টিসিবির পচা পেঁয়াজ বিক্রি, ফেলে দিয়ে প্রতিবাদ

  • উপজেলা করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, গৌরীপুর (ময়মনসিংহ)
  • |
  • Font increase
  • Font Decrease

টিসিবির পচা পেঁয়াজ বিক্রি

টিসিবির পচা পেঁয়াজ বিক্রি

ময়মনসিংহের গৌরীপুরে ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশ (টিসিবি) বিক্রয় কেন্দ্র্র থেকে পচা ও দুর্গন্ধযুক্ত পেঁয়াজ বিক্রি করা হয়েছে ক্রেতাদের কাছে। বৃহস্পতিবার (২২ এপ্রিল) উপজেলা প্রশাসন ও পরিষদ চত্বরে টিসিবির বিক্রয় কেন্দ্রে এই ঘটনা ঘটে।

এসময় ক্রেতারা পেঁয়াজ নিতে না চাইলে বিক্রয় কেন্দ্রের ডিলার জোরপূর্বক ক্রেতাদের পচা ক্রয় করতে বাধ্য করেছে বলে অভিযোগ উঠছে। পরে ক্ষুব্ধ ক্রেতারা পেঁয়াজ মাটিতে ফেলে দিয়ে প্রতিবাদ জানায়।

বিজ্ঞাপন

জানা গেছে, বৃহস্পতিবার টিসিবির ডিলার গণেশ সরকার উপজেলা প্রশাসন ও পরিষদ চত্বরে ট্রাকে করে টিসিবির বিক্রয়কেন্দ্র থেকে নির্ধারিত সাশ্রয়ী মূল্যে পণ্য বিক্রি শুরু করেন। এসময় টিসিবির অন্যান্য পণ্যের সাথে পচা ও দুর্গন্ধযুক্ত পেঁয়াজ বিক্রি শুরু করলে গ্রাহকরা পেঁয়াজ মাটিতে ফেলে প্রতিবাদ করলে হট্টগোল শুরু হয়। খবর পেয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসার হাসান মারুফ ঘটনাস্থলে এসে পচা পেঁয়াজ বিক্রি করতে নিষেধ দেন।

এদিকে টিসিবির পণ্য ক্রয় করতে আসা বাড়িওয়ালাপাড়া মহল্লার তালেব হোনে বলেন, স্বল্পমূল্যে পণ্য ক্রয়ের জন্য দীর্ঘক্ষণ লাইনে দাঁড়িয়ে থেকে পচা পেঁয়াজ পেয়েছি। এই পেঁয়াজ নিয়ে আমি এখন কি করবো। পরে তিনি পেঁয়াজ মাটিতে ফেলে দিয়ে প্রতিবাদ জানান।

বিজ্ঞাপন

পূর্ব দাপুনিয়ার আছিয়া খাতুন বলেন, টাকা দিয়ে ভালো পেঁয়াজ কিনবো। অথচ আমাদের জোরপূর্বক পচা পেঁয়াজ গছিয়ে দেওয়া হচ্ছে।

টিসিবির ডিলার গণেশ সরকার বলেন, টিসিবি আমাদের যে পণ্য সরবরাহ করে আমরা সেই পণ্য বিক্রি করি। এখানে আমাদের কি করার আছে।

এদিকে স্থানীয়রা জানান, টিসিবির অপর ডিলার তোয়া এন্টারপ্রাইজও পচা পেঁয়াজ বিক্রি করছে। তবে তোয়া এন্ট্রারপ্রাইজের ম্যানেজার সুব্রত রায় বলেন, আমরা চেষ্টা করছি ভালো পণ্য দিতে। এখন পেঁয়াজ খারাপ আসলে আমাদের তেমন কিছু করার নেই।

টিসিবির অপর ডিলার আলী হায়দার রবিন বলেন, সর্বশেষ চালানে আমি ৪০০ কেজি পেঁয়াজ এনেছি। এরমধ্যে প্রায় ৫০ কেজি পেঁয়াজ পচা। বিষয়টি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে জানিয়ে কোন প্রতিকার পাইনি। এই অবস্থায় লোকসান জেনেও ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছি।

জানা গেছে, স্বল্প আয়ের মানুষের সুবিধার্থে টিসিবি বাজার মূল্যের চেয়ে কম মূল্যে পণ্য বিক্রি করছে। এখানে পেঁয়াজ প্রতি কেজি ২০ টাকা, সয়াবিন তেল প্রতি লিটার ১০০ টাকা, চিনি প্রতি কেজি ৫৫ টাকা, ডাল প্রতি কেজি ৫৫ টাকা, ছোলা প্রতি কেজি ৫৫ টাকা, খেজুর প্রতি কেজি ৮০ টাকায় বিক্রি করছে। উপজেলার টিসিবির ডিলাররা ট্রাকে করে এসব পণ্য বিক্রি করে।

তবে ক্রেতাদের অভিযোগ টিসিবির পণ্য কিনতে হলে ডিলাররা অন্য আরও পণ্য কিনতে বাধ্য করছে। এতে করে অনেক ক্রেতা টিসিবির পণ্য থেকে মুখ ফিরিয়ে নিচ্ছে।

ইসলামাবাদের আমির হোসেন বলেন, টিসিবির পণ্য কিনতে লাইনে দাঁড়িয়েছি। আমার চিনি আর তেলের প্রয়োজন অথচ আমাদের বুট কিনতেও বাধ্য করা হচ্ছে। টাকা দিয়ে মাল নেব, শর্ত কেন?

ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশ (টিসিবি) জেলা অফিসপ্রধান (ঊর্ধ্বতন কার্যনির্বাহী) বজলুর রশিদ জানান, কোনো অবস্থাতেই ক্রেতাকে পচা বা নষ্ট পেঁয়াজ দেওয়ার সুযোগ নেই। যেটুকু ভালো সেটুকুই বিক্রি করবে।