এনে দাও, কিন্তু সাবধান, তাদের আমার বিরুদ্ধে উত্তেজিত করো না। আমি ফিরে আসলাম এবং ফিরে আসার সময়ও উষ্ণতা অনুভব করলাম। প্রতিপক্ষের খবর তাকে দিলাম। আমার দায়িত্ব পালন করে অবসর হতেই আবার আমি শীতের তীব্রতা অনুভব করলাম। তখন হজরত রাসূলুল্লাহ (সা.) তার অতিরিক্ত একটি কম্বল দিয়ে আমাকে আবৃত করে দিলেন, যা তিনি সাধারণতঃ নামাজ আদায়ের সময় গায়ে দিতেন। তারপর আমি ভোর পর্যন্ত একটানা নিদ্রায় বিভোর রইলাম। যখন ভোর হলো- তখন তিনি বললেন, হে গভীর নিদ্রামগ্ন! এখন উঠে পড়ো। -সহিহ মুসলিম: ১৭৮৮ (সংক্ষেপিত)

হাদিসে রাসূল (সা.) সত্য সংবাদ দাতাকে কিয়ামতের দিন তার সঙ্গে থাকার সুসংবাদ দিয়েছেন। তাই যে সাংবাদিক বস্তুনিষ্ঠ সংবাদ পরিবেশন করবে তার জন্য রয়েছে এই সুসংবাদ।

মুফতি জাওয়াদ তাহের: সিনিয়র শিক্ষক, জামিয়া বাবুস সালাম, বিমানবন্দর, ঢাকা-১২৩০

   

আগামীতে হজ ব্যবস্থাপনা হবে বিশ্বের মধ্যে অন্যতম স্মার্ট: ধর্মমন্ত্রী



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

ধর্মমন্ত্রী মো. ফরিদুল হক খান বলেছেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ঘোষিত রূপকল্প-২০২১ ও ২০৪১ অনুসারে উন্নত-সমৃদ্ধ স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ার অংশ হিসেবে হজ ব্যবস্থাপনায় আধুনিক তথ্য-প্রযুক্তির সন্নিবেশ ঘটানো হয়েছে।

তিনি বলেন, হজ ব্যবস্থাপনাকে ডিজিটালাইজড করা হয়েছে। এ সংক্রান্ত যে পোর্টালটি রয়েছে সেখানে আমরা নতুন নতুন ফিচার যুক্ত করছি। আগামী দিনে বাংলাদেশের হজ ব্যবস্থাপনা হবে বিশ্বের মধ্যে অন্যতম স্মার্ট হজ ব্যবস্থাপনা।

বুধবার (২৪ এপ্রিল) সকালে ঢাকা হজ অফিসের সম্মেলন কক্ষে হজযাত্রী প্রশিক্ষণ ২০২৪ ’র উদ্বোধন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে ধর্মমন্ত্রী এ কথা বলেন।

ফরিদুল হক খান বলেন, আপনারা সকলেই যাতে সহী-শুদ্ধভাবে হজব্রত পালন করতে পারেন সেজন্যই মূলত আজকের এই প্রশিক্ষণ। আমরা প্রশিক্ষণের জন্য অত্যন্ত দক্ষ প্রশিক্ষক নির্বাচন করেছি। আপনারা যদি প্রশিক্ষণের প্রতি মনযোগী হতে পারেন তাহলে আপনারা হজের নিয়ম-কানুন, হুকুম-আহকাম, ধারাবাহিক আনুষ্ঠানিকতা- সবকিছু আয়ত্তে আনতে পারবেন।

তিনি বলেন, আমাদের দেশের বেশিরভাগ মানুষেরই প্রবণতা হলো জীবনের শেষ প্রান্তে এসে হজ পালন করা। হজ অনেক পরিশ্রমসাধ্য ইবাদত, এর জন্য শারীরিক সামর্থ্য থাকা বাঞ্চনীয়। অনেকেরই সেই শারীরিক সামর্থ্য থাকে না। যার কারণে তাদের পক্ষে হজের আনুষ্ঠানিকতা সম্পাদন করা অনেক কষ্টকর হয়ে যায়।

তিনি বলেন, অনেকেই দীর্ঘদিন ধরে জমানো সঞ্চয় দিয়েই হজব্রত পালন করতে যান। এদেশের অধিকাংশ মানুষেরই দ্বিতীয় বার হজ করার মতো আর্থিক সঙ্গতি থাকে না। সে কারণে আপনার পরিশ্রম ও অর্থ যেন বিফলে না যায় সেজন্য অবশ্য মহানবী হযরত মুহাম্মদ (স.)’র নির্দেশিত পথ অনুসরণ করে হজ সম্পাদন করতে হবে। সহী ও শুদ্ধভাবে হজব্রত পালন করতে হবে।

ফরিদুল হক খান বলেন, সৌদি আরবে আপনার পরিচয় শুধু একজন হজযাত্রী নয়, আপনার পরিচয়-আপনি একজন বাংলাদেশি। আপনার আচার-আচরণ, কথাবার্তা ও চালচলনের মাধ্যমেই বিদেশের মাটিতে বাংলাদেশের ভাবমূর্তি প্রকাশ পাবে।

তিনি সৌদি আরবের আইন-কানুন, নিয়ম-শৃঙ্খলা প্রতিপালনে কোনরূপ বিচ্যুতি না ঘটে সেদিকে যত্নবান থাকার আহ্বান জানান।

এছাড়া, কারো জন্য দেশের ভাবমূর্তি ও সম্মান যেন ক্ষুন্ন না হয় সেদিকে বিশেষভাবে সর্তক থাকার জন্য হজযাত্রীদেরকে অনুরোধ জানান তিনি।

ধর্মসচিব মু. আ. হামিদ জমাদ্দারের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সভায় অন্যদের মধ্যে হজ অনুবিভাগের অতিরিক্ত সচিব মো. মতিউল ইসলাম, যুগ্মসচিব ড. মো. মঞ্জরুল হক ও ঢাকা হজ অফিসের পরিচালক মুহম্মদ কামরুজ্জামান বক্তব্য রাখেন।

প্রশিক্ষণে সরকারি মাধ্যমে নিবন্ধিত ঢাকার হজযাত্রীরা অংশগ্রহণ করছেন।

;

সুষ্ঠু হজ ব্যবস্থাপনা নিয়ে আশঙ্কা এজেন্সি মালিকদের



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম
ছবি: বার্তা২৪.কম

ছবি: বার্তা২৪.কম

  • Font increase
  • Font Decrease

এবারের হজ ব্যবস্থাপনায় বিশৃঙ্খলার আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন হজ এজেন্সির মালিকেরা। তাই সুষ্ঠু হজ ব্যবস্থাপনার লক্ষ্যে দ্রুত সকল প্রতিবন্ধকতা নিরসনে প্রধানমন্ত্রীর সরাসরি হস্তক্ষেপ কামনা করেন এজেন্সি মালিকেরা।

বুধবার (২৪ এপ্রিল) সকালে জাতীয় প্রেসক্লাবের তফাজ্জল হোসেন মানিক মিয়া হলে এক সংবাদ সম্মেলনে এ দাবি জানান অপারেটিং হজ এজেন্সির মালিকরা।

সুষ্ঠু হজ ব্যবস্থাপনায় জটিলতা সৃষ্টি হয়েছে বলে হাবিবুল্লাহ মুহাম্মদ কুতুবুদ্দীন লিখিত বক্তব্যে বলেন, ধর্ম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের কিছু ঊর্ধতন কর্মকর্তা এবং মক্কা হজ মিশনের কিছু কর্মকর্তাদের অবহেলা ও দায়িত্বহীনতার কারণে হজ ব্যবস্থাপনায় জটিলতা সৃষ্টি হয়েছে। এতে করে এবারের হজ ব্যবস্থাপনায় বিশৃঙ্খলার আশঙ্কা করছেন তারা।

তিনি আরও বলেন, গত ১৮ এপ্রিল ধর্ম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের হজ ১ শাখা থেকে সৌদি সরকারের একটি চিঠির বরাতে জানানো হয়- আগামী ২৯ এপ্রিল হজ যাত্রীদের ভিসা ইস্যু বন্ধ হয়ে যাবে।

চিঠিতে আরও জানানো হয়, ২৯ এপ্রিলের মধ্যে আবশ্যিকভাবে হজযাত্রীদের ভিসা সম্পন্ন করতে হবে। এজেন্সীর অবহেলার কারণে হজযাত্রীদের হজে গমন অনিশ্চিত হলে সে এজেন্সীর বিরুদ্ধে হজ ও উমরাহ ব্যবস্থাপনা আইন ২০২১ অনুসারে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

এর আগে, গত ১০ ফ্রেব্রুয়ারি ধর্ম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের এক চিঠিতে জানানো হয়, সৌদি সরকারের হজ ও উমরা মন্ত্রণালয়ের আবাসন, ক্যাটারিং সিদ্ধান্ত অনুযায়ী ২৫ ফেব্রুয়ারির মধ্যে সকল প্রকার অনলাইন চুক্তি (সার্ভিস কোম্পানি, পরিবহান, ইত্যাদি) সম্পন্ন করার বাধ্যবাধকতা রয়েছে। অথচ এখনো অনেক এজেন্সির ৮০ শতাংশ কার্যক্রম বাকি।

এমন অবস্থায় সুষ্ঠু হজ ব্যবস্থাপনার লক্ষ্যে এবং সকল প্রতিবন্ধকতা নিরসনের জন্য প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ চেয়ে হজ এজেন্সি মালিকেরা অনুরোধ করেন।

এছাড়াও কিছু সুনির্দিষ্ট সুপারিশ করেন তারা। সেগুলো হলো- দ্রুত সময়ের মধ্যে সকল হাজির মিনার জোন নির্ধারণ করে ই হজ সিস্টেম আপডেট করতে হবে। ফাইনাল ফ্লাইট শিডিউল ঘোষণা ও সকল এজেন্সির হজযাত্রী অনুপাতে টিকেট নিশ্চিত করতে হবে। মোয়াজ্জেমদের জন্য বারকোড ভিসার বিষয়টি নিশ্চিত করা। যাদের সৌদি একাউন্টে এখনো রিয়াল জমা হয়নি তাদের একাউন্টে দ্রুত রিয়াল জমার ব্যবস্থা করা।

তারা বলেন, বর্তমানে সৌদি একাউন্টে টাকা ঢুকতে দেড় মাস সময় লাগে। যদি কারো একাউন্টে ১ পয়সাও কম থাকে তাহলে তার হজে যাওয়া সম্ভব হবে না। এবং বর্তমানে সরকারের বিভিন্ন চার্জ একবারে হিসাব করে পাঠানো অনেকটা অসম্ভব। এছাড়া যাদের এখনো মেননজাইটিস ও ইনফ্লুয়েঞ্জা টিকা হয়নি তাদের জন্য দ্রুত টিকার ব্যবস্থা করতে হবে।

এছাড়াও ভিসা ইস্যু কার্যক্রম অন্যান্য বছরের মতো সর্বশেষ ফ্লাইটের এক সপ্তাহ পূর্ব পর্যন্ত চালু রাখার দাবি জানান তারা। আরও বলেন, অতীতে দেখা গেছে অনেকে হজ করতে যাওয়ার ইচ্ছে করলেও সকল প্রস্তুতির পর মারা গেছেন। আবার কেউ মারাত্মক রোগাক্রান্ত হয়েছেন। এছাড়াও দুর্ঘটনা ইত্যাদি কারণে যেতে পারেন না। তাই সেই হজযাত্রীর পরিবর্তে তার পরিবারের অন্য কোন সদস্যদের যাওয়ার ব্যবস্থা করা যেতো তাহলে জমাকৃত টাকা গচ্চা যেতো না। বর্তমানে যে অবস্থা আছে তাতে ভিসা ইস্যু এতো আগে বন্ধ হয়ে গেলে অহেতুক প্রচুর টাকা সৌদি আরবে চলে যাবে। এতে দেশের ক্ষতি হবে। যদি বিষয়টি সৌদি সরকারকে বুঝাতে আমরা সক্ষম হই তাহলে আমাদের বিশ্বাস সৌদি সরকার বাস্তবতা বুঝে অবশ্যই বিবেচনা করবেন।

;

যে গ্রামে জাকাত-ফেতরা নেওয়ার কেউ নেই



ইসলাম ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
গ্রামের মানুষের মাঝে ছাগল বিতরণ করা হচ্ছে, ছবি : সংগৃহীত

গ্রামের মানুষের মাঝে ছাগল বিতরণ করা হচ্ছে, ছবি : সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

সম্মিলিত ও সুপরিকল্পিত উদ্যোগে বদলে গেছে প্রত্যন্ত একটি গ্রামের চিত্র। গ্রামটির সকল পরিবার হয়েছে সচ্ছল। ওই গ্রামে এখন আর ফেতরা কিংবা জাকাত নেওয়ার মানুষ নেই। সবাই স্বাবলম্বী।

কিশোরগঞ্জ জেলার সদর উপজেলার দানাপাটুলি ইউনিয়নের চাঁদের হাসি গ্রাম। এই চাঁদের হাসি গ্রামের দরিদ্র বিমোচন ফাউন্ডেশনের এমন উদ্যোগের ফলে বদলে গেছে গ্রামের দৃশ্যপট।

সংগঠনটি নিজ গ্রামের গন্ডি পেরিয়ে এখন পার্শ্ববর্তী গ্রামের মানুষদের স্বাবলম্বী করতে উদ্যোগ নিয়েছে। এমন প্রশংসনীয় কাজ করা সংগঠনটির নেই নিবন্ধন, নেই বাহারি অফিস। তারা প্রচারে নয়, কাজে বিশ্বাসী। যার প্রমাণ, ফাউন্ডেশনের জনকল্যাণমূলক নানা কাজ।

জানা গেছে, ২০০৩ সালে চাঁদের হাসি গ্রামের প্রয়াত মাওলানা হেলান উদ্দিনের প্রচেষ্টায় দরিদ্র বিমোচন ফাউন্ডেশন প্রতিষ্ঠিত হয়। এরপর থেকে গ্রামে সকল পরিবারের ফেতরা ও জাকাত একসঙ্গে করে অসহায়-গরীব মানুষের মাঝে বিতরণ করে আসছে। এভাবে দীর্ঘ ২১ বছরে এই কার্যক্রমের ফলে চাঁদের হাসি গ্রামে এখন আর ফেতরা ও জাকাত নেওয়া মতো মানুষ নেই। ইতোমধ্যে সংগঠনটি গ্রামের ৮০ জন অসহায় গরীব মানুষকে ঘর তৈরি করে দিয়েছে।

২ বছর আগে চাঁদের হাসি গ্রামের দরিদ্র বিমোচন ফাউন্ডেশনের সহায়তা ঘর পেয়েছেন ওহেদ আলী। তিনি জানান, ঘর পেয়ে মাথা গুজার ঠাঁই হয়েছে। স্ত্রী-সন্তান নিয়ে ভালোভাবেই চলছে তার সংসার।

মাহমুদ বেগম নামে এক কলেজ শিক্ষার্থী জানান, তার পরিবার দরিদ্র বিমোচন ফাউন্ডেশনের সহায়তা ঘর ও সেলাই মেশিন পেয়েছেন। তার বাবা নেই মা ও ছোট বোনকে নিয়ে ঘরে বসবাস করছেন। সেলাই মেশিনের মাধ্যমে মানুষের জামা কাপড় সেলাই করে নিজেও স্বাবলম্বী হয়েছেন।

চাঁদের হাসি দরিদ্র বিমোচন ফাউন্ডেশনের সাধারণ সম্পাদক মো. মাসুদ আলম জানান, ২০০৩ সালে আমাদের সংগঠনটি প্রতিষ্ঠিত হওয়ার পর থেকে এলাকার চলনশীল মানুষের ফেতরা ও জাকাত একসঙ্গে করে আমরা কাজ করে থাকি। এভাবে কার্যক্রম পরিচালনা করার পর থেকে ইসলামের বিধি মোতাবেক যে ৮টি খাত রয়েছে সে হিসাবে বর্তমানে আমাদের গ্রামে জাকাত-ফেতরা নেওয়ার মতো কোনো মানুষ নেই।

সংগঠনটি গ্রামের অসহায় ও গরীব মানুষকে স্বাস্থ্য ও শিক্ষা সহায়তাও দিয়ে আসছে। গ্রামের বেকারত্ব ঘোচাতে অসহায় ও গরীব মানুষের মাঝে গরু, ছাগল, সেলাই মেশিন, অটোরিকশা ও ভ্যান গাড়ি বিতরণ করেছে।

;

রাজধানীতে শীতল পানি বিতরণ করল ইসলামী ছাত্র আন্দোলন



ইসলাম ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
দেশব্যাপী শীতল পানি ও শরবত বিতরণ কর্মসূচী পালন ইসলামী ছাত্র আন্দোলন বাংলাদেশের, ছবি : সংগৃহীত

দেশব্যাপী শীতল পানি ও শরবত বিতরণ কর্মসূচী পালন ইসলামী ছাত্র আন্দোলন বাংলাদেশের, ছবি : সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

তীব্র তাপদাহে সৃষ্ট সংকটে দেশব্যাপী শীতল পানি ও শরবত বিতরণ কর্মসূচী পালন করছে ইসলামী ছাত্র আন্দোলন বাংলাদেশের নেতৃবৃন্দ।

বিভিন্ন জেলা, থানা, ওয়ার্ডের গুরুত্বপূর্ণ স্থানে ভ্রাম্যমাণ ভ্যান নিয়ে পথচারী, দিনমজুর, রিকশাচালকসহ তৃষ্ণার্ত মানুষের মাঝে ঠান্ডা পানি বিতরণ করেছে সংগঠনটির নেতৃবৃন্দ। এছাড়া খাবার স্যালাইন ও পকেট রুমাল বিতরণ করা হয়েছে।

মঙ্গলবার (২৩ এপ্রিল) দুপুরে কেন্দ্রীয় কর্মসূচির অংশ হিসেবে ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের ৬৬ ও ৬৭ নম্বর ওয়ার্ডে শ্রমজীবী ও পথচারীদের মাঝে ইসলামী ছাত্র আন্দোলন বাংলাদেশ ঢাকা মহানগর পূর্বের ডেমরা থানা শাখার উদ্যোগে বিশুদ্ধ শীতল পানি, স্যালাইন ও ওয়ালেট টিস্যু বিতরণ কর্মসূচি পালন করা হয়।

ইসলামী ছাত্র আন্দোলন বাংলাদেশের কেন্দ্রীয় মানবসম্পদ উন্নয়ন ও কর্মসংস্থান বিষয়ক সম্পাদক শেখ মুহাম্মাদ মাহবুবুর রহমানের নেতৃত্বে এতে উপস্থিত ছিলেন ঢাকা মহানগর পূর্ব শাখার সহ-সভাপতি মুহাম্মাদ মাইনুল ইসলাম, ডেমরা থানা শাখার সভাপতি শাহাদাত হোসেন মৃধা, সাধারণ সম্পাদক আশরাফুল ইসলাম, সাংগঠনিক সম্পাদক রাফিইন বিন আমজাদ, কফিল উদ্দিনসহ থানা ও ওয়ার্ড নেতৃবৃন্দ।

এ সময় প্রধান অতিথি শেখ মুহাম্মাদ মাহবুবুর রহমান বলেন, অপরিকল্পিত নগরায়ন, জলাধার ভরাট ও অবাধে বৃক্ষ নিধনের ফলেই অসহনীয় তাপদাহে নগরে জনজীবন অতিষ্ঠ হয়ে পড়েছে। সাময়িক স্বস্তির জন্য আমরা শীতল পানির বিতরণ কর্মসূচি পালন করছি। কিন্তু দীর্ঘমেয়াদি ও টেকসই সমাধানের জন্য নগরকে সবুজায়ন ও বসবাসের উপযোগী করতে রাষ্ট্রকেই যথাযথ ভূমিকা পালন করতে হবে।

নগর সহ-সভাপতি মাইনুল ইসলাম বলেন, যতদিন তীব্র তাপদাহ থাকবে ইসলামী ছাত্র আন্দোলন বাংলাদেশের কেন্দ্র ঘোষিত কর্মসূচির অংশ হিসেবে ঢাকা মহানগর পূর্বের উদ্যোগে নগরজুড়ে বিশুদ্ধ শীতল পানি বিতরণ কর্মসূচি অব্যাহত থাকবে।

;