ই-সিগারেট বাড়ায় ফুসফুসের রোগের সম্ভাবনা
ধূমপানের আসক্তি থেকে মানুষকে সরিয়ে আনতেই আবির্ভাব ঘটে ই-সিগারেটের। ই-সিগারেট ব্যবহার বা ভ্যাপিংকে বলা হয়েছিল ক্ষতিবিহীন ও নিরাপদ। যেখানে বাস্তবতা একেবারেই ভিন্ন। ধূমপানের সমপরিমাণ ও ক্ষেত্র বিশেষে তার চাইতেও ক্ষতিকর হয়ে উঠছে ভ্যাপিং।
একেবারেই সাম্প্রতিক সময়ের একটি গবেষণার তথ্যও তেমনটাই জানাচ্ছে। দীর্ঘদিন ধরে ই-সিগারেটের ব্যবহার বা ভ্যাপিং ফুসফুসজনিত রোগের প্রকোপ ও সম্ভাবনা বৃদ্ধি করে। যার মাঝে ক্রনিক অবস্ট্রাকটিভ পালমোনারি ডিজিজ (COPD), ক্রনিক ব্রঙ্কাইটিস ও শ্বাসকষ্টের সমস্যাও রয়েছে।
সাম্প্রতিককালের এই গবেষণাটি প্রকাশিত হয় ‘আমেরিকান জার্নাল অব প্রিভেন্টিভ মেডিসিন’ শীর্ষক জার্নালে। অন্যান্য সকল গবেষণার মাঝে তিন বছর সময় নিয়ে করা এই গবেষণাকে বলা হচ্ছে ই-সিগারেটের ব্যবহার ও তার ক্ষতি নিয়ে বিশ্লেষণ করা প্রথম অনুদৈর্ঘ্য মূলক গবেষণা।
ইউনিভার্সিটি অব ক্যালিফোর্নিয়ার ডিরেক্টর ও গবেষণার সিনিয়র অথর স্ট্যানটন গ্ল্যানটজ বলেন, ‘আমি কিছুটা বিস্মিত হয়েছিলাম অনুদৈর্ঘ্য মূলক এই গবেষণা থেকে ফুসফুসের রোগের প্রমাণ পেয়ে। কারণ এই গবেষণাটি করা হয়েছে মাত্র তিন বছর সময় নিয়ে। যেখানে ফুসফুস ভিত্তিক অন্যান্য গবেষণায় ফলাফল পেতে সময় লাগে ১০-২০ বছর।’
তিনি গবেষণা প্রসঙ্গে আরও বলেন, ‘সাধারণ মানুষের ই-সিগারেটের অভ্যাস ও ক্রনিক ফুসফুসের সমস্যা নিয়ে এটাই প্রথম অনুদৈর্ঘ্য মূলক গবেষণা। তবে আমার ধারণা গবেষণাটি আরও পাঁচ বছর করা গেলে এই অভ্যাসের আরও সাইড ইফেক্ট সম্পর্কে জানা যাবে।’
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ৩২,৩২০ জন পূর্ণবয়স্কের উপর করা হয় এই গবেষণা ও পরীক্ষাটি। এখানে অংশ নেওয়া প্রত্যেকেরই ফুসফুসজনিত সমস্যা ছিল এবং তাদের মাঝে ই-সিগারেট ও ধূমপানের অভ্যাস ছিল।
গবেষণার তথ্য থেকে দেখা যায়, অতীত ও বর্তমান ই-সিগারেট ব্যবহারকারীদের মাঝে লক্ষণীয় মাত্রায় ফুসফুসজনিত সমস্যা বৃদ্ধি পায়।
গ্ল্যানটজ সতর্ক করে বলেন, ‘সিগারেট ও ই-সিগারেটের ক্ষতি ভিন্ন ভিন্ন। কিন্তু আপনি যদি দুটিই ব্যবহার করেন তবে ধূমপানের ক্ষতির মাত্রা কয়েক গুণ বাড়িয়ে ফেলছেন। ই-সিগারেট ব্যবহারকারীদের মাঝে ফুসফুসের রোগ দেখা দেওয়ার সম্ভাবনা ১.৩, যেখানে ধূমপায়ীদের ১.৬ এবং উভয় মাধ্যম ব্যবহারকারীদের মাঝে ৩.৩।’
আরও পড়ুন: