করোনাকালে যেমন আছে গ্রামীণ অর্থনীতি

  • শাহ ইসকান্দার আলী স্বপন, কন্ট্রিবিউটিং করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, কিশোরগঞ্জ
  • |
  • Font increase
  • Font Decrease

করোনাকালে যেমন আছে গ্রামীণ অর্থনীতি

করোনাকালে যেমন আছে গ্রামীণ অর্থনীতি

আধুনিক কৃষির পাশাপাশি বাড়ির আঙিনায় উন্নত জাতের ফলদ বৃক্ষ রোপন, পশুপালন পুকুর-ডোবায় মৎসচাষ আর পোল্ট্রি শিল্পের চাকা সচল রয়েছে করোনাকালেও। গ্রামীণ অর্থনীতির গতি থেমে নেই দুর্যোগের পরিস্থিতিতেও।

কিশোরগঞ্জের গ্রামীণ জনপদে সরেজমিনে দেখা গেছে, পরিশ্রমী, বুদ্ধিদীপ্ত যুবকেরা চাকরির পেছনে না ছূটে ঝুকছেন খামার তৈরিতে। কেউবা হচ্ছেন ক্ষুদ্র শিল্পউদ্দোক্তা। উন্নয়নে নিজেকে সংশ্লিষ্ট করার প্রবণতায় ক্রমশ বদলে যাচ্ছে 'ভিলেজ পলিটিক্স'র চরিত্র। নেতিবাচক অলস আড্ডা অন্যের অকল্যাণ চিন্তা পেছনে ঠেলে উন্নয়নমুখী এখন গ্রামের মানুষের জীবনাচরণ।

বিজ্ঞাপন

পাড়ায় পাড়ায় প্রতিষ্ঠিত হয়েছে ক্লাব ঘর, যার উদ্দেশ্য পরোপকার। বিয়ে বাড়িতে টেবিল চেয়ার উপকরণ বিনা ভাড়ায় সরবরাহ করেন যুবকেরা। প্রয়োজনে আর্থিক সাহায্য করেন কনের পিতাকে। সৎ বুদ্ধিদীপ্ত যুবকেরা নেতৃত্ব দিচ্ছেন সমাজের। মাদক সেবন, অনৈতিক উপার্জন, পরধনহরণ ও নেতিবাচক ধারনা থেকে ক্রমেই সরে আসছেন যুবসমাজ। সুশিক্ষিত ও নেতৃস্থানীয় যুবকেরা কাউন্সিলিং করে সুপথে আনছেন অন্যদের। অর্থনৈতিক উন্নয়নের পাশাপাশি সুশিক্ষা ও পরস্পরের প্রতি সৎ ও নৈতিক আচরনে দীক্ষিত হচ্ছেন তারা। প্রতিবাদী হচ্ছেন অন্যায়ের বিরুদ্ধে। ভালোকে গ্রহণ আর মন্দকে বর্জনের মাধ্যমে তারা বদলে দিচ্ছেন গ্রামের কুসংস্কৃতি। আর কৃষ্টি ও সভ্যতা, অগ্রসর করছেন গ্রামীণ জনপদে।

নেতিবাচক অলস আড্ডা অন্যের অকল্যাণ চিন্তা পেছনে ঠেলে উন্নয়নমুখী এখন গ্রামের মানুষের জীবনাচরণ

এমন এক সাবলম্বী যুবক কিশোরগঞ্জের প্রজাপৎখিলা গ্রামের হাজী বাড়ির মো: আরজু মিয়া। পড়াশুনার পাশাপাশি  বাড়ির আড়িনায় ফলদ বৃক্ষ রোপন ও পশুলালন করে তার স্বাবলম্বী হওয়ার যাত্রা শুরু। অতপর মাছের রেনু পোনা চাষ করে স্থানীয় পুকুর মালিকদের কাছে পোনা মাছ বিক্রি করে লাভবান হওয়া, প্রাণী খাদ্যের জন্য ক্ষুদ্র ফিড মিল এবং ছোট ছোট পোল্ট্রি খামার গড়ে তুলে সফল খামারি হিসেবে এখন তার নাম গ্রামের মানুষের মুখে মুখে। খামারের উপার্জন দিয়ে তিনি স্থানীয় লক্ষীগঞ্জ বাজারে গড়ে তুলছেন আধুনিক দোকান।

বিজ্ঞাপন

খামারে মো: আরজু মিয়ার সাথে কাজ করছেন পাশের বাড়ির বয়োবৃদ্ধ মো: আওয়াল মিয়া সহ অসংখ্য স্থানীয় যুবক। কাজের পাশাপাশি তারা দীক্ষা নিচ্ছেন কাজ করে স্বাবলম্বী হওয়ার। মো: আরজু মিয়ার প্রতিষ্ঠানে কাজ করার পাশাপাশি তারাও নিজের বাড়ির আঙিনায় গড়ে তুলছেন ক্ষুদ্র খামার আর এসব খামারে কাজ করে স্বাবলম্বী হচ্ছেন পরিবারের অন্য সদস্যরা।

 গ্রামীণ অর্থনীতির গতি থেমে নেই দুর্যোগের পরিস্থিতিতেও

মো: আরজু মিয়া বার্তা-২৪ কে জানান টেলিভিশন ও বিভিন্ন মিডিয়ায় খামার ব্যবস্থানার উপর আলোচনা তিনি নিয়মিত দেখেন। কোন রোগ বালাই হলে কিশোরগঞ্জ

সংশ্লিষ্ট সরকারি অফিসে যোগাযোগ করে কর্মকর্তার পরামর্শ নেন। প্রাণী স্বাস্থ্যের সুরক্ষা সংক্রান্ত নিয়ম যেমন কোন আগন্তুক এলে স্প্রে করে তার হাত পা সেনিটাইজ করে নেয়া ইত্যাদি নিয়ম তিনি শতভাগ তার খামার ব্যাবস্থাপনায় যুক্ত করেছেন। এছাড়াও তিনিও নতুন খামারিদের তার অভিজ্ঞতা থেকে পরামর্শ দেন।

মো: আরজু মিয়ার ধারনা, একদিন গ্রামের মানুষ গ্রামেই তার কর্মসংস্থান খুঁজে নেবেন, তারা আর কাজের জন্য শহরমুখী হবেন না।