রোদের দৌরাত্ম্য বাড়ছে প্রতিদিন। ছাতা, সানস্ক্রিন কিংবা সানব্লক ক্রিম ব্যবহার করেও রোদের হাত থেকে পুরোপুরি রক্ষা পাওয়া সম্ভব হয়ে উঠছে না। ফলাফল স্বরূপ চেহারা ও হাতে দেখা দিচ্ছে রোদেপোড়া ভাব।
বেশীরভাগ ক্ষেত্রেই রোদেপোড়া ভাব দূর করার জন্য বিভিন্ন ধরণের প্রসাধনী সামগ্রী ব্যবহার করা হয়। তবে কেমিক্যালযুক্ত এই সকল প্রসাধনী সামগ্রী ব্যবহার থেকে যথাসম্ভব বিরত থাকা উচিৎ সকলের। ত্বকের যত্নে প্রাকৃতিক উপাদান ব্যবহার সবচেয়ে উপকারী।
বিজ্ঞাপন
ত্বকের রোদেপোড়া ভাব দূর করতে দারুন কার্যকরি তিনটি সহজ ফেসপ্যাক তৈরি করতে পারবেন ঘরে বসেই। এই সকল ফেসপ্যাক ব্যবহারে শুধু ত্বকের পোড়াভাব দূর হবে না, ত্বকে ফিরে আসবে হারানো প্রাণ।
চিনি গ্লিসারিন ও লেবুর ফেসপ্যাক
বিজ্ঞাপন
এই ফেসপ্যাকটি তৈরি করতে প্রয়োজন হবে ১ টেবিল চামচ চিনি, ১/২ চা চামচ গ্লিসারিন, ১ টেবিল চামচ লেবুর রস। সকল উপাদান একসাথে মিশিয়ে স্ক্রাব তৈরি করতে হবে। খেয়াল রাখতে হবে, চিনি যেন গলে না যায়। স্ক্রাব তৈরি হয়ে গেলে মুখের ত্বকে মাখিয়ে ৩-৪ বার স্ক্রাব করতে হবে। এরপর পানি দিয়ে মুখ ধুয়ে নিতে হবে। সপ্তাহে দুইবার স্ক্রাব ব্যবহার করলেই রোদেপোড়া ভাব কমে আসবে।
দই-মধুর ফেসপ্যাক
২ টেবিল চামচ দই ও ১ চা চামচ মধু একসাথে মিশিয়ে ঘন পেস্ট তৈরি করতে হবে। পেস্টটি পুরো মুখে মাখিয়ে ১৫-২০ মিনিটের জন্য রেখে দিতে হবে। এরপর কুসুম গরম পানিতে মুখ ধুয়ে নিতে হবে। একদিন পরপর এই ফেসপ্যাকটি ব্যবহার করতে হবে।
শশা-লেবুর ফেসপ্যাক
একটি শশা ছোট টুকরা করে কেটে ব্লেন্ড করে নিতে হবে। এর সাথে ১ চা চামচ পরিমাণ লেবুর রস মিশিয়ে পেস্ট তৈরি করতে হবে। পেস্টটি মুখে মাখিয়ে ২০-২৫ মিনিটের জন্য রেখে দিতে হবে। এরপর ঠান্ডা পানিতে মুখ ধুয়ে নিতে হবে। প্রতিদিন এই ফেসপ্যাকটির ব্যবহারে খুব অল্প সময়ের মাঝেই ত্বকের রোদেপোড়া ভাব দূর হয়ে যাবে।
কোন চাকরি কিংবা কারো সঙ্গে পরিচিত শুরু হওয়ার প্রথম ধাপ হলো সাক্ষাৎকার। শুরুতেই আপনি নিজেকে যত ভালোভাবে উপস্থাপন করবেন, চাকরি পাওয়ার সম্ভাবনা বা আপনার পরিচিতি পর্ব ততই মধুর হবে।
সাক্ষাৎকারের কোন পুঁথিগত নিয়ম না থাকলেও কিছু অলিখিত বিষয় রয়েছে। যেগুলো ভালোভাবে উতরাতে পারলেইে আপনার জন্য অনেক কিছুই সহজ হয়ে যাবে। ক্ষেত্র বিশেষে সাক্ষাৎকারে বিভিন্ন পরিস্থিতির সম্মুখীন হতে পারেন আপনি। কাজেই এসব পরিস্থিতি থেকে নিজেকে নিজেই এগিয়ে নিয়ে যেতে হবে।
সাক্ষাৎকারে যারা একেবারেই নতুন কিংবা যাদের জীবনে প্রথম সাক্ষাৎকার তারাই একটু বেশি সমস্যায় পড়েন। যেকোন সাক্ষাৎকারে আপনার বেশ কিছু বিষয় তারা খেয়াল করে থাকে। মনোবিজ্ঞান অনুসারে, প্রথম সাক্ষাৎতেই লোকেরা আপনার সম্পর্কে যে ৫টি বিষয় লক্ষ্য করে সেগুলো হচ্ছে-
আপনার পোষাক
প্রথমবার কারো সাথে দেখা করা কিংবা সাক্ষাৎকার নিয়ে অনেকেই খুব চিন্তিত হয়। কিন্তু একটু বাড়তি সচেতন হলেই ভালো কিছু শুরু হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। শুধু আপনি কী বলছেন তা নয়, আপনার বলার ভঙ্গি, আত্মবিশ্বাস এমনকি পোশাকও তাদের দৃষ্টির বাহিরে নয়। তাই সাক্ষাৎতের পূর্বেই ঠিক করে রাখতে হবে আপনি কোন পোষাক পরিধান করবেন? পোষাক দামী বা অল্প দামী এটা কোন বিষয় না। সবথেকে বড় বিষয় আপনি সেই পোষাকে কতটা স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করছেন। একইসঙ্গে পরিহিত পোষাকটি হতে হবে মার্জিত। সাক্ষাৎকার অনুযায়ী আপনাকে পোষাক নির্বাচন করতে হবে। এই ছোট ছোট বিষয়গুলো অনেক সময় বড় ভূমিকা রাখে।
আপনার দাঁত
অনেকেই মনে করেন সুস্থ উজ্জ্বল দাঁতের মাধ্যমে ব্যক্তিত্ব ফোটে ওঠে। আপনি কীভাবে আপনার দাঁতের যত্ন নেন তার ওপর নির্ভর করে বিচার করা হয় আপনার ব্যক্তিত্ব। সাদা এবং সুস্থ দাঁতের অধিকারী যে কাউকেই আকর্ষণীয় মনে হয়। দাঁতে সামান্য দাগের মতো ছোটখাটো ত্রুটিগুলোকে মানুষ ধরে নিতে পারে, যে আপনি খুব একটা যত্নবান নন।
আপনার কথা বলার ধরণ
আপনি যেভাবে কথা বলেন তা আপনার শিক্ষা এবং ব্যক্তিত্বকে প্রতিফলিত করে। স্পষ্টভাবে বিষয় অনুযায়ী কথা ব্যক্তির জ্ঞান এবং পেশাদারিত্ব প্রকাশ করে। এতে তাদের কাছে আপনাকে আরও গুরুত্বপূর্ণ করে তুলবে। তবে স্পষ্টভাবে বলতে ব্যর্থ হলে, তাদের কাছে আপনি অযোগ্য মনে হতে পারেন। লোকেরা আপনাকে অশিক্ষিত বা এমনকি অসংগঠিত ভাবতে পারে।
আপনার আত্মবিশ্বাস
লোকেরা আপনার দক্ষতাকে কীভাবে দেখে তার মূল চাবিকাঠি হলো আপনার আত্মবিশ্বাস। মাথা উঁচু করে দাঁড়ানো, চোখের দিকে তাকানো এবং স্পষ্টভাবে কথা বলাই বেশিরভাগ মানুষ আপনাকে যোগ্য এবং দায়িত্বশীল হিসেবে দেখবে। আপনি হয়তো এমনটা অনুভব করেন না, কিন্তু আত্মবিশ্বাস আপনাকে বিশ্বস্ত এবং যোগ্য করে তোলে। আপনার ঝুঁকে পড়া এবং চোখের দিকে না তাকিয়ে থাকা তাদের ভাবাতে পারে যে আপনার যোগ্যতার অভাব আছে অথবা আপনি আত্মবিশ্বাসী নন।
আপনার কাজের একাগ্রতা
যেকোন প্রতিষ্ঠান দক্ষ লোকের পাশাপাশি,কাজের প্রতি একাগ্র ব্যক্তিকে এগিয়ে রাখে। কোন ব্যক্তি কাজে দক্ষ কিন্তু কাজের প্রতি একাগ্র না, তাহলে তার কাছ থেকে ভালো কিছু আশা করা যায় না। সাক্ষাৎকারে তারা বিভিন্ন ভাবে জানার চেষ্টা করবে যে আপনার কাজ করার ইচ্ছা শক্তি কেমন। যেকোন পরিস্থিতিতে আপনার কাজ করার ক্ষমতা আছে কিনা! সাক্ষাৎকারে পরিশ্রমী এবং কাজে একাগ্র ব্যক্তিরাই এগিয়ে থাকে।
হিউম্যান মেটানিউমোভাইরাস বা এইচএমপিভি’র নতুন আতঙ্ক ছড়িয়ে পরছে বিশ্বজুড়ে। কোভিড-১৯ এর মতো এই ভাইরাসটিও চীনে প্রথম শনাক্ত করা হয়। এরপর জাপানেও এইচএমপিভি ভাইরাসের অস্তিত্ব পাওয়া যায়। সম্প্রতি পার্শ্ববর্তী দেশ ভারত এবং বাংলাদেশেরও এই ভাইরাস শনাক্ত করা হয়েছে। যদিও আমাদের দেশে এইচএমপিভি আক্রান্ত ব্যক্তিদের পরিস্থিতি তেমন গুরুতর নয় বলে জানিয়েছেন চিকিৎসকরা। করোনার মতোই শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা দুর্বল থাকলে এইচএমপিভিতে আক্রান্ত হলে জটিলতা বাড়ার সম্ভাবনা বেশি থাকে। তাই আগে থেকেই এই ভাইরাস সম্পর্কে জনসচেতনতা বৃদ্ধির পদক্ষেপ নিতে হবে। বিশেষ করে যারা উচ্চ ঝুঁকিতে রয়েছেন তাদের জানতে হবে এবং সচেতন গতে হবে। কারা এইচএমপিভির কবলে পড়ার ঝুঁকিতে বেশি রয়েছেন এবং কীভাবে রক্ষা পেতে পারেন তা ব্যাখ্যা করেছেন ভারতীয় চিকিৎসক আশিস নন্দী। যারা বেশি ঝুঁকিতে রয়েছেন- ১. নবজাতক এবং শিশু: শিশুরা দুর্বল রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতার কারণে স্বাভাবিকভাবেই অন্যান্য রোগ সহ এইচএমপিভিতেও ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার উচ্চঝুঁকিতে থাকে। জ্বর, কাশি, শ্বাসকষ্টসহ শ্বাসযন্ত্রের অন্যান্য সমস্যা এইচএমপিভি’তে আক্রান্ত হওয়ার প্রাথমিক লক্ষণ। বিশেষ করে নির্ধারিত সময়ের আগে জন্ম নেওয়া অর্থাৎ, প্রিম্যাচিউর বাচ্চারা হাইপোক্সিয়া এবং পানিশূন্যতার ঝুঁকিতে থাকে। ২. বয়স্ক: বয়স বাড়ার সাথে সাথে মানুষের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমতে থাকে। তাই বৃদ্ধরাও উচ্চ ঝুঁকিতে থাকেন। এইচএমপিভি সিওপিডি বা হার্টফেইলরের সম্ভাবনাকে এবং শ্বাসকষ্টের সমস্যা বাড়িয়ে দিতে পারে। ৩. গুরুতর রোগাক্রান্ত: হাঁপানি, ডায়াবেটিস, দুর্বল রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতার রোগীরা এইচএমপিভিতে আক্রান্ত হলে দ্রুত দুর্বল হয়ে পড়বে। এমন ব্যক্তিদের এই ভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ার প্রাথমিক লক্ষণ দেখা দিলে দ্রুতই চিকিৎসকের শরণাপন্ন হওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। ৪.অপুষ্টি: অপুষ্টি মূলত রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা গড়ে না উঠতে পারার মূল কারণ। যে সকল মানুষরা ঠিকমতো খাবার খেতে পারেন না তারা অপুষ্টির শিকার। তাই সুবিধাবঞ্চিত এবং দরিদ্র পরিবারের সদস্যরাও তাই এই রোগে আক্রান্ত হলে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার ঝুঁকিতে থাকেন।
এইচএমপিভি ভাইরাস অতি ভয়ানক রূপ নেওয়ার আগেই একে প্রতিহত করতে হবে। প্রাথমিক লক্ষণ ধরা পড়লেই চিকিৎসকের কাছে যেতে হবে। রোগ নির্ণয় হলে প্রয়োজনীয় প্রতিরোধমূলক চিকিৎসা গ্রহণ করতে হবে। তা না হলেও মাস্ক ব্যবহারসহ অন্যান্য স্বাস্থ্য সচেতনতা অবলম্বন করতে হবে এবং পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা বজায় রাখতে হবে। এছাড়া যদিও এখনো এইচএমপিভির টিকা আবিষ্কার হয়নি, তবে অবশ্যই টিকা আবিষ্কার হলে আগে উচ্চঝুঁকিতে থাকা ব্যক্তিদের টিকা সরবরাহ করতে হবে।
ডায়াবেটিস অর্থাৎ সুগার রোগ আজ খুবই সাধারণ হয়ে উঠেছে। যেকোন একটি পরিবারের দু-একজন ডায়াবেটিসে আক্রান্ত অতি সাধারণ ঘটনা। তবে ডায়াবেটিসকে সাধারণ কোন রোগ মনে করার কোন কারণ নেই। অযত্ন কিংবা বেখেয়ালে হতে পারে মারাত্মক কিছু। নিয়মিত ব্যায়াম আর খাবারের প্রতি সচেতন হলে রোগীরা একদম সুস্থ থাকে।
খাদ্যাভ্যাস এবং সামগ্রিক জীবনযাত্রার কারণে ডায়াবেটিস অর্থাৎ সুগার রোগ আজ খুবই সাধারণ হয়ে উঠেছে। ডায়াবেটিসে খাবারের বিশেষ যত্ন নেওয়া দরকার। খাবারের তারতম্যের কারণে রক্তে শর্করার মাত্রা খুব দ্রুতই বেড়ে যায়। ফলে এর প্রভাব পড়ে পুরো শরীরে। তাই বিশেষজ্ঞরা ডায়াবেটিস রোগীদের খাবারের বিশেষ যত্ন নেওয়ার পরামর্শ দেন।
আজ আমরা ডায়াবেটিস রোগীদের এমনই একটি খাবার 'ডাল' নিয়ে কিছু তথ্য জানাবো। তাহলে আসুন জেনে নিই কোন ডাল ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য উপকারী এবং কোন ডাল এড়িয়ে চলা ভালো।
ডায়াবেটিস রোগীদের যেসব ডাল এড়িয়ে চলতে হবে
স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞদের মতে, ডায়াবেটিস হলে প্রায় সব ডালই খাওয়া যেতে পারে। তবে তা খেতে হবে সঠিক পরিমাণে। কিছু ডাল রয়েছে যা খাওয়ার ফলে বিভিন্ন কারণে ডায়াবেটিস রোগীদের শরীরে খারাপ প্রভাব পড়ে। তার মধ্যে কালো ছোলার ডাল, রাজমা এবং সাদা ছোলা অন্যতম। এগুলো সহজে হজম হয় না ফলে পেট ফুলে যাওয়ার মতো সমস্যা হতে পারে। কালো ছোলার ডাল অতিরিক্ত খেলে শরীরে ইউরিক অ্যাসিড বাড়তে পারে। এগুলোতে থাকা উচ্চ ক্যালোরির ফলে রক্তে শর্করার মাত্রাও বাড়তে পারে।
সুগারের সমস্যায় এই ডালগুলো খুবই উপকারী
কালো ছোলার ডাল বাদে অন্য সব ডাল সীমিত পরিমাণে খেলে সমস্যা নেই। তবে কিছু ডাল আছে যেগুলো ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য খুবই উপকারী বলে মনে করা হয়। এর মধ্যে রয়েছে মুগ, ছোলার ডাল। প্রোটিন, আয়রন, ক্যালসিয়াম, জিঙ্ক, ভিটামিনের মতো পর্যাপ্ত পরিমাণে পুষ্টি উপাদান এই সব ডালে পাওয়া যায়। যা শুধু ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য নয় সকলের স্বাস্থ্যের জন্যও খুবই উপকারী।
প্রায় সময়ই আমাদের মনে হঠাৎ কোনো খাবার খাওয়ার ইচ্ছা জাগে। খাবার যে শুধু ক্ষুধা লাগলেই খায় বা খেতে ইচ্ছা হয়, তেমনটা হয়। অনেক সময় রসনা তৃপ্তির জন্যও বিভিন্ন মুখরোচক খাবার খাওয়া হয়। তবে হঠাৎ কোনো খাবার খাওয়ার ইচ্ছা এমনি এমনি নাও হতে পারে। শরীরের কোনো উপাদানের ঘাটতি হলে, সেই সংকেত দেয় আমাদের জিহ্বা।
লো ব্লাড সুগার থেকে মানসিক চাপ, এমনকি নারীদের পিরিয়ডের কারণেও ক্রেভিং অর্থাৎ, নির্দিষ্ট কোনো খাবার খাওয়ার বা পান করার ইচ্ছা জাগতে পারে। কোন খাবার খাওয়ার বাসনা কোন সমস্যার কারণে হতে পারে, জেনে নিন-
লো ব্লাড সুগার: শ্বেতসার সম্পন্ন খাবার যেমন রুটি, পাস্তা জাতীয় খাবার খাওয়ার ইচ্ছা জাগার মানে হলো, রক্তে গ্লুকোজ বা শর্করার ঘাটতি রয়েছে। দীর্ঘসময় শ্বেতসার খাওয়া না হলে এমনটা হতে পারে। হঠাৎ রক্তে গ্লুকোজ বা শর্করা কমে গেলে স্টার্চজাতীয় খাবার খেতে ইচ্ছা করে। সেক্ষেত্রে আস্ত বীজ ও শস্যজাতীয় খাবার গ্রহণ করা উচিত। শস্যজাতীয় খাবারে ফাইবার অর্থাৎ, তন্তুজাতীয় উপাদানের আধিক্য থাকে। এছাড়া এসব উপাদান হজম হতেও সময় লাগে, তাই অনেকক্ষণ পেট ভরা থাকে। শস্যজাতীয় খাবার অনেক প্রয়োজনীয় পুষ্টি উপাদান ভরপুর।
মানসিক চাপ: গবেষকদের মতে, যখন মানুষ মানসিক চাপে থাকে, তখন কর্টিসোল নামক হরমোন নিঃসৃত হয়। এর ফলে মিষ্টিজাতীয় খাবার খাওয়ার ইচ্ছা তীব্র হয়। এরকম হলে চিনি বা মিষ্টি খাওয়া উচিত নয়। কারণ তাতে হঠাৎ রক্তে চিনির পরিমাণ বেড়ে যায় আবার ভেঙেও যায়। এরফলে মেজাজ খারাপ হওয়া এবং ক্লান্ত বোধ হতে পারে। তাই মিষ্টি খাওয়ার চাহিদা মেটাতে ফল, দই বা ঠান্ডা দই খেতে পারেন। ফল বা দই একটি চমৎকার নাস্তা। দইয়ে প্রচুর ক্যালসিয়াম থাকে যা হাড়ের জন্য ভালো। অন্যদিকে, বেরি বা ফলে রোগ প্রতিরোধী অ্যান্টি অক্সিডেন্ট থাকে।
তৃপ্তির অভাব: গরম, সুস্বাদু কোনো পেট ভরিয়ে কিছু খেতে ইচ্ছে করলে মিষি্ট আলু বা মসুর ডাল খাবারে রাখতে পারেন। মসুর ডালে প্রোটিন, ফাইবার থাকায় রক্তে গ্লুকোজের পরিমাণ স্বাভাবিক রাখে এবং বার বার ক্ষুধা লাগার সমস্যা কমিয়ে আনে। মিষি্ট আলুও ফাইবার আর ভিটামিন ‘এ’-এর ভালো উৎস। তাই এই খাবার গুলো অনেকক্ষণ পেট ভরা রেখে তৃপ্তি আনে।
এর বিকল্প হতে পারে উচ্চ আমিষ বা প্রোটিন জাতীয় খাবার। ক্ষুধা মেটাতে আর তৃপ্তি প্রদানে ডিম, মাছ, মুরগীর মাংসও ভালো কাজ করে।
পিরিয়ড সাইকেল: নারীদের ক্ষেত্রে, মানসিক চাপে থাকলে মিষ্টিজাতীয় খাবার খেতে ইচ্ছে করে। বিশেষ করে চকলেট খাবার খেতে ইচ্ছা হওয়ার প্রবণতা অনেক বেশি হয়। গবেষণাতেও দেখা গেছে নারীদের পিরিয়ড চলাকলে সাধারণত চকলেট, মিষ্টি, নোনতা খাবার ইচ্ছা বেশি হয়। সেক্ষেত্রে চকলেট বা বাদাম বা নারকেল দুধ খাওয়া যেতে পারে। চিনিবিহীন বা কম চিনিযুক্ত চকলেট দুধও পান করা যেতে পারে। বাদাম আর বীজ খেলে প্রয়োজনীয় পুষ্টি উপাদানের ঘাটতি পূরণ হয়।
পিপাসা: অনেকের ক্ষেত্রে শুধু খাবার খাওয়ার আকাঙ্ক্ষার সঙ্গে পানীয় পানের ইচ্ছাও জাগতে দেখা যায়। মস্তিষ্কের একটি নির্দিষ্ট অংশ ক্ষুধা-তেষ্টা নিয়ন্ত্রণ করে। তাই অনেক সময় পর্যাপ্ত পানি পান না করার কারণে খাবারের সাথে সাথে পানীয় পানের ইচ্ছাও জাগে। তাই যদি কখনো ক্ষুধা বোধ হয় কিন্তু কি খাবেন ভেবে পান না, তখন এক গ্লাস পানি পান করুন। পানি পানের পর ১৫ মিনিট অপেক্ষা করে দেখুন সমস্যার সমাধান হয় কিনা।
মানুষের শরীরে সোডিয়ামঘাটতি সহ বিভিন্ন কারণে খাওয়ার পর তৃপ্তি বোধ না করার সমস্যা দেখা দিতে পারে। বিভিন্ন উপাদানের অভাবজনিত কারণে মানুষ ভিন্ন ভিন্ন খাবার খাওয়ার আকাঙ্ক্ষা তৈরি হতে পারে।ফল, দই, ডিম এবং বীজ ও শস্য খাবার এধরনের আকাঙ্ক্ষা মেটাতে সাহায্য করতে পারে। তবে বেশি গুরুতর পরিস্থিতিতে চিকিৎসক ও পুষ্টিবিদের পরামর্শ নেওয়া উচিত।