কলকাতার স্থাপিত হলো ব্রোঞ্জের বঙ্গবন্ধুর আবক্ষ ভাস্কর্য



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা ২৪.কম, কলকাতা
ছবিঃ বার্তা২৪.কম

ছবিঃ বার্তা২৪.কম

  • Font increase
  • Font Decrease

১৯৭২ সালের ১০ জানুয়ারি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবস। পাকিস্তানের বন্দীদশা থেকে মুক্তি পেয়ে দিনটিতে বঙ্গবন্ধু স্বাধীন বাংলাদেশের মাটিতে প্রত্যাবর্তন করেছিলেন।

ফলে জাতির পিতার জন্মশতবার্ষিকী এবং স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উদযাপনের বছরে বঙ্গবন্ধুর স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবসটি উপলক্ষে সোমবার (১০ জানুয়ারি) কলকাতাস্থিত বাংলাদেশ উপ-হাইকমিশন প্রাঙ্গণে নবনির্মিত বঙ্গবন্ধুর আবক্ষ ভাস্কর্য, ভার্চুয়ালি উদ্বোধন করেছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন, এমপি।

অনুষ্ঠানে বঙ্গবন্ধুর আবক্ষ ভাস্কর্য পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন উপ-হাইকমিশনার তৌফিক হাসান ও সকল কর্মকর্তাবৃন্দ।

কলকাতায় বঙ্গবন্ধুর আবক্ষ ভাস্কর্য উদ্বোধন করে মাননীয় পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশ উপ হাইকমিশন, কলকাতা তাদের মিশন প্রাঙ্গণে বাংলাদেশের জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের একটি আবক্ষ ভাস্কর্য নির্মাণ করেছে জেনে আমি অত্যন্ত আনন্দিত।

বঙ্গবন্ধু তাঁর জীবনের একটি গুরুত্বপূর্ণ সময় কলকাতায় অতিবাহিত করেছেন। বর্তমান মৌলানা আজাদ কলেজ অর্থাৎ তৎকালীন ইসলামিয়া কলেজের ছাত্র বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ১৯৪৫-৪৬ শিক্ষাবর্ষে বেকার গভর্নমেন্ট হোস্টেলের ২৪ নম্বর কক্ষে আবাসিক ছিলেন। যেটি এখন বঙ্গবন্ধু স্মৃতি কক্ষ হিসেবে সংরক্ষিত রয়েছে। বঙ্গবন্ধু

১৯৪৬ সালে ইসলামিয়া কলেজ ছাত্র সংসদের সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন। ইসলামিয়া কলেজে অধ্যয়নকালে মুসলিম লীগের তরুণ কর্মী হিসাবে পাকিস্তান সৃষ্টির আন্দোলনে ভারতবর্ষ চষে বেড়িয়েছেন। তরুণ মুজিব, জীবনবাজি রেখে হিন্দু মুসলিম দাঙ্গার মাঝখানে দাঁড়িয়েছেন মানবঢাল হিসাবে।

১৯৪২ থেকে ১৯৪৭ - তারুণ্যের ছয়টি বছর কলকাতায় বঙ্গবন্ধুর রাজনৈতিক সক্রিয়তা খুব সহজেই তাকে পরিচিত করে তোলে, বৃহত্তর বাংলার তৎকালীন মুখ্যমন্ত্রী হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দীর কাছে। শহীদ সাহেবের স্নেহভাজন হিসাবে শেখ মুজিব হয়ে উঠেন কলকাতায় মুসলিম লীগের প্রভাবশালী ছাত্রনেতা। কলকাতার অভিজ্ঞতা বঙ্গবন্ধুর অসামান্য নেতৃত্বগুণকে বিকশিত করতে সহায়তা করে।

এরপর ড. মোমেন বাংলাদেশে মুক্তিযুদ্ধ ও ভারতের সহযোগিতার স্মৃতিচারণ করার পর বলেন,  ১৯৭১ এর ১৮ ই এপ্রিল তৎকালীন কলকাতার মিশন প্রধান জনাব হোসেন আলী বাংলাদেশের প্রথম জাতীয় পতাকা উত্তোলনের মাধ্যমে মিশনের অন্যান্য বাঙালি কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের নিয়ে বাংলাদেশ সরকারের প্রতি একাত্মতা ঘোষণা করেন। সেইদিন থেকে কলকাতাস্থ বাংলাদেশ মিশন বিদেশে বাংলাদেশের প্রথম কূটনৈতিক মিশন হিসেবে আত্মপ্রকাশ করে এবং সেই ঐতিহাসিক ভবনটি আজও বাংলাদেশের গৌরবোজ্জ্বল মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসের সাক্ষ্য নিয়ে বাংলাদেশ উপ-হাইকমিশন হিসেবে স্বমহিমায় বিরাজমান। প্রতি বছর ১৮ ই এপ্রিল তারিখে বাংলাদেশে “ফরেন সার্ভিস ডে” হিসেবে পালিত হচ্ছে।  আমাদের মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসে তাই কলকাতার ভূমিকা অনস্বীকার্য।

পররাষ্ট্রমন্ত্রী আরও বলেন, বাংলাদেশ স্বাধীন হলে বঙ্গবন্ধুর স্বদেশ প্রত্যাবর্তনের দিন ১৯৭২ সালের ১০ জানুয়ারি তাঁর কলকাতায় যাত্রা বিরতি করার কথা ছিল। কিন্তু দেশমাতৃকার টানে বঙ্গবন্ধু দিল্লী থেকে সোজা ঢাকায় অবতরণ করেন এবং কলকাতায় শীঘ্রই আসবেন বলে কলকাতার আকাশে বিমান থেকেই কলকাতায় বার্তা পাঠান। তাঁর সেই কথা রেখেছিলেন বঙ্গবন্ধু। তিনি ১৯৭২ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে কলকাতা সফর করেন এবং ৬ ফেব্রুয়ারি কলকাতার বিখ্যাত ব্রিগেড প্যারেড গ্রাউণ্ডে তৎকালীন ভারতীয় প্রধানমন্ত্রী শ্রীমতী ইন্দিরা গান্ধীর উপস্থিতিতে প্রায় ১০ লক্ষাধিক লোকের সামনে বক্তব্য রাখেন। সেইসময় বঙ্গবন্ধু কলকাতার ঐতিহাসিক বাংলাদেশ উপ হাইকমিশন ভবনটি সফর করেন এবং মিশনের কর্মকর্তা, কর্মচারীদের উদ্দেশ্যে বক্তব্য রাখেন। বহির্বিশ্বে স্থাপিত বাংলাদেশের প্রথম কূটনৈতিক মিশনে জাতির পিতার সেদিনের উপস্থিতি এক অন্যরকম তাৎপর্যপূর্ণ আবহ সৃষ্টি করেছিল।  

এ বছর আমরা বাংলাদেশের স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী পালন করছি এবং একইসাথে ভারত-বাংলাদেশ মৈত্রীরও ৫০ বছর পূর্তি উদযাপিত হচ্ছে। এরকম একটি সময়ে বঙ্গবন্ধু এবং বাংলাদেশের অভ্যুদয়ের অসংখ্য স্মৃতি বিজড়িত ঐতিহ্যবাহী শহর কলকাতায় বাংলাদেশ উপ হাইকমিশন প্রাঙ্গণে বঙ্গবন্ধুর আবক্ষ ভাস্কর্য স্থাপন নিঃসন্দেহে একটি যুগান্তকারী সিদ্ধান্ত। এজন্য আমি মিশনের সবাইকে আন্তরিক ধন্যবাদ জানাই। এ প্রক্রিয়ার সাথে জড়িত সবাইকে জানাই অশেষ কৃতজ্ঞতা। এটি আমাদের জাতির পিতার প্রতি শ্রদ্ধা ও ভালবাসারই একটি চমৎকার নিদর্শন হিসেবে থেকে যাবে চিরদিন।

প্রসঙ্গত, কলকাতাস্থিত বাংলাদেশ মিশনে এই প্রথম বঙ্গবন্ধুর আবক্ষ ভাস্কর্য প্রতিষ্ঠিত হলো। এর আগে বঙ্গবন্ধু কর্ণার, বঙ্গবন্ধু মঞ্চ ও মিশনের বাইরের দেওয়ালে ‘বঙ্গবন্ধুর বাংলাদেশ’ নামে একটি ম্যুরাল গত বছর উন্মোচন করেছিলেন উপ-হাইকমিশনার তৌফিক হাসান। মিশণ প্রাঙ্গণের সেখানেই বঙ্গবন্ধুর আবক্ষ ভাস্কর্য স্থাপিত হয়েছে, যেখানে বাংলাদেশের জাতীয় পতাকা উত্তোলন করা হয়ে থাকে। আবক্ষ ভাস্কর্যটি সম্পূর্ণ ব্রোঞ্জ দ্বারা নির্মিত। দীর্ঘ ছয়মাস সময় নিয়ে তৈরি করেছেন নদিয়া জেলার কৃষ্ণনগরের শিল্পী সুবীর পাল।

   

বয়সের ভারে শীর্ণ, তবু আজ ও ছুটেছে ১৫১ বছরের ট্রাম



ঋত্বিক মুখোপাধ্যায়, কলকাতা
-কলকাতার রাজপথে এখনও ছুটে চলছে ট্রাম

-কলকাতার রাজপথে এখনও ছুটে চলছে ট্রাম

  • Font increase
  • Font Decrease

সময়ের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বদলেছে সবকিছু। হয়েছে বিবর্তন। পুরনোকে বিদায় জানিয়ে নুতনকে স্বাগত জানিয়েছে মানুষ। পুরনো যা কিছু এখন দেখা যায় জাদুঘরে কিংবা কারও ব্যক্তিগত সংগ্রহে। একইভাবে সময়ের সঙ্গে তাল রেখে বদলেছে এক সময়ের ভারতবর্ষের রাজধানী কলকাতা । সময়ের পরিবর্তনে এখন যা ভারতের পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের প্রধান শহর।

অন্য আর পাঁচটা শহরের মত গতি পেয়েছে কল্লোলিনী কলকাতা। তবে ১৫১ বছর আগের কলকাতার একটা খন্ডচিত্রের অংশ ট্রাম এখনও দিব্যি চলছে কলকাতার বুকে । গেল ২৪ ফেব্রুয়ারি ছিল কলকাতার ট্রামের জন্মদিন । ১৮৭৩ সালের ২৪ ফেব্রুয়ারি তৎকালীন ব্রিটিশ আমলে প্রথমবার শুরু রাস্তা দিয়ে চলে ঘোড়ায় টানা কাঠের ট্রাম।

শিয়ালদা থেকে আর্মেনিয়ান ঘাট পর্যন্ত প্রথমবার ছুটেছিল সেই ট্রাম। এই বছর কলকাতার সেই ট্রাম যাত্রা পা রাখতে চলেছে একশো একান্ন বছরে ৷ তবে প্রযুক্তির সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে ট্রামেরও বিবর্তন হয়েছে। ১৯০২ সালের ২৭ মার্চ ধর্মতলা খিদিরপুর-রুটে প্রথম বৈদ্যুতিক ট্রাম চলেছিল।

অনেকেই হয়তো জানেন না যে, ভারতে কলকাতা ছাড়াও আরও বেশ কয়েকটি শহরে একসময় চলত ট্রাম ৷ কলকাতার পর তৎকালীন মাদ্রাজ, দিল্লি, বোম্বে, কানপুর, ভাভনগর, নাসিক এবং পাটনাতেও শুরু হয়েছিল ট্রাম পরিষেবা। এমনকী ব্রিটিশ ইন্ডিয়ায় করাচি এবং কলম্বোতেও ছিল ট্রাম পরিষেবা। তবে সেগুলি সবই পরে বন্ধ হয়ে যায়। কল্লোলিনী কলকাতার জীর্ণকায়ে ট্রাম কোনওমতে বাঁচিয়ে রেখেছে নিজের অস্তিত্ব।

একসময় রমরম করে স্বমহিমায় শহরের বুক চিঁড়ে ঘণ্টির শব্দ করে দৌঁড়ে যেত ট্রাম ৷ সেই দৃশ্য এখন বড়ই বিরল । ঠাণ্ডা ঘরে ঢুকেছে ট্রামের ভবিষৎ । তাই বোধহয় ট্রামের ১৫১ বছর নিয়ে মানুষের মধ্যে উৎসাহ একেবারেই নেই । তবে শহরের ট্রামপ্রেমী সংগঠন ক্যালকাটা ট্রাম ইউজারস অ্যাসোসিয়েশন, ওয়েস্ট বেঙ্গল ট্রান্সপোর্ট কর্পোরেশন ও ট্রাম যাত্রা বলে একটি সংগঠনের উদ্যোগে এই উপলক্ষ্যে এক বিশেষ উদ্যোগ নেয়।

কলকাতায় ট্রাম পরিবহণ ব্যবস্থা অন্যান্য দেশের ট্রাম নেটওয়ার্ক তুলনায় অনেকটাই অন্যরকম। শতাব্দী প্রাচীন এই ট্রামগুলি এখনও পরিষেবা দিয়ে চলেছে । সাধারণ মানুষের মতে শুধুমাত্র ট্রামকে উন্নত করলেই চলবে না। ট্রাম এবং অন্যান্য পরিবহণ ব্যবস্থা যাতে একে অপরের সমস্যা সৃষ্টি না-করে পরিষেবা দিতে পারে সেইভাবে পরিকল্পনা করতে হবে ।

ট্রামের তার দেখিয়ে মহানগর কলকাতার পরিচয় তুলে ধরতে চেয়েছিলেন সত্যজিৎ। কিন্তু কলকাতার পরিচয় বহনকারী সেই ট্রাম এখন যেন ‘ফেয়ারওয়েল’ পাওয়ার অপেক্ষায়। দেড়শো বছর ধরে শহরের ‘ঐতিহ্য’ হয়ে থেকে গেলেও ‘হেরিটেজ’ তকমা জোটেনি তার।

;

হুগলির কোন্নগরে অনাদরে ভাষাশহিদ শফিউরের জন্মভিটা!



ঋত্বিক মুখোপাধ্যায়, কলকাতা
ছবি: বার্তা২৪.কম

ছবি: বার্তা২৪.কম

  • Font increase
  • Font Decrease

‘আমার ভাইয়ের রক্তে রাঙ্গানো একুশে ফেব্রুয়ারী আমি কি ভুলিতে পারি’ ১৯৫২ সালের তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানের ঢাকা শহরের একদল দামাল ছেলে বাংলাকে রাষ্ট্রভাষা হিসেবে স্বীকৃতির দাবিতে বর্বর পাকিস্তানি পুলিশের গুলির সামনে বুক পেতে দিয়েছিলেন। রক্তে ভেসে গিয়েছিল ঢাকার রাজপথ। সেইদিন স্মরণে ১৯৯৯ সালের ৭ নভেম্বর জাতিসংঘ ২১ ফেব্রুয়ারিকে 'আন্তর্জাতিক ভাষা দিবস' হিসেবে স্বীকৃতি দিয়েছে। সারা পৃথিবীর মানুষ এই দিনটিকে 'ভাষা দিবস' হিসেবে শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করেন।

সেদিনের সেই রক্তক্ষয়ী সংগ্রামের যে বীর শহিদেরা মাতৃভাষার সম্মানার্থে প্রাণ দিয়েছিলেরন, তাদের মধ্যে ছিলেন রফিক, জব্বার , শফিউর, সালাম, বরকতের মতোন যুবক। তাদের মধ্যে শফিউর রহমান ছিলেন ওপার বাংলার মানুষ। পশ্চিমবঙ্গের হুগলি জেলার কোন্নগরের কাছে জিটি রোডের ওপর এখনো তাদের বাড়িটি শহিদের জন্মভূমি হিসেবে দাঁড়িয়ে রয়েছে অত্যন্ত অবহেলায় ও অনাদরে!

অত্যন্ত আক্ষেপের বিষয় একজন ভাষাশহিদের জন্মভিটা আজ ধ্বংসের মুখে। ১৯১৮ সালের ২৪ জানুয়ারি এই মহান ভাষাশহিদের জন্ম হয় কোন্নগরে। শফিউর রহমানের বাবা ছিলেন ঢাকার পোস্ট অ্যান্ড টেলিগ্রাফ অফিসের সুপারিনটেনডেন্ট। কোন্নগর হাইস্কুলে পড়া শেষ করে কলকাতা গভর্মেন্ট কমার্শিয়াল কলেজ থেকে আইএসসি পাস করার পর ১৯৪৮ সালের শফিউররা সপরিবারে ঢাকায় চলে যান। ঢাকা হাইকোর্টে কেরানির পদে কর্মরত ছিলেন তিনি। ১৯৫২ সালের ২১ ফেব্রুয়ারি সকালে মাতৃভাষাকে রাষ্ট্র ভাষার দাবিতে বিক্ষোভ সমাবেশে অন্যান্যদের সঙ্গে সামিল হয়েছিলেন শফিউরও।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ১৪৪ ধারা অমান্য করে রফিক, জব্বার,সালাম, বরকত, শফিউরসহ হাজারও ভাষাপ্রেমী মানুষ বাংলাকে রাষ্ট্রভাষা করার দাবিতে বিক্ষোভ দেখাতে থাকেন। সেদিনের সেই বিক্ষোভ সমাবেশে ঢাকা শহরের মানুষ শামিল হয়েছিলেন। ক্ষিপ্ত পাকিস্তানি পুলিশ সেই বিক্ষোভকে ছত্রভঙ্গ করতে নির্বিচারে গুলি চালিয়ে দামাল ছেলেদের দেহ মাটিতে মিশিয়ে দিয়েছিল। সেদিন প্রভাতে বিশ্ববিদ্যালয়ের সামনের রাস্তা রক্তের নদীতে পরিণত হয়েছিল। কিন্তু তাতেও দমেনি বিক্ষোভ সংগ্রাম। তাদের সেই মরণপণ সংগ্রাম আরো তীব্র থেকে তীব্রতর হয়েছিল। অবশেষে, ১৯৫৪ সালের ৭ মে পাকিস্তান সরকার বাংলা ভাষাকে পূর্ব পাকিস্তানের দ্বিতীয় রাষ্ট্রভাষা হিসেবে স্বীকৃতি দেয়। তারপর থেকেই এপার ওপার দুই বাংলা মিলিয়ে এই দিনটি শ্রদ্ধার সঙ্গে পালন করে আসছে। কিন্তু সব থেকে বড় আক্ষেপের বিষয়, সেদিনের সেই মরণপণ সংগ্রামের অন্যতম যোদ্ধা শফিউর রহমান যার জন্ম ভারতের পশ্চিমবঙ্গের হুগলিতে, তাঁর সেই জন্মভিটাটি আজও দাঁড়িয়ে রয়েছে অত্যন্ত অনাদর ও অবহেলায়।

সম্প্রতি, যখন পশ্চিমবঙ্গের বড় বড় দেশপ্রেমী মনীষীদের স্মরণে রাখতে তাঁদের জন্মভূমি এবং কর্মক্ষেত্রগুলি সরকার স্বীকৃতি দিয়ে তীর্থস্থানে পরিণত করেছে, কিন্তু সেই ১৯৫২ সালে ঢাকার মাটিতে শহিদ হওয়া সফিউর রহমানের কথা আজ আর কেউ আর মনে রাখেননি। যে বিদ্যালয়ে শফিউর পড়াশোনা করেছেন, পৌরসভার পক্ষ থেকে সেই কোন্নগর হাইস্কুলের একপাশে জিটি রোডের ধারে ছোট্ট একটি শহিদ বেদি তৈরি করে দেওয়া হয়েছে। সেখানেই প্রতিবছর গুটিকয়েক মানুষ যারা শফিউর রহমানকে চেনেন, ভাষা আন্দোলনের বীরগাথার কথা জানেন, তারা ’২১-এর সকালে কয়েক মুঠো ফুল দিয়ে শহিদবেদিতে তর্পণ করেন।

কোন্নগরবাসীর অত্যন্ত আক্ষেপ, এই শহরে এত বড় একজন ভাষা শহিদ জন্ম নিয়েছিলেন, শিক্ষার প্রথম পাঠ হিসেবে এখানকার কোন্নগর হাইস্কুলে পড়াশোনা করেছিলেন, তাঁর কথা আজ আর কেউই মনে রাখেননি। স্থানীয়দের দাবি, শফিউরের বাড়িটি অন্তত সংরক্ষণ করা হোক অথবা তাঁর স্মরণে এই শহরে যদি একটি মিনার তৈরি করা হয়, তাহলে ভৌগলিক সীমানা অতিক্রম করে আপামর বাঙালি সেই গৌরবের অংশীদার হতে পারবেন। সেইসঙ্গে অমরত্ব পাবে ভাষা সংগ্রামের ইতিহাসও!

;

হেলিকপ্টার শট: 'শাকাহারি আমিষ' সংস্থায় বিনিয়োগ ধোনি-র!



ঋত্বিক মুখোপাধ্যায়, কলকাতা
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

শাকাহারি আমিষ...তাও আবার হয় নাকি? এ যেন ঐ সোনার পাথর বাটির মত! আর এবার তাকে ঘিরেই এক বিপুল ব্যবসায়িক এবং বাণিজ্যিক সম্ভাবনার দ্বার যেন খুলে যাচ্ছে।

উল্লেখযোগ্য ঘটনা হলো ভারতবর্ষের যে সংস্থা এই ব্যবসায়িক বা বাণিজ্যিক সম্ভাবনাকে কাজে লাগানোর জন্য এগিয়ে এসেছে, তাকে বিনিয়োগ করে বসে আছেন ভারতীয় ক্রিকেট দলের প্রাক্তন অধিনায়ক এবং অন্যতম জনপ্রিয়তম ইয়ুথ আইকন মহেন্দ্র সিং ধোনি বা মাহি। উল্লেখ করা যেতে পারে ধোনি তার ক্রিকেটীয় ক্যারিয়ারে কিছুটা অ-ক্রিকেটীয় শট বা উদ্ভাবনী শট - যেমন হেলিকপ্টার শট - এইসবের জন্যই বিখ্যাত ছিলেন। আর এইবার ব্যবসা-বাণিজ্য বিনিয়োগের জগতে প্রবেশ করেও বেছে নিবেন এক উদ্ভাবনী ব্যবসা।

শাকাহারিকে একটু উদ্ভাবনী উপায়ে লিখে শাখা হ্যারি- বাজারে এই সংস্থা আনতে চলেছে শাকসবজি বা গাছ পাতাভিত্তিক আমিষ খাদ্যদ্রব্য। ইতিমধ্যেই তারা বেশ কিছু এই ধরনের খাদ্যদ্রব্য বাজারে এনেছে এবং যা ধীরে ধীরে জনপ্রিয় হয়ে উঠছে। আর এবার তারা আরেকটি নতুন ব্র্যান্ড বা সাব-ব্র্যান্ড - শেফসক্লুসিভ নিয়ে দখল করতে চাইছে হোরেকা বা হোটেল রেস্টুরেন্ট এন্ড ক্যাফে - বাজারের এই অংশটিকে বা এই সেগমেন্টটিকে।

এর পেছনে কারণ ও যথেষ্ট রয়েছে। ভারতসহ বিশ্বের বিভিন্ন বাজারে অত্যন্ত দ্রুত হারে বেড়ে চলেছে। ভারতের বাজারে খুব শিগগির এই হোরেকা সেগমেন্টের আনুমানিক বাজার মূল্য প্রায় ৪০ বিলিয়ন ডলারে পৌঁছবে বলে মনে করা হচ্ছে। বাজারে ক্রেতা বা উপভোক্তাদের পছন্দ এবং চাহিদা নিয়মিতই বদলাচ্ছে। নিরামিষ খাবারের দিকে যেমন ঝোঁক বাড়ছে, প্ল্যান্ট-বেসড প্রোটিন এর চাহিদাও বাড়ছে। এই দুইয়ের মধ্যে একটা সমন্বয় বা সামঞ্জস্য সাধনের লক্ষ্যেই শাকাহারি বাজারে নিয়ে আসছে শেফসক্লুসিভ। এই ব্র্যান্ডের অধীনে বাজারে আসছে হরেক রকমের স্নাক্স, স্টার্তার্স, মিলস এবং অ্যাকম্পানিমেন্টস। এবং এসবগুলোই আসছে উপভোক্তাদের স্বাদের সঙ্গে কোনরকম আপস না করেই।

উল্লেখ করা যেতে পারে, আর এক ক্রিকেটীয় মহা তারকা এবং প্রাক্তন ভারতীয় অধিনায়ক বিরাট কোহলিও এই ধরনের একটি প্লান্ট বেসড প্রোটিন কোম্পানিতে বিনিয়োগ করেছেন।

;

সঙ্গীতশিল্পী কবীর সুমন অক্সিজেন সাপোর্টে



নিউজ ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

বাংলা আধুনিক গানের শিল্পী কবীর সুমন বুকে সংক্রমণ নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। বর্তমানে তাঁকে অক্সিজেন সাপোর্ট রাখা হয়েছে বলে জানিয়েছে কলকাতার বাংলা দৈনিক আনন্দবাজার। তিনি কলকাতা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন।

সোমবার (২৯ জানুয়ারি) সন্ধ্যায় পত্রিকাটির অনলাইন ভার্সনে এ খবর জানানো হয়।

খবরে বলা হয়, “অসুস্থ সঙ্গীতশিল্পী কবীর সুমন। বুকে সংক্রমণ নিয়ে কলকাতা মেডিক্যাল কলেজে চিকিৎসাধীন রয়েছেন ‘গানওয়ালা’। অক্সিজেন সাপোর্টে রাখা হয়েছে তাঁকে। সূত্রের খবর, সোমবার দুপুর ৩টে নাগাদ সঙ্গীতশিল্পীকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। কলকাতা মেডিক্যাল কলেজের সুপার স্পেশালিটি ব্লকে ভর্তি করানো হয় তাঁকে।”

এদিকে, শিল্পী তাঁর ফেসবুকে ওয়ালে এক পোস্টে অসুস্থতার কথা জানিয়ে লিখেছেন, ‘শ্বাসকষ্ট নিয়ে কলকাতা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি হয়েছি। শিগগির সেরে উঠব। চিন্তা করবেন না।’

দৈনিক আনন্দবাজার হাসপাতাল সূত্রের বরাত দিয়ে জানায়, বেশ কিছুদিন ধরে অসুস্থ ছিলেন সুমন। সোমবার তাঁর শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। বুকে সংক্রমণের সঙ্গে সঙ্গে তাঁর হৃদযন্ত্রেও সমস্যা রয়েছে শিল্পীর। তীব্র শ্বাসপ্রশ্বাসের কষ্টে ভুগছিলেন।

তাঁর চিকিৎসার জন্য একটি মেডিকেল বোর্ড গঠন করা হয়েছে। ইতোমধ্যে, তাঁর শারীরিক পরীক্ষাও করা হয়েছে। তবে তাঁর শারীরিক অবস্থার কিছুটা উন্নতি হয়েছে বলে জানিয়েছে দৈনিকটি।

;