ময়মনসিংহের শতবর্ষী পুস্তিকার ঐতিহাসিক গুরুত্ব



ড. রূপকুমার বর্মণ
শতবর্ষ আগের গ্রন্থ

শতবর্ষ আগের গ্রন্থ

  • Font increase
  • Font Decrease

সভ্যতার পথচলায়, সাংস্কৃতিক-বুদ্ধিবৃত্তিক পরিক্রমায় এবং মনন ও সৃজনের ইতিহাসে লেখক ও পাঠকের পারস্পরিক সম্পর্ক এতটাই গভীর যে একজনকে বাদ দিয়ে অন্যজনের কথা চিন্তাই করা যায় না। প্রজন্মান্তরের পাঠকই স্থির করেন লেখার গুণগত মান।

গল্প, কবিতা, উপন্যাস, কাব্য, মহাকাব্য বা গবেষণামূলক প্রবন্ধের গ্রহণযোগ্যতা ও তাদের স্থায়িত্ব অনেকটাই নির্ভর করে প্রচার ও পাঠকের উপর। বিজ্ঞাপনের মাহাত্ম্য থাকলেও উপভোক্তা হিসাবে লেখকের গ্রহণযোগ্যতা পাঠকের মননশীলতার উর্দ্ধে উঠতে পারেনা। এ প্রসঙ্গে মনে পড়ে নোবেলজয়ী আমেরিকান সাহিত্যিক উইলিয়াম ফকনারের (William Faulkner: ১৮৯৭-১৯৬২) কথা। তিনি একবার বলেছিলেন:

“Read, read and read. Read everything----trash, classics, good and bad, and see how they do it. Just like a carpenter who works as an apprentice and studies the master. Read! You will absorb it.”

হ্যাঁ, পাঠকেই সব পড়েন---- কাগজের ঠোঙ্গা থেকে ক্লাসিক। ভাল, মন্দ, ছোট, বড়, রসাত্মক, ব্যঙ্গাত্মক, শ্লীল, অশ্লীল, ভাববাদী, স্থুলবাদী, বেদনাদায়ক বা হাস্যরসাত্মক----সবধরণের লেখারই অসংখ্য পাঠক আছেন। পাঠকের জন্যই ভাল সৃষ্টিগুলোর পাঠ যুগযুগ ধরে চলতে থাকে। পাঠকের অভাবেই অনেক লেখাই চলে যায় বিস্মৃতির গভীর সমুদ্রে। নিজের তাগিদে পাঠকই আবার সেগুলোকে ফিরিয়ে আনেন।

স্বাভাবতই কোন একজন সুলেখক বা চিন্তাবিদ তাঁর অর্ন্তদৃষ্টি দিয়ে তাঁর সমকালীন সমাজের ঘটনাবলী,  জীবন-দর্শন ও সংস্কৃতির যে ধারাকে তাঁর সুচিন্তিত মতামত দিয়ে পৃষ্ঠাবদ্ধ করে নেন, বহু বছর পর পাঠক যখন সেই মুদ্রিত পাতায় চোখ রাখেন পৃষ্ঠাবদ্ধ সেই ধারা পুনরায় বইতে শুরু করে। এই পুনর্পাঠ অবশ্য পাঠকের সমকালীন ভাবনা ও বিচারের দৃষ্টিভঙ্গির দ্বারা প্রভাবিত হয় (তা সে ধর্মগ্রন্থ, ক্লাসিক, আত্মজীবনী বা রম্যরচনা যাই হউক না কেন)। অর্থাৎ কোন গ্রন্থের শতবর্ষ পড়ে তার পুনর্পাঠ শতবর্ষ পুরানো পৃষ্ঠাবদ্ধ ধারাকে যেমন খুলে দেয় তেমনি নতুন পাঠকের সমকালীন ভাবনায় তাকে প্রানবন্ত করে তোলে।

এই বিষয়টি উপলব্ধি করার জন্য ১৯১৪ সালে (তৎকালীন অখণ্ড বাংলার) ময়মনসিংহ থেকে প্রকাশিত একটি ক্ষুদ্র পুস্তিকার পুনর্পাঠের উপলদ্ধি তুলে ধরা যেতে পারে। ময়মনসিংহের সেন ব্রার্দাস প্রেসে মুদ্রিত এই পুস্তিকার নাম ‘দ্বিতীয়বর্ণ (ক্ষত্রিয়) বা ঝালমাল তত্ত্ব’। লেখক ময়মনসিংহের ছত্রপুরের শ্রীমহেন্দ্রনাথ মল্লবর্মণ। এর প্রকাশক ছিলেন ময়মনসিংহ জেলারই আচারগ্রামের (বর্তমানে কিশোরগঞ্জ সংলগ্ন নান্দাইল উপজেলাধীন) দীননাথ মল্লবর্মণ।

‘ঝালমাল তত্ত্ব’ রচিত হয়েছিল পূর্ব ও মধ্যবাংলার মৎস্যজীবীদের সম্মানজনক সামাজিক পরিচিতি নির্মাণের জন্য। ইতিহাসের দিকে লক্ষ রাখলে দেখা যাবে যে, প্রাচীনকাল থেকেই দক্ষিণ এশিয়ার ‘জাত-বর্ণ ব্যবস্থায়’ মৎস্যজীবীদের অন্তজঃ হিসাবে দেখা হতো। বিশ শতকের গোড়াতেও বাংলার মৎস্যজীবীরা জাত-ব্যবস্থার অভিশাপে জর্জরিত ছিলেন। তাঁরা বাঙালীদের প্রিয় খাদ্য মাছের যোগানদার হলেও উচ্চবর্ণীয়/উচ্চবর্গীয় মানুষেরা তাঁদের জাতিগত পেশাকে (মাছ ধরা/ বিক্রি করা) সম্মানের চোখে দেখতেন না।

মহেন্দ্রনাথ মল্লবর্মণ তাঁর স্বজাতিবর্গের (ব্রজনাথ ঝল্লবর্মণ, অনন্ত চন্দ্র ঝল্লবর্মণ, দীননাথ মল্লবর্মণ, হৃদয়নাথ হালদার, আনন্দ চন্দ্র মল্লবর্মণ এবং আরও অনেকের) উৎসাহে মৎস্যজীবীদের ক্ষত্রিয় পরিচিতি নির্মাণে প্রায়াসী হয়েছিলেন। তারই ফলশ্রুতি হল ‘ঝলমাল তত্ত্ব’।

প্রসঙ্গত উল্লেখযোগ্য যে, ঊনিশ শতকের শেষ লগ্নে ও বিশ শতকের সূচনাপর্বে ঔপনিবেশিক বাংলার বেশ কয়েকটি নিম্নবর্ণীয় জাতি [যেমন পৌন্ড্র, রাজবংশী, নমঃশূদ্র, ভুঁইমালী, মালো, শুঁড়ি, বাগদি, বাউড়ি, ধোবা, গোপ, ইত্যাদি] সম্মানজনক জাতি পরিচিতি নির্মাণে জন্য সামাজিক আন্দোলন শুরু করেছিল। তৎকালীন বাংলার ক্ষত্রিয় আন্দোলনকারী বিভিন্ন জাতির মধ্যে ‘জাতি বিষয়ক’ গ্রন্থ প্রকাশের একটি সুনির্দিষ্ট ধারাও তৈরি হয়েছিল। পৌন্ড্র জাতির শ্রীমন্ত নস্করের (১৮৬৩-১৯০৭) ‘জাতিচন্দ্রিকা’ (১৮৮৭) প্রকাশের মধ্য দিয়ে এর সূচনা হয়েছিল। পরবর্তীকালে বেণীমাধব হালদারের (১৮৫৮-১৯২৩) ‘জাতিবিবেক’ (১৮৯৩), মহেন্দ্রনাথ করনের (১৮৮৬-১৯২৮) ‘A Short History and Ethnology of the Cultivating Pods’ (১৯১৯), ও হরকিশোর অধিকারীর ‘রাজবংশী কুলপ্রদীপ’ (১৯০৮) এই ধারাকে সমৃদ্ধ করেছিল। এই ধারারই অন্যতম সংযোজন হিসাবে মহেন্দ্রনাথের ‘ঝলমাল তত্ত্ব’ প্রকাশিত হয়েছিল ১৯১৪ সালে।

‘ঝলমাল তত্ত্বে’  মহেন্দ্রনাথ দেখানোর চেষ্টা করেছিলেন কেন ও কিভাবে উত্তর-পশ্চিম ভারতের রাজস্থানের মল্লগড় ও ঝালোয়ারা রাজ্য থেকে মল্লক্ষত্রিয়রা ভারতের দক্ষিণের মালাবার উপকূল (ওয়াস্টার্ন ঘাট) ও বঙ্গোপসাগর (ইস্টার্ন ঘাট) হয়ে বাংলায় এসেছিলেন। তাঁর মতে ক্ষত্রিয় জাতির বংশধর বাংলার মল্লক্ষত্রিয়রা মাছধরাকে পেশা হিসেবে গ্রহণ করেছিলেন, যা কোনোভাবেই নিন্দনীয় হতে পারে না। মাছের মূল যোগানদাতারূপে তাঁদেরকে হেয় চোখে দেখা সম্পূর্ণভাবে অযৌক্তিক। তাঁর মতে প্রয়োজনের তাগিদে জাতিগত পেশাকে পরিত্যাগ করে অন্য পেশা গ্রহণ করা মানুষের স্বাভাবিক প্রবৃত্তি। ব্রাহ্মণেরা পুরুষানুক্রমে চালিয়ে যাওয়া পৌরহিত্যের পেশা পরিত্যাগ করে অন্যান্য পেশা গ্রহণ করে ধনবান হচ্ছেন তাতে তাঁদের জাত নষ্ট হচ্ছে না। তাহলে বর্ণব্যবস্থার অন্যান্য বর্ণের মানুষেরা তাঁদের বর্ণগত পেশা ত্যাগ করলে তাঁদের কি জাতি পরিচয় নষ্ট হয়ে যাবে? ঝালমাল তত্ত্বের এই অনুসন্ধিৎসা নিঃসন্দেহে একটি মৌলিক প্রশ্নের জন্ম দিয়েছিল, যা আজও প্রাসঙ্গিক।

আপাতদৃষ্টিতে মনে হতে পারে যে, ঝালমাল তত্ত্ব জাতি বিষয়ক অন্যান্য পুস্তকের মতোই সাধারণ একটি পদক্ষেপ মাত্র। কিন্তু একটু অন্য দৃষ্টিতে দেখলে দেখা যাবে যে, এই পুস্তিকাটি তার সমকালীন সমগোত্রীয় পুস্তকগুলো থেকে অনেকটাই আলাদা। বেদে বর্ণিত ‘প্রকৃতি পুরুষের’ বিভিন্ন অঙ্গ থেকে বর্ণব্যবস্থা উৎপত্তি নিয়ে বহুচর্চিত শ্লোকটির মহেন্দ্রনাথ নতুন একটি ব্যাখ্যা দিয়েছেন। তাঁর মতে প্রকৃতি পুরুষ কোন একজন ব্যাক্তি নন (যা প্রথাগত ব্যাখ্যায় লক্ষ্য করা যায়)। তিনি হলেন সমগ্র মানব গোষ্ঠীর সমাহার। তাঁর মতে ‘মানুষের জন্ম কারোর মুখ, বাহু, ঊরূ ও পদ থেকে হয় নি। পূর্বে কোন জাতি বা বর্ণ বিভাগ ছিল না। সকল মানুষই একজাতি বা এক বর্ণ ছিল। এরপর বহুদিন পরে কাজের সুবিধার একই মানবমন্ডলী গুণ ও কর্মানুসারে  ব্রাহ্মণ, ক্ষত্রিয়, বৈশ্য এবং শূদ্র এই চারিভাগে বিভক্ত হয়।’ ভারত ও বাংলাদেশে মার্কসবাদী ও বস্তুবাদী ইতিহাসচর্চার সূচনার বহুপূর্বে ময়মনসিংহের ছত্রপুরে বসে মহেন্দ্রনাথ জাত-বর্ণব্যবস্থার যে বস্তুবাদী ব্যাখ্যা দিয়েছেন, তাকে এককথায় বৈপ্লবিক বলা যায়। শুধু তাই নয়, প্রাচীন ও ধ্রুপদী গ্রিক নগর রাষ্ট্রের উন্নত ব্যবস্থায় গুণ ও কর্মবিভাজনের ভিত্তিতে মহামতি প্লেটো মানবসমাজের যে শ্রেণিকরণ করেছিলেন, শতবর্ষ আগে মহেন্দ্রনাথের বিশ্লেষণে তারও প্রতিধ্বনি শুনত পাওয়া যায়।

ধর্মীয় ও সমাজতাত্ত্বিক দৃষ্টিকোণ থেকে পরিবর্তন ও অর্থনৈতিক বিন্যাসের চলমান  বাস্তবতার নিরিখে প্রণীত  ‘ঝালমাল তত্ত্ব’ একই পেশায় যুক্ত ভিন্ন ভিন্ন জাতির প্রতি বৈষম্যমূলক সামাজিক রীতিনীতির সমালোচনা করেছে। মহেন্দ্রনাথ লিখেছেন, মৎস্যজীবী গোষ্ঠীগুলো মাছ ধরে বিক্রি করে বলে তাঁদেরকে অপাংক্তেয় করে রাখা হয়েছে। অথচ উচ্চবর্ণীয়/উচ্চবর্গীয়রা মাছের ব্যবসায় যুক্ত হলেও তাঁরা সামাজিক বঞ্চনার শিকার হন না। তাঁর ভাষায়: “বর্তমান কালেও দেখিতে পাওয়া যায়, হোটেল ওয়ালা ব্রাহ্মণ, কায়েস্থ হোটেলে রান্না করিয়া পর্য্যন্ত মৎস্য মাংস বিক্রয় করিয়া থাকে। রেলগাড়ি বা জাহাজ হইতে নামিলেই তন্নিকটবর্তী হোটেলওয়ালা ব্রাহ্মণ মহোদয় দৌড়ে এসে বলে, ‘আমার হোটেলে চলুন, ডাল মাছ সকলই পাবেন। যদি ডাল ভাত খান, তবে বার পয়সা, - আর মাছ ভাত খাইলে চারি আনা।’ – এই সব মহাশয়গন কি মৎস্য বিক্রয়ী নয়?”

ঝালমাল তত্ত্বের এই প্রশ্নটি আমাদের পরিচয় করিয়ে দেয় দলিত প্রতর্কের মূল যুক্তির সঙ্গে। লক্ষ করার বিষয় হল যে, বিশ শতকের শেষ ও একুশ শতকের গোড়ায় মহারাষ্ট্রের ‘দলিত প্যান্থারপন্থী’ নামদেও দাসাল থেকে শুরু করে হিন্দি সাহিত্য জগতের ড. তুলসীরাম ও ওমপ্রকাশ বাল্মিকীর সঙ্গে বাংলাদেশের অধ্যাপক হরিশংকর জলদাস ‘দলিত সাহিত্যের’ মাধ্যমে সামাজিক অন্যায়ের বিরুদ্ধে প্রশ্ন তোলার সাহস দেখিয়েছেন। একইসঙ্গে পশ্চিমবঙ্গের যতীন বালা,  মনোহর মৌলি বিশ্বাস, কাল্যানি ঠাকুর চাঁড়াল ও মনোরঞ্জন ব্যাপারী আত্মজীবনী রচনার মাধ্যমে তাঁদের অভিজ্ঞতাকে লিপিবদ্ধ করে চলেছেন। কিন্তু তার বহুপূর্বে ময়মনসিংহের মহেন্দ্রনাথ মল্লবর্মণ সামাজিক অন্যায়ের বিরুদ্ধে কলম ধরেছিলেন। স্বভাবিকভাবেই বলা যায় যে শতবর্ষ পূর্বে প্রকাশিত ঝালমাল তত্ত্ব সামাজিক ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠার দাবি উত্থাপন করেছিল যা তার পুনর্পাঠকে প্রাসঙ্গিক করে তোলে। তাছাড়া সম্প্রতি যে ৫০টি সম্প্রদায়কে ‘দলিত’ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে (২০১৭) তাঁদের ইতিহাস জানার জন্যও মহেন্দ্রনাথের এই পুস্তিকাটির গুরুত্ব অপরিসীম। তদুপরি সমকালীন ভাবনার আলোক সমাজ, মানুষ, ও জাতি, প্রকৃতি বিষয়ক মৌলিক-ঐতিহাসিক প্রকাশনা/গ্রন্থ/রচনারই পুনর্পাঠ ও সমকালের সঙ্গে তুলনামূলক বিশ্লেষণ/মূল্যায়ন একান্তভাবে জরুরী।

ড. রূপ কুমার বর্মণ, কলকাতার যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাস বিভাগের অধ্যাপক ও আম্বেদকর চর্চা কেন্দ্রের সমন্বয়ক ।

   

২৫ মে বঙ্গবাজার বিপণি-বিতান নির্মাণ কাজের উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী 



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, ঢাকা
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

বঙ্গবাজার নগর পাইকারি বিপণি বিতান নির্মাণ কাজের উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। শনিবার (২৫ মে) সকাল ১১টায় এটি উদ্বোধন করবেন তিনি।

শনিবার (১৯ মে) ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের জনসংযোগ কর্মকর্তা মো. আবু নাছের স্বাক্ষরিত বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানা যায়। 

এছাড়াও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সেদিন ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন গৃহিত পোস্তাগোলা হতে রায়ের বাজার স্লুইস গেট পর্যন্ত '৮ সারির ইনার সার্কুলার রোড' এবং ধানমন্ডি হ্রদের পাড়ে 'নজরুল সরোবর' নির্মাণ কাজের উদ্বোধন করবেন ।

উল্লেখ যে, গত বছরের ৪ এপ্রিল বঙ্গবাজার কমপ্লেক্সে সংগঠিত ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডে ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসায়ীদের পুনর্বাসনের লক্ষ্যে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন নতুন করে বঙ্গবাজার পাইকারি নগর বিপনী বিতান নির্মাণের উদ্যোগ নেয়।

এছাড়াও পদ্মা বহুমুখী সেতু নির্মাণের ফলে দক্ষিণ বঙ্গের ২১টি জেলা এবং চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগের ১৬ জেলা হতে আগত উত্তরবঙ্গগামী বাসগুলোকে যেন আর ঢাকা শহরের অভ্যন্তরে প্রবেশ করতে না হয়, সেজন্য পোস্তাগোলা ব্রিজ হতে রায়ের বাজার স্লুইচ গেট পর্যন্ত ৮ সারির ইনার সার্কুলার রোড প্রতিষ্ঠায় উদ্যোগ নেয় ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন। উদ্যোগের অংশ হিসেবে ১ম পর্যায়ে কামরাঙ্গীরচরের লোহার পুল থেকে রায়ের বাজার স্লুইচ গেট পর্যন্ত ৮ সারির সড়ক নির্মাণ করা হবে। এই সড়কের মাঝের দুই-দুই চার সারি এক্সপ্রেসওয়ে এবং দুই পাশে দুই-দুই চার সারি সার্ভিস লেন হিসেবে রাখা হয়েছে।

পাশাপাশি নগরীতে পর্যাপ্ত গণপরিসর সৃষ্টির উদ্দেশে ধানমন্ডি আবাসিক এলাকার রোড নম্বর ১৩/এ ও ৮/এ সংলগ্ন ধানমন্ডি হ্রদের পাড়ে নজরুল সরোবর নির্মাণের উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়।

;

শিক্ষার্থী-কিরগিজ কর্মকর্তাদের সঙ্গে যোগাযোগ অব্যাহত রয়েছে- পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, ঢাকা
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

কিরগিজস্তানের রাজধানী বিশকেকে ১৭ মে রাতে সহিংসতার পর দেশটির কর্মকর্তা ও বাংলাদেশি শিক্ষার্থীদের মধ্যে বাংলাদেশ সরকারের যোগাযোগ অব্যাহত রয়েছে।

রোববার (১৯ মে) এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে এ কথা জানানো হয়েছে।

পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানায়, ১৭ মে রাতে সহিংসতার ঘটনায় বাংলাদেশ সরকার গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছে।

এ ছাড়া উজবেকিস্তানের বাংলাদেশ দূতাবাসের মাধ্যমে পরিস্থিতি নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করছে। একইসঙ্গে কিরগিজ প্রজাতন্ত্রে স্বীকৃত দূতাবাস হিসেবে কিরগিজ প্রজাতন্ত্রে অধ্যয়নরত শিক্ষার্থীদের ও কিরগিজ কর্মকর্তাদের সঙ্গে ক্রমাগত যোগাযোগ রয়েছে।

পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে জানানো হয়, এখন পর্যন্ত বাংলাদেশি ছাত্রদের কোনো গুরুতর আহত বা হতাহতের খবর নেই। দূতাবাস ইতোমধ্যে অফিসিয়াল ফেসবুক পেজে একটি জরুরি যোগাযোগ নম্বর শেয়ার করেছে, যাতে এ বিষয়ে যে কোনো সমস্যার জন্য শিক্ষার্থীরা যোগাযোগ করতে পারেন।

দূতাবাসের মাধ্যমে সরকার শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে কিরগিজ প্রজাতন্ত্রের পররাষ্ট্র ও অভ্যন্তরীণবিষয়ক মন্ত্রণালয় ও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ সমন্বয় করছে।

সরকার ঘনিষ্ঠভাবে পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করছে। তাসখন্দে অবস্থানরত রাষ্ট্রদূতকে বাংলাদেশি শিক্ষার্থীদের সুস্থতা সম্পর্কে খোঁজখবর নিতে শিগগিরই বিশকেক সফরে যেতে বলা হয়েছে।

;

মেরিন ড্রাইভে সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত ২



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, কক্সবাজার
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

কক্সবাজারের-টেকনাফের মেরিন ড্রাইভ সড়কে মোটরসাইকেলের মধ্যে মুখোমুখি সংঘর্ষে যুবলীগ নেতাসহ ২ আরোহী নিহত হয়েছেন।

রোববার (১৯ মে) দুপুরের দিকে কক্সবাজার- টেকনাফ মেরিন ড্রাইভ সংলগ্ন বাহারছড়া বড়ডেইল এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।

নিহতরা হলেন- টেকনাফের হোয়াইক্যং ৪ নম্বর ওয়ার্ডের হরিখোলা গ্রামের লাতাইঅং চাকমার ছেলে বারিক্কা (প্রকাশ) কিরন চাকমা (৪০) ও ঢাকা ডেমরার স্টাফ কোয়ার্টার এলাকার মাযহারুলের ছেলে জিহাদ (৩০)। নিহত কিরন চাকমা হোয়াইক্যং ইউনিয়ন যুবলীগের ৪ নম্বর ওয়ার্ডের সহ-সভাপতি।

বিষয়টি নিশ্চিত করেন বাহারছড়া তদন্ত কেন্দ্রের ইনচার্জ পুলিশ (পরিদর্শক) মো. সামিউদ্দিন।

তিনি বলেন, রবিবার দুপুরের দিকে কক্সবাজার- টেকনাফের বাহারছড়া বড়ডেইল এলাকায় দুই মোটরসাইকেল আরোহীর মধ্যে মুখোমুখি সংঘর্ষ হয়। এতে দু'জন নিহত হয়।

নিহতের মধ্যে বারিক্কা (প্রকাশ) কিরন চাকমা (৪০) টেকনাফের হোয়াইক্যং হরিখোলা গ্রামের ও মো. জিহাদ (৩০)ঢাকা ডেমরার স্টাফ কোয়ার্টারের বাসিন্দা।

জানা গেছে, নবদম্পতি জিহাদ ও তার স্ত্রী পরিবার নিয়ে গত পরশু দিন কক্সবাজার এসেছে। তারা তারকামানের হোটেল ওশান প্যারাডাইসে উঠেছে। সকালে বাইক ভাড়া নিয়ে মেরিনড্রাইভে ঘুরতে গিয়ে শামলাপুরে দুর্ঘটনার শিকার হয়। সেখান থেকে কক্সবাজার সদর হাসপাতালে নিয়ে আসলে জিহাদকে মৃত ঘোষণা করেন।

নিহতের লাশ কক্সবাজার সদর হাসপাতালে মর্গে রয়েছে। আইনি কার্যক্রম শেষে পরিবারের নিকট হস্তান্তর করা হবে।

;

স্থানীয় সংসদ সদস্য ও কাউন্সিলরের সঙ্গে ডিএনসিসি মেয়রের বৈঠক



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, ঢাকা
ছবি: বার্তা২৪.কম

ছবি: বার্তা২৪.কম

  • Font increase
  • Font Decrease

ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের (ডিএনসিসি) নতুন ১৮টি ওয়ার্ডের সার্বিক উন্নয়ন কার্যক্রম নিয়ে স্থানীয় সংসদ সদস্যবৃন্দ ও কাউন্সিলরের সঙ্গে বৈঠক করেছেন ডিএনসিসি মেয়র মো. আতিকুল ইসলাম।

রোববার (১৯ মে) গুলশান নগর ভবনের সম্মেলন কক্ষে এই বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়।

ডিএনসিসি মেয়র বলেন, ‘নতুন ১৮টি ওয়ার্ডের পরিকল্পিত উন্নয়নের জন্য প্রধানমন্ত্রী একটি প্রকল্প অনুমোদন করেছেন। প্রথম ধাপে ৪ হাজার ২৫ কোটি টাকা অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। করোনা, রাশিয়া ইউক্রেন যুদ্ধসহ অন্যান্য কারণে বৈশ্বিক অর্থনৈতিক মন্দায় জমি অধিগ্রহণ কার্যক্রম আপাতত স্থগিত করা হয়েছে। সার্বিক পরিস্থিতিতে অর্থ ছাড় পেতে সময় লাগছে। কিন্তু এই নতুন এলাকায় বহু মানুষের বসবাস। তাদের দুর্ভোগের বিষয় বিবেচনা করে আমরা নিজস্ব অর্থায়নে ড্রেন ও রাস্তা নির্মাণের কাজ শুরু করেছি।’

মেয়র আরও বলেন, বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর ২৪ ইঞ্জিনিয়ারিং ব্রিগেড প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করছে। এই এলাকায় টেকসই উন্নয়নের জন্য ড্রেন নির্মাণ করে তারপর রাস্তা করতে হবে। ড্রেনেজ ব্যবস্থা ঠিক না হলে রাস্তা করলে জলাবদ্ধতা হবে। সমস্যার স্থায়ী সমাধান হবে না৷ আগামী এক বছর এই নতুন এলাকায় সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার ভিত্তিতে ড্রেনেজ ও রাস্তার কাজ চলবে। আশা করছি আগামী ডিসেম্বরের মধ্যে জনগণের চলাচলে কষ্ট দূর হবে।

এসময় ডিএনসিসি মেয়র ড্রেন নির্মাণ ও সড়ক প্রশস্ত করণের জন্য এলাকাবাসী যেন জায়গা ছেড়ে দিয়ে সহযোগিতা করে সে বিষয়ে স্থানীয় সংসদ সদস্য ও কাউন্সিলরদের প্রতি আহবান জানান।

বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন- ঢাকা-১১ আসনের সংসদ সদস্য ওয়াকিল উদ্দিন, ঢাকা ১৮ আসনের সংসদ সদস্য খসরু চৌধুরী এবং নতুন ১৮টি (৩৫ থেকে ৫৪নং) ওয়ার্ডের কাউন্সিলরবৃন্দ।

এছাড়াও অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন ডিএনসিসির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মীর খায়রুল আলম, প্রধান প্রকৌশলী ব্রিগে. জেনা. মো. মঈন উদ্দিন, প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ব্রিগে. জেনা. ইমরুল কায়েস চৌধুরী, প্রধান বর্জ্য ব্যবস্থাপনা কর্মকর্তা ক্যাপ্টেন মোহাম্মদ ফিদা হাসান এবং সব আঞ্চলিক নির্বাহী কর্মকর্তাবৃন্দ।

;