ভুক্তভোগী বা স্বজনরা ক্ষতিপূরণের মামলা করতে পারবেন: হাইকোর্ট



স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট, বার্তাটোয়েন্টিফোর.কম, ঢাকা
হাইকোর্ট

হাইকোর্ট

  • Font increase
  • Font Decrease

ক্ষতিপূরণ চাইতে হলে ভুক্তভোগী বা স্বজনদের আদালতে আসতে হবে। রাজধানীর বাড্ডায় গণপিটুনিতে নিহত তাসলিমা বেগম রেনুর পরিবারকে পাঁচ কোটি টাকা ক্ষতিপূরণ দেওয়ার নির্দেশনা চেয়ে করা রিটে হাইকোর্ট এ কথা বলেছেন। উচ্চ আদালতের মন্তব্য, আহত ব্যক্তির নিজেকে আবেদন করতে হবে। আর কেউ মারা গেলে স্বজনরা ক্ষতিপূরণ চেয়ে মামলা করতে পারবেন। এক্ষেত্রে অন্যদের মামলা করার সুযোগ নেই।

তাসলিমা বেগম রেনুর পরিবারকে ক্ষতিপূরণ দিতে রিট আবেদনটি করেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ইশরাত হাসান। এর শুনানিতে সোমবার (২৯ জুলাই) বিচারপতি মইনুল ইসলাম চৌধুরী ও বিচারপতি মো. আশরাফুল কামাল সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্টের দ্বৈত বেঞ্চ এসব মন্তব্য করেন। নিহত রেনুর স্বজনদের কেউ রিটে বাদী হলে আদালতে তাদের কথা শোনা বলে জানানো হয়।

শুনানিতে রিটকারী আইনজীবী ইশরাত হাসানের উদ্দেশে হাইকোর্ট বলেন, 'অপারেশন ক্লিনহার্টের বৈধতা চ্যালেঞ্জ রিটে আমরা রায়ে বলেছি, অপারেশন ক্লিনহার্টের সময় ভুক্তভোগী বা তার পরিবারের কোনো সদস্য প্রতিকার বা ক্ষতিপূরণ চেয়ে মামলা করতে পারবেন। এমনকি ক্ষতিপূরণ চেয়ে রিট আবেদন করলে হাইকোর্ট এ বিষয়ে আদেশ দিতে পারবে। আমরা আগের দেওয়া এই অভিমত থেকে সরে আসার কারণ দেখছি না। কিন্তু আপনি (আইনজীবী) ক্ষতিপূরণ চেয়ে মামলা করতে পারবেন না।'

গত ২৫ জুলাই গণপিটুনিতে নিহত তাসলিমা বেগম রেনুর পরিবারকে পাঁচ কোটি টাকা ক্ষতিপূরণ দেওয়ার নির্দেশনা চেয়ে হাইকোর্টে রিট করেন আইনজীবী অ্যাডভোকেট ইশরাত হাসান। রিটে তাৎক্ষণিক ক্ষতিপূরণ হিসেবে রেনুর পরিবারকে ১৫ দিনের মধ্যে ১০ লাখ টাকা দেওয়ার নির্দেশনা চাওয়া হয়।

রিট আবেদনে গণপিটুনি থেকে তাসলিমা বেগম রেনুকে বাঁচাতে বিবাদীদের ব্যর্থতা কেন অবৈধ ঘোষণা করা হবে না তা জানাতে রুল চাওয়া হয়। পাশাপাশি গণপিটুনি নিয়ে আইন তৈরির নির্দেশনার আর্জি ছিল।

রিটে মন্ত্রীপরিষদ সচিব, স্বরাষ্ট্র সচিব, আইন সচিব, তথ্য সচিব, পুলিশের আইজি, ঢাকা মহানগর পুলিশ (ডিএমপি) কমিশনার ও বাড্ডা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে (ওসি) বিবাদী করা করা হয়।

রিটের শুনানিতে ইশরাত হাসান বলেন, 'গত ছয় মাসে ৩১টি গণপিটুনির ঘটনা দেখা গেছে। এর মধ্যে রেনু নামে এক নারী তার সন্তানকে স্কুলে ভর্তির বিষয়ে খোঁজ নিতে গিয়ে ছেলেধরা সন্দেহে গণপিটুনিতে নিহত হয়েছেন।'

জবাবে আদালত বলেন, 'এ ধরনের অনেক ঘটনা খুবই দুঃখজনক। রিটে আপনি ক্ষতিপূরণ চেয়েছেন। তবে ক্ষতিপূরণ চাইতে হলে পরিবারের সদস্যদের আসতে হবে।'

রোববার (২৮ জুলাই) সিরাজগঞ্জের উল্লাপাড়ায় ট্রেন-মাইক্রোবাসের সংঘর্ষে বর-কনেসহ ১১ জন নিহতের ঘটনায় ক্ষতিপূরণ চেয়ে করা রিটে হাইকোর্টের একই বেঞ্চ ওই মন্তব্য করেছিলেন।

আদালত বলেন, 'রিট মামলার উদ্দেশ্য হতে হবে যাতে এ ধরনের ঘটনার পুনরাবৃত্তি না ঘটে। সেখানে রেনুর ঘটনাটিকে উদাহরণ হিসেবে আনবেন।'

আদালতের মন্তব্য, 'আপনারা আইনজীবী হিসেবে যত ভালো আবেদন ও সাবমিশন করবেন আমরা তত ভালো রায় দেবো।'

গত ২০ জুলাই সকালে উত্তর-পূর্ব বাড্ডা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে় ছেলেধরা সন্দেহে তাসলিমা বেগম রেনুকে পিটিয়ে হত্যা করা হয়। ২০১৬ সালে রেনুর সঙ্গে তার স্বামীর বিচ্ছেদ হয়েছিল। সেই থেকে তিনি মা ও চার বছরের মেয়ে তুবাকে সঙ্গে নিয়ে ঢাকার মহাখালীতে থাকছিলেন। মেয়ে তুবাকে স্কুলে ভর্তির তথ্য জানতে ঘটনার দিন ওই স্কুলে গিয়েছিলেন তিনি। কিন্তু স্কুলেই নির্মমভাবে গণপিটুনিতে নিহত হন রেনু। তার গ্রামের বাড়ি লক্ষ্মীপুর জেলার রায়পুরের সোনাপুর গ্রামে।

   

বাকপ্রতিবন্ধী তরুণীকে ধর্ষণের পর হত্যা, যুবকের মৃত্যুদণ্ড



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, চট্টগ্রাম
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

চট্টগ্রাম নগরীর চান্দগাঁওয়ে ৯ বছর আগে এক বাকপ্রতিবন্ধী তরুণীকে ধর্ষণের পর হত্যার দায়ে মো. জালাল (২৮) নামে এক যুবককে মৃত্যুদণ্ডাদেশ দিয়েছেন একটি আদালত। একই রায়ে দণ্ডিত আসামিকে এক লাখ টাকা অর্থদণ্ডের আদেশ দেন।

মঙ্গলবার (২৮ মে) চট্টগ্রাম নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-৫ এর বিচারক মোহাম্মদ ওসমান গণি এ রায় দেন। এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন আদালতের রাষ্ট্রপক্ষের কৌঁসুলি হাবিবুর রহমান আজাদ।

দণ্ডিত আসামি মো. জালাল কক্সবাজার জেলার টেকনাফ থানাধীন হোয়াইক্যং এলাকার মো. সিদ্দিকের ছেলে। তিনি পেশায় পোশাক শ্রমিক। কাজের সুবাদে জালাল স্ত্রীকে নিয়ে নগরীর চান্দগাঁও থানাধীন শহীদ কলোনিতে থাকতেন।

আদালত সূত্র জানা গেছে, ২০১৫ সালের ২ মার্চ জালালের হাত ধরে চট্টগ্রাম শহরে আসেন কক্সবাজার জেলার টেকনাফ উপজেলার বাকপ্রতিবন্ধী ওই তরুণী। পরে তার মাধ্যমে চান্দগাঁও এলাকায় একটি ভাড়া বাসায় উঠে সে। পরে জালাল তাকে পোশাক কারখানায় চাকরি পাইয়ে দেয়। একই বছরের ১৯ মার্চ জালালের স্ত্রী পোশাক কারখানায় চাকরি যান। ওইদিন চাকরিতে যায়নি জালাল এবং ওই তরুণী। বাকপ্রতিবন্ধী তরুণীকে একা পেয়ে ধর্ষণের পর হত্যা করে মরদেহ বাসার ফ্যানের সঙ্গে ঝুলিয়ে রাখে। পরে এটিকে আত্মহত্যা বলে চালানোর চেষ্টা করে জালাল। পরে পুলিশ জালালকে গ্রেফতার করে জিজ্ঞাসাবাদ করলে তিনি খুনের ঘটনা স্বীকার করেন। ময়নাতদন্তেও হত্যা বিষয়টি নিশ্চিত হয় পুলিশ।

এ ঘটনায় ভিকটিমের বাবা বাদী হয়ে জালালকে একমাত্র আসামি করে চান্দগাঁও থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন। মামলার তদন্ত শেষে পুলিশ আদালতে ২০১৫ সালের ৩০ নভেম্বর অভিযোগপত্র দাখিল করেন। ২০১৬ সালের ১০ মার্চ জালালের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরু হয়। মামলায় আট জনের সাক্ষ্য নিয়ে আদালত এ রায় দেন।

ট্রাইব্যুনালের কৌঁসুলি অ্যাডভোকেট হাবিবুর রহমান আজাদ জানান, আসামির বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ রাষ্ট্রপক্ষ সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণিত করতে সক্ষম হওয়ায় আসামিকে মৃত্যুদণ্ডাদেশ দিয়েছেন আদালত। একই রায়ে এক লাখ টাকা জরিমানা করা হয়েছে। রায় ঘোষণার সময় আসামি জালাল আদালতে উপস্থিত ছিলেন। পরে তাকে সাজা পরোয়ানামূলে কারাগারে পাঠানো হয়।

;

প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগ প্রক্রিয়া হাইকোর্টে স্থগিত



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, ঢাকা
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

তৃতীয় ধাপে ঢাকা ও চট্টগ্রাম বিভাগে ৪৬ হাজার প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক নিয়োগের কার্যক্রম স্থগিত করেছেন হাইকোর্ট। সেই সাথে বিষয়টি তদন্তেরও নির্দেশ প্রদান করা হয়। প্রশ্ন ফাঁসের অভিযোগ ওঠায় এ নির্দেশ দেওয়া হয়েছে বলে জানা গেছে।

মঙ্গলবার (২৮ মে) বিচারপতি মোস্তফা জামান ইসলাম ও বিচারপতি এস এম মাসুদ হোসেন দোলনের হাইকোর্ট বেঞ্চ এ আদেশ দেন।

গত বছরের ২৮ ফেব্রুয়ারি প্রথম ধাপে রংপুর, সিলেট ও বরিশাল বিভাগের ক্লাস্টারের বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে অধিদফতর। এরপর ২২ মার্চ ২য় ধাপে রাজশাহী, খুলনা ও ময়মনসিংহ বিভাগের বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়। পরে ১৭ জুন ৩য় ধাপে ঢাকা ও চট্টগ্রাম বিভাগে নিয়োগের জন্য বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়।

প্রথম ধাপে ৩ লাখ ৬০ হাজার ৭০০, দ্বিতীয় ধাপে ৪ লাখ ৫৯ হাজার ৪৩৮ এবং তৃতীয় ধাপে ৩ লাখ ৪০ হাজার প্রার্থী আবেদন করেন।

;

স্কুলছাত্রীকে ধর্ষণের দায়ে একজনের আমৃত্যু কারাদণ্ড



ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, রাঙামাটি
ছবি: বার্তা২৪.কম

ছবি: বার্তা২৪.কম

  • Font increase
  • Font Decrease

রাঙামাটিতে ৬ষ্ঠ শ্রেণিতে পড়ুয়া এক স্কুলছাত্রীকে ধর্ষণের ঘটনায় দায়ের করা মামলায় আসামি মোজাম্মেল হককে আমৃত্যু কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। একই সঙ্গে তাকে এক লাখ টাকা জরিমানা করা হয়েছে।

মঙ্গলবার (২৮ মে) দুপুরে রাঙামাটির নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক এ.ই.এম ইসমাইল হোসেন আসামির উপস্থিতিতে এ রায় ঘোষণা করেন।

এই রায়ে রাষ্ট্রপক্ষ সন্তুষ্ট প্রকাশ করলেও আসামিপক্ষ সংক্ষুব্ধ হয়েছেন এবং ন্যায়বিচার প্রাপ্তিতে রায়ের বিরুদ্ধে উচ্চ আদালতে আপিল করবেন বলে তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় জানিয়েছেন।

জানাযায়, ২০১৮ সালের ২১ মার্চ রাঙামাটি শহরের পুরানবস্তি এলাকায় আব্দুল হকের মালিকানাধীন ভাড়া বাসায় আসামি মোজাম্মেল হক ৬ষ্ঠ শ্রেণির ওই কিশোরীকে ডেকে নিয়ে ধর্ষণ করেন। এসময় স্থানীয়দের সহায়তায় ভিকটিমের মা হাতেনাতে মোজাম্মেলকে আটক করলে কোতোয়ালি থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে তাকে গ্রেফতার করে। পরবর্তীতে আসামির বিরুদ্ধে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন-২০০০ এর ৯(১) ধারায় মামলা দায়ের করা হয়।

৬ বছর পর এই মামলায় রায় প্রদানের সময় আদালত তার পর্যবেক্ষণে জানান, ৬ষ্ঠ শ্রেণিতে পড়াকালীন সময়ে ভিকটিম ৪০ বছর বয়সী আসামি কর্তৃক পাশবিক নির্যাতনের শিকার হয়েছেন।

এই ঘটনার পর ভিকটিম ও তার পরিবার এলাকাবাসীর কটাক্ষের শিকার হয়ে অন্যত্র গিয়ে ভিকটিমকে বিয়ে দেন। সে ঘরে একটি সন্তানও হয়েছে। কিন্তু সে স্বামী ভিকটিমের ধর্ষণের ঘটনা শুনে তাকে তালাক দিয়ে দেয়।

এই ঘটনায় এটা স্পষ্ট যে, ভিকটিম বাল্যবিবাহের শিকার হয়েছে এবং তার শিক্ষা জীবন ধ্বংস হয়ে তার জীবন ওলটপালট হয়ে গেছে। এমতাবস্থায় ভিকটিমের মতো অন্যান্য শিশুদের ভবিষ্যতে আসামির হাত থেকে রক্ষা করার জন্য তাকে আমৃত্যু কারাগারে অন্তরীণ রাখা প্রয়োজন বলে মনে করেছেন আদালত।

তাই আসামি মোজাম্মেল হককে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন-২০০০ এর ৯(১) ধারার অপরাধে দোষী সাব্যস্ত করে আমৃত্যু সশ্রম কারাদণ্ড এবং এর অতিরিক্ত এক লাখ টাকা জরিমানার আদেশ দিয়েছে আদালত। জরিমানার টাকা আগামী ৯০ দিনের মধ্যে আদালতে জমা দেওয়ার পর সেই অর্থ ভিকটিম ক্ষতিপূরণ হিসেবে প্রাপ্ত হবেন বলেও আদালতের রায়ে উল্লেখ করা হয়।

এদিকে এই মামলায় রাষ্ট্রপক্ষের বিশেষ পাবলিক প্রসিকিউটর আইনজীবী অ্যাডভোকেট সাইফুল ইসলাম অভি রায়ে সন্তুষ্ট প্রকাশ করে বলেন, এই রায়ের মাধ্যমে সমাজে একটি মেসেজ দেওয়া হয়েছে এবং এতে করে সমাজে এই ধরনের অপরাধ কমে আসবে বলেও আমি মনে করছি।

অপরদিকে আসামিপক্ষের আইনজীবী অ্যাডভোকেট রহমত উল্লাহ তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় সাংবাদিকদের বলেন, এই রায়ে সংক্ষুব্ধ হয়েছি, আমরা ন্যায় বিচার পাইনি। এই রায়ের বিরুদ্ধে আমরা উচ্চ আদালতে আপিল করবো। আশা করছি সেখানে আমরা ন্যায় বিচার পাবো।

;

ডেসটিনির রফিকুলের জামিন শুনানি ছয় মাসের জন্য মুলতবি



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

ডেসটিনি ট্রি প্ল্যান্টেশন লিমিটেডের নামে বিনিয়োগকারীদের কাছ থেকে টাকা নিয়ে আত্মসাৎ ও পাচারের অভিযোগে আনা মামলায় ডেসটিনি গ্রুপের এমডি রফিকুল আমীনের জামিন আবেদনের শুনানি ছয় মাসের জন্য মুলতবি (স্ট্যান্ড ওভার) করেছে আপিল বিভাগ।

সোমবার (২৭ মে) সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের জ্যেষ্ঠ বিচারপতি এম. ইনায়েতুর রহিমের নেতৃত্বে চার সদস্যের আপিল বিভাগ বেঞ্চ এ আদেশ দেন।

বেঞ্চের অন্য বিচারপতিগণ হলেন বিচারপতি মো. আবু জাফর সিদ্দিকী, বিচারপতি মুহাম্মদ আবদুল হাফিজ ও বিচারপতি মো. শাহিনুর ইসলাম।

আদালতে রফিকুল আমীনের পক্ষে শুনানি করেন সিনিয়র এডভোকেট শাহ মঞ্জরুল হক। দুদকের পক্ষে শুনানি করেন সিনিয়র এডভোকেট খুরশীদ আলম খান।

এডভোকেট খুরশীদ আলম খান সাংবাদিকদের বলেন, ডেসটিনি ট্রি প্ল্যান্টেশন লিমিটেডের নামে অর্থ পাচারের মামলায় রফিকুল আমীনের জামিন আবেদন খারিজ করে দেন হাইকোর্ট। হাইকোর্টের আদেশের বিরুদ্ধে লিভ টু আপিল করেন রফিকুল আমীন। বিষয়টির শুনানি আজ ছয় মাসের জন্য মুলতবি (স্ট্যান্ড ওভার) করে আদেশ দিয়েছে সর্বোচ্চ আদালত। ছয় মাস পর আবার জামিন আবেদনটি শুনানির জন্য কার্যতালিকায় আসবে বলে জানান আইনজীবী।

এডভোকেট খুরশীদ আলম খান বলেন, এই মামলায় এরই মধ্যে ১০৯ জনের সাক্ষ্যগ্রহণ হয়েছে। আশা করছি ছয় মাসের মধ্যে বিচার শেষ হবে। আমরা একথা আদালতে জানিয়েছি। এ কারণে জামিন শুনানি ছয় মাসের জন্য স্ট্যান্ড ওভার রেখে আদেশ দিয়েছে সর্বোচ্চ আদালত।

ডেসটিনি মাল্টিপারপাস কো-অপারেটিভ সোসাইটি এবং ডেসটিনি ট্রি প্ল্যান্টেশন লিমিটেডের নামে বিনিয়োগকারীদের কাছ থেকে টাকা নিয়ে তা আত্মসাৎ ও পাচারের অভিযোগে ২০১২ সালের ৩১ জুলাই রফিকুল আমীনসহ ডেসটিনির কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে পৃথক দুটি মামলা হয় রাজধানীর কলাবাগান থানায়। দুই মামলায় মোট ৪ হাজার ১১৯ কোটি ২৪ লাখ টাকা আত্মসাৎ ও পাচারের অভিযোগ আনা হয়।

দুই বছর তদন্তের পর ২০১৪ সালের ৪ মে একটি (ট্রি প্ল্যান্টেশন) মামলায় রফিকুল আমীনসহ ১৯ জন এবং অপর মামলায় ৪৬ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দেয় দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। রফিকুল আমীনসহ ১২ জনের নাম দুটি মামলাতেই রয়েছে। দুই মামলায় মোট আসামির সংখ্যা ৫৩। আসামিদের মধ্যে কারাগারে আছেন ডেসটিনির চেয়ারম্যান মোহাম্মদ হোসেন, এমডি রফিকুল আমীন ও পরিচালক কর্নেল (অব.) দিদারুল আলম। জামিনে আছেন তিনজন। বাকিরা পলাতক।

মামলার অভিযোগপত্রে বলা হয়, ২০০৮ সাল থেকে ডেসটিনি ট্রি প্ল্যান্টেশনের মাধ্যমে বিনিয়োগকারীদের কাছ থেকে ২ হাজার ৪৪৫ কোটি টাকা সংগ্রহ করা হয়। এর মধ্যে ২ হাজার ২৫৭ কোটি ৭৮ লাখ ৭৭ হাজার টাকা আত্মসাৎ করা হয়। এর ফলে ক্ষতিগ্রস্ত হন সাড়ে ১৭ লাখ বিনিয়োগকারী। এ মামলায় অভিযোগ করা হয়, ওই টাকার মধ্যে এলসি (ঋণপত্র) হিসেবে ৫৬ কোটি ১৯ লাখ ১৯ হাজার ৪০ টাকা এবং সরাসরি পাচার করেছে আরও ২ লাখ ৬ হাজার মার্কিন ডলার।

অন্যদিকে মাল্টিপারপাস কো-অপারেটিভের নামে ডেসটিনি বিনিয়োগকারীদের কাছ থেকে সংগ্রহ করেছিল ১ হাজার ৯০১ কোটি টাকা। সেখান থেকে ১ হাজার ৮৬১ কোটি ৪৫ লাখ টাকা আত্মসাৎ করা হয় বলে দুদকের অনুসন্ধানে ধরা পড়ে। ওই অর্থ আত্মসাতের ফলে সাড়ে ৮ লাখ বিনিয়োগকারী ক্ষতির মুখে পড়েন।

মামলা দায়েরের চার বছরের মাথায় ২০১৬ সালের ২৪ আগস্ট রফিকুল আমীনসহ অন্যদের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠনের মধ্য দিয়ে বিচার শুরু হয়। এখন বিচারিক আদালতে মামলায় সাক্ষ্যগ্রহণ অবাহত রয়েছে।

;