যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত ওবায়দুল করিমের মামলার নথি গায়েবের তদন্ত হবে
যাবজ্জীবন কারাদণ্ডপ্রাপ্ত আসামি হয়েও বহাল তবিয়াতে রয়েছেন ওরিয়ন গ্রুপের চেয়ারম্যান ওবায়দুল করিম। এমনকি তার মামলার নথি গায়েব হয়েছে এমন চাঞ্চল্যকর তথ্য বের হয়েছে। এরপর থেকে নড়েচড়ে বসেছেন দুর্নীতি দমন কমিশন।
এদিকে ওবায়দুল করিমের মামলার নথি গায়েবের বিষয়টি তদন্ত হওয়া উচিত বলে জানিয়েছেন সুপ্রিমকোর্টে নিয়োজিত দুদক আইনজীবী খুরশীদ আলম খান। দুদক সচিব মাহবুব হোসেন নথি গায়েবের বিষয়ে পরবর্তী করণীয় সম্পর্কে দুদক আইনজীবীদের নির্দেশনা দেওয়া হবে বলেও জানিয়েছেন।
এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) আইনজীবী খুরশীদ আলম খান বলেন, যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত ওবায়দুল করিমের মামলার নথি গায়েবের বিষয়টি সম্পর্কে জেনে আমার মনে হয়েছে এখন হাইকোর্ট স্বতঃপ্রণোদিত হয়ে নিম্ন আদালতের বিচারক ও ওবায়দুল করিমকে শোকজ করতে পারেন।
এ সময় তিনি এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন,‘মামলার নথি গায়েব কী করে হয়? এ বিষয়ে তদন্তপূর্বক ব্যাখ্যা চাওয়া উচিত।
দুদক সচিব মো. মাহবুব হোসেন বলেন, নথি গায়েবের বিষয়টি সংবাদপত্রের মাধ্যমে জেনেছি। এ সম্পর্কে আরও বিস্তারিত জানতে হবে। এরপর পরবর্তী করণীয় সম্পর্কে দুদকের আইনজীবীদের নির্দেশনা দেওয়া হবে।
দুদকের আইনজীবী মাহমুদ হোসেন জাহাঙ্গীর বলেন, যেহেতু মামলার নথিটি খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না, সেহেতু এ ব্যাপারে আদালতই প্রয়োজনীয় উদ্যোগ গ্রহণ করবেন। এছাড়া এটি যেহেতু কমিশনের (দুদক) মামলা, তাই এ ব্যাপারে কমিশনের নির্দেশনা পেলে সে অনুসারে কাজ করব।
২০০৭ সালে ওরিয়ন গ্রুপের চেয়ারম্যান ওবায়দুল করিম ক্ষমতার অপব্যবহার করে ব্যাংকের টাকা আত্মসাতের মামলায় যাবজ্জীবন কারাদণ্ডে দণ্ডিত হন। তবে বিচারিক আদালতে আত্মসমর্পণ না করেই তিনি ২০০৮ সালে ওই রায় বাতিল চেয়ে হাইকোর্টে রিট করেন। রুল শুনানি শেষে ওই বছরই বিচারিক আদালতের দেওয়া রায় স্থগিত করেন হাইকোর্ট। ২০০৯ সালে হাইকোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করে দুদক। শুনানি নিয়ে হাইকোর্টের আদেশ স্থগিত করেন আপিল বিভাগ।
একই সঙ্গে আসামি ওয়াবদুল করিমকে বিচারিক আদালতে আত্মসমর্পণের নির্দেশ দেন। নিয়মানুসারে মামলার মূল নথিটি উচ্চ আদালত থেকে বিচারিক আদালতে পাঠানো হয়। ২০১০ সালের ৯ ডিসেম্বর সেই নথিপত্র গ্রহণ করেন বিচারিক আদালতের দায়িত্বপ্রাপ্তরা।
কিন্তু অজ্ঞাত কারণে এরপর থেকে এ মামলার কার্যক্রম আর অগ্রসর হয়নি। মামলার মূল নথি খুঁজে না পাওয়ায় বর্তমানে ‘মামলা ও আসামিদের সর্বশেষ অবস্থা’ সম্পর্কে কেউই বলতে পারছেন না।