ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে শতবর্ষী মসজিদ
গাইবান্ধার সাদুল্লাপুর উপজেলার নিভৃত একটি পল্লী গ্রামের নাম উত্তর মন্দুয়ার (টুনিরচর)। ঘাঘট নদ বেষ্টিত এ গ্রামে শত বছর পূর্বে স্থাপিত রয়েছে একটি জামে মসজিদ। সম্প্রতি অযত্নে অবহেলা আর অর্থাভাবসহ নানা কারণে ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে গিয়ে পৌঁছাছে মসজিদটি।
সরেজমিনে বৃহস্পতিবার (১৯ আগস্ট) উপজেলার বনগ্রাম ইউনিয়নের টুনিরচর গ্রামের দেখা যায় জরাজীর্ণ অবস্থায় দাঁড়িয়ে থাকা ওই মসজিদে নামাজ আদায় করছিলেন স্থানীয় ধর্মপ্রাণ মুসল্লিরা।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, প্রায় এক’শ বছর আগে মসজিদটি স্থাপিত করা হয়। সেই সময় এই মসজিদ থেকে প্রায় এক কিলোমিটার মধ্যে একমাত্র মসজিদ ছিল এটি। এখন এক কিলোমিটার এর মধ্যে একাধিক মসজিদ নানাভাবে সুসজ্জিত হয়ে নিমির্ত হলেও আজ অবধি টুনিরচরের এ মসজিদটি অর্থাভাবে নিমার্ণ করা সম্ভব হয় নি।
এর কারণ হিসেবে তারা জানান, ঘাঘট নদের ভাঙনের শিকার টুনিরচরের অধিকাংশ মানুষ দরিদ্র সীমার নিচে বসবাস। প্রায় প্রত্যেক পরিবার দিন আনে দিন খায়। অল্প শিক্ষিত মুসলিম সম্প্রদায়ের মানুষদের মনে আল্লা রাসুলের প্রতি ভয় ভালোবাসা থাকলেও, নামাজ আদায়ের জন্য পুননির্মাণ করতে পারি নি মসজিদটি। বর্তমানে একচালা ভাঙা টিনের ছাদের নিচে নামাজ আদায় করে চলেছে তারা। ফলে মুসল্লিদের দুর্ভোগ পৌঁছে গেছে চরমে। যেন দেখার কেউ নেই।
স্থানীয় মুসল্লিরা চরম উদ্বেগ প্রকাশ করে বলেন, এই দুনিয়ার সব কিছু পরিবর্তন হলেও পরিবর্তন হয় নি আমাদের মসজিদটির। মসজিদটি নির্মাণ করতে প্রায় কয়েক লক্ষ্যাধিক টাকার প্রয়োজন। এত টাকা আমাদের পক্ষে সংগ্রহ করা সম্ভব নয়। আমরা নদী ভাঙা এলাকার মানুষ। এজন্য সরকারি-বেসরকারি, ব্যক্তি-প্রতিষ্ঠানের সহায়তা পেলে মসজিদটি নির্মাণ করা সম্ভব।
মসজিদের ইমাম মনিরুজ্জামান মনির জানান, মসজিদটি প্রায় এক বছর আগে স্থাপিত হয়েছে। সেই সময় জনসংখ্যা কম থাকলেও বর্তমানে মুসল্লি সংখ্যা দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। এ কারণে মসজিদটি পূণনিমার্ণ করা প্রয়োজন।
মসজিদ কমিটির সভাপতি ফারুক আকন্দ বলেন, এলাকাবাসি অতি দারিদ্র হওয়া সত্ত্বেও পরিবারের আয় বুঝে প্রত্যেকের ৫০০ টাকা থেকে ৫ হাজার টাকা পর্যন্ত আদায় করে যে পরিমাণ টাকা উত্তোলন হয়, তা দিয়ে মিস্ত্রি মজুরির টাকাও আসে না। বিধায় থমকে গেছে মসজিদ পূননির্মাণ কাজ।