ভাস্কর্য ভাঙচুরকারী দুই শিক্ষার্থীকে পালাতে পরামর্শ দেন শিক্ষক

  • স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, কুষ্টিয়া
  • |
  • Font increase
  • Font Decrease

দুই শিক্ষার্থীকে পালাতে পরামর্শ দেন শিক্ষক ও ডানে ভাঙচুরকৃত ভাস্কর্য । ছবি: বার্তা২৪.কম

দুই শিক্ষার্থীকে পালাতে পরামর্শ দেন শিক্ষক ও ডানে ভাঙচুরকৃত ভাস্কর্য । ছবি: বার্তা২৪.কম

কুষ্টিয়ায় বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নির্মাণাধীন ভাস্কর্য ভাঙচুরের ঘটনায় দায়ের করা মামলায় গ্রেফতার চার আসামির মধ্যে মাদ্রাসার দুই শিক্ষক আদালতে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দিয়েছেন। তারা ঐ ঘটনার পর মূল আসামিদের পালাতে সহযোগিতা করার কথা স্বীকার করেছেন।

শনিবার (১২ ডিসেম্বর) বিকালে কুষ্টিয়ার সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট দেলোয়ার হোসেনের আদালতে জবানবন্দি দেন দুই মাদ্রাসা শিক্ষক।

বিজ্ঞাপন

তারা হলো: কুষ্টিয়া শহরের জগতি পশ্চিমপাড়া এলাকার ইবনি মাসউদ (রা.) মাদ্রাসার শিক্ষক ও কুষ্টিয়ার মিরপুর উপজেলার ধুবইল গ্রামের মো. আল আমিন (২৭) এবং পাবনার আমিনপুর থানার দিয়াড় বামুন্দি এলাকার বাসিন্দা মো. ইউসুফ আলী (২৬)।

পুলিশি হেফাজতে চার দিন জিজ্ঞাসাবাদ শেষে বেলা ২টার দিকে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ও কুষ্টিয়া মডেল থানার পরিদর্শক নিশি কান্ত সরকার তাদের আদালতে নেন। পরে তারা জবানবন্দি দেন।

বিজ্ঞাপন

অপর দিকে রোববার (১৩ ডিসেম্বর) আলোচিত এই মামলার অন্যতম প্রধান দুই আসামি মাদ্রাসার দুই ছাত্র আদালতে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দিতে পারেন।

এরা একই মাদ্রাসার হেফজ বিভাগের ছাত্র ও কুষ্টিয়ার মিরপুর উপজেলার শিংপুর গ্রামের মো. আবু বকর ওরফে মিঠুন (১৯) এবং জেলার দৌলতপুর উপজেলার ফিলিপনগর (গোলাবাড়িয়া) এলাকার সবুজ ইসলাম ওরফে নাহিদ (২০)।

আদালত সূত্র জানায়, জবানবন্দিতে শিক্ষক ইউসুফ আলী জানিয়েছেন, তিনি মাদ্রাসা ইবনে মাসউদ কুষ্টিয়াতে হেফজ বিভাগে শিক্ষকতা করেন। ঐ বিভাগের ১৭ জন ছাত্র পড়াশোনা করে। বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্য ভাঙচুরের ঘটনায় অভিযুক্ত আবু বকর ও নাহিদ একই বিভাগের শিক্ষার্থী। গত শনিবার সকাল সাড়ে ৮টায় বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্য ভাঙচুরের ঘটনার সঙ্গে তাদের যুক্ত থাকার বিষয়টি জানতে পারেন। পরে তাদের মাদ্রাসা থেকে নিজ নিজ বাড়িতে যাওয়ার পরামর্শ দেন। পরবর্তী সময়ে পুলিশ ভাঙচুরের ঘটনায় সিসি ক্যামেরার ফুটেজ তাদেরকে দেখালে অভিযুক্ত দুই জনকে চেনা সত্ত্বেও তারা স্বীকার করেননি।

অপর শিক্ষক আল আমিনও একইভাবে জবানবন্দি দিয়েছেন। তবে তিনি জবানবন্দিতে উল্লেখ করেছেন, ঐ মাদ্রাসায় সবাই মোবাইলে ওয়াজ শোনে। বিশেষ করে মামুনুল হক, হাফিজুর রহমান ছিদ্দিকী, খালেদ সাইফুল্লাহ আইয়ুবীসহ অন্যদের ওয়াজ শুনতে ভালো লাগত। এই মাদ্রাসা শিক্ষকও একইভাবে অভিযুক্ত দুই মাদ্রাসা শিক্ষার্থীকে মাদ্রাসা থেকে তাদের নিজ নিজ বাড়িতে সরে যেতে পরামর্শ দেন।

উল্লেখ্য, গত ৪ ডিসেম্বর শুক্রবার দিবাগত রাতে কুষ্টিয়া শহরের পাঁচ রাস্তার মোড়ে বঙ্গবন্ধুর নির্মাণাধীন ভাস্কর্য ভাঙচুরের ঘটনা ঘটে। এর একদিন পর মাদ্রাসার ঐ দুই শিক্ষক ও দুই ছাত্রকে গ্রেফতারের পর আদালতের নির্দেশে রিমান্ডে নেয় পুলিশ।