ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন ও বিচার-পর্ব-১

সাত বছরে ২৬৫১ মামলা সাজা ১৫টিতে



নাজমুল আহসান রাজু, স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট, বার্তাটোয়েন্টিফোর.কম, ঢাকা
ছবি: বার্তাটোয়েন্টিফোর.কম

ছবি: বার্তাটোয়েন্টিফোর.কম

  • Font increase
  • Font Decrease

সারা দেশের সব সাইবার অপরাধের বিচার চলছে রাজধানীর ঢাকার সাইবার ট্রাইব্যুনালে। সাত বছরে আগে ২০১৩ সালে এই ট্রাইব্যুনাল যাত্রা শুরু করে। বিচারকাজ চলে ২০০৬ সালের তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি আইনে। শুরুর দিকে মামলা নিষ্পত্তিতে ঢিমেতাল থাকায় প্রথম রায় আসে ২০১৪ সালে। গত দুই বছর বেড়েছে মামলা নিষ্পত্তির হার। ২০১৮ সালের ৮ অক্টোবর ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন পাস হওয়ার পর বেড়েছে মামলার সংখ্যাও। সব মিলে সাত বছরে মামলা হয়েছে ২ হাজার ৬৫১টি। এগুলোর মধ্যে প্রায় অর্ধেক এক হাজার ৫৯টি নিষ্পত্তি হয়েছে। সেগুলোর মধ্যে সাজা হয়েছে মাত্র ১৫ মামলায়। আসামিরা খালাস পেয়েছেন ৯১টিতে।

অভিযোগ বিশ্লেষণে দেখা গেছে, ডিজিটাল মাধ্যমে অপপ্রচার, মানহানি, ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত, মিথ্যা ও ভীতি প্রদর্শনের জন্য অশ্লীল ছবি ও ভিডিও প্রচারের সাজা চাওয়া হচ্ছে বেশিরভাগ মামলায়। ডিজিটাল মাধ্যম হিসেবে সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যম ফেসবুক, স্কাইপ, হোয়াটসঅ্যাপ, ইমো, ইউটিউব ও বিভিন্ন ওয়েবসাইটে এসব ঘটনা ঘটছে। স্বামী স্ত্রীর পারিবারিক বিরোধ ও প্রেমিক-প্রেমিকার বিচ্ছেদের পর এক পক্ষ আরেক পক্ষকে ‘দেখে নেওয়ার’ জন্য যায় সাইবার মামলায়। এ ধরনের মামলাই বেশি। আবার গণমাধ্যমে প্রকাশিত প্রতিবেদনে ক্ষুব্ধ হয়েও মামলা করেন অনেকে।

ট্রাইব্যুনাল সূত্র জানায়, তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি (আইসিটি) আইন, ২০০৬ এর অধীনে সাইবার ট্রাইব্যুনালের যাত্রা শুরুর পর গত বছরের ৮ অক্টোবর চারটি ধারা বিলুপ্তির আগ পর্যন্ত ২ হাজার ২৫৫ মামলা হয়েছে। আইসিটি আইনের এসব মামলার মধ্যে নিষ্পত্তি হয়েছে ৮৫৮টি। এর মধ্যে মাত্র ১৫টি মামলায় সাজা হয়েছে, ১৯ জনের। খালাস পেয়েছেন ৯১ জন। আইসিটি আইনে এখনো বিচারাধীন এক হাজার ৩৯৭ মামলা।

সূত্র জানায়, ২ হাজার ২৫৫ মামলার মধ্যে সারা দেশের থানাগুলোতে হয় ২ হাজার ৪৮টি, আর রাজধানীর ট্রাইব্যুনালে হয়েছে ২০৬টি। নিষ্পত্তি হওয়া ৮৫৮ মামলার মধ্যে সরাসরি খারিজ (একতরফা) হয়েছে ৬২১ মামলা। বাদী বিবাদীর (দোতরফা) শুনানি শেষে নিষ্পত্তি হয়েছে ১৩১ মামলা।

২০১৮ সালের ৮ অক্টোবর ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন রাষ্ট্রপতির অনুমোদনের পর গত ১১ মাসে ৩৯৬টি মামলা হয়েছে। এর মধ্যে ৩১৫টি ট্রাইব্যুনালে, বাকী ৮১টি বিভিন্ন থানায়। নতুন এই আইনে ২০১টি মামলা নিষ্পত্তি হলেও রায় হয়নি একটিতেও। খালাস বা সাজাও পাননি কোনো আসামি। ট্রাইব্যুনাল একতরফাভাবে সরাসরি খারিজ করে দিয়েছেন ১৯৭ মামলা। চারটি মামলা খারিজ হয়েছে দোতরফায়। বিচারাধীন রয়েছে ১৯৫ মামলা। গত ১৯ আগস্ট সাইবার ট্রাইব্যুনাল থেকে সুপ্রিম কোর্টের রেজিস্ট্রার জেনারেলের কাছে পাঠানো নথিপত্র বিশ্লেষণে এসব তথ্য পেয়েছে বার্তাটোয়েন্টিফোর.কম।

২০০৬ সালে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তির আইনগত বৈধতা ও নিরাপত্তা প্রদানের জন্য তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি (আইসিটি) আইন, ২০০৬ প্রণয়ন করা হয়। দীর্ঘদিন এ আইনের প্রয়োগ হয়নি। ট্রাইব্যুনালও ছিলনা।

২০১৩ সালে দুই দফায় বড় ধরণের সংশোধন আনা হয় আইনে। ৫৪, ৫৫, ৫৬, ৫৭ ও ৬৬ ধারা সংশোধন করে ডিজিটাল বিন্যাস ও সাজা বাড়ানো হয়। এরমধ্যে সবচেয়ে বেশি (৯০ শতাংশ) মামলা হয়েছে ‘বিতর্কিত’ ৫৭ ধারায়।

এমন পরিস্থিতিতে সমালোচনার মুখে সরকার গত বছর ৮ অক্টোবর ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন, ২০১৮ প্রণয়ন করে। নতুন আইনে আইসিটি আইনের ৫৪, ৫৫, ৫৬, ৫৭ ও ৬৬ ধারার বিলুপ্তি ঘটে।

২০১৩ সালে দুই দফা আইন সংশোধনের উদ্দেশ্য ছিল আইসিটি আইনের একটি মামলার বিচার নিয়ে। পুলিশ অভিযোগপত্র দেওয়ার পর ঢাকার মুখ্য মহানগর হাকিম আদালত তা মহানগর দায়রা জজ আদালতে পাঠিয়ে দেন। এখতিয়ার না থাকায় দায়রা আদালত শুনানি করতে পারছিলেন না। এরপর সরকার ওই বছর সাইবার ট্রাইব্যুনাল স্থাপন করে। সেখানে মামলাটি শুনানির জন্য আসে।

আইসিটি আইন কার্যকর থাকা পর্যন্ত ৫৭ ধারায় মামলা হয়েছে ৯০ শতাংশ। অন্যদিকে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন, ২০১৮ প্রণয়নের পর আগের ৫৭ ধারা ভেঙে চারটি পৃথক ধারা করা হয়েছে। এখন আগের মতো একক কোনো ধারায় নয়, একাধিক ধারায় মামলা হচ্ছে।

প্রথম রায়ে ২০১৪ সালের ১৩ আগস্ট আসামি জুয়েলকে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি আইনের ৫৭ (১) ধারার অভিযোগ সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণ হওয়ায় ৫৭ (২) ধারায় ৭ বছর কারাদণ্ড ও এক লাখ টাকা জরিমানা, অনাদায়ে আরো ছয় মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ড দেয় ট্রাইব্যুনাল। একই বছর দ্বিতীয় রায়ে শাহীন শেখকে ৭ বছর কারাদণ্ড ও সাত হাজার টাকা জরিমানা করা হয়।

সর্বশেষ চলতি বছর ৯ জানুয়ারি তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি আইনের ৫৭ ধারার মামলায় মনির হোসেন নামের এক ব্যক্তিকে সাত বছর কারাদণ্ড দেন সাইবার ট্রাইব্যুনাল। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, প্রয়াত রাষ্ট্রপতি জিল্লুর রহমান ও ভারতের সাবেক প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিংয়ের ছবি বিকৃত করার অভিযোগে সাইবার ট্রাইব্যুনালের বিচারক মোহাম্মদ আসসামছ জগলুল হোসেন এ রায় দেন।

ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন প্রজ্ঞাপন আকারে প্রকাশের তিনদিন পর ২০১৮ সালের ১১ অক্টোবর ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে প্রথম মামলাটি করা হয় রাজধানীর পল্টন থানায়। মেডিকেল কলেজে ভর্তি পরীক্ষার ভুয়া প্রশ্নপত্র তৈরি করে তা বিক্রির অভিযোগে আটক পাঁচজনের বিরুদ্ধে মামলাটি করে পুলিশের অপরাধ ও তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)।

দ্বিতীয় মামলাটি হয় চট্টগ্রামে। আবুল কাসেম নামে বিএনপির এক সমর্থকের বিরুদ্ধে মামলাটি হয়। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত এবং বাংলাদেশ আওয়ামী লীগকে ব্যঙ্গ করে ফেসবুকে পোস্ট দেওয়ার অভিযোগে নগরীর পাঁচলাইশ থানায় এ মামলা করেন উপ-পরিদর্শক (এসআই) মোহাম্মদ আবু তালেব। মামলার পরপরই আবুল কাসেমকে গ্রেফতার করে পুলিশ।

ট্রাইব্যুনালের পাবলিক প্রসিকিউটর মোহাম্মদ নজরুল ইসলাম (শামীম) বার্তাটোয়েন্টিফোর.কমকে বলেন, শুরুতে মামলা নিষ্পত্তি কম হয়েছে। এখন দ্রুত নিষ্পত্তি হচ্ছে। বাদী আপোষ রফার মাধ্যমে আদালতে এসে বলছেন আসামির বিরুদ্ধে তার কোন অভিযোগ নেই। এতে আদালতের কিছু করার থাকে না। আদালত সাক্ষ্য প্রমাণের ভিত্তিতে রায় দেন। সাক্ষ্যের পর্যায়ে এসে বাদী কিছু বলতে না চাইলে মামলা খারিজ হওয়াই স্বাভাবিক।

সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ও মানবাধিকার কর্মী ব্যারিস্টার জ্যেতির্ময় বড়ুয়া বলেছেন, মামলা নিষ্পত্তিতে গতি লক্ষ্য করা যাচ্ছে। মোট মামলার ১৯ শতাংশ নিষ্পত্তি হয়েছে। এতে এটা স্পষ্ট মামলাগুলো হয়রানিমূলক ছিল। এ কারণে কোন ফলাফল পাওয়া যায়নি। এখন মামলার বিবাদী পক্ষ মিথ্যা মামলার অভিযোগে আদালতে প্রতিকার চাইতে পারেন।

   

কারাবন্দি বিএনপি নেতা আসলাম ও তার স্ত্রীর আয়কর নথি জব্দের নির্দেশ



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, চট্টগ্রাম
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

প্রায় ১৯ কোটি ৭০ লাখ টাকা জ্ঞাত আয় বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) করা মামলায় কারাবন্দি বিএনপি নেতা আসলাম চৌধুরী ও তার স্ত্রী জামিলা নাজনীল মাওলার আয়কর নথি জব্দের আদেশ দিয়েছেন চট্টগ্রামের একটি আদালত।

মঙ্গলবার (১৩ মে) দুদকের আবেদনের প্রেক্ষিতে চট্টগ্রামের জেলা ও দায়রা জজ ড. আবদুল আজিজ ভূঁইয়া এই আদেশ দেন।

বিষয়টি বার্তা২৪.কম-কে নিশ্চিত করেছেন দুদকের পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) কাজী সানোয়ার আহমেদ লাভলু।

দুদক সূত্রে জানা গেছে, গত ১৩ ফেব্রুয়ারি দুদক সমন্বিত জেলা কার্যালয় চট্টগ্রাম-২ এর আদালতে আসলাম চৌধুরীর বিরুদ্ধে ১৫ কোটি ২৬ লাখ ৯২ হাজার টাকা এবং তার স্ত্রীর ৪ কোটি ৪৩ লাখ ৫২ হাজার ৭২৩ টাকা জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগে মামলা দায়ের করেন তদন্ত কর্মকর্তা দুদক প্রধান কার্যালয়ের উপপরিচালক জাহাঙ্গীর আলম। গত ৫ মে দুদকের আবেদনের প্রেক্ষিতে আসলাম চৌধুরীকে ওই মামলায় গ্রেফতার দেখানোর আদেশ দিয়েছেন আদালত। গত ৭ মে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা সুষ্ঠু তদন্তের স্বার্থে আসামি আসলাম চৌধুরী ও তার স্ত্রী জামিলা নাজনীল মাওলার আয়কর নথি জব্দের আবেদন করেন।

দুদকের পিপি কাজী সানোয়ার আহমেদ লাভলু বলেন, চলতি বছরের ১৩ ফেব্রুয়ারি দুদক, সমন্বিত জেলা কার্যালয়, চট্টগ্রাম-২ এর আদালতে আসলাম চৌধুরী ও তার স্ত্রীর বিরুদ্ধে জ্ঞাত আয় বহির্ভূত সম্পদ অর্জন ও দখলে রাখার অভিযোগে মামলাটি দায়ের হয়। গত ৭ মে এই মামলার তদন্ত কর্মকর্তা দুদক, প্রধান কার্যালয়ের উপপরিচালক জাহাঙ্গীর আলম আলোচ্য মামলায় চট্টগ্রামের জেলা ও দায়রা জজ আদালতে আসলাম চৌধুরী ও তার স্ত্রী জামিলা নাজনীল মাওলার আয়কর নথি জব্দের অনুমতি প্রার্থনা করেন।

আবেদনের প্রেক্ষিতে আদালত গতকাল (মঙ্গলবার) শুনানি শেষে মামলার সুষ্ঠু তদন্তের স্বার্থে দুই আসামির আয়কর নথি জব্দের আদেশ দিয়েছেন বলে জানান তিনি।

;

বিমানের সাবেক এমডিসহ ১৬ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে চার্জশিট অনুমোদন



স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম
বিমানের সাবেক এমডিসহ ১৬ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে চার্জশিট অনুমোদন

বিমানের সাবেক এমডিসহ ১৬ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে চার্জশিট অনুমোদন

  • Font increase
  • Font Decrease

মিশর থেকে বোয়িংয়ের দু’টি উড়োজাহাজ লিজ গ্রহণ ও রি-ডেলিভারি পর্যন্ত বিমানের ১ হাজার ১৬৪ কোটি টাকার ক্ষতির অভিযোগে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের সাবেক এমডিসহ ১৬ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে চার্জশিটের অনুমতি দিয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। তদন্তে অভিযোগ প্রমাণিত না হওয়ায় ১৪ জনকে অব্যাহতির সুপারিশ করা হয়েছে।

দুর্নীতি দমন কমিশন সূত্রে এ সব তথ্য জানা গেছে। আদালতে দুদক শাখা জানায়, চার্জশিট অনুমোদন হয়েছে। শীঘ্রই তা আদালতে উপস্থাপন করা হবে। দুদকের উপপরিচালক আনোয়ারুল হক মামলাটি তদন্ত করছেন।

চার্জশিটভুক্তরা হলেন, বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স লিমিটেডের সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা কেভিন জন স্টিল, সাবেক পরিচালক ফ্লাইট অপারেশনস ক্যাপ্টেন ইশরাত আহমেদ, সাবেক ডেপুটি চিফ ইঞ্জিনিয়ার শফিকুল আলম সিদ্দিক, সার্ভিসেস অ্যান্ড অডিটের সাবেক প্রিন্সিপাল ইঞ্জিনিয়ার শহীদ উদ্দিন মোহাম্মদ হানিফ, সাবেক প্রিন্সিপাল ইঞ্জিনিয়ার দেবেশ চৌধুরী, বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স লিমিটেডের প্রকৌশলী কর্মকর্তা মো. সাদেকুল ইসলাম ভূইয়া, প্রিন্সিপাল সিস্টেম ইঞ্জিনিয়ার (স্ট্রাকচার) শরীফ রুহুল কুদ্দুস, সাবেক উপপ্রধান প্রকৌশলী মো. শাহজাহান, সাবেক ইঞ্জিনিয়ার মো. জাহিদ হোসেন, প্রকৌশলী কর্মকর্তা হীরালাল চক্রবর্তী, লুৎফর রহমান ও প্রিন্সিপাল সিস্টেম ইঞ্জিনিয়ার অশোক কুমার সর্দার।

এ ছাড়াও বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষের সহকারী পরিচালক (এওসি-এয়ারওয়ার্দিনেস) মোহাম্মদ সফিউল আজম, সহকারী পরিচালক (এরোস্পেস/এভিয়নিক্স) দেওয়ান রাশেদ উদ্দিন, উপপরিচালক আব্দুল কাদির ও এয়ারওয়ার্থনেস কনসালটেন্ট গোলাম সারওয়ারকেও আসামি করা হয়েছে।

অব্যাহতি সুপারিশকৃত ১৪ জন হলেন, বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের প্রধান প্রকৌশলী এ আর এম কায়সার জামান, মহাব্যবস্থাপক আবদুর রহমান ফারুকী, ডিজিএম কামাল উদ্দিন আহমেদ, সাবেক ক্যাপ্টেন মো. নজরুল ইসলাম শামিম, উপমহাব্যবস্থাপক জিয়া আহমেদ, সাবেক চিফ পার্সার কাজী মোসাদ্দেক আলী, ফ্লাইট পার্সার শহিদুল্লাহ কায়সার ডিউক, ডেপুটি জেনারেল ম্যানেজার আজাদ রহমান, সাবেক ব্যবস্থাপক মো. আব্দুল কাদির, সহকারী ব্যবস্থাপক মো. ফজলুল হক বসুনিয়া, ব্যবস্থাপক মো. আতাউর রহমান, চিফ পার্সার মোহাম্মদ সাজ্জাদ উল হক (শাহিন), ফ্লাইট পার্সার শাহনাজ বেগম ঝর্ণা ও সাবেক চিফ ইঞ্জিনিয়ার গাজী মাহমুদ ইকবাল।

২০২৩ সালের ৬ ফেব্রুয়ারি বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের মোট ২৩ জনের বিরুদ্ধে মামলা করেছিলেন দুদকের উপপরিচালক জেসমিন আক্তার। এদের মধ্যে থেকে ১৪ জনকে অভিযোগ থেকে অব্যাহতি দিয়ে তদন্তে নাম আসায় নতুন করে ৭ জনকে আসামি করা হয়। 

;

কাচ্চি ভাই’র মালিক সোহেল সিরাজের জামিন



স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, ঢাকা
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

রাজধানীর বেইলি রোডের কাচ্চি ভাই রেস্তোরাঁ ভবনে অগ্নিকাণ্ডের মামলায় মালিক সোহেল সিরাজকে জামিন দিয়েছেন আদালত।

বুধবার (১৫ মে) ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট তাহমিনা হক এ জামিন মঞ্জুর করেন। সিরাজের পক্ষে জামিন শুনানি করেন আইনজীবী নজিবুল্লাহ হিরু, মোখলেছুর রহমান বাদলসহ প্রমুখ আইনজীবী।

শুনানিতে আইনজীবীরা বলেন, সোহেল সিরাজ ঘটনার সময় বিদেশে ছিলেন। এ ঘটনায় তার কোনো অবহেলা নেই। এ মামলায় আগে গ্রেফতার চারজন জামিনে আছেন। তিনি একজন বিশিষ্ট ব্যবসায়ী। আয়কর দাতা। জামিনে মুক্তি দিলে তিনি পালাবেন না। শুনানি শেষে আদালত ৫ হাজার টাকা মুচলেকায় জামিন মঞ্জুর করেন।

গত ৭ মে রাতে মালয়েশিয়া থেকে ঢাকার হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে নামলে ইমেগ্রেশন পুলিশ তাকে আটক করে। পরে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ সিআইডির কাছে হস্তান্তর করে।

৮ মে সিআইডি তাকে ঢাকার সিএমএম আদালতে হাজির করে ৫ দিনের রিমান্ড আবেদন করে। শুনানি শেষে আদালত দুই দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন। ওই রিমান্ড শেষে গত ১০ মে তাকে কারাগারে পাঠানো হয়।

বেইলি রোডের গ্রিন কোজি কটেজে গত ২৯ ফেব্রুয়ারি রাতে আগুন লাগে। এ ঘটনায় ৪৬ জন মারা যায়। জীবিত উদ্ধার করা হয় ৭৫ জনকে। নিহতদের মধ্যে ২০ জন পুরুষ, ১৮ জন নারী ও ৮ জন শিশু। ওই ভবনের দ্বিতীয় তলায় ছিল বিরিয়ানির দোকান কাচ্চি ভাই রেস্তোরাঁ। অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় অবহেলাজনিত মৃত্যুর অভিযোগে পুলিশ বাদী হয়ে রমনা মডেল থানায় মামলা করে। ঘটনার পরপরই সোহেল সিরাজ দেশ থেকে মালয়েশিয়া চলে যান। সিরাজকে গ্রেফতারের মধ্য দিয়ে এ মামলায় মোট সাতজনকে গ্রেফতার করা হয়।

;

কনডেমড সেল নিয়ে হাইকোর্টের রায় চেম্বার আদালতে স্থগিত



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

ফাঁসির চূড়ান্ত রায়ের আগে কনডেমড সেলে নেওয়া যাবে না মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামিকে হাইকোর্টের দেওয়া রায় স্থগিত করেছেন আপিল বিভাগের চেম্বার আদালত।

উভয় পক্ষের শুনানি শেষে বুধবার (১৫ মে) চেম্বার বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিম আগামী ২৫ আগস্ট পর্যন্ত হাইকোর্টের এই রায় স্থগিত করেন। এই সময়ের মধ্যে রাষ্ট্রপক্ষকে হাইকোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে লিভ টু আপিল করতে বলা হয়েছে।

এর আগে, চূড়ান্ত রায়ের আগে কোনো ফাঁসির আসামিকে কনডেম সেলে নেওয়া যাবে না বলে হাইকোর্টের দেওয়া রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করে রাষ্ট্রপক্ষ। মঙ্গলবার (১৪ মে) অ্যাটর্নি জেনারেল এ এম আমিন উদ্দিন এ আপিল করেন।

তার আগে, সোমবার (১৩ মে) মৃত্যুদণ্ডাদেশ চূড়ান্ত হওয়ার আগে আসামিদের কনডেমড সেলে বন্দি রাখা অবৈধ ও বেআইনি ঘোষণা করেন হাইকোর্ট।

এ বিষয়ে জারি করা রুল নিষ্পত্তি বিচারপতি শেখ হাসান আরিফ ও বিচারপতি মো. বজলুর রহমানের হাইকোর্ট বেঞ্চ এ রায় ঘোষণা করেন। দীর্ঘ সাড়ে তিন ঘণ্টাব্যাপী রায় ঘোষণা করা হয়।

রায়ে বলা হয়, মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামির আপিল, রিভিউ, রাষ্ট্রপতির কাছে ক্ষমা প্রার্থনার ধাপগুলো নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত আসামিকে কনডেমড সেলে রাখা যাবে না। বর্তমানে মৃত্যুদণ্ডাদেশ চূড়ান্ত হওয়ার আগে সারা দেশে যত আসামিকে কনডেমড সেলে রাখা হয়েছে তাদের দুই বছরের মধ্যে ক্রমান্বয়ে সাধারণ সেলে রাখার কথা বলা হয়েছে রায়ে। তবে, বিশেষ কারণে (স্বাস্থ্যগত কারণ, সংক্রামক রোগ) কোনো ব্যক্তিকে নির্জন কক্ষে রাখতে পারবে কারা কর্তৃপক্ষ। সেক্ষেত্রে ওই ব্যক্তির উপস্থিতিতে শুনানি হতে হবে।

আদালতে রিটের পক্ষে শুনানি করেন অ্যাডভোকেট মোহাম্মদ শিশির মনির। সঙ্গে ছিলেন অ্যাডভোকেট আসাদ উদ্দিন। রাষ্ট্রপক্ষে শুনানি করেন অ্যাটর্নি জেনারেল এ এম আমিন উদ্দিন ও ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল অমিত তালুকদার। সঙ্গে ছিলেন সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল এমএমজি সারোয়ার পায়েল, নাসিম ইসলাম রাজু।

উল্লেখ্য, ২০২১ সালের ২ সেপ্টেম্বর মৃত্যুদণ্ডাদেশ চূড়ান্ত হওয়ার আগে আসামিদের কনডেমড সেলে রাখার বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে হাইকোর্টে রিট করেন তিন কয়েদি। ওই রিট শুনানি করে ২০২২ সালের ৫ এপ্রিল রুল জারি করেন হাইকোর্ট।

এরপর গত বছরের ৫ এপ্রিল মৃত্যুদণ্ডাদেশ চূড়ান্ত হওয়ার আগে আসামিদের কনডেমড সেলে বন্দি রাখা কেন বেআইনি হবে না এবং কেন জেলকোডের ৯৮০ বিধি অসাংবিধানিক ঘোষণা করা হবে না, তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেন হাইকোর্ট। ওই বছরের ১২ ডিসেম্বর এই মর্মে জারি করা রুলের শুনানি শেষ হয়।

রিট আবেদনকারী হলেন চট্টগ্রাম কারাগারের কনডেমড সেলে থাকা সাতকানিয়ার জিল্লুর রহমান, সিলেট কারাগারে থাকা সুনামগঞ্জের আব্দুর বশির ও কুমিল্লা কারাগারে থাকা খাগড়াছড়ির শাহ আলম।

;