রিশার কথা উঠলেই কেঁদে ওঠেন বাবা-মা



মবিনুল ইসলাম, স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট, বার্তাটোয়েন্টিফোর.কম, ঢাকা
সুরাইয়া আক্তার রিশা, ছবি: সংগৃহীত

সুরাইয়া আক্তার রিশা, ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

‘রিশা (১৪) অনেক লক্ষ্মী মেয়ে ছিল আমার। লেখাপড়ায়ও খুব ভালো ছিল। তার হাতের লেখা ও ড্রইং খুব সুন্দর ছিল। সবার সঙ্গে ভালো ব্যবহার করত। মেয়ে আমার বড় হয়ে ডাক্তার হতে চেয়েছিল। কিন্তু খুনি আমার মেয়েকে বাঁচতে দিল না। আমার মেয়েতো আর ফিরে পাব না। কিন্তু খুনির ফাঁসি চাই। যাতে আর কারও মাকে-বাবাকে সন্তান হারাতে না হয়।’

বার্তাটোয়েন্টিফোর.কমকে কাঁদতে কাঁদতে কথাগুলো বলছিলেন রিশার মা তানিয়া হোসেন। মেয়ে রিশা হত্যা মামলার বাদী তিনি।

তানিয়া হোসেন বলেন, ‘যে দোকানে আমরা জামাকাপড় বানাতাম, সে দোকানে কাজ করত ওবায়দুল। দোকানের মানি রিসিট থেকে মোবাইল ফোন নম্বর নিয়ে একদিন ফোন দেয় ওবায়দুল। আমার মেয়ে ফোন ধরলে তাকে সে ভালোবাসার কথা বলে। আমার মেয়ে তা সরাসরি প্রত্যাখান করে। এরপরই সে আমার মেয়েকে খুনের পরিকল্পনা করে। আমি ওই খুনি ওবায়দুলের ফাঁসি চাই।’

রিশার বাবা রমজান হোসেন বার্তাটোয়েন্টিফোর.কমকে বলেন, ‘প্রতিদিন কাজ শেষে বাসায় ফিরলে রিশা এখন আর বাবা বলে দৌড়ে আসে না। তার কথা মনে হলে বুকের ভেতরটা দুমড়ে মুচড়ে যায়। আমার মেয়ের হত্যাকারীর ফাঁসি চাই। তার বেঁচে থাকার কোনো অধিকার নেই।’

তিনিও বার্তাটোয়েন্টিফোরের সঙ্গে আলাপচারিতায় কেঁদে ফেলেন।

উইলস লিটল ফ্লাওয়ার স্কুলের অষ্টম শ্রেণির ছাত্রী ছিল সুরাইয়া আক্তার রিশা। দুই বোন ও এক ভাইয়ের মধ্যে সবার বড় ছিল সে। তার ছোট বোনের নাম রোদেলা আক্তার তিশা। সে বর্তমানে চতুর্থ শ্রেণিতে পড়ে। আর ভাইটি তৌহিদুল হোসেন রনি সপ্তম শ্রেণিতে পড়ে।

২০১৬ সালের ২৪ আগস্ট দুপুর সোয়া ১২টায় কাকরাইলের উইলস লিটল ফ্লাওয়ার স্কুলের সামনে ফুট ওভারব্রিজের ওপর পেটে ছুরিকাঘাত করা হয় রিশাকে। ২৮ আগস্ট সকাল ৮টা ৫০ মিনিটে ঢাকা মেডিক্যেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যায় সে।

ছুরিকাঘাতের দিনই রিশার মা তানিয়া হোসেন বাদী হয়ে রাজধানীর রমনা থানায় ওবায়দুল হককে আসামি করে হত্যা চেষ্টার মামলা করেন। ১ সেপ্টেম্বর আসামিকে গ্রেফতার করা হয়।

মামলায় যা আছে:

তানিয়া হোসেন মামলায় উল্লেখ করেন, হত্যাকাণ্ডের পাঁচ/ছয় মাস আগে ইস্টার্ন মল্লিকা মার্কেটের বৈশাখী টেইলার্সে আমার মেয়ের পোশাক বানাতে দেই। সেখান থেকে ফোন নম্বর নিয়ে ওবায়দুল আমার মেয়েকে বিরক্ত করত। আমার মেয়ের স্কুলে যাওয়া আসার পথে প্রেমের প্রস্তাব দিয়ে উত্ত্যক্ত করত। আমার মেয়ে প্রেমে রাজি না হওয়ায় স্কুল শেষে বাড়ি ফেরার পথে উইলস লিটল ফ্লাওয়ার স্কুলের সামনের ‍ফুট ওভারব্রিজের ওপর আমার মেয়েকে উপর্যুপরি ছুরিকাঘাত করে গুরুতর আহত করে ওবায়দুল।

প্রথমে মামলাটি হত্যা চেষ্টার মামলা হিসাবে রেকর্ড হয়। কিন্তু রিশা ২৮ আগস্ট মারা গেলে তা হত্যা মামলায় রূপ নেয়।

মারা যাবার আগে রিশা ২৫ আগস্ট ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসাপাতালের চিকিৎসকের কাছে মৃত্যুকালীন জবানবন্দি (Dying Declaration) দিয়েছিল।

তদন্ত:

মামলার পরপরই ঘটনা তদন্তের দায়িত্ব দেওয়া হয় রমনা মডেল থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) মো. মোশারফ হোসেনকে। তিনি ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন। তিনি মামলার আলামত হিসেবে ভিকটিমের রক্তমাখা কাপড়-চোপড় সংগ্রহ করেন, মামলার বাদী ও একজন সাক্ষির জবানবন্দি নেন এবং রিশার মৃত্যুকালীন জবানবন্দি সংগ্রহ করেন। এছাড়া আসামির কর্মস্থল বৈশাখী টেইলার্স থেকে তার জাতীয় পরিচয়পত্র সংগ্রহ করেন এবং স্থায়ী ঠিকানা মোতাবেক অভিযান চালিয়ে আসামি গ্রেফতারের চেষ্টা করেন। এরপর ২৮ আগস্ট রিশা হাসপাতালে মারা গেলে সুরতহাল প্রতিবেদন তৈরি করেন।

রিশা মারা যাবার পর হত্যা চেষ্টা মামলাটি হত্যা মামলায় রূপ নিলে তদন্তের দায়িত্ব দেওয়া হয় রমনা থানার পরিদর্শক (নিরস্ত্র) মো. আলী হোসেনকে।

তিনি মামলার সাক্ষিদের জিজ্ঞাসাবাদ করেন। আসামি ওবায়দুলকে গ্রেফতার করে আদালতে সোপর্দ করেন। আসামির দেওয়া তথ্য অনুযায়ী হত্যায় ব্যবহৃত ছুরি জব্দ করেন। দোষ স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি নিতে আসামিকে আদালতে পাঠান। এরপর ময়নাতদন্ত প্রতিবেদন সংগ্রহ করে ২০১৬ সালের ১৩ নভেম্বর ওবায়দুলকে অভিযুক্ত করে আদালতে চার্জশিট দাখিল করেন।

আসামি স্বীকারোক্তিতে যা বলেছিলেন:

২০১৬ সালের ৫ সেপ্টেম্বর আসামি ওবায়দুল ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মোহা. আহসান হাবীবের কাছে খুনের দায় স্বীকার করে জবানবন্দি দেন। জবানবন্দির সার সংক্ষেপ এ রকম-

‘দোকানের টাকার রশিদ থেকে নম্বর নিয়ে রিশাকে প্রেমের প্রস্তাব দেই। এরপর রিশা আমার ফোন ধরা বন্ধ করে দেয়। রিশাকে ফোন দিলে তার আম্মা ফোন ধরে। রিশাকে ভালোবাসার কথা তাকে আমি বলি। তিনি আমাকে গালিগালাজ করেন। এরপর তারা আমার মোবাইল নম্বর ব্লক করে দেন।’

ওবায়দুল বলেন, ‘রিশার সঙ্গে নানাভাবে যোগাযোগ করতে ব্যর্থ হয়ে বেশ কয়েকবার তার উইলস লিটল ফ্লাওয়ার স্কুলের সামনে যাই। কিন্তু কথা বলতে ব্যর্থ হই। এর মধ্যে একদিন তার সঙ্গে জোর করে কথা বলতে চাইলে রিশা আমাকে প্রত্যাখান করে। পরে খোঁজ নিয়ে জানতে পারি যে অন্য একটি ছেলের সঙ্গে রিশার সম্পর্ক আছে। এ কথা জানার পর আমার ক্ষোভ হয়।’

তার না হলে রিশাকে কারও হতে দেবে না এমন পরিকল্পনায় তাকে খুনের পরিকল্পনা করেন ওবায়দুল।

ওবায়দুল জবানবন্দিতে বলেন, ‘রিশা যাতে অন্য কোনো ছেলের সঙ্গে সম্পর্ক করতে না পারে, সেজন্য আমি তাকে উচিত শিক্ষা দেওয়ার পরিকল্পনা করি। গত ২২ আগস্ট সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার সময় আমি বাংলাদেশ হার্ডওয়্যার অ্যান্ড পেইন্ট সাপ্লাই নামক দোকান থেকে ১২০ টাকা দিয়ে একটি ছুরি কিনি। রিশাকে মারার জন্য গত ২৪ আগস্ট বেলা সাড়ে ১১টার সময় আমি ছুরিসহ কাকরাইলের উইলস লিটল ফ্লাওয়ার স্কুলের গেটের সামনে দাঁড়িয়ে থাকি। বেলা আনুমানিক সাড়ে ১২টার দিকে রিশা কয়েকজন সহপাঠীসহ স্কুল থেকে বের হয়ে ফুটওভার ব্রিজের ওপর উঠলে আমিও উঠি।’

আক্রমণের বর্ণনা দিয়ে ওবায়দুল বলেন, ‘এরপর আমি রিশার কাছে গিয়ে আমার কাছে থাকা ছুরি দিয়ে রিশার পেটের বাম পাশে সজোরে আঘাত করে ছুরিসহ ফুটওভার ব্রিজের নিচে নেমে দৌড়ে ব্যাটারি গলি দিয়ে সেগুনবাগিচা রাজস্ব ভবনের সামনে যাই। রাজস্ব ভবনের সামনে রাস্তার ফুটপাতে ইট-সুরকি ও ময়লার মধ্যে ছুরিটি ফেলে দিয়ে পল্টন হয়ে গুলিস্তান যাই। সেখান থেকে সদরঘাট গিয়ে নদী পার হয়ে কেরানীগঞ্জে চাচাতো ভাই জসিমের কাছে যাই। ওই দিন বিকেলে কেরাণীগঞ্জ থেকে কোনাপাড়ায় আমার পরিচিত টেইলার মাস্টার সুনীল ও গৌর হরিদের কাছে গিয়ে এক হাজার টাকা নেই। তারপর আমি শ্যামলী গিয়ে হানিফ পরিবহনে করে বাড়িতে যাই। এরপর টিভিতে রিশা মারা যাবার খবর শুনে আমি নীলফামারীতে আমার বেয়াই খুশবুলের কাছে যাই। পরে রমনা থানা পুলিশ গিয়ে আমাকে গ্রেফতার করে রমনা থানায় নিয়ে আসে।’

আইনজীবীর বক্তব্য:

মামলাটি বর্তমানে কোন অবস্থায় আছে জানতে চাইলে বাদীপক্ষের আইনজীবী ফাহমিদা আক্তার বার্তাটোয়েন্টিফোর.কমকে বলেন, ‘মামলাটির সাক্ষ্যগ্রহণ শেষ করা হয়েছে। চার্জশিটের ২৬ জন সাক্ষির মধ্যে ২০ জনের সাক্ষ্যগ্রহণ করা হয়েছে। আগামী ১১ সেপ্টেম্বর যুক্তিতর্ক শুনবেন আদালত। এরপর রায়ের জন্য দিন ঠিক করবেন। আমরা বাদিপক্ষ মনে করি আসামির বিরুদ্ধে মামলাটি আমরা প্রমাণ করতে সক্ষম হয়েছি। আদালতের রায়ে আমরা ন্যায় বিচার পাব।’

আসামি ওবায়দুলের আইনজীবী ফারুক আহমেদ বার্তাটোয়েন্টিফোর.কমকে বলেন, ‘আসামির সঙ্গে রিশার সম্পর্ক থাকার কথা বাদীপক্ষ থেকে অস্বীকার করা হয়েছে। মামলায় জব্দ করা আসামির মোবাইল ফোন আমরা তদন্ত কর্মকর্তার কাছে চেয়েছিলাম। কিন্তু তিনি দেননি। যুক্তিতর্কের দিন আমরা ফৌজদারি কার্যবিধির ৯৪ ধারায় বাংলাদেশ টেলিফোন রেগুলেটরি কমিশনের (বিটিআরসি) মাধ্যমে আসামির সঙ্গে ভিকটিমের এসএমএস যোগাযোগের কপি চাইব। আশা করছি, এতে আসামির ন্যায় বিচারপ্রাপ্তি নিশ্চিত করবে।’

   

হাবিলদার সুরুজ আলী হত্যা মামলায় ৩ আসামির যাবজ্জীবন



স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, ঢাকা
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

রাজধানীর বাড্ডা এলাকায় ২১ বছর আগের হাবিলদার সুরুজ আলী হত্যা মামলায় ৩ আসামির যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের রায় দিয়েছেন আদালত।

বৃহস্পতিবার (১৬ মে) ঢাকার ৫ নম্বর বিশেষ জজ আদালতের বিচারক মো. ইকবাল হোসেন এ রায় ঘোষণা করেন।

দণ্ডিত আসামিরা হলেন- আনোয়ার হোসেন, মো. বোরহান উদ্দিন ওরফে জিন্নাতুল আলম ও আব্দুল হক ওরফে আব্দুল্লাহ।

আদালত আসামিদের যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদণ্ডের অতিরিক্ত বিশ হাজার টাকা অর্থদণ্ড করেছেন। যা অনাদায়ে প্রত্যেক আসামিকে ৬ মাসের কারাদণ্ডের আদেশ দিয়েছেন আদালত।

রায় ঘোষণার সময় আসামি আনোয়ার হোসেন ও বোরহান উদ্দিন ওরফে জিন্নাতুল আলম আদালতে উপস্থিত ছিলেন। রায় ঘোষণার পর তাদের সাজা পরোয়ানা মূলে কারাগারে প্রেরণ করেন আদালত। আসামি আব্দুল হক আব্দুল্লাহ পলাতক থাকায় তার বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেছেন আদালত।

২০০৩ সালের ৬ ডিসেম্বর বাড্ডা থানাধীন খিলবাড়ির টেক ছিকুর প্রজেক্টের দক্ষিণপাশের পুকুরে কচুরি পানার মধ্যে পাটের বস্তা থেকে হাবিলদার সুরুজ আলীর মরদেহ উদ্ধার করা হয়।

ওই ঘটনায় রাজধানীর বাড্ডা থানার পুলিশের উপ-পরিদর্শক আবু বকর মাতুবর বাদী হয়ে অজ্ঞাত পরিচয় ব্যক্তিদের নামে এ মামলা করেন।

২০০৬ সালের ৩১ অক্টোবর মামলাটি তদন্তের পর সিআইডি পুলিশের ইন্সপেক্টর আব্দুল বাতেন আসামিদের বিরুদ্ধে চার্জশিট দাখিল করেন।

;

সাগর-রুনি হত্যা মামলার প্রতিবেদন দাখিল আবারও পিছিয়েছে



স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, ঢাকা
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

আলোচিত সাংবাদিক দম্পতি সাগর সারোয়ার ও মেহেরুন রুনি হত্যা মামলার তদন্ত প্রতিবেদন দাখিলের তারিখ আবারও পিছিয়েছে। ১০৮ বারের মতো পিছিয়ে আগামী ৩০ জুন ধার্য করেছেন আদালত।

বৃহস্পতিবার (১৬ মে) মামলার তদন্ত প্রতিবেদন দাখিলের জন্য দিন ধার্য ছিল। তদন্ত সংস্থা র‌্যাব প্রতিবেদন দাখিল না করায় ঢাকা মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মাহবুবুল হক প্রতিবেদন দাখিলের জন্য নতুন তারিখ নির্ধারণ করেন।

শেরেবাংলা নগর থানার আদালতের জিআর শাখার কর্মকর্তা মাসুদ এ তথ্য জানান।

২০১২ সালের ১১ ফেব্রুয়ারি মাছরাঙা টেলিভিশনের বার্তা সম্পাদক সাগর সারোয়ার ও এটিএন বাংলার জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক মেহেরুন রুনিকে হত্যা করা হয়। এরপর নিহত রুনির ভাই নওশের আলম রোমান শেরেবাংলা নগর থানায় একটি হত্যা মামলা করেন।

মামলায় রুনির বন্ধু তানভীর রহমানসহ মোট আট জনকে আসামি করা হয়। অপর আসামিরা হলেন, বাড়ির নিরাপত্তাকর্মী এনাম আহমেদ ওরফে হুমায়ুন কবির, রফিকুল ইসলাম, বকুল মিয়া, মিন্টু ওরফে বারগিরা মিন্টু ওরফে মাসুম মিন্টু, কামরুল হাসান অরুণ, পলাশ রুদ্র পাল, তানভীর ও আবু সাঈদ।

;

ব্লগার নাজিম হত্যা মামলায় চার্জ গঠন শুনানি ২৪ জুন



স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, ঢাকা
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের ছাত্র ব্লগার নাজিমুদ্দিন সামাদ হত্যা মামলায় চার্জ গঠন শুনানির তারিখ পিছিয়ে আগামী ২৪ জুন ধার্য করেছেন আদালত।

বৃহস্পতিবার (১৬ মে) দুপুরে শুনানি শেষে ঢাকার সন্ত্রাস বিরোধী বিশেষ ট্রাইব্যুনালের বিচারক মো. মজিবুর রহমানের আদালত এই তারিখ ধার্য করেন।

এদিন মামলাটির অভিযোগ গঠনের জন্য দিন ধার্য ছিল৷ রাষ্ট্রপক্ষ অভিযোগ গঠন বিষয়ে শুনানি শুরু করেন। অভিযোগ গঠন শুনানির এক পর্যায়ে আসামিরা তাদের আইনজীবী নেই বলে আদালতকে জানান। এসময় আসামিরা মৌখিকভাবে আইনজীবী নিয়োগের কথা জানিয়ে সময়ের আবেদন করেন।

আদালত শেষবারের মত সময়ের আবেদন মঞ্জুর করে আগামী ২৪ জুন পরবর্তী তারিখ ধার্য করেন।

সংশ্লিষ্ট রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী মো. গোলাম ছারোয়ার খান (জাকির) এসব তথ্য নিশ্চিত করেন।

মামলার আসামিরা হলেন, আনসার আল ইসলামের সামরিক শাখার প্রধান চাকরিচ্যুত মেজর সৈয়দ জিয়াউল হক জিয়া, আকরাম হোসেন, মো. ওয়ালিউল্লাহ ওরফে ওলি ওরফে তাহেব ওরফে তাহসিন, সাব্বিরুল হক চৌধুরী ওরফে আকাশ ওরফে কনিক, মাওলানা জুনেদ আহাম্মেদ ওরফে সাব্বির ওরফে জুনায়েদ ওরফে তাহের, রশিদুন নবী ভূইয়া ওরফে টিপু ওরফে রাসেল ওরফে রফিক ওরফে রায়হান, মোজাম্মেল হুসাইন ওরফে সায়মন, মো. আরাফাত রহমান ও মো. শেখ আব্দুল্লাহ।

আসামিদের মধ্যে প্রথম পাঁচজন পলাতক রয়েছেন। শেষের চারজন কারাগারে আছেন। শেষ চারজনকে কারাগার থেকে আদালতে উপস্থিত করেছেন কারাকর্তৃপক্ষ।

২০১৬ সালের ৬ এপ্রিল রাতে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্লাস শেষে পুরান ঢাকার গেন্ডারিয়ায় মেসে ফেরার পথে লক্ষ্মীবাজারের একরামপুর মোড়ে জঙ্গিরা কুপিয়ে এবং গুলি করে হত্যা করেন ব্লগার নাজিমুদ্দিনকে। এ ঘটনায় পরদিন সূত্রাপুর থানার এসআই মো. নুরুল ইসলাম বাদী হয়ে মামলা দায়ের করেন।

মামলার তদন্ত কর্মকর্তা কাউন্টার টেরোরিজম এন্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম ইউনিট ২০২০ সালের ২০ আগস্ট বহিষ্কৃত মেজর সৈয়দ মো. জিয়াউল হক জিয়াসহ ৯ জনকে অভিযুক্ত করে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করে।

;

কারাবন্দি বিএনপি নেতা আসলাম ও তার স্ত্রীর আয়কর নথি জব্দের নির্দেশ



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, চট্টগ্রাম
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

প্রায় ১৯ কোটি ৭০ লাখ টাকা জ্ঞাত আয় বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) করা মামলায় কারাবন্দি বিএনপি নেতা আসলাম চৌধুরী ও তার স্ত্রী জামিলা নাজনীল মাওলার আয়কর নথি জব্দের আদেশ দিয়েছেন চট্টগ্রামের একটি আদালত।

মঙ্গলবার (১৩ মে) দুদকের আবেদনের প্রেক্ষিতে চট্টগ্রামের জেলা ও দায়রা জজ ড. আবদুল আজিজ ভূঁইয়া এই আদেশ দেন।

বিষয়টি বার্তা২৪.কম-কে নিশ্চিত করেছেন দুদকের পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) কাজী সানোয়ার আহমেদ লাভলু।

দুদক সূত্রে জানা গেছে, গত ১৩ ফেব্রুয়ারি দুদক সমন্বিত জেলা কার্যালয় চট্টগ্রাম-২ এর আদালতে আসলাম চৌধুরীর বিরুদ্ধে ১৫ কোটি ২৬ লাখ ৯২ হাজার টাকা এবং তার স্ত্রীর ৪ কোটি ৪৩ লাখ ৫২ হাজার ৭২৩ টাকা জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগে মামলা দায়ের করেন তদন্ত কর্মকর্তা দুদক প্রধান কার্যালয়ের উপপরিচালক জাহাঙ্গীর আলম। গত ৫ মে দুদকের আবেদনের প্রেক্ষিতে আসলাম চৌধুরীকে ওই মামলায় গ্রেফতার দেখানোর আদেশ দিয়েছেন আদালত। গত ৭ মে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা সুষ্ঠু তদন্তের স্বার্থে আসামি আসলাম চৌধুরী ও তার স্ত্রী জামিলা নাজনীল মাওলার আয়কর নথি জব্দের আবেদন করেন।

দুদকের পিপি কাজী সানোয়ার আহমেদ লাভলু বলেন, চলতি বছরের ১৩ ফেব্রুয়ারি দুদক, সমন্বিত জেলা কার্যালয়, চট্টগ্রাম-২ এর আদালতে আসলাম চৌধুরী ও তার স্ত্রীর বিরুদ্ধে জ্ঞাত আয় বহির্ভূত সম্পদ অর্জন ও দখলে রাখার অভিযোগে মামলাটি দায়ের হয়। গত ৭ মে এই মামলার তদন্ত কর্মকর্তা দুদক, প্রধান কার্যালয়ের উপপরিচালক জাহাঙ্গীর আলম আলোচ্য মামলায় চট্টগ্রামের জেলা ও দায়রা জজ আদালতে আসলাম চৌধুরী ও তার স্ত্রী জামিলা নাজনীল মাওলার আয়কর নথি জব্দের অনুমতি প্রার্থনা করেন।

আবেদনের প্রেক্ষিতে আদালত গতকাল (মঙ্গলবার) শুনানি শেষে মামলার সুষ্ঠু তদন্তের স্বার্থে দুই আসামির আয়কর নথি জব্দের আদেশ দিয়েছেন বলে জানান তিনি।

;