মেয়র আতিকুলের অভিযানকে বৃদ্ধাঙ্গুলি, ফের অবৈধ বিলবোর্ড স্থাপন
অবৈধ বিলবোর্ড ব্যানারের বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থানে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের (ডিএনসিসি) মেয়র মো. আতিকুল ইসলাম। গত ১ সেপ্টেম্বর থেকে এসব অবৈধ বিলবোর্ড অপসারণ ও রাজস্ব আহরণ বৃদ্ধিতে বিশেষ চিরুনি অভিযান শুরু হয়। এই অভিযানের প্রধান উদ্দেশ্য হলো করের আওতা বৃদ্ধি।
অর্থাৎ ডিএনসিসি এলাকায় যেসব মার্কেট, দোকান, স্থাপনা, বাসাবাড়িতে বিলবোর্ড স্থাপন করে যারা হোল্ডিং ট্যাক্স বা কর দেয় না তাদের কর ও হোল্ডিং ট্যাক্সের আওতায় আনা।
গত ১ সেপ্টেম্বর এ অভিযানের উদ্বোধন করেন মেয়র আতিকুল ইসলাম। এরপর তার নেতৃত্বে ডিএনসিসির অঞ্চল-৫ এর ৩৩ নং ওয়ার্ডের বছিলা এলাকায় অভিযানে যায় একটি টিম। সেখানে উপস্থিত ছিলেন ৩৩ নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর আসিফ আহমেদ। অভিযানে কয়েকটি ডিপার্টমেন্টাল স্টোর ও বিস্কুট ফ্যাক্টরি এবং অবৈধ বিলবোর্ডের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হয়।
এরই অংশ হিসেবে বছিলা প্রধান সড়কের পাশে ইউসিবি ব্যাংকের একটি শাখার সামনে টাঙানো ব্যানার ও ইলেকট্রিক বিলবোর্ড ভেঙে দেয়া হয়। কাউন্সিলর আসিফ আহমেদ নিজে এসব বিলবোর্ড ছিঁড়ে ফেলেন।
কথা ছিল সিটি করপোরেশনের অনুমতি ছাড়া কোনো বিলবোর্ড বা বিজ্ঞাপন প্রচার করা যাবে না। এ নির্দেশনা দেয়ার সময় মেয়র আতিকুল ইসলাম উপস্থিত ছিলেন। এছাড়া প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা সেলিম রেজা ও প্রধান রাজস্ব কর্মকর্তা মোহাম্মদ আবদুল হামিদ মিয়া উপস্থিত ছিলেন।
ছিঁড়ে ফেলার পর দুই দিন না যেতেই ফের সেখানে নতুন বিলবোর্ড ও ব্যানার স্থাপন করা হয়েছে। অনুমতি নিয়ে এসব বিলবোর্ড স্থাপনা করা হলে ঠিক ছিল। কিন্তু খোঁজ নিয়ে জানা গেল কোনো অনুমতি ছাড়াই মেয়রের অভিযানকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে ফের বিলবোর্ড বসানো হয়েছে।
এ বিষয়ে অঞ্চল-৫ এর আঞ্চলিক নির্বাহী কর্মকর্তা মো. মাসুদ হোসেন বার্তা২৪.কমকে বলেন, ‘নতুন করে অনুমতি নিয়েছে কিনা সেটা আমার জানা নেই। কারণ বিলবোর্ডের অনুমতির বিষয়টি দেখেন আমাদের প্রধান রাজস্ব কর্মকর্তা। তাছাড়া সেখানে আমাদের ক্যাম্প অফিস চলছে। আমি আমাদের কর কর্মকর্তাকে খোঁজ নিতে বলব। কে কীভাবে ফের বিলবোর্ড স্থাপন করল সে বিষয়ে জানতে চাইব।’
তার কথার সূত্র ধরে যোগাযোগ করা হয় প্রধান রাজস্ব কর্মকর্তা মোহাম্মদ আবদুল হামিদ মিয়ার সঙ্গে। তিনি বার্তা২৪.কমকে বলেন, ‘আমাদের কাছ থেকে কোনো অনুমতি নেয়নি। আমরা আইন অনুযায়ী তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেব। সেখানে আমাদের ক্যাম্প অফিস বিদ্যমান। দায়িত্বরত কর কর্মকর্তাকে বলে অবৈধ বিলবোর্ড ফের অপসারণ করা হবে।’
এদিকে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, আঞ্চলিক কর্মকর্তার যোগসাজশে এসব অবৈধ বিলবোর্ড পুনরায় স্থাপন করা হয়েছে। ওই এলাকার স্থানীয় বাসিন্দা মিন্টু শেখ বার্তা২৪.কমকে বলেন, ‘অভিযান করে কী লাভ হয়? উল্টো এখানে যে দায়িত্বে থাকে তার রেট বেড়ে যায়। অভিযান শেষে সকলের সঙ্গে ফের যোগাযোগ করেন তিনি। তার সঙ্গে কথা না বলে এসব হতে পারে না।’