ছাগল ছিনতাই চেষ্টা: ৬ ছাত্রলীগ নেতাকে আত্মসমর্পণের নির্দেশ
হাইকোর্ট, ছবি: সংগৃহীত
২১২টি ছাগল ছিনতাইয়ের চেষ্টাসহ দুই মামলায় ছয় আসামিকে দুই সপ্তাহের মধ্যে আত্মসমর্পণের নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। আসামিরা হলেন-জসিম, রাতুল, তানভীর, হিরা, তনয় ও পারভেজ। তারা সবাই রাজধানীর মোহাম্মদপুর থানা ছাত্রলীগের নেতা।
সোমবার (২৬ আগস্ট) তাদের করা জামিন আবেদনের প্রেক্ষিতে বিচারপতি ওবায়দুল হাসান ও বিচারপতি এস এম কুদ্দুস জামানের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্টের দ্বৈত বেঞ্চ তাদের আত্মসমর্পণের নির্দেশ দেন।
আদালতে জামিন আবেদনের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী আঞ্জুমান আরা বেগম মুন্নী। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল এ কে এম আমিন উদ্দিন মানিক।
এর আগে গত ১৯ আগস্ট মোহাম্মদপুর থানা ছাত্রলীগের সভাপতি মুজাহিদ আজমী তান্নাকে চার সপ্তাহের আগাম জামিন দিয়েছিলেন হাইকোর্ট। তার এ জামিনের বিরুদ্ধে আপিল বিভাগে আবেদন করা হবে বলে জানিয়েছেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল এ কে এম আমিন উদ্দিন মানিক।
ঈদের আগের দিন গত ১১ আগস্ট মুজাহিদ আজমী তান্নাসহ নয়জনের বিরুদ্ধে থানায় একটি মামলা করেন র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব)-২ এর সিনিয়র ওয়ারেন্ট অফিসার মো. ফারুখ হোসেন।
মামলার এজাহার থেকে জানা যায়, যশোরের বারোবাজার পশুরহাট ও ঝিনাইদহের কালীগঞ্জ এলাকা থেকে গত ১১ আগস্ট সকালে ঢাকায় এসে পৌঁছান পাঁচ ছাগল ব্যবসায়ী সাইফুল ইসলাম, ফারুক বিশ্বাস, মোহাম্মদ মাসুদ, বাবু খান, শেখ সোলেমান ও মো. নুরুজ্জামান। তারা একটি ট্রাকে করে ২১২টি ছাগল নিয়ে আসেন। তারা মোহাম্মদপুরের বাবর রোড এলাকায় গেলে জহুরি মহল্লা এলাকায় ছাগলসহ তাদের আটকে রাখা হয়। ছিনতাইকারীরা ছাগলগুলো ট্রাক থেকে নামিয়ে একটি ক্লাবের ভেতরে পাঁচ ব্যবসায়ীকে আটকে রাখেন। পরে র্যাব-২ এর একটি টহল দল জিম্মি দশা থেকে ব্যবসায়ীদের উদ্ধার করে।
র্যাব-২ এর কমান্ডিং অফিসার পুলিশ সুপার মহিউদ্দিন ফারুকী বলেন, ‘১১ আগস্ট অর্থাৎ ঈদের আগের দিন দুপুর ১২টার দিকে ব্যবসায়ীরা প্রথমে আমাদের ফোন করে অভিযোগ করেন যে বাবর রোডে ২১২টি ছাগল ছিনতাই করে ব্যবসায়ীদের ট্রাকসহ আটকে রাখা হয়েছে। ওই সময় মোহাম্মদপুর এলাকায় র্যাবের একটি টহল দল কাজ করছিল। পরে ওই টহল দলসহ আমরা ঘটনাস্থলের একটি ক্লাব ঘরের ভেতরে ছাগল ব্যবসায়ীদের আটক অবস্থায় পাই। সেখানে তিনজন ছিনতাইকারী উপস্থিত ছিলেন। পাশে একটি মাচা করা ট্রাকের ওপর-নিচে মিলে মোট ২১২টি ছাগল ছিল। পরে ভ্রাম্যমাণ আদালতের নির্দেশে আমরা ব্যবসায়ীদের উদ্ধার করে ও ছিনতাইকারীদের আটক করে মোহাম্মদপুর থানায় হস্তান্তর করি।’
মামলার তদন্ত কর্মকতা সজীব ঘোষ জানান, ঘটনাস্থল থেকে আটক ইয়াসির আরাফাত, জাহিদুল ইসলাম ও মো. রায়হানকে র্যাব-২ থানায় সোপর্দ করে। এ ঘটনায় মামলা দায়েরের পর তাদের তিন দিন করে রিমান্ডে নেওয়া হলে তারা তাদের অপরাধ স্বীকার করেন।
সজীব ঘোষ বলেন, ‘মোহাম্মদপুর থানা ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা বাবর রোডের ছাত্রলীগ অফিসের কাছাকাছি স্থানে একটি অস্থায়ী ছাগলের হাট বসান। ওই হাটে ছাগল ব্যবসায়ীদের জিম্মি করে চাঁদা দাবি করতেন তারা। ছাত্রলীগের তৈরি ওই হাটে ছাগল রাখতেও জোর করা হতো ব্যবসায়ীদের।’
