গোবিন্দগঞ্জে সম্ভাবনার দ্বার খুলে দেবে ইপিজেড



ইঞ্জিনিয়ার রুপম আহমেদ, সাংবাদিক ও কলামিস্ট
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

রংপুর বিভাগের গাইবান্ধা জেলার গোবিন্দগঞ্জ উপজেলায় রপ্তানি প্রক্রিয়াজাতকরণ এলাকা (ইপিজেড) স্থাপন প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা একটি যুগোপযোগী সিদ্ধান্ত হিসাবে গৃহীত হবে। অর্ধ-শতাব্দীর বেশী সময় ধরে সমগ্র গাইবান্ধায় বৃহৎ শিল্প কারখানা বলতে শুধুমাত্র রংপুর সুগার মিলস লিমিটেড ছিল। বছরের পর বছর লোকসানের বোঝা টানতে টানতে রংপুর চিনি কল বন্ধ হয়ে গেছে। রংপুর সুপার মিলের মোট লোকসানের পরিমাণ প্রায় ২০০ কোটি টাকা। যেখানে বাজারে প্রতি কেজি চিনির খুচরা মূল্য ৬০ টাকা, সেখানে তাদের প্রতি কেজি চিনির উৎপাদন খরচ ২০০ টাকা! এত বিশাল অংকের টাকা ভর্তুকি দিয়ে সরকারের পক্ষে কখনো রংপুর চিনি কল চালু রাখা সম্ভব নয়।

রংপুর চিনি কলের অধীনে বাগদা ফার্মে মোট ১৮৪০ একর জমি রয়েছে। রংপুর চিনি কল ও আখ চাষ বন্ধ রেখে চিনিকল কর্তৃপক্ষ, স্থানীয় প্রশাসন ও বাংলাদেশ চিনি শিল্প করপোরেশনের পক্ষে এই বিশাল পরিমান জমির রক্ষণাবেক্ষণ করা সম্ভব নয়। ২০১৬ সালে ৬ নভেম্বর সাঁওতালদের সাথে চিনি কল কর্তৃপক্ষের সংঘর্ষের সূত্রপাত আখ মাড়াই কেন্দ্র করে। সাঁওতাল ট্র‍্যাজেডির পরর্বতী ২ বছর বাগদা ফার্মে আখ চাষ করলেও বর্তমানে আর আখ চাষ হয় না। ২০২০ সাল থেকে আদিবাসী সাঁওতাল ও স্থানীয় বাঙ্গালীরা মিলে অবৈধভাবে জমিতে চাষবাস করছে।

আজ যখন গনপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার গোবিন্দগঞ্জের বাগদা ফার্মে রপ্তানি প্রক্রিয়াজাতকরণ এলাকা (ইপিজেড) স্থাপন করার একটি পরিকল্পনা হাতে নিয়েছে, ঠিক তখন কতিপয় সাঁওতাল ও বাঙ্গালী মিলে এর তীব্র বিরোধীতা করছে। সাঁওতালদের সংগ্রাম ইতিহাস অনেক পুরোনো ও গর্বের। কিন্তু আজ তারা যা করছে, তা কোনভাবে গ্রহণযোগ্য নয়। বাংলাদেশ এখন মধ্যম আয়ের দেশে পরিণত হয়েছে। বর্তমানে দেশ কৃষিখাতের পাশাপাশি শিল্পখাতেও এগিয়ে যাবে। কৃষিকাজ আমাদের অতীত ও বর্তমান হলেও শিল্পক্ষেত্রেই আমাদের ভবিষ্যৎ নিহিত। তাহলে কৃষিক্ষেত্রের পাশাপাশি শিল্পক্ষেত্রেও দেশ বিকশিত হয়ে বঙ্গবন্ধুর পরিপূর্ণ সোনার বাংলায় পরিনত হবে।

কিছুদিন আগে সাহেবগঞ্জ বাগদা ফার্ম ভূমি উদ্ধার ও সংগ্রাম কমিটি পুনরায় গঠন করা হয়েছে। আগের কমিটিতে সভাপতি ফিলিমন বাস্কে ও সাধারণ সম্পাদক রেজাউল মাস্টার স্বপন ছিল, বর্তমান কমিটিতে সভাপতি বার্নাবাস টুডু ও সাধারণ সম্পাদক জাফরুল ইসলাম প্রধান নির্বাচিত হয়েছে। নব-নির্বাচিত সাহেবগঞ্জ বাগদা ফার্ম ভূমি উদ্ধার ও সংগ্রাম কমিটির সাম্প্রতিক কর্মকান্ড গোবিন্দগঞ্জে রপ্তানি প্রক্রিয়াজাতকরণ এলাকা (ইপিজেড) এর বাস্তবায়ন নৎসাত করার পরিকল্পনা বলে মনে হচ্ছে। গত এক সপ্তাহ ধরে তাদের বিভিন্ন কর্মসূচি দ্বারা সেটাই পরিলক্ষিত হয়। অথচ গোবিন্দগঞ্জে ইপিজেড স্থাপনের জন্য বাগদা ফার্মের সর্বনিম্ন ২৫০ একর থেকে সর্বোচ্চ ৪৫০ একর জমি প্রয়োজন। তারপরেও বাগদা ফার্মে বিশাল পরিমান জমি অবশিষ্ট থাকবে। তবু তারা বাগদা ফার্মে ইপিজেড স্থাপনের তীব্র বিরোধিতা করছে। গোবিন্দগঞ্জে রপ্তানি প্রক্রিয়াজাতকরণ এলাকা (ইপিজেড) স্থাপিত হলে তারাই প্রকৃতপক্ষে উপকৃত হবে। তাদের এই বিরোধিতা করা বোকামি ছাড়া আর কিছু নয়।

গোবিন্দগঞ্জে রপ্তানি প্রক্রিয়াজাতকরণ এলাকা (ইপিজেড) বাস্তবায়নের মধ্য দিয়ে অর্থনৈতিক উন্নয়নের বড় একটি সম্ভাবনা দেখা যাচ্ছে। গাইবান্ধা জেলার মোট জনসংখ্যা প্রায় ২৫ লক্ষ, আর গোবিন্দগঞ্জের মোট জনসংখ্যা ৫ লক্ষেরও বেশি। এই বিশাল মানবসম্পদের সম্পূর্ণ ও সঠিকভাবে ব্যবহার করা যাচ্ছে না। একমাত্র গোবিন্দগঞ্জে একটি শিল্প অঞ্চল স্থাপনের মাধ্যমে এই মানবসম্পদকে যথাযোগ্য কাজে লাগানো সম্ভব। গোবিন্দগঞ্জে একটি রপ্তানি প্রক্রিয়াজাতকরণ এলাকা (ইপিজেড) স্থাপিত হলে সমগ্র গাইবান্ধা জেলার পাশাপাশি পাশ্ববর্তী বগুড়া ও দিনাজপুর জেলার মানুষ এখানে এসে কাজ করতে পারবে। সাপমারা ইউনিয়নের অনুন্নত বাগদা ফার্ম অঞ্চলটি একটি আধুনিক নগরীতে রুপান্তরিত হবে।

বাংলাদেশের কোথাও নতুন করে রপ্তানি প্রক্রিয়াজাতকরণ এলাকা (ইপিজেড) স্থাপন করা হলে সেটা গোবিন্দগঞ্জে হওয়া অত্যাবশকীয়। কারণ আমাদের দেশে ফসলি জমি নষ্ট করে শিল্পকারখানা স্থাপন করা যায় না। এটা সম্পূর্ণ আইন পরিপন্থী কাজ। একদিকে দেশে এত পরিমানে অনাবাদি জমি পাওয়া দুষ্কর। অপরদিকে পরিবেশের ক্ষতি করে বন কিংবা জলাশয় ভরাট করে শিল্প অঞ্চল স্থাপন করা কখনো সম্ভব নয়। এখানে ইপিজেড স্থাপিত হলে শিল্পকারখানার বর্জ্য নিষ্কাশনের জন্য পাশ্ববর্তী শুকনো কাটাখালি নদী রয়েছে। তাতে করে নদীর পানি প্রবাহ কিছুটা হলেও ফিরিয়ে আনা সম্ভব হবে। গোবিন্দগঞ্জে বাগদা ফার্মের পরিত্যক্ত জমিতে রপ্তানি প্রক্রিয়াজাতকরণ এলাকা (ইপিজেড) স্থাপন করলে সরকারের বিশাল অংকের টাকা সাশ্রয় হবে। সেই সাথে রংপুর চিনি কল সংশ্লিষ্ট শ্রমিক ও তাদের পরিবারের লোকজন এই ইপিজেডে কাজের মাধ্যমে পুর্নবাসনের সুযোগ পাবে।

বাংলাদেশে ১৯৮৩ সালে চট্রগ্রামের হালিশহরে প্রথম ইপিজেড স্থাপিত হয় এবং ২০০৬ সালে চট্রগ্রামের পতেঙ্গায় সর্বশেষ কর্ণফুলী ইপিজেড স্থপিত হয়। বাংলাদেশে সরকারিভাবে ৮টি ও বেসরকারিভাবে ২টি ইপিজেড রয়েছে। গোবিন্দগঞ্জে রপ্তানি প্রক্রিয়াজাতকরণ এলাকা (ইপিজেড) স্থাপিত হলে হাজার হাজার লোকের কর্মসংস্থান সৃষ্টি হবে। সেই সাথে দক্ষ মানবসম্পদ তৈরি ও বেকারত্ব দূর হবে। বিদেশে পণ্য রপ্তানির মাধ্যমে বাংলাদেশ আরও বৈদেশিক মুদ্রা আয় করবে ও দেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি বৃদ্ধিতে সক্ষম হবে। বেকারত্বের হার কমে কর্মসংস্থানের মাধ্যমে মানুষের জীবনযাত্রার মান উন্নত হবে। ফলে মাথাপিছু আয়ও বাড়বে।

এমন সুযোগ সবসময় আসে না, এই সুযোগ এসেছিল ঠিক ৬৭ বছর আগে ১৯৫৪ সালে রংপুর চিনি কল প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে। এখন যদি কোন কারণে গোবিন্দগঞ্জে ইপিজেড স্থাপনের পরিকল্পনা বাতিল হয়, তবে আগামী ৫০ বছরেও আর এমন সুযোগ আর আসবে না। আশাকরি বাংলাদেশ রপ্তানি প্রক্রিয়াজাতকরণ এলাকা কর্তৃপক্ষ (বেপজা) সার্বিক পরিস্থিতি বিবেচনা করে গোবিন্দগঞ্জে ইপিজেড স্থাপনের ব্যাপারে ইতিবাচক সিদ্ধান্ত নিবেন। বেপজার নির্বাহী চেয়ারম্যান মো. নজরুল ইসলাম (এসপিপি, এনডিইউ, এএফডাব্লিউসি, পিএসসি, জি) বাগদা ফার্মে পরিদর্শন শেষে ইপিজেড বাস্তবায়নে যথাযথ পদক্ষেপ গ্রহণ করবেন। তাহলে গোবিন্দগঞ্জ বাংলাদেশের বুকে একটি শিল্পাঞ্চল, সমৃদ্ধশালী ও উন্নয়নশীল উপজেলা হিসাবে পরিচিতি লাভ করবে।

   

থাইল্যান্ড সফরকে দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কের ক্ষেত্রে মাইলফলক বললেন শেখ হাসিনা



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, বাংলাদেশ ও থাইল্যান্ডের বাণিজ্য ও বিনিয়োগ, খাদ্য নিরাপত্তা, পর্যটন, জনস্বাস্থ্য, জ্বালানি ও আইসিটি খাতে সহযোগিতা জোরদারের সম্ভাবনা রয়েছে।

তিনি বলেন, আমি দৃঢ়ভাবে অনুভব করি- বাণিজ্য ও বিনিয়োগ, খাদ্য নিরাপত্তা, পর্যটন, জনস্বাস্থ্য, জ্বালানি, আইসিটি, জনগণ থেকে জনগণে যোগাযোগ ও সংযোগের ক্ষেত্রে এবং বিমসটেকের অধীনে আমাদের সহযোগিতা জোরদার করার সুযোগ রয়েছে।


শুক্রবার (২৬ এপিল) প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সম্মানে গভর্নমেন্ট হাউজে থাইল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী স্রেথা থাভিসিনের আয়োজিত মধ্যাহ্নভোজে তিনি এ কথা বলেন।

এর আগে দুই নেতা সেখানে দ্বিপক্ষীয় বৈঠকে যোগ দেওয়ার আগে ১৫ মিনিটের জন্য একান্ত বৈঠক করেন।

বৈঠক শেষে দুই প্রধানমন্ত্রীর উপস্থিতিতে ৫টি দ্বিপক্ষীয় নথি- ১টি চুক্তি, ৩টি সমঝোতা স্মারক (এমওইউ) ও ১টি লেটার অব ইনটেন্ট (এলওআই), সই করা হয়।

মধ্যাহ্নভোজে শেখ হাসিনা বলেন, নিকটতম প্রতিবেশী হিসেবে বাংলাদেশ থাইল্যান্ডের সঙ্গে সম্পর্ককে অত্যন্ত গুরুত্ব দেয়।

তিনি আরও বলেন, আমাদের বন্ধুত্ব আমাদের ঐতিহাসিক, ভাষাগত ও অভিন্ন সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের গভীরে প্রোথিত। বাণিজ্য ও বিনিয়োগ, টেকসই উন্নয়ন, জনগণ থেকে জনগণে যোগাযোগ ও সংযোগসহ সহযোগিতার বহুমুখী ক্ষেত্রে আমাদের দুই বন্ধুত্বপূর্ণ দেশের মধ্যে উষ্ণ ও সৌহার্দ্যপূর্ণ সম্পর্ক ক্রমাগত বৃদ্ধি পাচ্ছে।

বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী বলেন, প্রধানমন্ত্রী থাভিসিন ও তিনি পারস্পরিক স্বার্থ সংশ্লিষ্ট দ্বিপক্ষীয় ও আঞ্চলিক বিষয় নিয়ে দীর্ঘ আলোচনা করেন।

তিনি বলেন, আমরা আমাদের দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য বৃদ্ধির জন্য সব ধরনের প্রচেষ্টা করতে এবং দু'দেশের সরকারি ও বেসরকারি সংস্থার মধ্যে আরও আলাপ-আলোচনাকে উৎসাহিত করতে সম্মত হয়েছি। একইভাবে, দ্বিপক্ষীয় বিনিয়োগের প্রসার ও সুবিধার্থে আমাদের সবরকম প্রচেষ্টা চালিয়ে যেতে হবে।

তিনি বলেন, শুক্রবার ঢাকা ও ব্যাংকক যে চুক্তি ও সমঝোতা স্মারক সই করেছে তা আমাদের দ্বিপক্ষীয় সহযোগিতা বৃদ্ধির জন্য একটি দৃঢ় কাঠামো প্রদান করবে।

শেখ হাসিনা বলেন, এই সফরটি 'প্রতিবেশী' নীতির বৃহত্তর ফোকাসের অংশ, যা দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কের গতি আরও নবায়নের জন্য দুই দেশকে চমৎকার সুযোগ করে দিয়েছে।

তিনি বলেন, আমি বিশ্বাস করি যে এই সফর আমাদের দুই দেশের সম্পর্ককে আরও গভীর করতে সাহায্য করবে।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, তিনি দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করেন- এই সফর দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কের পূর্ণ সম্ভাবনায় অত্যন্ত প্রয়োজনীয় গতি সঞ্চার করবে।

তিনি বলেন, এই সরকারি সফর আমাদের দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কের ক্ষেত্রে একটি মাইলফলক হয়ে থাকবে। যা আমাদের দুই দেশের মধ্যে ফলপ্রসূ অংশীদারিত্বের এক নতুন যুগের সূচনা করেছে। আগামীর দিনগুলোয় আমাদের জনগণ ও দেশের পারস্পরিক সুবিধার জন্য আমাদের সম্পর্কের নতুন গতি বজায় রাখতে হবে।

মধ্যাহ্নভোজে উপস্থিত ছিলেন বঙ্গবন্ধুর কনিষ্ঠ কন্যা ও শেখ হাসিনার বোন শেখ রেহানা এবং বঙ্গবন্ধুর দৌহিত্র রাদওয়ান মুজিব সিদ্দিক।

সূত্র- ইউএনবি

;

চট্টগ্রামে ডাস্টবিনে মিলল নবজাতকের মরদেহ 



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, চট্টগ্রাম
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

চট্টগ্রাম নগরীর বহদ্দারহাটের ফ্লাইওভারের নিচের ডাস্টবিন থেকে এক নবজাতকের মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। বর্তমানে মরদেহটি চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালে রয়েছে।

শুক্রবার (২৬ এপ্রিল) দুপুর ৩টার দিকে ডাস্টবিনে নবজাতকের মরদেহটি পড়ে থাকতে দেখে স্থানীয়রা পুলিশে খবর দেন। পরে পুলিশ এসে সেটি উদ্ধার করে নিয়ে যায়।

চাঁদগাও মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আতাউর রহমান খোন্দকার বিষয়টি নিশ্চিত করেন। তিনি বলেন, 'কে বা কারা ওই নবজাতকের মরদেহ ফেলে গেছে তা এখনও জানা যায়নি। তবে আমরা মরদেহ উদ্ধার করে চমেক হাসপাতালে পাঠিয়েছি। ময়নাতদন্ত প্রতিবেদন পাওয়া গেলে মৃত্যুর কারণ জানা যাবে।'

;

গরমের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বরিশালে বেড়েছে ফ্যান-এসি বিক্রি



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, বরিশাল
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

তীব্র তাপদাহে বিপর্যস্ত সারাদেশের জনজীবন। গরমে নাভিশ্বাস উঠেছে বরিশালবাসীর। এমন পরিস্থিতিতে ইলেকট্রনিক পণ্যের মার্কেট, দোকান ও শো-রুমগুলোতে এসি, ফ্যান ও এয়ারকুলার বিক্রির ধুম পরেছে। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ঈদ-উল ফিতরের পর থেকে তাপমাত্রার পারদ দিন দিন বেড়েই চলেছে।

রোদের তাপে দিনের বেলা ঘর থেকে বাহিরে বের হওয়া দুস্কর হয়ে পরেছে। তৃতীয় দফায় দেশব্যাপী সতর্কতামূলক হিট অ্যালার্ট জারি করেছে আবহাওয়া অধিদপ্তর।

প্রচন্ড গরম থেকে রেহাই পেতে তাই বরিশালজুড়ে এয়ারকন্ডিশনার এখন অপরিহার্য হয়ে দাঁড়িয়েছে। যদিও কিছুদিন আগেও ক্রেতাহীন দেখা গেছে, এসি-এয়ারকুলার ও ফ্যানের দোকানগুলো। আর এখন এসব দোকানগুলোতে ক্রেতা সামাল দিতে হিমশিম খাচ্ছেন ব্যবসায়ীরা। যাদের এসি কেনার সামর্থ্য নেই তারা কিনছেন এয়ারকুলার বা ভালো মানের ফ্যান। এছাড়া গরম বাড়ার সাথে সাথে লোডশেডিং বাড়ায় চার্জার ফ্যানের চাহিদাও বেড়েছে কয়েকগুণ। একাধিক ক্রেতাদের দাবি, গরমের তীব্রতা বাড়ার সাথে সাথে এসি, এয়ারকুলার ও ফ্যানের দাম আগের চেয়ে কিছুটা বৃদ্ধি পেয়েছে।

শুক্রবার (২৬ এপ্রিল) নগরীর পাইকারি ইলেকট্রনিক পণ্যের দোকানসহ বিভিন্ন ব্র্যান্ডের শো-রুমগুলোতে ক্রেতাদের ভিড় ছিল চোখে পড়ার মতো। বেশিরভাগ ক্রেতাই সিলিং ফ্যান-স্ট্যান্ড ফ্যান ও এয়ারকুলার কিনছিলেন। বিক্রেতারা বলছেন, গরম বাড়ায় ফ্যান ও এসির চাহিদা বেড়েছে। চাহিদার তুলনায় জোগানেও টান পরেছে। ব্র্যান্ডের কোম্পানিগুলো চাহিদা অনুযায়ী স্থানীয় দোকানগুলোতে ফ্যান দিচ্ছে না। এজন্য তাদের নন ব্র্যান্ড ও বিদেশী ফ্যান বিক্রি করতে হচ্ছে।

কাঠপট্টি এলাকার একটি ইলেকট্রনিক্স পণ্যের দোকানে স্ট্যান্ড ফ্যান দরদাম করা বিএম কলেজ শিক্ষার্থী রনি সরদার বলেন, ছোট নন-ব্র্যান্ডের টাইফুন ফ্যানগুলোর দাম চাইছে ৯০০ টাকা। অথচ গত মাসেও এগুলোর দাম ছিল ৫০০ টাকা।
ইলেকট্রনিক পণ্যের দোকান ঘুরে দেখা গেছে, ছোট স্ট্যান্ড (৯-১০ ইঞ্চি) বা টাইফুন ফ্যান বিক্রি হচ্ছে ৭৫০ থেকে ১৬০০ টাকা। বিভিন্ন ব্র্যান্ডের স্ট্যান্ড ফ্যান বিক্রি হচ্ছে ২ হাজার ২০০ থেকে ৮ হাজার টাকায়।

এছাড়া দেশি ব্র্যান্ডের সিলিং ফ্যান ১৭০০ থেকে সাড়ে ৩ হাজার টাকা, বিদেশী ব্র্যান্ডের সিলিং ফ্যান বিক্রি হচ্ছে সাড়ে ৪ হাজার থেকে ১০ হাজার টাকা পর্যন্ত।

একই ফ্যানের ভিন্ন ভিন্ন দাম প্রসঙ্গে এক বিক্রেতা বলেন, কেউ আগের বছরের অবিক্রীত ফ্যান বিক্রি করছেন, তারা কিছুটা কমে দিতে পারছেন। গরম বাড়লে ফ্যানের দাম আরও বাড়বে বলেও তিনি উল্লেখ করেন।

বরিশাল নগরীর বিভিন্ন এলাকার নানা ব্র্যান্ডের শো-রুমগুলোতে বেড়েছে এসি-এয়ারকুলার বিক্রি। তবে গত বছরের তুলনায় এবার ব্র্যান্ডের এসি ও এয়ারকুলারের দাম বেশি বলে মনে করেছেন ক্রেতারা। যদিও বিক্রেতারা বলছেন, নানা অফার ও ইএমআইতে সাশ্রয়ী দামে এসব পণ্য পাওয়া যাচ্ছে।

বরিশাল নগরীর সদর রোডের ওয়ালটনের প্রধান বিক্রয় কেন্দ্রের সহকারি ব্যবস্থাপক মোহাম্মদ রুম্মান বলেন, গত কয়েক মাস এসি ও এয়ারকুলার একদম বিক্রি হয়নি। কিন্তু গরম বাড়ার সাথে সাথে আমাদের বিক্রি বেড়েছে। নগরীতে ওয়ালটনের বেশ কয়েকটি শোরুম রয়েছে। এরমধ্যে শুধুমাত্র প্রধান এই শোরুমেই এপ্রিল মাসে একশটির উপরে এসি বিক্রি হয়েছে।

বিভিন্ন ব্র্যান্ডের শোরুমগুলো ঘুরে জানা গেছে, ইনভার্টার এক টনের এসি ৪৫ থেকে ৭০ হাজার টাকার মধ্যে পাওয়া যাচ্ছে। দেড় টনের এসি ৬৫ থেকে ৮৩ হাজার টাকা এবং দুই টনের এসি ৭৮ হাজার থেকে ১ লাখ ৫ হাজার টাকায় বিক্রি হচ্ছে। এছাড়া বিভিন্ন ব্র্যান্ডের ২০ লিটারের এয়ারকুলার ১১ হাজার ৫০০ থেকে ১৭ হাজার টাকা, ৬০ লিটারের এয়ারকুলার ২০ হাজার ৫০০ থেকে ৩৩ হাজার টাকা পর্যন্ত বিক্রি করা হচ্ছে।

;

কক্সবাজারে তীব্র গরমে স্বস্তির সমুদ্রস্নান



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, কক্সবাজার
ছবি: বার্তা২৪.কম

ছবি: বার্তা২৪.কম

  • Font increase
  • Font Decrease

তীব্র গরমে জনজীবন অস্থির। তীব্র গরমের কারণে যখন মানুষের হাঁসফাঁস অবস্থা তখন সাপ্তাহিক ছুটির দিন শুক্র-শনিবারকে কেন্দ্র করে কক্সবাজার সমুদ্র সৈকতে হাজারো পর্যটকদের সমাগম হয়েছে। এ অবস্থায় সাধারণ মানুষ আর পর্যটকরা সমুদ্র সৈকতে গোসলে নেমে স্বস্তি খুঁজছে।

শুক্রবার (২৬ এপ্রিল) দুপুরে কক্সবাজার সমুদ্র সৈকতের কলাতলী, সুগন্ধা এবং লাবণী পয়েন্টে গিয়ে দেখা গেছে ৫০ হাজরের অধিক পর্যটক সৈকতের এই তিনটি পয়েন্টে গোসলে নেমেছে।

সিরাজগঞ্জ থেকে আসা পর্যটক আব্দুর রাজ্জাক বলেন, প্রচণ্ড গরমে ছুটি পেয়েই সমুদ্রস্নান করতে চলে এলাম কক্সবাজারে। খুবই আনন্দ লাগছে। পুরো পরিবার নিয়ে ঘুরতে এসেছি। আরও কয়েকদিন ছুটি পেলে ভালো হতো এখানে থেকে যেতাম। সমুদ্রের পানি খুবই ঠান্ডা। অনেক ভালো লেগেছে।

ঢাকার লালবাগ থেকে আসা পর্যটক মুখলেসুর রহমান বলেন, কক্সবাজারে স্বস্তির জন্য আসলাম কিন্তু সবখানে খুবই গরম। এই গরমে সমুদ্রে গোসলে নামলাম খুবই দারুণ অনুভূতি। নিরাপত্তা ব্যবস্থাও অনেক ভালো। লাইফগার্ড কর্মীরা দূরে গেলেই বাঁশি বাজিয়ে সতর্ক করছে। সবকিছু অনেক ভালো।

সাপ্তাহিক ছুটির দিনকে কক্সবাজারে ঘুরতে এসে যেন নিরাপত্তাজনিত কোন সমস্যা না হয় সেজন্য কাজ করছে ট্যুরিস্ট পুলিশ এবং জেলা প্রশাসন। এছাড়া সমুদ্র সৈকতে গোসলে নেমে যেন অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা না ঘটে সেখানে কাজ করছে সি সেইফ লাইফগার্ড কর্মীরা।


সি সেইফ লাইফগার্ডের সিনিয়র লাইফগার্ড রুহুল আমিন বার্তা২৪.কম-কে বলেন, কলাতলী, সুগন্ধা এবং লাবণী পয়েন্টে প্রায় ৫০ হাজারের অধিক পর্যটক গোসলে নেমেছে। এই তিনটি পয়েন্টই মূলত সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত আমরা কাজ করি। এই তীব্র গরমের মধ্যে কেউ উপরে থেকে সমুদ্র উপভোগ করছে না। সবাই সমুদ্রে নেমে যাচ্ছে এজন্য আমাদের জন্য একটু কষ্ট হয়ে যাচ্ছে।

কক্সবাজার হোটেল-মোটেল গেস্ট হাউজ মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক সেলিম নেওয়াজ বার্তা২৪.কম-কে বলেন, ঈদের পরদিন থেকে পর্যটক সমাগম শুরু হয়েছে আলহামদুলিল্লাহ এখনো পর্যন্ত অনেক পর্যটক কক্সবাজারে ঘুরতে আসছে। আমরা পর্যটন ব্যবসায়ীরা খুবই আনন্দিত। আমাদের ভালো ব্যবসা হচ্ছে।

কক্সবাজার সমুদ্র সৈকত ছাড়াও দীর্ঘ ৮০ কিলোমিটার মেরিন ড্রাইভ, ইনানী-পাটুয়ারটেক সমুদ্র সৈকত, মহেশখালী-সেন্টমার্টিন দ্বীপ এবং রামুর ঐতিহাসিক স্থানগুলো ঘুরতে যাচ্ছেন পর্যটকরা।

;