গণপরিবহনে ধূমপান বন্ধে আইনের প্রয়োগ জরুরি
পরোক্ষ ধূমপানের ক্ষতিকর প্রভাব থেকে জনস্বাস্থ্য রক্ষা এবং মাননীয় প্রধানমন্ত্রী ঘোষিত ‘ধূমপানমুক্ত বাংলাদেশ-২০৪০’ বাস্তবায়নে গণপরিবহন ও টার্মিনালগুলোতে ধূমপানমুক্ত সাইনেজ স্থাপন নিশ্চিত করতে হবে।
সোমবার (১৫ ফেব্রুয়ারি) বেলা ১১টায় নগরভবনের ডিটিসিএ সভাকক্ষে “গণপরিবহনে তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন বাস্তবায়নের গুরুত্ব ও করণীয়” শীর্ষক আলোচনা সভায় বক্তারা এ কথা বলেন।
ঢাকা পরিবহন সমন্বয় কর্তৃপক্ষ (ডিটিসিএ), ডেভেলেপমেন্ট অ্যাকটিভিটিসি অব সোসাইটি-ডাস, ওয়ার্ক ফর এ বেটার বাংলাদেশ ট্রাস্ট এবং বাংলাদেশ তামাক বিরোধী জোট উক্ত সভা আয়োজন করে।
ডিটিসিএ-এর নির্বাহী পরিচালক খন্দকার রাকিবুর রহমানের সভাপতিত্বে সভায় বক্তব্য রাখেন দি ইউনিয়নের কারিগরি পরামর্শক অ্যাডভোকেট সৈয়দ মাহবুবুল আলম, প্রত্যাশা মাদক বিরোধী সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক হেলাল আহমেদ, ডাব্লিউবিবি ট্রাস্ট এর পরিচালক গাউস পিয়ারী।
সভায় মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন ডেভেলেপমেন্ট অ্যাকটিভিটিসি অব সোসাইটি উপদেষ্টা আমিনুল ইসলাম বকুল।
খন্দকার রাকিবুর রহমান বলেন, ঐতিহাসিকভাবেই আমাদের দেশ ধূমপান ও অন্যান্য তামাকজাত দ্রব্য সেবণ প্রচলিত রয়েছে সুতরাং ধূমপানের চাহিদা কমানোর জন্য তামাক পণ্যের সহজলভ্যতা কমানোর দিকে মনোনিবেশ করতে হবে। পাশাপাশি, গণপরিসর এবং গণপরিবহন শতভাগ ধূমপানমুক্ত রাখতে চালক, হেল্পার, যাত্রী সকলের ঐকান্তিক প্রচেষ্টা জরুরি। ডিটিসিএ গুরুত্ব দিয়ে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে এ বিষয়ে নিদের্শনা প্রদান করবে।
তিনি আরও বলেন, কিছু চালক বা হেল্পার বাসে ধূমপান করে বিধায় এর দায় এসে পড়ে মালিক পক্ষ, সমস্ত চালক সমাজ ও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের উপর। আমাদের স্বাস্থ্য ব্যবস্থা উন্নত নয়। সুতরাং তাদের বোঝাতে হবে যেন তামাক সেবন করে রোগ ব্যাধিতে আক্রান্ত না হয় এবং মানুষকে পরোক্ষ ধূমপানের মাধ্যমে ক্ষতিগ্রস্ত না করে।
অ্যাডভোকেট সৈয়দ মাহবুবুল আলম বলেন, জনস্বাস্থ্য সকলের বিষয়। সচেতনতামূলক কর্মসূচি ও সেগুলো পাঠ্যপুস্তকে যুক্ত করাসহ এ ধরনের বিষয়গুলো কতটুকু প্রয়োগ হচ্ছে তা খতিয়ে দেখা প্রয়োজন। তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে পুলিশকে সরাসরি জরিমানার ক্ষমতা দেওয়া হয়নি। তবে আইন সংশোধনীর মাধ্যমে পুলিশকে এ ক্ষমতা দেওয়া হলে তা তামাক নিয়ন্ত্রণে আশানুরুপ সফলতা আসবে।
হেলাল আহমেদ বলেন, ট্রাফিক পুলিশকে তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন বাস্তবায়নে কাজে লাগাতে হবে। সড়ক নিরাপত্তার মতো ধূমপানের বিষয়টিকেও গুরুত্ব দেওয়া প্রয়োজন। পাশাপাশি গণপরিবহনেও নো-স্মোকিং সাইন স্থাপন করা প্রয়োজন। ড্রাইভিং লাইসেন্স প্রদানের ক্ষেত্রেও ধূমপায়ীদের নিরুৎসাহিত করতে হবে।
গাউস পিয়ারী বলেন, গণপরিবহণে ধূমপান সম্পূর্ণরুপে বন্ধ করতে হলে জনসচেতনতার পাশাপাশি আইনের প্রয়োগ করতে হবে। বেসরকারী সংগঠনগুলো তামাক বিরোধী সচেতনতা সৃষ্টি করছে কিন্তু, আইনের কার্যকর বাস্তবায়ন না হলে তা ফলপ্রসু হবে না।
সভায় উন্মুক্ত আলোচনায় অংশগ্রহণ করেন, ডিটিসিএ’র মো: হেমায়েত হোসেন, পরিচালক (প্রশাসন), এস এম রেজাউল করিম, ট্রেনিং এডভাইজার, বাংলাদেশ পুলিশের ট্রাফিক এনফোর্সমেন্ট অফিসার মো: আবুল খায়ের, বিআরটিএ কর্মকর্তা ওয়াহেদুল গণি, বিআরটিসি কর্মকর্তা সুখদেব ঢালী, বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন ফেডারেশন এর সাধারণ সম্পাদক মো: মোখলেছুর রহমান, নাটাবের প্রকল্প ব্যবস্থাপক এ কে এম খলিল উল্লাহ প্রমূখ। অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন ডাব্লিউবিবি ট্রাস্ট’র প্রোগ্রাম ম্যানেজার সৈয়দা অনন্যা রহমান।