রংপুরে ধর্ষণচেষ্টার অভিযোগে শিশু নির্যাতন, ৬ জনের বিরুদ্ধে মামলা
রংপুরে এক কন্যাশিশুকে ধর্ষণচেষ্টার অভিযোগে নির্মমভাবে অপর এক শিশুকে পিটিয়ে আহত করার ভিডিও ফেসবুকে ভাইরাল হয়েছে। এঘটনায় অভিযুক্ত শিশুটির বাবা উল্টো ছয়জনের বিরুদ্ধে থানায় মামলা করছেন।
ভাইরাল হওয়া সেই ভিডিও ফুটেজ দেখে এ ঘটনার সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে শুক্রবার (২৭ আগস্ট) রাতে সুরুজ মিয়া, সজিব, খোকন মন্ডল, রোকন মন্ডল, মনদেল কেরানী ও আকমল হোসেনের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়।
শনিবার (২৮ আগস্ট) বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন বদরগঞ্জ থানার ওসি হাবিবুর রহমান।
এর আগে, গত ২১ আগস্ট রংপুরের বদরগঞ্জ উপজেলার কুতুবপুর ইউনিয়নের অরুন্নেছায় শিশুদের খেলার সময় তিন বছরের এক শিশুকে শ্লীলতাহানি চেষ্টার অভিযোগে পাশের বাড়ির সপ্তম শ্রেণিতে পড়ুয়া অপর এক শিশুকে হাত-পা বেঁধে নির্দয়ভাবে পিটিয়ে পুলিশের হাতে তুলে দেয় একটি প্রভাবশালী মহল। অন্ধকার ঘরের ভেতর শিশুটিকে নিষ্ঠুরভাবে নির্যাতন করার এমন একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়। পরে ঘটনাটি বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রচার হলে প্রশাসনের টনক নড়ে। এ ঘটনার সাতদিন পর নির্যাতনের শিকার শিশুটির পিতা বদরগঞ্জ থানায় মামলা করেন।
থানায় লিখিত অভিযোগের সূত্রে জানা যায়, গত ২১ আগস্ট লুকোচুরি খেলার সময় সপ্তম শ্রেণির ওই শিক্ষার্থী চার বছরের এক কন্যা শিশুকে থাপ্পড় মারে। এ ঘটনা ভিন্নখাতে নিয়ে ওই কন্যা শিশুর পরিবার অভিযোগ তোলেন তার মেয়েকে শ্লীলতাহানির চেষ্টা করা হয়েছে। এ ঘটনায় শিশুটিকে তার বোনের বাড়ি থেকে ডিবি পরিচয় দিয়ে ধরে এনে একটি ঘরের ভেতর হাত-পা বেঁধে বেদম মারপিট করে আহত করা হয়। এসময় পাষণ্ডরা ওই শিশুর গোপনাঙ্গে কলমের চিকন অংশ ঢুকিয়ে আঘাত করে। এমনকি জিহ্বার নিচে কলম দিয়ে খুচিয়ে রক্তাক্ত করে। এসময় শিশুটি পানি খেতে চাইলে অন্য শিশুদের প্রস্রাব গ্লাসে দিয়ে তাকে জোর করে খাওয়ানো হয় বলেও অভিযোগে উল্লেখ করা হয়েছে। ঘটনার দিন শিশুটির বিরুদ্ধে শ্লীলতাহানির চেষ্টার অভিযোগ দিয়ে পুলিশের হাতে তুলে দেওয়া হয়। পুলিশ ছেলেটিকে যশোরের কিশোর সংশোধন কেন্দ্রে পাঠায়।
নির্যাতনের শিকার শিশুটির বাবা ও স্থানীয়দের অভিযোগ, পূর্ব শত্রুতার জেরে একই গ্রামের প্রভাবশালী ওই ব্যক্তি ডিবি পুলিশ পরিচয় দিয়ে ছেলেকে আমার মেয়ের বাড়ি থেকে ধরে নিয়ে হাত-পা বেঁধে কয়েক দফায় নির্যাতন করে। এক পর্যায়ে তারা ছেলের গোপনাঙ্গসহ জিহ্বার নিচ দিয়ে কলম দিয়ে খুঁচিয়ে রক্তাক্ত করে। পানি পানি বলে চিৎকার করলে পাষণ্ডরা অন্য শিশুদের প্রস্রাব খেতে দেয়। আমি ওই পাষণ্ডদের গ্রেফতার করে কঠোর শাস্তি দাবি করছি।
বদরগঞ্জ থানার ওসি হাবিবুর রহমান বলেন, গ্রেফতার হওয়া নির্যাতনের শিকার শিশুটির বাবা ছয়জনের বিরুদ্ধে থানায় লিখিত অভিযোগ করেছেন। তদন্ত করে মামলা রেকর্ড করা হয়। প্রকৃত দোষী ব্যক্তিদের ধরতে অভিযান চালানো হচ্ছে।