বেপরোয়া মানুষ
রাজধানীর মাটিকাটা বাজারের গলি। দুই পাশের বেশিরভাগ দোকানপাট বন্ধ থাকলেও গলির ভেতর মানুষের জটলা। নেই স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার বালাই। অধিকাংশই মাস্ক পরছেন না। যাদের সঙ্গে মাস্ক রয়েছে তারাও স্বাস্থ্যবিধি মেনে ঠিকঠাক মাস্ক পরছেন না। অনেকেরই মাস্ক থুতনিতে।
ইসিবি চত্বরের ফাস্টফুড আইটেমের বেশিরভাগ দোকান খোলা। এসব দোকানের সামনে আড্ডা দিতে দেখা গেছে কিশোর-যুবকসহ নানা বয়সীদের। এখানে রিকশা, অটোরিকশা, ভ্যান, মোটরসাইকেল, মানুষের চলাচল, ব্যক্তিগত গাড়ি সবকিছুর আধিক্য দেখা যায় স্বাভাবিক অবস্থার মতো।
ভাষাণটেকের বাগানবাড়ি এলাকা। মূল সড়কগুলোতে মানুষের সমাগম না থাকলেও অলিগলির অবস্থা আগের মতোই। প্রয়োজনে অপ্রয়োজনে অনেকেই ঘর থেকে বের হচ্ছেন। এতে কেউ কেউ স্বাস্থ্যবিধি মানলেও অনেককেই তা মানতে দেখা যায়নি।
শুধু মাটিকাটা, ইসিবি চত্বর আর বাগানবাড়ি নয়- এই চিত্র রাজধানীর বেশিরভাগ এলাকারই। গতকাল শুক্রবার ছুটির দিন হওয়ায় রাজধানীর মূল সড়কে গাড়ির তেমন চাপ ছিল না। তবে রিকশা ও পায়ে হাঁটা মানুষের উপস্থিতি ছিল লক্ষ করার মতো। আর পাড়া-মহল্লার অলিগলিতে ছিল মানুষের ব্যাপক ভিড়। জুমার নামাজ শেষে এলাকার গলির মুখে মুখে এলাকাবাসীদের আড্ডা দিতে দেখা গেছে।
মহল্লার অলিগলিগুলোতে ছিল জমাট আড্ডা আর কেনাবেচা। কাঁচাবাজারে স্বাস্থ্যবিধি মানার কোনো লক্ষণ দেখা যায়নি। গা ঘেঁষাঘেঁষি করেই কেনাকাটা করতে দেখা গেছে ক্রেতাদের। মানুষের মুখে মাস্কের উপস্থিতিও ছিল কম। বিধিনিষেধের মাঝেই খোলা চায়ের স্টলগুলোতেও মানুষের আনাগোনা ছিল বেশ। সড়কের চেকপোস্টগুলোতে পুলিশের উপস্থিতি থাকলেও চলাচল নিয়ন্ত্রণে তৎপরতা ছিল কম। মাঝেমধ্যে ব্যক্তিগত গাড়ি থামিয়ে বের হওয়ার কারণ জিজ্ঞাসা করতে দেখা গেছে দায়িত্বরত পুলিশ সদস্যদের।
এদিকে দেশে করোনাভাইরাসে (কভিড-১৯) আক্রান্ত রোগী দিনদিন বেড়েইে চলেছে। সেইসাথে বাড়ছে মৃত্যুর সংখ্যা। গত ২৪ ঘণ্টায় করোনা সংক্রমিত হয়ে সর্বোচ্চ ২১২ জনের মৃত্যু হয়েছে। এ পর্যন্ত করোনায় মৃত্যু বরণ করেছেন ১৬ হাজার ৪ জন।
মহামারি করোনাভাইরাসের (কভিড-১৯) ভয়াবহ সংক্রমণরোধে কঠোর বিধিনিষেধের আজ ১০ম দিন চলছে। গত ৯ দিনে ঢাকা মহানগর পুলিশ বিনা প্রয়োজনে ও মাস্ক ছাড়া ঘরের বাইরে বের হওয়ায় গ্রেপ্তার করেছে প্রায় ৭ হাজার জনকে। আর জরিমানা করা হয়েছে প্রায় আড়াই হাজার ব্যক্তিকে। কিন্তু এর পরও মানুষের অবাধ চলাচল রোধ করা যাচ্ছে না।
ডিএমপির মিডিয়া ও পাবলিক রিলেসন্স বিভাগের অতিরিক্ত উপ-কমিশনার (এডিসি) ইফতেখারুল ইসলাম জানান, শুক্রবার করোনা সংক্রমণরোধে জরুরি প্রয়োজন ছাড়া বাইরে বের হওয়ায় ঢাকায় ৫৮৫ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে ১২৯ জনকে ১ লাখ ৫৬ হাজার ৭৫০ টাকা জরিমানা করা হয়েছে। এছাড়া ডিএমপি ট্রাফিক বিভাগ ৪১৪টি গাড়ির ৮ লাখ ৯২ হাজার ৫০০ টাকা জরিমানা করেছে।