মুক্তিযোদ্ধা বাটুলকে মরণোত্তর রাষ্ট্রীয় পদকে ভূষিত করার দাবি
মহান মুক্তিযুদ্ধের মুখপত্র সাপ্তাহিক রণাঙ্গন ও মহাকাল এবং দৈনিক দাবানলের প্রতিষ্ঠাতা সম্পাদক ও প্রকাশক, সাবেক সংসদ সদস্য, রংপুর প্রেসক্লাবের সাবেক সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা মরহুম খন্দকার গোলাম মোস্তফা বাটুলকে স্বাধীনতা পদক দিয়ে রাষ্ট্রীয় সম্মানে ভূষিত করার দাবি জানিয়েছেন রংপুরের সাংবাদিক সামাজ।
মঙ্গলবার (৮ সেপ্টেম্বর) দুপুরে রংপুর প্রেসক্লাবের আয়োজনে প্রয়াত খন্দকার গোলাম মোস্তফা বাটুলের স্মরণে অনুষ্ঠিত শোক সভায় এই দাবি জানানো হয়।
শোক সভায় সাংবাদিক নেতারা বলেন, মুক্তিযুদ্ধের সময় সাপ্তাহিক রণাঙ্গন প্রতিষ্ঠা করে গোলাম মোস্তফা বাটুল মুক্তিযুদ্ধকে তরান্বিত করেছেন। এ সময় তার সম্পাদিত পত্রিকার দুই সাংবাদিককে পাক হানাদার বাহিনীরা হত্যা করেছে। মুক্তিযুদ্ধের পর নানা সংকট আর বাধা বিপত্তির মধ্যেও রণাঙ্গন থেকে সাপ্তাহিক মহাকাল এবং পরে দৈনিক দাবানল প্রতিষ্ঠা করে গোলাম মোস্তফা বাটুল মুক্তিযুদ্ধের চেতনা মূল্যবোধকে জাগ্রত রাখতে আমৃত্যু কাজ করেছেন। উত্তরাঞ্চল তথা সারাদেশ এবং বিদেশে এই তিনটি পত্রিকা থেকে তৈরি হওয়া সাংবাদিকরা সমাজ সংস্কারে তাকে অনুসরণ করে কাজ করে যাচ্ছে।
রংপুর প্রেসক্লাবের সভাপতি রশীদ বাবুর সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক রফিকুল ইসলাম সরকারের সঞ্চালনায় শোক সভায় স্মৃতিচারণ করে বক্তব্য দেন- প্রেসক্লাবের সহ সভাপতি মোনাব্বর হোসেন মনা, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মানিক সরকার, কোষাধ্যক্ষ রউফ সরকার, ক্রীড়া সম্পাদক সাজ্জাদ হোসেন বাপ্পী, দপ্তর ও যোগাযোগ সম্পাদক সিদ্দিকুর রহমান সিদ্দিক প্রমুখ।
সভায় বক্তারা দাবানল সম্পাদক গোলাম মোস্তফা বাটুলের সাহসিকতা ও বর্ণাঢ্য জীবন এবং কর্মের কারণে তার জীবদ্দশাতেই স্বাধীনতা পদক দিয়ে রাষ্ট্রীয় সম্মানে ভূষিত করা উচিত ছিল বলে মত প্রকাশ করেন।
বক্তারা বলেন, শুধু রাজনৈতিক পরিচয়ের কারণে গোলাম মোস্তফা বাটুল রাষ্ট্রীয় কোনো পদক পাননি। অথচ তিনি দল-মতের ঊর্ধ্বে থেকে মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে আখরে ধরে সমাজ, রাষ্ট্র ও জাতির জন্য কাজ করেছেন। তিনি রাষ্ট্রীয় সম্মান না পাওয়ার আপেক্ষ নিয়ে চিরবিদায় নিলেও এমন গুণি ও সর্বজন শ্রদ্ধেয় মুক্তিযোদ্ধাকে মরণোত্তর স্বাধীনতা পদক দিয়ে রাষ্ট্রীয় সম্মানে ভূষিত করা সর্বস্তরের মানুষের দাবি।
এ দাবি বাস্তবায়নে সরকারের সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় বিশেষ করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে আহ্বান জানান রংপুরের সাংবাদিক সমাজ।
উল্লেখ্য, গত ৩ সেপ্টেম্বর বৃহস্পতিবার রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থান শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন খন্দকার গোলাম মোস্তফা বাটুল। তিনি মহান মুক্তিযুদ্ধের সময় বাংলাদেশের মুক্তাঞ্চল লালমনিরহাটের পাটগ্রাম থেকে ‘সাপ্তাহিক রণাঙ্গন' পত্রিকাটি প্রকাশ করেছিলেন। মুস্তফা করিম ছদ্মনামে পত্রিকাটির প্রকাশক ও সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করেন খন্দকার গোলাম মোস্তফা বাটুল। তার সম্পাদিত রণাঙ্গন পত্রিকাতে ‘ডিসেম্বরে বাঙলা মুক্ত’ শিরোনামে খবর প্রকাশ হয়েছিল।