সত্যকে কেউ কখনও মুছে ফেলতে পারে না

  • সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, ঢাকা
  • |
  • Font increase
  • Font Decrease

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা

জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও জাতীয় চার নেতা হত্যাকাণ্ডের সাথে জিয়াউর রহমান জড়িত বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেছেন, জাতির পিতাকে হত্যা সেটি শুধু হত্যাকাণ্ডই ঘটেনি, যে লক্ষ্য ও আদর্শ নিয়ে এদেশ স্বাধীন হয়েছিল সেই আদর্শ এবং লক্ষ্যকে ধ্বংস করাটাই ছিল তাদের উদ্দেশ্য। জাতির পিতার নাম বার বার মুছে ফেলার চেষ্টা করা হয়েছে এজন্য স্বাধীনতার ঘোষক সৃষ্টি হলো। ইতিহাস বিকৃতির চরম ন্যাক্কারজনক ঘটনা দেখেছি। কিন্তু সত্যকে কেউ কখন মুছে ফেলতে পারে না আজকে সেটা প্রমাণিত। ৭ মার্চের ভাষণ আন্তর্জাতিক প্রামাণ্য দলিলে স্থান পেয়েছে।

রোববার (২৩ আগস্ট) সকালে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৪৫তম শাহাদতবার্ষিকী ও জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে বঙ্গবন্ধু জন্মশতবার্ষিকী উদযাপন জাতীয় বাস্তবায়ন কমিটির উদ্যোগে শ্রদ্ধানিবেদন এবং আলোচনা সভায় একথা বলেন। আলোচনা সভায় বক্তব্য রাখেন আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা মণ্ডলীর সদস্য আমির হোসেন আমুসহ সিনিয়র নেতারা।

বিজ্ঞাপন

প্রধানমন্ত্রী বলেন, মুক্তিযুদ্ধের সব থেকে বেশি অবদান যাদের প্রত্যেককে জিয়াউর রহমান একে একে হত্যা করেছে। যে সমস্ত অফিসাররা ছিল সৈনিক ছিল এক একটা ক্যু হয়েছে তাদের নির্বিচারে হত্যা করা হয়েছে সেনাবাহিনীর ২ হাজারের কাছাকাছি সেনা সদস্য অফিসারদের নির্মমভাবে হত্যা করা হয়েছে। এই যে রক্ত ঝরা শুরু হয়েছে তখনই একটার পর একটা ক্যু হয়েছে সেখানে সেনা সদস্যরাই বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়।

তিনি বলেন, বহুনেতা কর্মীকে হত্যা করেছে। যারা স্বাধীনতাবিরোধী এমনকি যারা পাকিস্তানি পাসপোর্ট নিয়ে চলে গেল তাদেরকে ফিরিয়ে আনল এবং মন্ত্রী বানালো কাদেরকে যারা আমাদের বুদ্ধিজীবীদের হত্যা করেছে যারা আমাদের দেশে গণহত্যা চালিয়েছে তারাই ধ্বংস এবং নির্যাতন করেছে। পাকিস্তানিদের কাছ আমাদের মেয়েদের তুলে দিয়েছে লুটপাট করেছে অগ্নিসংযোগ করেছে। তারা হল মন্ত্রী উপদেষ্টা তারাই ক্ষমতায় অথচ ৭৫ এরপর থেকে সেই জিয়াউর রহমানকে কিন্তু অনেকে সমর্থনও দিয়েছিল কেন? কেনোর উত্তর আমি পাইনি। স্বাধীনতা এবং মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় যারা বিশ্বাস করে তারা কি এটা পারে।

বিজ্ঞাপন

তিনি বলেন, এখন দেখা যায় কিছু কিছু লোক সাফাই গাওয়ার চেষ্টা করে কিন্তু এই দেশের রক্তপাত হত্যাকাণ্ড যা কিছু সেগুলোতো সেই থেকে শুরু। যেদিন থেকে বিজয় এসেছে তারপর থেকে বোঝা যাচ্ছে একটা গভীর চক্রান্ত কাজ করছিল। যেন আমাদের বিজয়টা ধরে রাখতে না পারি। জাতির পিতার নাম তো মুছেই ফেলা হয়েছিল এমনকি এই নাম নেয়া যাবে না। ৭ মার্চের ভাষণ বাজানো যাবে না, স্বাধীনতার ঘোষক সৃষ্টি হলো ইতিহাস বিকৃতির চরম ন্যাক্কারজনক ঘটনা দেখেছি। কিন্তু সত্যকে কেউ কখনও মুছে ফেলতে পারে না আজকে সেটা প্রমাণিত। ৭ মার্চের ভাষণ আন্তর্জাতিক প্রামাণ্য দলিলে স্থান পেয়েছে।

তিনি আরো বলেন, ২১ শে আগস্ট। নিজেও ভাবি আল্লাহ কিভাবে আমাকে রক্ষা করল। যেভাবে তারা তৈরি হয়ে এসেছিল আক্রমণ করছিল মনে হচ্ছিল একটা যুদ্ধক্ষেত্রে আমরা নিরস্ত্র মানুষ আমরা সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে একটা প্রতিবাদে আমরা র‌্যালি করছিলাম। সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে দাঁড়াতে গিয়ে আমরা সন্ত্রাসেরই শিকার হই আর বিএনপি যখন ক্ষমতাই তাদেরই মদদে তাদেরেই চেষ্টায় না হলে একটার পর একটা গ্রেনেড কতগুলো গ্রেনেড মারল কোনো লোক তো এগিয়ে আসেনি কোন পুলিশও সাহায্য করেনি। উল্টো যারা আহত হয়ে কাতরাচ্ছিল পুলিশ এসে তাদের লাঠিচার্জ করেছে টিয়ারগ্যাস মেরেছে। অর্থাৎ আক্রমণকারীরা যেন নির্বিঘ্নে সেখান থেকে চলে যেতে পারে সেই সুযোগ তারা সৃষ্টি করেছিল। এধরনের আচরণ থেকে স্পষ্ট জিয়া যেমন জাতির পিতার হত্যার সঙ্গে জড়িত জাতীয় চারনেতার হত্যার সঙ্গে জড়িত একের পর এক ক্যু করে সেনা সদস্যদের হত্যা করেছে। মুক্তিযোদ্ধাদের হত্যা করেছে খালেদা জিয়া ক্ষমতায় এসে ঠিক একই ঘটনা ঘটিয়েছে। জিয়াউর রহমান সেই শাহ আজিজুর রহমান আব্দুল আলিম মাওলানা মান্নান থেকে শুরু মন্ত্রী উপদেষ্টা বানিয়েছিল। খালেদা জিয়া একইভাবে নিজামী এবং মুজাহিদ থেকে শুরু যারা যারা একেবারে সরাসরি বুদ্ধিজীবী হত্যা করেছিল তাদের মন্ত্রী বানিয়েছিল। খুনি রশিদ এবং হুদা তাকে ১৫ ফেব্রুয়ারি নির্বাচন করে পার্লামেন্টের বিরোধী দলীয় নেতার আসনে বসায়। খুনি রশিদকে কেন জনগণের ভোট চুরি করে ১৫ ফেব্রুয়ারি নির্বাচনে নির্বাচিত করে পার্লামেন্টে বসায় এর জবাব কি তিনি দিতে পারবে। কেউ দিতে পারবে যদি এই খুনিদের সাথে তাদের যোগসূত্র নাই থাকে কিন্তু সেই ঘটনাও তারা ঘটিয়েছে। অর্থাৎ সন্ত্রাস খুন হত্যা হত্যা ক্যু ষড়যন্ত্র সাতে যারা জড়িত বুদ্ধিজীবী হত্যার সাথে যারা জড়িত তারাই তাদের মদদ দিয়েছে। আমরা প্রতিকূল অবস্থার মধ্যে দেশ এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছি।

প্রধানমন্ত্রী আরো বলেন, জিয়া যে জাতির পিতার হত্যাকাণ্ডের সাথে জড়িত ছিল সেটা কর্নেল ফারুক ও হুদা নিজেরাই বলেছে। মোস্তাক জিয়াউর রহমানকে সেনা প্রধান করে এটাই প্রমাণ করে দিল তারা একইসাথে ছিল। জতির পিতার নামটা তারা মুছে ফেলতে এত চেষ্টা করার পরেও ২১ বছর তারা চেষ্টা করেছে কিন্তু সেই নাম মুছতে পারে নাই। যতই চেষ্টা চালাক আজকে শুধু বাংলাদেশ নয় বিশ্বব্যাপী জাতির পিতার নাম উজ্জ্বল।কয়েকজন খুনি বেইমান মোনাফেক ছাড়া দেশের অগণিত মানুষ জাতির পিতার জন্য কাঁদে, জাতির পিতার আদর্শ বাস্তবায়নই আমাদের এখনকার একমাত্র লক্ষ্য।