কোরবানি মহাবিশ্বের পালনকর্তার জন্য



ফয়সল আহমদ জালালী, অতিথি লেখক, ইসলাম
কোরবানির পশু হিসেবে বাংলাদেশে গরু বেশি জনপ্রিয়, ছবি: সংগৃহীত

কোরবানির পশু হিসেবে বাংলাদেশে গরু বেশি জনপ্রিয়, ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

অকারণে জীব হত্যা ইসলামে অন্যায়। ভালোবাসা দিয়ে প্রাণীর লালন-পালনের শিক্ষা দিয়েছে ইসলাম। প্রাণীর প্রতি কোনো নির্যাতন করা চলবে না। জগতের সকল জীবের প্রতি প্রীতি প্রদর্শনের নির্দেশ দিয়েছেন নবী মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম। তিনি বলেছেন, জগতের সব প্রাণীর প্রতি তোমরা করুণা প্রদর্শন করো আকাশের মালিক তোমাদের প্রতি করুণা করবেন। -সুনানে তিরমিজি: ১৯৩০

সৃষ্টিকর্তা মহান আল্লাহ মানুষের প্রয়োজনের অধীন করেছেন সৃষ্টির সব কিছু। বলেছেন, তিনি তোমাদের জন্য পৃথিবীর সবকিছু সৃষ্টি করেছেন। -সূরা বাকারা: ২৯

মানুষ প্রয়োজনে বিশ্ব জগতের সব কিছু ব্যবহার করবে। কারণ মানুষের জন্য বিশ্ব জগৎ আর মানুষ পালনকর্তার জন্য। স্রষ্টার বিধান মেনে মানুষ তার প্রয়োজন মেটাবে, এটিই নিয়ম। ‘জীব হত্যা মহাপাপ’ এসব সস্তা বুলি। বিশ্ব সমাজের ভারসাম্য রক্ষায় তা অচল। বৈরাগ্যবাদ লোকালয়ে চলে না। বন জঙ্গলের সীমানায় ও এরূপ মতবাদ অচল। নিরামিষ ভোজী! সেতো তরকারি শাক-সবজির সমাহার। এগুলো প্রাণহীন? না, এগুলোর ও প্রাণ আছে। তারাও আল্লাহর নাম জপ করে। তাতো সৃষ্টিকর্তার কথা। প্রাণ না থাকলে জপ করে কিভাবে। আধুনিক বিজ্ঞান বিষয়টি খোলাসা করে দিয়েছে। বলছে, উদ্ভিদের ও প্রাণ আছে। রাব্বুল আলামীনের ঘোষণা, হিংস্রজাত পশু ছাড়া তোমাদের জন্য চতুষ্পদ জীবকে হালাল করা হয়েছে। -সূরা মায়িদা: ১

সৃষ্টি যার তিনিই যেখানে বৈধ করেছেন সেখানে অতি সন্ন্যাসী সাজার কি আছে?

জবাই হবে আল্লাহর নামে
পশু জবাই করতে হবে সৃষ্টিকর্তা আল্লাহর নামে। প্রাণীর প্রতি আমার যথেষ্ট প্রেম আছে। আছে ভালোবাসাও। আমার যেমন প্রাণ তারও সেরকম প্রাণ। প্রাণ আমার হোক আর পশুপাখির হোক, আল্লাহর নামের কাছে তা কিছুই নয়। কারণ আমাদের জীবন-মরণ সব আল্লাহর জন্য। ইসলাম ফিতরাতের ধর্ম। মানুষের নাড়ি বুঝে এর বিধান দেওয়া হয়েছে। এতে নেই কোনো প্রাণীপূজা আর নেই কোন প্রাণীর সাজা। আমার মালিক আর প্রাণীর মালিক একজনই। এক কথায় বিশ্ব জাহানের অধিপতি হলেন আল্লাহ। আমার জন্য তার গোশত হালাল করেছেন তিনিই। আমরা তারই হুকুমের অধীন। তার নামেই প্রাণীকে আমরা হালাল করি। বিসমিল্লাহি আল্লাহু আকবার হলো হালদারের মন্ত্র। এর ওপরে আর কোনো করুণা দেখানো হবে ভণ্ডামি। মায়ের চেয়ে মাসির দরদ বেশির মতো।

হজরত আদম আ.-এর ছেলেদের কোরবানি
যুগে যুগে আল্লাহর নামে প্রাণী উৎসর্গ করার প্রচলন ছিল। আমরা যাকে কোরবানি বলি। আদি মানব হজরত আদম আলাইহিস সালামের দুই পুত্র কোরবানি করেছিলেন। ইরশাদ হয়েছে, আদম দু’পুত্রের বৃত্তান্ত তুমি তাদেরকে যথাযথভাবে শোনাও। যখন তারা উভয়ে কোরবানি করেছিল....। -সূরা আল মায়েদা:২৭

হজরত ইবরাহিম আ.-এর কোরবানি
হজরত ইবরাহিম আলাইহিস আলাইহিস সালামের কোরবানি ছিলো মহা এক পরীক্ষা। আল্লাহর পক্ষ হতে পুত্রকে কোরবানি করার আদিষ্ট হন তিনি। রবের পক্ষ হতে আদেশপ্রাপ্তির পর আল্লাহর নামে উৎসর্গ করতে আর হতে সামান্যতম ও কুন্ঠাবোধ করেননি পিতা ও পুত্র। মূর্তিমান সহনশীল এই পুত্র ছিলেন ইসমাঈল আ.। তখন তিনি ছিলেন পিতার একমাত্র সন্তান। সেই পরীক্ষার পরিসমাপ্তি ঘটে একটি দুম্বা কোরবানির মাধ্যমে। মুহাম্মাদ সা. তার ঊর্ধ্বতন পুরুষ ইবরাহিম আ.-এর অনুকরণে সেই কোরবানির বিধান চালু রাখেন। সাহাবায়ে কিরামের প্রশ্নের উত্তরে হজরত রাসূলুল্লাহ সা. বলেছিলেন, এটি তোমাদের পূর্ব পুরুষ ইবরাহিম প্রবর্তিত রীতি।

মিল্লাতে ইবরাহিম
তাওহিদ তথ্য এক আল্লাহর বিশ্বাসে বলীয়ান ছিলেন হজরত ইবরাহিম আ.। শিরক ও মূর্তিপূজার বিরুদ্ধে ছিল তার কঠোর অবস্থান। এ কারণে তাকে অগ্নিকুণ্ডেও নিক্ষিপ্ত হতে হয়েছিল। হজরত ইবরাহিম আ.-এর পরবর্তী নবীগণ ছিলেন তারই বংশজাত। ইসমাঈলি ধারার একমাত্র নবী হলেন মুহাম্মাদ সা.। বাকী সবাই ইসরাঈলি ধারার। বর্তমান বিশ্বে হজরত মূসা আ., হজরত ঈসা আ. ও মুহাম্মাদ সা.-এর অজস্র অনুসারী রয়েছেন। পশ্চিমা ঐতিহাসিকগণ এই তিন নবীর ধর্মকে ইবরাহিমি ধর্ম বলে অভিহিত করেন। ইসলামের নবী মুহাম্মাদ সা. তাদেরকে আল্লাহর রাসূল ছিলেন বলে স্বীকৃতি দিয়েছেন। শুধু স্বীকৃতিই নয়, তাদেরকে আল্লাহ্ কর্তৃক প্রেরিত বলে বিশ্বাস করাকে ঈমানের অন্যতম অঙ্গ বলে ঘোষণা করেছেন। অথচ ইহুদি ও খ্রিস্টানরা হজরত ইসমাঈল আ.-এর স্মৃতি বিজড়িত কোরবানির বিষয়টিও মানতে নারাজ। এখানে হজরত ইসহাক আ. কে তারা লক্ষ্য বানাতে চান। অথচ ঐতিহাসিক মক্কা-মোকাররামায় ইবরাহিম ও ইসমাঈল স্মৃতিবিজড়িত নিদর্শনাবলী এখনও অক্ষত। মিনা প্রান্তরে তাদের কোরবানিতে যাত্রাস্থলের পয়েন্টগুলো সুরক্ষিত। তা চোখে দেখার মতো বিশ্বাসযোগ্য। দুম্বা কোরবানির মাধ্যমে যার পরিসমাপ্তি ঘটে। পাহাড়ের টিলার ওপর তার স্মৃতিস্বরূপ একটি স্তম্ভও রয়েছে।

সূরা সাফফাতে ইরশাদ হয়েছে, ‘আমি তাকে এক সহনশীল পুত্রের সুসংবাদ দিলাম। সে যখন পিতার সঙ্গে দৌঁড়ঝাপের বয়সে পৌঁছল, তিনি বললেন, খোকা! আমি স্বপ্ন দেখি তোমাকে জবেহ করছি। এতে তোমার অভিমত কি। ছেলে বলল, আব্বু! আপনি আদেশ পালন করুন। আমাকে ধৈর্যশীল পাবেন- ইনশাআল্লাহ। দু'জন আনুগত্য প্রকাশ করল আর পুত্রকে কাত করে শোয়াল। আমি তখন ডেকে বললাম, হে ইবরাহিম! তুমি স্বপ্নাদেশ পালন করেছ। আমি এভাবেই সৎকর্মশীলদের পুরস্কৃত করে থাকি। নিশ্চয়ই এটি ছিল এক মহাপরীক্ষা। আমি তাকে মুক্তি দিলাম এক কোরবানির বিনিময়ে। -সূরা আস সাফফাত: ১০১-১০৭

হজরত রাসূলুল্লাহ সা.-এর কোরবানি
হজরত রাসূলুল্লাহ সা. ছাগল, ভেড়া ও গরু কোরবানি করেছেন। কোনো সময় নিজেই নিজের কোরবানি করেছেন। কোনো সময় সহধর্মিণীগণের পক্ষে এবং কোনো সময় উম্মাহর পক্ষ থেকে ছিল তার কোরবানি। প্রাণীকুলের প্রতি ছিল তার অকুণ্ঠ ভালোবাসা। তবে আল্লাহর ভালোবাসার কাছে দুনিয়ার সব ভালোবাসা তার কাছে ছিল পরাজিত। তাই নিজ হাতে তিনি পশু কোরবানি করেছেন।

হজরত জাবির ইবনে আবদুল্লাহ রা. বলেন, আমি ঈদগাহে হজরত রাসূলুল্লাহ সা.-এর সঙ্গে ছিলাম। খুৎবা শেষে তিনি মিম্বর থেকে অবতরণ করলে তার কাছে একটি ভেড়া নিয়ে আসা হল। তিনি তা নিজ হাতেই জবাই করলেন। -সুনানে তিরমিজি: ১৫২১

যারা গরুর অতিমাত্রায় ভক্ত, তারা বলতে চান- ইসলামের নবী গরুর গোশত খান নাই। অথচ হজরত রাসূলুল্লাহ সা. গরু জবাই করেছেন, এমনকি গরুর কোরবানিও দিয়েছেন। উম্মত জননী হজরত আয়েশা রা. বলেন, আমরা মিনায় অবস্থানকালে আমাদের কাছে গরুর গোশত নিয়ে আসা হলো। আমি জিজ্ঞাসা করলাম এটি কী। লোকজন বলল, হজরত রাসূলুল্লাহ সা. একটি গরু তার সহধর্মিণীগণের পক্ষে কোরবানি দিয়েছেন। এটি ছিল বিদায় হজের ঘটনা। এরপর তিনি আর কোরবানি করার সুযোগ পাননি। -সহিহ বোখারি: ৫২২৮ৎ

আমরা পরিবেশবাদী হই আর পশুপাখি প্রেমিক হই কিংবা গোপূজারী হই, সবাইকে মনে রাখতে হবে; আমরা মহান আল্লাহর গোলাম। গোলামের কাজ মনিবের দাসত্ব করা। যিনি বিশ্বজগতের মালিক তিনি যেনতেন মনিব নয়। তিনি খাদ্য ও আলো বাতাস দিয়ে গোটা জগত পালন করেন। তার আদেশের সামনে মাথা নত করার মাঝে রয়েছে গোটা জগতের কল্যাণ। তিনি নির্দেশ দিয়েছেন তোমার রবের জন্য সালাত আদায় করো এবং কোরবানি করো। -সূরা কাওসার

নিবেদিত মনে কোরবানি
আল্লাহতায়ালার নির্দেশিত পথে, হজরত ইবরাহিম আ. প্রদর্শিত ও মুহাম্মাদ সা. সমর্থিত কোরবানি একান্ত নিবেদিত মনে হতে হবে। এতে কোরবানি নামের ত্যাগ আমাদের জীবনে স্বার্থকতা নিয়ে আসবে। কোরবানি প্রদর্শনীর মহড়া নয়। নয় মুখ রক্ষার কোনো অনুষ্ঠান। ভূরিভোজের কোনো আয়োজনও নয়। দেহ, মন ও অর্থকে সম্পূর্ণরূপে পালনকর্তা আল্লাহর নামে বিসর্জন দেওয়ার নাম কোরবানি। এমনটি হলে পশুর লোম লোমে অর্জিত হবে পুণ্য। আল্লাহ তার গোলামের মনের ভাব দেখতে চান। তার কাছে পশুর কোনো গোশত ও শোণিতের কোনো মূল্য নেই। বান্দা কি মনে ও কোন বিশ্বাস নিয়ে কোরবানি করছে সেটি মূল্যায়ন করেন আল্লাহ ।

হজরত রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কোরবানি করার সময় বলতেন ইন্নি ওয়াজ্জাহতু... আমি আমাকে মহাবিশ্বের সৃষ্টিকর্তার সামনে সোপর্দ করলাম। শেষে বলতেন, ওহে আল্লাহ্! ইবরাহিম খলিল হতে যেভাবে কবুল করেছো- সেভাবে আমাদের থেকে কবুল করো।

আল্লাহর মহব্বতে বিলীন হয়ে ইবরাহীম আ.-এর ঘোষণা ছিলো- আমার সালাত, আমার কোরবানি, আমার জীবন ও আমার মরণ মহাবিশ্বের পালনকর্তার জন্য নিবেদিত। -সূরা আনআম: ১৬২

লেখক: সিনিয়র মুহাদ্দিস ও গবেষক ইসলামিক ফাউন্ডেশন, বাংলাদেশ

ফের বাড়ল হজ নিবন্ধনের সময়



ইসলাম ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

সরকারি ব্যবস্থাপনায় হজযাত্রী নিবন্ধনের সময় আরেক দফা বাড়ানো হয়েছে। বর্ধিত সময় অনুযায়ী আগামী ৩০ মার্চ পর্যন্ত নিবন্ধন করা যাবে।

সোমবার (২৭ মার্চ) নিবন্ধনের সময় বাড়িয়ে ধর্মবিষয়ক মন্ত্রণালয় থেকে প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়েছে।

জানা গেছে, সোমবার সন্ধ্যা পর্যন্ত সরকারি-বেসরকারিভাবে নিবন্ধন করেছেন ১ লাখ ১৭ হাজার ৩৩৯ জন। কোটা পূরণে এখনো নিবন্ধন বাকি রয়েছে ৯ হাজার ৮৫৯। এর মধ্যে সরকারিতে ফাঁকা ৫ হাজার ১০৮, বেসরকারিতে ৪ হাজার ৭৫১।

হজ অনুবিভাগের কর্মকর্তারা বলছেন, চলতি বছর বাংলাদেশ থেকে কতজন হজ করতে যাবেন তা সৌদি সরকারকে জানানোর শেষ তারিখ আগামী ৯ মে।

ধর্ম মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা বলছেন, এবার হজের খরচ বেশি হওয়ায় শুরু থেকেই নিবন্ধনে ভাটা লক্ষ্য করা যাচ্ছে। কিন্তু তারা তো কাউকে ডেকে এনে নিবন্ধন করাতে পারেন না।

চাঁদ দেখা সাপেক্ষে চলতি বছরের ২৭ জুন (৯ জিলহ্জ) পবিত্র হজ অনুষ্ঠিত হবে। সৌদি আরবের সঙ্গে হজচুক্তি অনুযায়ী, এবার বাংলাদেশ থেকে এক লাখ ২৭ হাজার ১৯৮ জন হজ করতে পারবেন। এর মধ্যে সরকারি ব্যবস্থাপনায় ১৫ হাজার জন এবং অবশিষ্ট এক লাখ ১২ হাজার ১৯৮ জন বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় হজ করার সুযোগ পাবেন।

;

১৮ এপ্রিল পবিত্র লাইলাতুল কদর



ইসলাম ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

শুক্রবার থেকে পবিত্র রমজান মাস শুরু হচ্ছে। ধর্মপ্রাণ মুসলমানরা বৃহস্পতিবার (২৩ মার্চ) রাতে তারাবির নামাজ আদায় করেন। শেষ রাতে প্রথম সেহরি খাওয়া হবে।

এই হিসেবে আগামী ১৮ এপ্রিল (২৬ রমজান) মঙ্গলবার দিবাগত রাতে পবিত্র শবে কদর পালিত হবে।

বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় ইসলামিক ফাউন্ডেশন বায়তুল মুকাররম সভাকক্ষে জাতীয় চাঁদ দেখা কমিটির সভায় এ সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। সভায় সভাপতিত্ব করেন ধর্ম প্রতিমন্ত্রী মো. ফরিদুল হক খান।

পবিত্র মাহে রমজান উপলক্ষে রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বাণী দিয়েছেন।

প্রসঙ্গত, মুসলমানদের জন্য রমজান মাস রহমত, বরকত ও মাগফেরাতের বার্তা বয়ে আনে। সংযমের এ মাসে মুসলিমরা আত্মশুদ্ধি ও আল্লাহর নৈকট্য লাভের আশায় ইবাদত-বন্দেগি করে থাকেন।

;

রোজার পুরস্কার মিলবে যেসব আমলে



ইসলাম ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

পবিত্র মাহে রমজানে কোনোভাবেই আল্লাহতায়ালার অসন্তুষ্টিমূলক কোনো কাজে লিপ্ত হওয়ার কোনো সুযোগ নেই। সর্বোপরি মাহে রমজান ও রোজা মহান মালিককে সন্তুষ্ট করার সুবর্ণ অবসর। এ জন্য আমাদের মাহে রমজান ও রোজা হওয়া চাই হারাম, কবিরা গোনাহ ও নাফরমানি মুক্ত। মিথ্যা, প্রতারণা, অন্যায়, অত্যাচার, পাপাচার, সুদ, ঘুষ ও দুর্নীতি মুক্ত হওয়া। তবেই আমরা রমজান ও রোজার পূর্ণাঙ্গ পুরস্কার গ্রহণ করতে পারব।

আল্লাহ পাককে সন্তুষ্ট করার, মুত্তাকি হওয়ার লক্ষ্য অর্জন করতে পারব। এ লক্ষে রমজান মাসে কিছু বিষয়ের প্রতি বিশেষভাবে খেয়াল রাখা দরকার। এর অন্যতম হলো-

সময়ের অপচয়রোধ

জীবন সেকেন্ড, মিনিট, ঘণ্টার সমষ্টি। এই ক্ষুদ্র, ক্ষুদ্র সময়ই আমার জীবন। জীবনের একটি মুহূর্ত বেখেয়াল, অবহেলায় কাটিয়ে দেওয়া মানে এই সময়টা নষ্ট করে ফেলা। সে আর কখনও ফেরত আসবে না। এক একটি মুহূর্ত জীবনে একবারই আসে। প্রত্যেকটি দিন আগমন করে আমাকে আহবান করে তাকে ভালোভাবে ব্যবহার করার জন্য। সে এও বলে দেয়, হিসাবের দিনেই কেবল সে আবার আমার সামনে হাজির হবে। যে ব্যক্তি সময়ের সদ্ব্যবহার করে, দুনিয়ার জীবনে সে সফলতা পায়। আমার রমজান ৩০ দিনের হলে ২৫,৯২,০০০ সেকেন্ডের সমষ্টি। রমজানের চাঁদ উদিত হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে তা কমতে শুরু করে। আমার কাছে রমজানের প্রতিটি সেকেন্ড মূল্যবান। আমি, আপনি যদি হিসাব করে এই সেকেন্ডগুলো কাজে লাগাতে পারি, তবে আমি আপনি অবশ্যই সফল হতে পারব। একজন পরীক্ষার্থী যেমন প্রত্যেকটি সেকেন্ডের হিসাব রেখে উত্তর লিখতে থাকে। তেমনি আমার আপনারও এই মূল্যবান সময়ের যথাযথ কদর করে রোজা পালন করলে, এই বছরের রমজান আমার আপনার জীবনে এক ব্যতিক্রম রমজান মনে হবে এবং এক ব্যতিক্রম ফল বয়ে আনবে। তাই গল্পগুজব, আড্ডা, টিভি দেখা, ফেসবুক অনলাইনে সময় ব্যয়, অবসরে শুধু ঘুমানো, এখানে সেখানে ঘুরাফেরা করা ইত্যাদি কাজগুলো বর্জন করি। তবে আমার রমজান হবে প্রাণবন্ত।

কথা হোক কম

যখন আপনি আমি কথা কম বলব, তখন অনেক অনর্থক এমন কি ফাহেশা কথা থেকে বেঁচে যাব। জীবনের অনেক সময়ও বেঁচে যাবে। বেশি কথা বললে, গীবত, পরনিন্দা, মিথ্যা এ ধরণের অনেক কথা মুখ ফঁসকে বেরিয়ে যেতে পারে। যে সময় আমি অযথা গল্প কথায় লিপ্ত হব, এই সময়টাকে আমি কোরআন তেলাওয়াত, তাফসির অধ্যয়ন, হাদিস পাঠ, বিভিন্ন মাসনুন দোয়া, ইস্তেগফার, দরুদ শরিফ পাঠ, হজরত রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর শেখানো বিভিন্ন জিকিরে মশগুল হতে পারি। অনায়াসে অনেক বরকতের ভাগিদার হতে পারি।

কাজে গতিময়তা

কাজ ছাড়া জীবন অচল, আমরা কেউ চাকুরি করি, কেউ ব্যবসা, কেউ কৃষিকাজ ইত্যাদি। এই রমজানে আমার কাজের সময়কে কমিয়ে আনি। কাজের গতি বাড়িয়ে দেই। কাজের গতি বাড়িয়ে কাজের সময়কে কমিয়ে আনি। এই বেঁচে যাওয়া সময়টিকে আমি ইবাদত-বন্দেগি, কোরআন তেলাওয়াত, দরুদ, ইস্তেগফার পাঠে ব্যয় করি। তাহলে দেখা যাবে কাজের এই গতিময়তা পুরো বছর আমাকে বরকত দেবে। আমার অনেক সময় হাতে থাকবে, বিশেষভাবে মাওলাকে ডাকার জন্য আমার সময়ের অভাব হবে না।

সোশ্যাল মিডিয়া বর্জন

রমজান মাস আমার জন্য আমার মহান রবের এক মহান উপহার। এই মাস সওয়াব কামাইয়ের মাস। এই মাস সোশ্যাল নেটওয়ার্কে যুক্ত থাকার মাস নয়। আপনার বিশেষ কোনো প্রয়োজনে আপনি নেটওয়ার্কে যুক্ত থাকতে পারেন। কিন্তু ফেসবুক, টুইটার, ইনস্ট্রাগ্রাম, ইউটিউভ ইত্যাদি মাধ্যমগুলো যথাসম্ভব এড়িয়ে চলুন। আপনি হয়তো ভালো কিছু দেখতে চান, ভালো কিছু শুনতে চান। এই ভালো দেখার সঙ্গে, ভালো শোনার সঙ্গে কিছু খারাপও আপনার নজরে এসে যাবে। এই সময় আমি আপনি নেটওয়ার্কহীন অন্য ইবাদতে মশগুল হই। যার নেটওয়ার্ক আমার আর আমার রবের সঙ্গে সংযোগ করে দেবে- ইনশাআল্লাহ।

;

শুক্রবার থেকে রোজা শুরু



ইসলাম ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

আজ বুধবার দেশের কোথাও চাঁদ দেখা না যাওয়ায় আগামী শুক্রবার থেকে রোজা শুরু হচ্ছে।

বুধবার (২২ মার্চ) সন্ধ্যায় ইসলামিক ফাউন্ডেশনের সভাকক্ষে বৈঠক করে জাতীয় চাঁদ দেখা কমিটি এ কথা জানায়।

বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন ধর্মমন্ত্রী ও কমিটির সভাপতি অধ্যক্ষ মতিউর রহমান।

বৈঠক শেষে জানানো হয়, বাংলাদেশের কোথাও পবিত্র রমজান মাসের চাঁদ দেখা যায়নি। ফলে আগামী শুক্রবার থেকে শুরু হবে রমজান মাস গণনা। সে ক্ষেত্রে বৃহস্পতিবার দেশের মসজিদগুলোতে বাদ এশা তারাবির নামাজের মধ্য দিয়ে ধর্মপ্রাণ মুসলমানরা পবিত্র রমজানের কার্যক্রম শুরু করবেন। এরপর ওই দিন দিবাগত ভোররাতে সাহ্‌রি খেয়ে প্রথম রোজা রাখতে হবে।

;