যশোর শিশু উন্নয়ন কেন্দ্রের সহকারী পরিচালকসহ ১০ কর্মকর্তা পুলিশ হেফাজতে
যশোর শিশু উন্নয়ন কেন্দ্রে তিন কিশোর নিহতের ঘটনায় কেন্দ্রের সহকারী পরিচালক সহকারী পরিচারক আব্দুল্লাহ আল মাসুদ, সহকারী তত্ত্বাবধায়ক মাসুম বিল্লাহ, সাইকো সোস্যাল কাউন্সিলর মুশফিকুর রহমানসহ ১০জন কর্মকর্তা কর্মচারীকে জিজ্ঞাসাবাদেও জন্য পুলিশ হেফাজতে নেওয়া হয়েছে।
শুক্রবার (১৪ জুলাই) দুপুর ১টা ১৫ মিনিটের দিকে যশোরের পুলিশ সুপার মোহাম্মদ আশরাফ হোসেন বার্তা ২৪.কমকে বলেন, দুইপক্ষের বক্তব্যে প্রাথমিকভাবে নিশ্চিত সংঘর্ষ নয়, মারপিটেই তিনজন নিহত ও ১৪জন আহত হয়েছে। কেন্দ্রের মধ্যে কেউ অপরাধ করলে, সেখানে অভ্যন্তরীণ শাস্তির রেওয়াজ আছে। সেটি করতে গিয়ে ঘটনা ঘটতে পারে। বিষয়টি আমরা যাচাই-বাছাই করছি। কেন্দ্রের সহকারী পরিচালকসহ ১০জনকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য পুলিশ হেফাজতে নেওয়া হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, হতাহতের ঘটনায় স্বজনদের মামলার প্রক্রিয়া চলছে। নিহতরা হলেন, বগুড়ার শিবগঞ্জের তালিবপুর পূর্ব পাড়ার নান্নু পরমানিকের ছেলে নাঈম হোসেন (১৭), একই জেলার শেরপুর উপজেলার মহিপুর গ্রামের আলহাজ নুরুল ইসলাম নুরুর ছেলে রাসেল ওরফে সুজন (১৮) এবং খুলনার দৌলতপুরের মহেশ্বরপাশা পশ্চিম সেনপাড়ার রোকা মিয়ার ছেলে পারভেজ হাসান রাব্বি (১৮)। নিহত রাব্বির রেজিস্ট্রেশন নাম্বার ১১৮৫৩। আর রাসেল ও নাঈমের রেজিস্ট্রেশন নাম্বার যথাক্রমে ৭৫২৪ ও ১১৯০৭। নাঈম হোসেন ধর্ষণ এবং রাব্বি হত্যা মামলার আসামি ছিল। এ ঘটনায় ১৪ জন শিশু আহত হয়।
যশোর জেনারেল হাসপাতালের জরুরি বিভাগের চিকিৎসক অমিয় দাস জানান, দেড় ঘণ্টার ব্যবধানে তিনটি মরদেহ আসে কিশোর উন্নয়ন কেন্দ্র থেকে। একজনের মাথায় ভারি কোনো বস্তু দিয়ে আঘাতের চিহ্ন দেখা গেছে। অন্যদের শরীরের আঘাতের কোনো চিহ্ন এখনও শনাক্ত হয়নি।
পুলিশের খুলনা রেঞ্জের অতিরিক্ত ডিআইজি একেএম নাহিদুল ইসলাম সাংবাদিকদের বলেন, ‘এখানে আসলে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেনি। আজকের ঘটনাটি একপক্ষীয়। ঘটনাটি প্রায় ছয়ঘণ্টা পর জানা গেছে। স্থানীয় সংবাদকর্মীরাও ঘটনা জেনেছেন সন্ধ্যার পর, হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে। তিনি নিজেও রাত ১০টার পর ঘটনা জেনে শিশু উন্নয়ন কেন্দ্রে এসেছেন। এখানে কী এবং কেন হয়েছে তা পুলিশ তদন্ত করবে। প্রশাসনের পক্ষ থেকেও তদন্ত হবে। আর ক্ষতিগ্রস্ত কিশোরদের স্বজনরা মামলা করলে পুলিশ মামলা নেবে। তদন্তাধীন ঘটনা হওয়ায় এরচেয়ে বেশিকিছু বলতে তিনি রাজি হননি।
যশোর শিশু উন্নয়ন কেন্দ্রে সংঘর্ষ ও মারধরের ঘটনায় আহত ও নিহত বন্দিরে স্বজনেরা হাসপাতাল ও কেন্দ্রে ভিড় করতে দেখা গেছে। আহত বন্দিদের স্বজনরো অভিযোগ করেছেন, তাদের সন্তানেরা গুরুতর আহত অবস্থায় হাসপাতালে ভর্তি থাকলেও তাদের সাথে যোগাযোগ করতে দেওয়া হচ্ছে না। অন্যদিকে নিহত বন্দিদের স্বজনদের অভিযোগ, তাদের সন্তান ‘থানায় গেলে মামলা নিচ্ছে না। আবার মরদেহও দ্রুত দিচ্ছে না।