সরকারের চলতি মেয়াদেই গ্রেনেড হামলা রায় কার্যকর
বর্তমান সরকারের চলতি মেয়াদের মধ্যে ২১ আগস্টের গ্রেনেড হামলার রায় কার্যকর করা বলে জানিয়েছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সড়ক পরিবহন মন্ত্রী ওবায়দুল কাদের।
তিনি বলেন, ২১ আগস্ট হামলার মূল পরিকল্পনাকারী তারেক রহমানসহ যারা বিদেশে রয়েছে তাদের ফিরিয়ে আনা হবে।
শুক্রবার (২১ আগস্ট) সকালে গ্রেনেড হামলায় নিহতদের স্মরণে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ কর্তৃক আয়োজিত আলোচনা সভায় সূচনা বক্তব্য তিনি একথা বলেন। এ সভায় গণভবন থেকে যুক্ত হন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
এছাড়া সভায় উপস্থিত ছিলেন প্রেসিডিয়াম সদস্য মতিয়া চৌধুরী, কৃষিমন্ত্রী ড. আব্দুর রাজ্জাক, জাহাঙ্গীর কবির নানক, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ, মাহবুব উল আলম হানিফ, আ ফ ম বাহাউদ্দীন নাছিম প্রমুখ।
আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, আমাদের বুকে জ্বলছে ১৯৭৫ এর ১৫ আগস্টে সপরিবারে জাতির পিতাকে হারানোর ভয়। বুকের গহীনে সেই জ্বলন্ত চিতা বিদায় দিতেই আসে ২১ আগস্ট।
তিনি বলেন, বিশ্ব মানবতা অবাক বিষ্ময়ে আবার দেখল রাজনীতির নামে নৃশংসতা বর্বরতা, দেখল প্রতিহিংসা চরিতার্থ করতে কীভাবে রাষ্ট্রযন্ত্রকে ব্যবহার করা হয়। দেখল কীভাবে নিরপরাধ মানুষের রক্তে রঞ্জিত হয় এই পবিত্র মাটি। যে মাটি পবিত্র হয়েছিল ৭১ এ লাখো শহীদের রক্তে। যে মাটি বঙ্গবন্ধুর রক্তের ভিজেছিল ৭৫ এ। সেই মাটিতে রক্ত স্রোত বয়ে যায় ২০০৪ সালের ২১ আগস্ট। তাবৎ বিশ্ব অবাক বিষ্ময়ে দেখল সেদিন গোধুলির লালআভা আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীদের রক্ত কিভাবে বঙ্গবন্ধু এভিনিউ একাকার হয়ে গিয়েছিল।
তিনি বলেন, সিলেটে দলীয় সমাবেশে হামলা হলো ৭ আগস্ট তার প্রতিবাদে সন্ত্রাস বিরোধী সমাবেশ চলছিল বঙ্গবন্ধু এভিনিউয়ে। প্রধান অতিথির বক্তব্য শেষ করে ট্রাক থেকে নামার জন্য পা বাড়ালেন এদেশের জনমানুষের প্রাণমনি আর তখন একের পর এক বিষ্ফোরিত হতে থাকে গ্রেনেড। সেদিন স্পিন্টরের আঘাতে ক্ষতবিক্ষত অসংখ্য মানুষ কাতরাচ্ছিল। সেদিন পুলিশ সাহায্য তো করেই নেয়নি উল্টো বাধা দিচ্ছিল। নেত্রীর গাড়ি লক্ষ্য করে চালায় গুলি।
তিনি বলেন, খুনি মোস্তাকের উত্তরসূরি হাওয়া ভবনের যুবরাজসহ ষড়যন্ত্রের কুশিলবরা যেভাবে এসেছিল ৭৫ এর ১৫ আগস্টে। ১৯৭৫ এর ১৫ আগস্টের হত্যাকাণ্ড ছিল ভোরের আলো-আধারিতে আর ২১ আগস্টের হত্যাকাণ্ড ছিল গোধুলি লগ্নের আলো আধারিতে। অন্ধকারের পেতাত্মারা নিশ্চিহ্ন করতে চেয়েছিল বঙ্গবন্ধুর পরিবারকে, আওয়ামী লীগকে করতে চেয়েছিল নেতৃত্ব শূন্য, মুছে দিতে চেয়েছিল মুক্তিযুদ্ধের চেতনা। আমাদের আশার শেষ ঠিকানা সেদিন বাঁচিয়ে দিলেও ততক্ষণে আমারা হারিয়েছি আওয়ামী লীগ নেতা আইভী রহমানসহ ২৩ জন আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীকে।
ওবায়দুল কাদের বলেন, সেই হত্যাকাণ্ডের পর জয়নুল আবেদিনকে দিয়ে এক সদস্যের তদন্ত কমিশন গঠন করেছিল। তিনি সেই হামলায় পাশ্ববর্তী দেশের ওপর দোষ চাপায়। দেশে বিচার ব্যবস্থাকে তারা প্রহসনে রূপান্তরের অপচেষ্টা চালায়। কিন্তু ইতিহাস বড় নির্মম। যাকে সেদিন তারা টার্গেট করেছিল, তার হাত দিয়ে শুরু হয় নির্মমতার বিচার। রায় হয়েছে। এখন উচ্চ আদালতে আপিল নিষ্পত্তির অপেক্ষায় রয়েছে।
তিনি বলেন, শেখ হাসিনা সরকারের এই মেয়াদেই বিচারিক প্রক্রিয়া শেষে ৭৫ এর খুনিদের মতো ২১ শে আগস্ট খুনিদেরও বিচারের রায় কার্যকর করা হবে। যারা বিদেশে আছে বিশেষ করে তারেক রহমানসহ সেই খুনিদের দেশে ফিরিয়ে আনা হবে।