দোহাজারী-কক্সবাজার রেললাইন: চকরিয়া স্টেশনে শুরু পাইলিংয়ের কাজ
চট্টগ্রামের দোহাজারী থেকে রামু হয়ে কক্সবাজার পর্যন্ত ১০০ দশমিক ৮৩ কিলোমিটার রেলপথ নির্মাণের কাজ চলছে। দোহাজারী-কক্সবাজার অংশে যাত্রী ওঠানামা করার জন্য থাকবে ৯টি স্টেশন। এসব স্টেশনের মধ্যে চকরিয়া স্টেশন নির্মাণের জন্য পাইলিং কাজ শুরু হয়ে গেছে। এর আগে শুরু হয়েছে কক্সবাজার স্টেশন নির্মাণের কাজ। পাইলিং শেষে সেখানে উঠে গেছে অবকাঠামো।
এদিকে বাকি স্টেশনগুলো নির্মাণের জন্য কাজ এগিয়ে চলছে। তবে স্টেশন নির্মাণে কাজের বেশিরভাগ দৃশ্যমান হয়েছে কক্সবাজারে। কক্সবাজারে মূলত একটি আইকনিক স্টেশন হচ্ছে এবং এর সাথে আরও অনেকগুলো ভবন নির্মাণ হবে।
দোহাজারী থেকে কক্সবাজার অংশে নয়টি স্টেশন হবে। এগুলো হলো- দোহাজারী, সাতকানিয়া, লোহাগাড়া, হারবাং, চকরিয়া, দুলাহাজরা, ইসলামাবাদ, রামু এবং কক্সবাজার। প্রথম অংশের রেললাইন নির্মাণ কাজের পরবর্তীতে কক্সবাজার থেকে মিয়ানমার সীমান্তের গুনদুম পর্যন্ত আরও ২৮ দশমিক ৭৫ কিলোমিটার নির্মাণ করা হবে। এই অংশে মায়ানমারের নিকট গুনদুম পর্যন্ত হবে আরও দুটি স্টেশন উখিয়া ও গুনদুম।
প্রকল্পের অগ্রগতির বিষয়ে খোঁজ নিয়ে জানা যায়, প্রকল্পের দোহাজারী ও কক্সবাজারে কাজের অগ্রগতি অন্যান্য স্থানের চেয়ে একটু বেশি। এরইমধ্যে প্রকল্পের সার্বিক অগ্রগতি হয়েছে ৪৬ ভাগ। এই প্রকল্পে ৩৯টি মেজর ব্রিজ এবং ১৪৫টি মাইনর ব্রিজ নির্মাণের কাজের অগ্রগতি হয়েছে সবচেয়ে বেশি। তবে এখনো কোথাও বসেনি রেললাইন। মাটি ভরাট করে রেললাইন বসানোর জন্য প্রস্তুত করা হচ্ছে। মাটি ভরাটের কাজ শেষ হয়ে গেলে ট্রাকে বসবে মূল রেললাইন।
প্রকল্পের কোয়ালিটি কন্ট্রোল ইঞ্জিনিয়ার মঈন উদ্দীন বার্তা২৪.কমকে বলেন, ‘চকরিয়ায় স্টাফ কোয়ার্টার এবং রেলস্টেশন নির্মাণের জন্য পাইলিং কাজ শুরু হয়েছে। খুব শিগগিরই আমরা আরেকটি স্টেশন হারবাংয়ের পাইলিং কাজও শুরু করব। সাম্প্রতিক সময়ে বৃষ্টির কারণে এই স্টেশনের পাইলিং কাজ শুরু করা যায়নি। বৃষ্টির কারণে পুরো প্রকল্পের কাজেই ব্যাঘাত ঘটেছে। আসছে শীত মৌসুমে কাজের গতি আরও বাড়বে। বর্তমানেও কাজ চলমান রয়েছে।
এদিকে সব জটিলতা কাটিয়ে ২০১৮ সালে প্রকল্প নির্মাণকারী প্রতিষ্ঠানগুলো কাজ শুরু করে। ফার্স্ট ট্র্যাক এই প্রকল্পের কাজ ২০২২ সালে শেষ হবার কথা রয়েছে। তখন ঢাকা থেকে কক্সবাজারে ট্রেনে যাওয়া যাবে।
সংশ্লিষ্টরা বলছেন, এই প্রকল্পের নির্মাণ কাজ শেষ হলে রাজধানী ঢাকা থেকে ট্রেনে চড়ে অনায়াসে কক্সবাজারে আসতে পারবে পর্যটকরা। কক্সবাজারে যাতায়াতের জন্য খুবই সহজ হবে এবং অধিক সংখ্যক পর্যটক কক্সবাজারে আগমন করতে পারবে। একই সাথে এই রেল লাইনটি দেশের অর্থনীতির জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে। কক্সবাজার অঞ্চলের মানুষের আর্থসামাজিক অবস্থার উন্নয়ন ঘটবে।
রেলপথ মন্ত্রণালয় বলছে, দোহাজারী থেকে কক্সবাজার হয়ে মিয়ানমারের সীমান্ত গুনদুম পর্যন্ত ১২৮ কিলোমিটার রেলপথ নির্মাণ হলে ট্রান্স এশিয়া করিডোরের সাথে সংযোগ স্থাপন হবে। একই সাথে পর্যটন শহর কক্সবাজার রেল নেটওয়ার্কের আওতায় আসবে।