নেত্রকোনার মদন উপজেলার উচিতপুর হাওরে আনন্দ ভ্রমণে এসে নৌকাডুবিতে ১৮ জন মৃতের ঘটনায় একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে।
নেত্রকোনার জেলা প্রশাসক মঈনউল ইসলামের নির্দেশে ঘটনার দিন গত বুধবার (৫ আগস্ট) রাতে এ তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। চার সদস্য বিশিষ্ট তদন্ত কমিটির প্রধান করা হয়েছে জেলার মদন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) বুলবুল আহমেদকে।
বিজ্ঞাপন
কমিটির অন্য সদস্যরা হলেন, মদন উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ফখরুল হাসান চৌধুরী, মদন থানার ওসি রমিজুল হক ও মদন ফায়ার সার্ভিস স্টেশন অফিসার আহমেদুল।
এদিকে তিনদিনের মধ্যে ঘটনাটির বিস্তারিত তদন্ত করে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করার জন্যও জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে নির্দেশ দেয়া হয়েছে।
বিজ্ঞাপন
এ বিষয়ে তদন্ত কমিটির প্রধান মদন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) বুলবুল আহমেদের সাথে কথা হলে তিনি জানান, ইতোমধ্যে আমরা তদন্ত কাজ শুরু করেছি। আশা করছি যথাসময়েই তদন্ত প্রতিবেদন জমা দিতে পারব।
তিনি আরো বলেন, বুধবার দুপুরে ৪৮ জন যাত্রী নিয়ে হাওরে ডুবে যাওয়া নৌকাটির ৩০ জনকে জীবিত উদ্ধার করা হয় এবং ১৮ জনের মরদেহ উদ্ধার করে তাদের স্বজনদের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।
কুষ্টিয়ার কুমারখালীতে অভিযান চালিয়ে বিভিন্ন দোকানে মোট ২০ হাজার টাকা জরিমানা করেছে টাস্কফোর্স। জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদফতর ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের গঠিত টাস্কফোর্স এ অভিযান চালায়।
মঙ্গলবার সকাল থেকে বিকেল পর্যন্ত কুমারখালি উপজেলার পান্টি ও বাঁশগ্রাম বাজার এলাকায় এ অভিযান চালানো হয়।
অভিযানে টাস্কফোর্স এক রেস্তোরাঁয় ফ্রিজে পঁচা-বাসি খাবার সংরক্ষণ ও মিষ্টির পাত্রে তেলাপোকা পাওয়ায় রেস্তোরাঁ মালিককে পাঁচ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে। এছাড়াও মেয়াদোত্তীর্ণ ওষুধ থাকায় এক ফার্মেসি মালিককে ৮ হাজার, নামের আগে ডাক্তার লেখায় ও প্রেসক্রিপশন করায় এক পল্লী চিকিৎসককে ৫ হাজার এবং দোকানে মূল্য তালিকা প্রদর্শন না করায় এক চাল ব্যবসায়ীকে ২ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়।
অভিযানে নেতৃত্ব দেন জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর কুষ্টিয়ার সহকারী পরিচালক সুচন্দন মণ্ডল।
তিনি বলেন, বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের গঠিত বিশেষ টাস্কফোর্সের অভিযান পরিচালনা করা হয়েছে। অভিযানে ফ্রিজে পচা-বাসি খাবার রাখা ও খাবারে তেলাপোকা থাকা, ফার্মেসিতে মেয়াদোত্তীর্ণ ওষুধ রাখা, পল্লী চিকিৎসকের নামের আগে ডাক্তার লেখা ও প্রেসক্রিপশন করা এবং দোকানে মূল্য তালিকা প্রদর্শন না করার অপরাধে চারজনকে ২০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, বন্ধ থাকা প্রতিষ্ঠানগুলোকে নজরদারি করা হচ্ছে। পরবর্তী সময়ে সেখানে অভিযান পরিচালনা করা হবে।
এ সময় তাকে সহযোগিতা করেন উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের স্যানিটারি পরিদর্শক ফারুক হোসেন, কুষ্টিয়া টাস্কফোর্সের ছাত্র প্রতিনিধি আব্দুল্লাহ আল মাহমুদ।
এদিকে, বাজারে জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর ও টাস্কফোর্সের অভিযান দেখতে কয়েকশ’ উৎসুক জনতা ভিড় জমান। জরিমানা ও শাস্তির ভয়ে প্রায় শতাধিক অসাধু ব্যবসায়ী দোকানে তালা ঝুলিয়ে দিয়ে পালিয়ে যান।
এরআগে শহীদ আবু সাঈদের পোস্ট মর্টেমের রিপোর্ট বিকৃতির অপচেষ্টাকারী ও কলেজে নিষিদ্ধ ঘোষিত ছাত্রলীগের পৃষ্ঠপোষক হিসেবে সাবেক অধ্যক্ষ ডা. মাহফুজার রহমানকে অপসারণের দাবি আন্দোলনে নামেন বৈষম্যবিরোধী চিকিৎসক-ছাত্র ও কর্মচারীরা।
রমেকের সাবেক অধ্যক্ষ ডা. মাহফুজার রহমানকে ওএসডি করে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ে যুক্ত করা হয়েছে। বিতর্কিত অধ্যক্ষকে অপসারণ করায় আন্দোলনের কর্মসূচি বাতিল করেছেন আন্দোলনকারীরা।
বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন ড্যাবের সাধারণ সম্পাদক শরীফুল ইসলাম মণ্ডল।
উল্লেখ্য, গত ২৯ অক্টোবর ডা. মাহফুজার রহমানকে উপাধ্যক্ষ পদ থেকে অধ্যক্ষ পদে নিয়োগ দেওয়ার পরদিন থেকে তার পদত্যাগের দাবিতে আন্দোলন শুরু করেন বৈষম্যবিরোধী চিকিৎসক, কর্মচারী, ছাত্র-জনতা। চলমান বিক্ষোভে আজ দুই ঘণ্টা কর্মবিরতি শেষে তাদের দাবি মানা না হলে আগামীকাল থেকে কমপ্লিট শাটডাউনে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছিলেন আন্দোলনকারীরা। অধ্যক্ষকে অপসারণ করায় আন্দোলনের কর্মসূচি বাতিল করেছেন তারা।
মঙ্গলবার (৫ নভেম্বর) নিষিদ্ধ ঘোষিত পলিথিন এর বিরুদ্ধে এই অভিযান পরিচালনা করা হয়। উপজেলা সহকারী কমিশনার ও এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট বাপ্পী দত্ত রনি এই ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করেন।
চাঁদপুর পরিবেশ অধিদফতরের উপ-পরিচালক মো. মিজানুর রহমান জানান, কচুয়া উত্তর বাজার ও পলাশপুর এলাকায় অভিযানে তিন ব্যবসা প্রতিষ্ঠানকে ১২ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়। এসময় তিনটি প্রতিষ্ঠানে থেকে ৫শ ৮১ কেজি পলিথিন জব্দ করা হয়েছে। এমন অভিযান অব্যাহত থাকবে।
অভিযানে উপস্থিত ছিলেন পরিবেশ অধিদফতরের উপ-পরিচালক মো. মিজানুর রহমান, সহকারী পরিচালক মো. হান্নান, পরিদর্শক শরমিতা আহমেদ লিয়াসহ অন্যান্য কর্মকর্তা ও কর্মচারীগণ।
উত্তরের জেলা বগুড়ায় প্রধান ফসল ধান। ধান থেকে উৎপন্ন চাল স্থানীয় চাহিদা মিটানোর পর দেশের বিভিন্ন জেলায় সরবরাহ করা হয়ে থাকে। আর এ কারণেই বগুড়া জেলায় গড়ে উঠেছিল দুই হাজারের বেশি হাস্কিং চাল কল। তবে আধুনিকায়নের এই যুগে অল্প সংখ্যক অটো রাইস মিলের সঙ্গে পাল্লা দিতে না পেরে ধীরে ধীরে বন্ধ হয়ে যাচ্ছে রাইস মিলগুলো। লোকসানের মুখে ইতিমধ্যে এক হাজারের বেশি হাস্কিং মিল বন্ধ হয়ে গেছে।
এক সময় ধান সিদ্ধ, শুকানো এবং চাল তৈরির কাজে সারা বছর জুড়ে হাস্কিং চাল কলগুলোতে কর্মব্যস্ততা ছিল। নারী ও পুরুষ শ্রমিক দিনরাত কাজ করতো চাল কলগুলোতে। সেই কর্মব্যস্ত মিলগুলোর অধিকাংশই এখন জীর্ণদশা। দীর্ঘদিন পড়ে থাকায় বয়লারে মরীচিকা পড়েছে। ধান শুকানোর চাতালে জন্মেছে ঘাসসহ বিভিন্ন আগাছা।
আদমদীঘি উপজেলার হাস্কিং চালকল মালিক জয়নাল আবেদিন জানান, অটো রাইস মিলগুলো দিনে তিন হাজার মেট্রিকটন ধান থেকে চাল উৎপন্ন করতে পারে। সেখানে হাস্কিং চাল কলগুলোতে ১০ টনের বেশি ধান থেকে চাল উৎপন্ন করা যায় না। উৎপাদন ক্ষমতার এই বিশাল ব্যবধানের কারণে তাল মেলাতে না পেরে ও মূলধন হারিয়ে একের পর এক মিল ও চাতাল বন্ধ হয়ে যাচ্ছে।
দুপচাঁচিয়া উপজেলার তালোড়া অটোমেটিক রাইসমিল মালিক সুভাষ প্রসাদ কানু বলেন, ‘সরকারি সহযোগিতা পেলে আকার অনুযায়ী ৮ লাখ থেকে ১০ লাখ টাকা ব্যয় করলেই হাস্কিং মিলে চাল উৎপন্নের পরিমাণ বাড়ানোর পাশাপাশি উৎপাদিত চালের মানও উন্নত হবে। একই সঙ্গে ধানের তুষ থেকে রাইস ব্রান অয়েল ও ফিড তৈরির করা যাবে। দেশের বন্ধ হয়ে যাওয়া হাস্কিং মিলগুলো চালু করলে ফিড আর ভোজ্য তেলের আমদানি কমে যাবে।
ব্যবসায়ীরা বলছেন, সরকারি গুদামে ধান-চালের দাম বাজারে চেয়ে কম হওয়া, অটোরাইস মিলের সঙ্গে প্রতিযোগিতায় টিকতে না পারা ও চড়া সুদে ব্যাংক ঋণসহ নানাকারণে হাস্কিং বন্ধ হয়ে যাচ্ছে।
বগুড়া জেলা চালকল মালিক সমিতির সভাপতি এটিএম আমিনুল হক বলেন, গত চার বছরে দুই হাজার ৩৫ টির মধ্যে এক হাজারের বেশি হাস্কিং মিল বন্ধ হয়ে গেছে। এতে মিল মালিকসহ প্রায় ১৫ হাজার শ্রমিক কর্মসংস্থান হারিয়েছেন।
হাস্কিং চালকলগুলি বন্ধ হয়ে যাওয়ার কারণ হিসেবে অটোরাইস মিলগুলোকে দায়ী করে তিনি বলেন, অটো রাইস মিলগুলোর উৎপাদন ক্ষমতা বেশি। এ কারণে তারা সরকারি খাদ্য গুদামে চাল সরবরাহ করে থাকে চাহিদা মত। কিন্তু হাস্কিং মিলগুলো চাল সরবরাহ করতে কেজি প্রতি লেকসান হয় ৫ থেকে ৬ টাকা। আবার সরকারি খাদ্য গুদামে চাহিদামতো চাল সরবরাহ না করলে লাইসেন্স বাতিল করা হয়। এসব কারণে প্রতি বছরই হাস্কিং মিলগুলো বন্ধ হয়ে যাচ্ছে।
বগুড়ার জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক রিয়াজুর রহমান রাজু বলেন, হাস্কিং মিলগুলো অটোমেটিক মিলের সাথে প্রতিযোগিতায় টিকতে পারছে না। এ কারণেই মূলত বন্ধ হয়ে যাচ্ছে। হাস্কিং মিলগুলো চালু রাখার জন্য চালকল মালিক সমিতির পক্ষ থেকে প্রস্তাবনা দিলে তাদের প্রস্তাবনা সরকারের উচ্চ পর্যায়ে পাঠানো হবে।